আমি কিছুটা confused …. মহাভারত নতুন করে পড়ছিলাম । আর ভাবছিলাম আমার দেখার চোখ টাই কি বাঁকা? মহাভারত কে মানলে, এসব so called conscious ব্যপারটা বেশ স্থুলো বলেই মনে হয়। ভদ্রতা ও সদাচারে নিবদ্ধ আমরা , কিন্তু একটু সত্যের মুখোমুখি হলে কেমন লাগে? ঠিক বেঠিক এর হিসেব করে কে? সমাজ?
অর্জুনরা ততোদিনে মরে-টরে গেছে । তখন অর্জুনের ছেলের ছেলে জন্মেজয় রাজা। হঠাৎ চব্বিশ হাজার শ্লোকের বিশাল এক বই নিয়ে হাজির দ্বৈপায়ন-এর শিষ্য বৈশম্পায়ন। এসে বললেন, ¨রাজা মশাই, এই নিন। ….গুরু দ্বৈপায়ন লিখেছেন আপনার বংশের গৌরব গাথা¨। রাজা জন্মেজয় তখন খুশিতে আত্মহারা। ...বললেন ¨campaigning চালু করো, সবাই জানুক কতো বড় বংশের উত্তরাধিকারী আমি¨। সবাই জানলো , শুনলো মহাভারতের কথা। সবাই ধন্য ধন্য করে উঠলো। কিন্তু কেউ কি প্রশ্ন করলো যে এটা বীরগাথা না যথেচ্ছ যৌনাচার এর কাহিনী?
আমার কাছে মহাভারতের central character ঋষি দ্বৈপায়ন, যাকে আমরা ব্যাসদেব বলে জানি। গল্পের শুরুতেই নিজের জন্মকাহিনী ….. মহাভারতের প্রথম যৌনাচার …..নিজের মা-কে দিয়ে শুরু, তারপর ব্যাসদেব কিন্তু কাউকে ছাড়েন নি। প্রথমে ব্যাসদেব নিজে, তারপর কুন্তী, পরে দ্রৌপদী …. মাঝে প্রচুর খুচরো আর শেষে বেচারা অর্জুন …….
মৃগয়া করতে গিয়ে মহারাজ শান্তনুর সাথে আলাপ হয়েছিলো গঙ্গার। অল্পদিনের জানাশোনা।কিন্তু তাতেই কি? শর্ত ছিলো গঙ্গা কে কোনো কাজে বাধা দেওয়া যাবে না। তার বদলে রাজা শান্তনু পাবেন একটু ইয়ে-র স্বাদ।আটটি পুত্র হলো (শোনা যায় তারা শাপভ্রষ্ট অষ্টবসু)। বাচ্ছা হয়, আর গঙ্গা তাদের ভাসিয়ে দেন ( প্রমান লোপাটের চেষ্টা?)। রাজামশাই আর পারলেন না। এবার বাধা দিলেন। গঙ্গা তখন রাজা শান্তনু কে দেবব্রত (পরবর্তীকালের ভীষ্ম) নামে এক পুত্র সন্তান দিয়ে বললেন ¨একে রাখো, আমি চললাম ¨। বোঝো কান্ড !
সত্যবতীর রূপে মুগ্ধ হয়ে পরাশর মুনি একবার নৌকায় সত্যবতীর সঙ্গে মিলিত (ধর্ষণ বলা যাবে না!) হয়েছিলেন। সেই মিলনের ফলে ব্যাসদেবের জন্ম হয়।যমুনা দ্বীপে জন্ম হয়েছিল বলে ব্যাসদেবের অপর নাম কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন। কিন্তু পরাশর মুনির আশীর্বাদে সত্যবতীর কুমারীত্ব নষ্ট হয় নি।
ওদিকে গঙ্গার শোকে আবার রাজা শান্তনু বিষাদগ্রস্ত। বেশ কিছুদিনের অভ্যেস, হঠাত করে একা হয়ে যাওয়াটা ঠিক জমছিলো না। আলাপ হলো সত্যবতীর সাথে।সত্যবতীর রূপে মোহিত হয়ে মহারাজা শান্তনু তাঁকে বিয়ে করেন।শর্ত একটাই, দেবব্রত রাজা হতে পারবে না। দেবব্রত তখন বেশ বড়ো , বুঝলো বাপের জ্বালা। অগত্যা আত্মবলিদান … বাপের বিয়ে বলে কথা !
