শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০

করোনা হবি ~ ডাঃ তপোব্রত বসু

কত রকমের যে হবি রয়েছে জগতে !

ক্লাস সিক্স থেকে মেয়েদের প্রেমপত্র পাঠানো মনোজিৎ এখন মাস্টার হয়েছে। সে  ছোট থেকেই প্রেমপত্র থেকে খুলে খুলে ডাক টিকিট জমায়।

বুড়ো আমাদের বন্ধুদের সবাইকেই ক্লাস ফাইভে বিড়ি খেতে শিখিয়েছিল,  সে সেই স্কুল জীবন থেকেই দেশলাই বাক্স জমায়।

আমার ছোটকাকা, এখন মারা গ্যাছেন, তিনি পুরনো গানের রেকর্ড জমাতেন। 

আমার এক বন্ধু আছে বুবাই। আই টি  সেক্টরে। কথায় কথায় চাকরি ছাড়ে। সন্ধেবেলার আড্ডায় প্রায়ই বলে, আজ ম্যানেজারের মুখের ওপর পাতা ফেলে দিলাম। পকেটে রেজিগনেশন লেটার নিয়েই অফিস আসে। এত চাকরি ব্যাটা পায় কিকরে সেটাই রহস্য। সে হারামজাদা আবার একটা ফাইল বানিয়ে তাতে এপয়েন্টমেন্ট লেটার জমায়।

মামাতো ভাই গাবুল, সে জমায় দেশি বিদেশি মুদ্রা। নতুন যখন দশ টাকার কয়েন বেরোল, ট্রেনে করে বাঁকুড়া থেকে ডালহৌসি এসে জিপিও র সামনে থেকে পনের টাকা দিয়ে দশ টাকার করেন কিনে নিয়ে গেছিল। আমি ওকে মুদ্রারাক্ষস বলে ডাকি।

আমার নিজের কাছেই নতুন পুরোনো মিলিয়ে চারটে বুলেট মোটরসাইকেল আছে। বলতে পারেন আমি বুলেট জমাই।

আমার বউ যেমন আমার করা ভুলগুলোকে যত্ন করে জমায়। আমি বিয়ের পর থেকে কবে কি ভুল বলেছি আর ভুল করেছি সেগুলো পোঁটলা বেঁধে জমিয়ে রাখে, এখনো প্রতিদিন জমাচ্ছে।

ছেলে পেন জমাচ্ছে। এটা বোধহয় আমরা সবাই ছোটবেলায় জমাই।

পাগলা চিরঞ্জীব ডজন খানেক হার্ড ডিস্ক কিনে তাতে যত রাজ্যের বইয়ের পিডিএফ জোগাড় করে জমাচ্ছে।

আপনারা জ্ঞানী গুণী মানুষ, হয়তো আরও অনেক হবির কথা জানেন। 

কিন্তু এই যে করোনার টেস্ট কিট জমিয়ে রাখা, এমন হবি দেখেছেন কখনো?


1 টি মন্তব্য: