বাংলাস্থানে মুক্তি পেয়েছে সাড়াজাগানো বিতর্কিত মুভি 'মানুষই সর্বশক্তিমান'।
নাম শুনেই দেশব্যাপী বিক্ষোভ, দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত প্রকম্পিত।
মুভিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ: 'স্রষ্টাকে অবমাননা করা হয়েছে, মানুষকে স্রষ্টা বানানো হয়েছে'।
চারদিক উত্তাল-বিক্ষুব্ধ। মুভিটির সাথে জড়িত সবাইকে কতল করা হয়েছে।
উড়িয়ে দেয়া হয়েছে সিনেমা হল; সিডি-ডিভিডির দোকান; সকল শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয়কারীর বাড়িঘর।
বাংলাস্থানের প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রীর শ্বাসরুদ্ধকর বৈঠক।
আলোচ্য বিষয় 'জনগনের ধর্মানুভূতিতে আঘাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা'।
প্রথমে শিল্পমন্ত্রী বললেন, সকল সিডি, ডিভিডি, মুভির সকল প্রিন্ট সরিয়ে ফেলতে। সাথে সাথে সবকিছু সরানো হল।
কিন্তু অভিযোগ উঠল ইন্টারনেটে মুভিটি ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের মত।
আবার বৈঠক।
এবার অর্থমন্ত্রী বললেন: গুগল দিয়া সার্চ করে; ইউটিউব দিয়া ভিডিও নামায়; ফেসবুক দিয়া মন্তব্য করে; ব্লগ দিয়া আলোচনা করে... সবগুলা বন্ধ কইরা দেন।
সব বন্ধ করা হলো।
কিন্তু বাদবাকি ইন্টারনেট উন্মুক্ত। গুগলের বিকল্প ইয়াহু বিং; ফেসবুকের বিকল্প টুইটার, গুগল প্লাসে; ইউটিউবের বিকল্প মেটাক্যাফে, জিপকাস্ট, হুলু, ডেইলী মোশানে সবাই সক্রিয়।
আবার বৈঠক। সিদ্ধান্ত হলো: গোটা ইন্টারনেট ব্যবস্থা বাংলাস্থানে বন্ধ থাকবে। বাংলাস্থান হবে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন।
আবার সমস্যা। অভিযোগ উঠল: মানুষের কম্পিউটারে ছবিটি আছে।
সিদ্ধান্ত নেয়া হলো সকল কম্পিউটার, টিভি সিজ করা হবে।
আবার অভিযোগ: সবাই মোবাইলে ছবিটি দেখছে। মানুষের বাসায় বাসায় হানা দিয়ে গুটিকয়েক মোবাইল সিজ করা হলো; বাদবাকি মোবাইল খুঁজে পাওয়া গেল না।
আবার বৈঠক। সমস্ত মোবাইল কিভাবে সিজ করা যায়? অত্যন্ত স্লিম এই যন্ত্রটির সংখ্যাগত পরিসংখ্যান নেই। এটি লুকিয়া রাখা সহজ।
ওদিকে অভিযোগ: মোবাইলের মাধ্যমে মুভিটি জনগণের অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে। যার হাতে মোবাইল দেখছে, তাকেই খুন করছে ধর্মানুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত লোকজন।
এবার বিদ্যুৎ মন্ত্রী বললেন: দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। মোবাইল থাকলেও চার্জ দিতে পারবে না। চার্জের অভাবে তারা মোবাইলে মুভিটি দেখবে না।
বন্ধ করে দেয়া হলো বিদ্যুৎ। বাংলাস্থান অন্ধকারে। তীব্র গরম, লাগাতার লোডশেডিং; চিকিৎসা, উৎপাদন-শিল্প কারখানা সব বন্ধ। সবাই মেনে নিচ্ছে, কারণ ধর্মানুভূতি তো রক্ষা পাচ্ছে।