সত্যবতী ও শান্তনুর বিচিত্রবীর্য ও চিত্রাঙ্গদ নামে দুই পুত্র হয়। ইন্দ্রিয়পরায়ণ বিচিত্রবীর্য এই দুই স্ত্রীর সাথে অপরিমিত যৌনাচারে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং অকালে নিঃসন্তান অবস্থায় যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন। চিত্রাঙ্গদ ও বেশিদিন বাচলেন না। বংশ লোপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায়, সত্যবতী ভীষ্মকে এই বিধবা'র গর্ভে সন্তান উৎপাদন (এর চেয়ে ভালোভাষায় বলার ক্ষমতা নেই, পাঠক-পাঠিকারা মাফ করবেন) জন্য অনুরোধ করলে- ভীষ্ম সত্য রক্ষার্থে সে অনুরোধ প্রত্যাখান করেন। কি করে করবেন ! শপথ করেছেন নিজেও রাজা হবেন না, সন্তান-ও বানাবেন না , কারণ তারাও রাজা হতে পারবে না।
এরপর ভীষ্মের কাছে অনুমতি নিয়ে সত্যবতী তাঁর প্রথম পুত্র ব্যাসদেবকে ব্যাসদেবকে ডেকে বললেন ¨বাছা, বংশ রক্ষা করতে হবে। বিচিত্রবীর্য তোমার ভাই , এখন তো সে নেই, তাই ভাতৃবধুদের সাথে একটু ইয়ে করে আমায় রক্ষা করো¨। সত্যবতীর অনুরোধে ব্যাসদেব বিচিত্রবীর্যের স্ত্রী অম্বিকা আর অম্বালিকার সাথে মিলিত হন। মিলনকালে ব্যাসদেবের ভয়ঙ্কর মূর্তি দেখে অম্বিকা সবসময় চোখ বন্ধ করে ছিলেন। সেই কারণের অম্বিকার গর্ভে উৎপন্ন সন্তান ধৃতরাষ্ট্র অন্ধ হন। এরপর মাতৃআজ্ঞায় ব্যাসদেব আবার অম্বালিকার সাথে মিলিত হন। এবার সন্তান অন্ধ হওয়ার ভয়ে অম্বালিকা সব সময় তাকিয়ে রইলেন। কিন্তু ভয়ে অম্বালিকা পাণ্ডুবর্ণ হন বলে- এর একটি পাণ্ডুবর্ণের সন্তান জন্মেছিল। এই সন্তানের নাম রাখা হয়েছিল পাণ্ডু। এরপর সত্যবতী অম্বিকাকে পুনরায় ব্যাসের কাছে গমন করতে আদেশ করলে- অম্বিকা তাঁর এক রূপসী দাসীকে ব্যাসের কাছে পাঠান। ব্যাসের ঔরসে এই দাসীর গর্ভে বিদুরের জন্ম হয়। এই দাসী ব্যাসদেবের সাথে সানন্দে মিলিত হন। ফলে বিদুর হয়েছিল শারীরিকভাবে ত্রুটি মুক্ত।
সাধুপুরুষ হলে কি হবে? ব্যাসদেব তো ততোদিনে অন্য জিনিসের আস্বাদ পেয়ে গেছেন ! একবার ব্যাসদেব সুমেরু পর্বত থেকে নিজ আশ্রমে ফিরে একবার যখন হোমের আয়োজন করছিলেন, সে সময় ঘৃতাচী নামক এক অপ্সরা উপস্থিত হন। ঘৃতাচীকে দেখে ইনি অত্যন্ত কামাবিষ্ট হন। ব্যাসদেবের এরূপ অবস্থা দেখে ঘৃতাচী শূকপাখির রূপ ধরে পলায়ন করেন। কিন্তু ব্যাসদেবের প্রবল কামনার কারণে তাঁর বীর্যস্খলন হয় এবং তা অরণির উপর পতিত হয়। ব্যাসদেব উক্ত অরণি মন্থন করতে থাকলে একটি পুত্রের জন্ম হয়। ঘৃতাচী শূক পাখির রূপ ধরে পলায়ন করেছিলেন বলে- ব্যাসদেব এর নাম রাখেন শূক।
বাজারে ধর্মের ষাঁড় ছেড়ে দেবার একটা লোকায়ত প্রথা আছে। নির্দিষ্ট অঞ্চলের ভিতর এইসব ষাঁড়েরা ঋতুবতী গাভীদের নিষিক্ত করে।ব্যাসদেব কে বেশ ধর্মের ষাঁড় বলে মনে হয় না? এখনো কৃষি প্রধান এলাকার এটাই প্রচলিত প্রজনন বিদ্যা। ঋতুবতী গাভীদের ডিম্বাণুর সাথে ধর্মের ষাঁড়দের শুক্রাণুর নিষিক্ত করণের এই ক্রিয়া প্রক্রিয়াকে ঋষি ক্রিয়া বলতে পারেন। তাই সংস্কৃত ভাষায় নির্দিষ্ট গোয়ালহীন ধর্মের ষাঁড়দের ঋষভ বলা হয়। আশারাম্ বাপু দের আর দোষ দেই কি করে , ওরা তো এই ঋষি ক্রিয়া কেই এগিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন?
এবার কুন্তী …...
ছোটবেলায় (?) দুর্বাসা মুনি কুন্তিকে বর দিয়েছিলেন যে, যে-কোনও দেবতাকে আহবান করে তিনি তাঁর সন্তান ধারণ করতে পারবেন। ছোটবেলাতেই ব্যাপারটা test করে রেখেছিলেন তিনি। মানে ওই আর কি, বাজার থেকে নতুন ইনস্ট্রুমেন্ট কিনলে নেড়েচেরে নেওয়া, এই আর কি ! কুন্তী মণ্ত্রের সত্যতা পরীক্ষা করার সূর্য্যদেব কে বেছে নিলেন। ফলত, সুর্য্যবাবুর সাথে একটু আধটু ইয়ে হলো আর কি ! হলো কর্ণের জন্ম। আমরা পেলাম এক বীরপুরুষকে, কিন্তু মা কুন্তী অস্বীকার করলো ছেলেকে। এই জায়গায় বলব যে সত্যবতী বেশ সাহসী ছিলেন, ব্যাসদেব এর পরিচয় গোপন করেন নি। কুন্তী পারলেন না …… কিন্তু পরে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগে কর্ণ - এর কাছে গিয়ে গিয়ে বাবা-বাছা করার সময় অবশ্য লজ্জা পান নি !
পাণ্ডু কুন্তিভোজের পালিতা কন্যা কুন্তী ও মদ্ররাজের কন্যা মাদ্রীকে বিবাহ করেন। একবার মৃগয়াতে গিয়ে পাণ্ডু মৈথুনরত মৃগকে শরাঘাত করায় মৃত্যুমুখী মৃগ (আসলে মৃগরূপধারি কিন্দম-নামা মুনি) পাণ্ডুকে অভিশাপ দেয় যে, মৈথুনে লিপ্ত হলেই পাণ্ডুর মৃত্যু হবে। তাই পান্ডুবাবুর বিয়ে-থা হলেও জীবনে ওই ইয়ে ব্যাপারটা নিয়ে বেশ চাপ ছিলো। আবার সেই সঙ্গে বংশরক্ষার দায়-ও আছে ! কি সমস্যা ! কিন্তু ব্যাসদেব সব plan করে রেখেছিলেন।ওই যে আগেই বললাম, ছোটবেলায় পাওয়া দুর্বাসা মুনির আশীর্বাদ ! কুন্তী পাণ্ডুর ইচ্ছায় ধর্ম, পবন ও ইন্দ্রকে আহবান করে যথাক্রমে যুধিষ্ঠির, ভীম ও অর্জুনকে জন্ম দিলেন। পাণ্ডুর ইচ্ছায় তিনি সপত্নী মাদ্রীকে শিখিয়ে দিলেন কি করে দেবতাকে আহবান করতে হয়। বললো ¨ কার সাথে ইয়ে-টিয়ে করবি বল, ব্যবস্থ্যা করে দিচ্ছি ¨। কিন্তু ব্যাপারটা অন্যরকম হয়ে গেলো । মাদ্রী বুঝল যৌবনের যা জ্বালা তাতে একটা দিয়ে হবে না। অশ্বিনীকুমার ভাইরা ছিল জমজ। সে অশ্বিনীকুমার-দ্বয়কে আহবান করে নকুল ও সহদেবকে জন্ম দিলো।
বংশরক্ষার ব্যাপার তা তো মিটলো ! কিন্তু ওই ইয়ে ব্যাপারটা নিয়েই সমস্যা ! পান্ডু রাজা হলে কি হবে, মানুষ তো! কিছুদিন বাদে কামার্ত হয়ে অভিশাপ উপেক্ষা করে মাদ্রীর সঙ্গে মিলনকালে পাণ্ডুর মৃত্যু হয়। মাদ্রীর ছিল কম বয়েস, self control ব্যাপারটা তো আশা করা অন্যায় !