কয়েকদিন পর আবার সমস্যা: বাংলাস্থানে ঘরে ঘরে সৌরবিদ্যুৎ। সবাই সূর্যের আলো দিয়ে মোবাইল চার্জ দেয়। চোরাই পথে ভারত বার্মা হতে ব্যাপক মোবাইল চার্জার আসতে লাগলো। অনেকে মোবাইল ব্যাটারি চার্জ দেয়ার আরো বিকল্প পদ্ধতি বের করতে লাগলো। অভিযোগ উঠেছে, আবার সবাই মুভিটি দেখছে। আবার জ্বলে উঠেছে ধর্মানুভূতি।
আবার বৈঠক। কোনো বিকল্প পথ খুঁজে পাচ্ছে না সরকার; মন্ত্রী মহোদয়রা এমনকি ধর্মমন্ত্রণালয়। বৈঠকের পর বৈঠক; আলোচনা চলছে তো চলছে; সকাল গড়িয়ে দুপুর-রাত্রি আবার সকাল আবার পরদিন সকাল। যে কোনো মুল্যে ধর্মানুভূতি রক্ষা করতে হবে। নইলে নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত।
হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠলেন ধর্মমন্ত্রী, পেয়েছি পেয়েছি.....।
সবাই আনন্দে ফেটে পড়ল।
ধর্মমন্ত্রী বললো, যে চোখ দিয়ে সবাই মুভিটি দেখবে, তা খুঁচিয়ে উঠিয়ে ফেললেই তো হয়। চোখই যত সমস্যার মূল। আগামীতে আরো মুভি, চিত্র বেরোবে। মানুষের চোখ ধ্বংস করে দিলে এসব যেমন দেখতে পাবে না; তৈরিও করতে পারবে না।
সবাই স্বীকৃতি দিল; আইন পাশ হলো: ধর্মানুভূতি সুরক্ষায় চোখ নষ্ট করা হবে।
চোখ তুলতে মহাসমারোহে মাঠে নামলো সরকারের পুলিশ-আর্মি-সেনাবাহিনী আর ধর্মানুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
এক বছর পর বাংলাস্থানের সকল জনগণ চোখহীন। তাদের দর্শনানুভূতি সম্পূর্ণ লুপ্ত।
কোনোকিছু দেখতে হয় না বলে তাদের আর কোনো অনুভূতিতে আঘাত লাগে না।
ফলে তারা সুখ আর স্বস্তিতে থাকতে লাগল ।
নাম শুনেই দেশব্যাপী বিক্ষোভ, দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত প্রকম্পিত।
মুভিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ: 'স্রষ্টাকে অবমাননা করা হয়েছে, মানুষকে স্রষ্টা বানানো হয়েছে'।
চারদিক উত্তাল-বিক্ষুব্ধ। মুভিটির সাথে জড়িত সবাইকে কতল করা হয়েছে।
উড়িয়ে দেয়া হয়েছে সিনেমা হল; সিডি-ডিভিডির দোকান; সকল শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয়কারীর বাড়িঘর।
বাংলাস্থানের প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রীর শ্বাসরুদ্ধকর বৈঠক।
আলোচ্য বিষয় 'জনগনের ধর্মানুভূতিতে আঘাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা'।
প্রথমে শিল্পমন্ত্রী বললেন, সকল সিডি, ডিভিডি, মুভির সকল প্রিন্ট সরিয়ে ফেলতে। সাথে সাথে সবকিছু সরানো হল।
কিন্তু অভিযোগ উঠল ইন্টারনেটে মুভিটি ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের মত।
আবার বৈঠক।
এবার অর্থমন্ত্রী বললেন: গুগল দিয়া সার্চ করে; ইউটিউব দিয়া ভিডিও নামায়; ফেসবুক দিয়া মন্তব্য করে; ব্লগ দিয়া আলোচনা করে... সবগুলা বন্ধ কইরা দেন।
সব বন্ধ করা হলো।
কিন্তু বাদবাকি ইন্টারনেট উন্মুক্ত। গুগলের বিকল্প ইয়াহু বিং; ফেসবুকের বিকল্প টুইটার, গুগল প্লাসে; ইউটিউবের বিকল্প মেটাক্যাফে, জিপকাস্ট, হুলু, ডেইলী মোশানে সবাই সক্রিয়।
আবার বৈঠক। সিদ্ধান্ত হলো: গোটা ইন্টারনেট ব্যবস্থা বাংলাস্থানে বন্ধ থাকবে। বাংলাস্থান হবে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন।
আবার সমস্যা। অভিযোগ উঠল: মানুষের কম্পিউটারে ছবিটি আছে।
সিদ্ধান্ত নেয়া হলো সকল কম্পিউটার, টিভি সিজ করা হবে।
আবার অভিযোগ: সবাই মোবাইলে ছবিটি দেখছে। মানুষের বাসায় বাসায় হানা দিয়ে গুটিকয়েক মোবাইল সিজ করা হলো; বাদবাকি মোবাইল খুঁজে পাওয়া গেল না।
আবার বৈঠক। সমস্ত মোবাইল কিভাবে সিজ করা যায়? অত্যন্ত স্লিম এই যন্ত্রটির সংখ্যাগত পরিসংখ্যান নেই। এটি লুকিয়া রাখা সহজ।
ওদিকে অভিযোগ: মোবাইলের মাধ্যমে মুভিটি জনগণের অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে। যার হাতে মোবাইল দেখছে, তাকেই খুন করছে ধর্মানুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত লোকজন।
এবার বিদ্যুৎ মন্ত্রী বললেন: দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। মোবাইল থাকলেও চার্জ দিতে পারবে না। চার্জের অভাবে তারা মোবাইলে মুভিটি দেখবে না।
বন্ধ করে দেয়া হলো বিদ্যুৎ। বাংলাস্থান অন্ধকারে। তীব্র গরম, লাগাতার লোডশেডিং; চিকিৎসা, উৎপাদন-শিল্প কারখানা সব বন্ধ। সবাই মেনে নিচ্ছে, কারণ ধর্মানুভূতি তো রক্ষা পাচ্ছে।
কয়েকদিন পর আবার সমস্যা: বাংলাস্থানে ঘরে ঘরে সৌরবিদ্যুৎ। সবাই সূর্যের আলো দিয়ে মোবাইল চার্জ দেয়। চোরাই পথে ভারত বার্মা হতে ব্যাপক মোবাইল চার্জার আসতে লাগলো। অনেকে মোবাইল ব্যাটারি চার্জ দেয়ার আরো বিকল্প পদ্ধতি বের করতে লাগলো। অভিযোগ উঠেছে, আবার সবাই মুভিটি দেখছে। আবার জ্বলে উঠেছে ধর্মানুভূতি।
আবার বৈঠক। কোনো বিকল্প পথ খুঁজে পাচ্ছে না সরকার; মন্ত্রী মহোদয়রা এমনকি ধর্মমন্ত্রণালয়। বৈঠকের পর বৈঠক; আলোচনা চলছে তো চলছে; সকাল গড়িয়ে দুপুর-রাত্রি আবার সকাল আবার পরদিন সকাল। যে কোনো মুল্যে ধর্মানুভূতি রক্ষা করতে হবে। নইলে নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত।
হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠলেন ধর্মমন্ত্রী, পেয়েছি পেয়েছি.....।
সবাই আনন্দে ফেটে পড়ল।
ধর্মমন্ত্রী বললো, যে চোখ দিয়ে সবাই মুভিটি দেখবে, তা খুঁচিয়ে উঠিয়ে ফেললেই তো হয়। চোখই যত সমস্যার মূল। আগামীতে আরো মুভি, চিত্র বেরোবে। মানুষের চোখ ধ্বংস করে দিলে এসব যেমন দেখতে পাবে না; তৈরিও করতে পারবে না।
সবাই স্বীকৃতি দিল; আইন পাশ হলো: ধর্মানুভূতি সুরক্ষায় চোখ নষ্ট করা হবে।
চোখ তুলতে মহাসমারোহে মাঠে নামলো সরকারের পুলিশ-আর্মি-সেনাবাহিনী আর ধর্মানুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
এক বছর পর বাংলাস্থানের সকল জনগণ চোখহীন। তাদের দর্শনানুভূতি সম্পূর্ণ লুপ্ত।
কোনোকিছু দেখতে হয় না বলে তাদের আর কোনো অনুভূতিতে আঘাত লাগে না।
ফলে তারা সুখ আর স্বস্তিতে থাকতে লাগল ।