পাণ্ডবদের বাবা নিয়ে যত গোলযোগ, কর্ণ সম্বন্ধেও তত-বেশীর ভাগ, কারণ তিনি কানীন। মেরে পাস বাপ হ্যায়। তা কর্ণর কাছে বাপ ছিল না বলে সে রাজকন্যে পেল না। কি জ্বালা মাইরি ! ভীষ্মের বিয়ে করা হলো না বাপ থাকার জন্যে আর কর্ণের না থাকায় ! বেচারা বেশ দ্রৌপদী কে টার্গেট করেছিল ! কিন্তু কর্ণ কে হারিয়ে অর্জুন দিব্যি বাজী জিতে গেল ! আদতে বাকি ভাইরা দ্রৌপদীর ভাগ পেলেও, কর্ণ বেচারা সেটাও পেলো না ! আসলে পান্ডবদের legal বাবা রাজা ছিলো, কর্ণের legal বাবা তো সারথী ! তাই আইনের লড়াইটা ছিলো অসম।
এবার আসি দ্রৌপদীর কথায় ….
পুরাকালে নাকি এক সুন্দরী মেয়ে বিয়ে না হবার জন্য কান্নাকাটি করছিল, তখন মহাদেব এসে তাকে বর দিতে বলায় সে পাঁচবার বলে দেয় তার ভাল বর লাগবে। মহাদেব তো পাগলা বাবা ! পাঁচবার তথাস্তু বলে দিলো ! ব্যাস আর যায় কোথায় , বাবা মহাদেব এর বর বলে কথা ! সেই মেয়ের পাঁচজন স্বামী হয় পরবর্তী জন্মে। ঠিক ধরেছেন, সেই মেয়েই দ্রুপদ রাজের কন্যা, দ্রৌপদী। আর প্রত্যেকবার প্রতিটি স্বামীর সাথে মিলনের সময় কৃষ্ণা (দ্রৌপদীর আরেক নাম) কুমারী হয়ে যেত ব্যাসদেবের আশীর্বাদে। মানে কি সুন্দর সেটলমেন্ট ! ভাবাই যায় না। পুরুষের ভোগের জন্য একটা মেয়েকে দিয়ে যতরকম এক্সপেরিমেন্ট করা সম্ভব তাই করে গেছেন ব্যাসদেব। তবে পাঁচস্বামীর সংসার করাটা দ্রৌপদীর জন্য কতটা প্রীতিকর কিংবা ভীতিকর সেটা সেই জানতো !
পাঁচ-পাঁচটা স্বামী, কিন্তু বস্ত্রহরণে বাঁচালো কিন্তু কেষ্টবাবু ! তাহলে এই পাঁচটা লোক করতো কি ? শুধুই মস্তি ? যদিও শোনা যায় ভীমসেন কিছুটা প্রতিবাদ করতো কালেভদ্রে, কিন্তু জুয়াড়ি যুধিষ্টির এর জন্যে গর্জনটা বর্ষণে পরিনত হতে পারে নি।
যাই হোক, কেষ্টবাবু এলেন …….
আকাশ ভরে উঠল সোর
মেঘের ঘোর জলের তোড়
মন্ত্রপড়া অন্তরাল
দিলো না তবু সাড়া
অসম্ভব দ্রৌপদীর অন্তহীন শাড়ি।(দ্রৌপদীর শাড়ি/বুদ্ধদেব বসু)
অথচ আশ্চর্য, অথচ মুক্তি পেয়েই দ্রৌপদী ধৃতরাষ্ট্রের কাছে পাশা খেলায় হেরে বন্দি হয়ে থাকা সমস্ত পাণ্ডবের মুক্তি চেয়ে নিলেন ! ব্যাস, গেলাম রমণীর 'সর্বংসহা ধরিত্রী' রূপ ! দ্রৌপদী দুর্বল ছিলেন? কিন্তু পরের পরের অধ্যায় এ দেখি দ্রৌপদীর প্রতিহিংসা। মহাভারতের যুদ্ধ , কীচক হত্যা সবই তো দ্রৌপদীর প্রতিহিংসা ! অথচ সামাজিক অন্যায় মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্রৌপদী দুর্বল ! কেন ? এটা নিয়ে অন্যত্র আলোচনা করার ইচ্ছে রইলো।
দ্রৌপদীর বিয়ের ঘটনাটি মহাভারতের একটি উল্লেখযোগ্য অসাধারণ ঘটনা। পঞ্চস্বামীর স্ত্রী হওয়া এ যুগেও সম্ভব কি না, তা ভাববার বিষয়। দ্রৌপদী কি স্বেচ্ছায় এই বিয়ে মেনে নিয়েছিল? আসলে ব্যাসদেব একটা ব্যবস্থ্যা করেই রেখেছিলেন। ওই পূর্বজন্মের মহাদেব এর আশীর্বাদ এর কথা টা বলছি ! আসলে নারীর ভাগ্য শতজন্মেও দেবতার তথা পুরুষের করতলগত থেকেই যায়। দ্রৌপদী প্রথমে প্রথমে রাজি ছিলেন না। ধর্মপুত্র যুধিষ্টির তাকে জটিলা নামে এক গৌতমীর গল্প শোনালেন, যিনি একসঙ্গে সাতজন ঋষির ঘর করেছিলেন। যুধিষ্টির এর রিপুজনিত তাড়না একটা তো ছিলই ! তাই ব্যাপারটাকে justify করার চেষ্টা , এই আর কি ! দ্রৌপদী finally রাজি হলেন। মেনে নিয়েছিলেন কি ? আসলে, পৃথিবীর ইতিহাস রচনা করেছে সমাজের বা রাষ্ট্রের ক্ষমতাবান পুরুষ। তাই ইতিহাসের নাম 'His story ' তথা 'History…. প্রতিভা বসু মন্তব্য করেন, দ্রৌপদী 'যেন খেলার বল। একের কাছ থেকে (যাচ্ছে) অপরের কাছে।' আসলে দ্রৌপদী তো বহুবল্লভা, নাথবতী অনাথবত-- পঞ্চপান্ডবের সম্পত্তি। দ্রৌপদীর কিন্তু স্বেচ্ছা বা স্বেচ্ছাচারের জায়গা ছিল না… একদল কামুক এবং একজন উদাসীন প্রেমিকের প্রেমে পরে সমাজাচারই তাঁকে উদাহরণের দলে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ত্ব বানিয়ে ছেড়েছিল।
আর অর্জুন …...
অর্জুন বীরত্ব দেখিয়ে তো দ্রৌপদী কে বিয়ে করে আনলো। এদিকে কুন্তী বললেন যে যা এনেছ সব ভাইয়েরা ভাগ করে নাও! একদম ফুলটু কেস মাইরি! তখন পান্ডবেরা গোল টেবিল বৈঠকে বসে একটা ভদ্রলোকের চুক্তি করল যে দ্রৌপদী প্রতি ভাইয়ের কাছে এক বছর করে থেকে সংসার করবে। যদি সেই সময় অন্য কোন ভাই তাকে দেখে ফেলে তবে সেই ভাইকে বারো বছর ব্রম্ভচারী (এইখানে শর্ত আছে, ব্রহ্মচারী শুধু দ্রৌপদীর ক্ষেত্রে, হা হা হা, মানে অনন্য রমনীতে দোষ নাই!) হয়ে বনবাসে যেতে হবে।
এই নিয়মের বলি হয়ে গেল অর্জুন (নাকি advantage নিলেন?)। গরু-চোরেরা ব্রাহ্মণ-এর গোরু নিয়ে ভাগছিল দেখে তারা অর্জুনের কাছে এসে বিচার চাইল। ওদিকে অর্জুনের অস্ত্র ছিল যুধিষ্ঠিরের ঘরে, অর্জুন রাজধর্ম পালনের জন্য সেই নিয়ম সত্ত্বেও ঘরে ঢুকে (ঘটনাচক্রে সেখানে ছিল যুধিষ্টির, সঙ্গে দ্রৌপদী ) অস্ত্র নিয়ে গরুচোর ধরতে বেরিয়ে গেল (আর কিছু দেখেও ফেলেছিলো বোধহয় !)। হলো চুক্তিভঙ্গ।
চুক্তিভঙ্গ করার দায় মাথায় নিয়ে বনবাসে চলে গেল।এখানে প্রশ্ন ওঠে অর্জুন এর এই কাজটা কি intentional ছিলো? কারণ হিসেবমত যুধিষ্ঠিরের পর ভীম তারপরে পালা ছিল অর্জুনের। মুখে না বলুক, আদতে অর্জুন তো মানুষই ছিল। দ্রৌপদী তো আসলে তারই বীরত্বের দ্বারা প্রাপ্ত। সেখানে বারোয়ারি হয়ে গেল, আর তার নম্বর আসতে লাগল দু ভাইয়ের পরে, এটা অভিমান ছিল না তো আসলে? নাকি দ্রৌপদী যখন দুভাইয়ের ঘরে থাকবে তখন ঘরছেড়ে বেরিয়ে বাইরে অন্যকিছু করার ছক ছিল? কারণ ঘরছাড়া অবস্থাতেই উলুপী, চিত্রাঙ্গদা, সুভদ্রাকে বিয়ে করে সে ….মাঝখান থেকে গালি খেলো কুকুরে …..