বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১০

মমতার মুসলিম প্রেম ~ তৃনমাও কংগ্রেস বলছি

মমতার হাত ধরে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মুসলিম ছাত্র ছাত্রীদের আশা পুরনের সম্ভাবনা তৈরী হল আজ। মমতা আজ প্রতিশ্রুতি দিলেন ক্ষমতায় এলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের আগে মাদ্রাসা শব্দটি যুক্ত হবে।বাম সরকার শুধু মা্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়টি করে আর রাজ্য জুড়ে তার বিভিন্ন শাখা খুলেই কাজ সেরে দিয়েছিল, এর পিছনে কোটি কোটি টাকা ঢেলেই কাজ সেরে দিয়েছিল কিন্তু মমতা যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা আজ জানালেন সেটা সিপিএম কোনদিন ভাবতেই পারেনি। এত বড় কাজের সদিচ্ছাও সিপিএম এর নেই। কাজের সদিচ্ছাতেই মমতার কাছে সিপিএম হেরেগেছে।

এর আগে মেট্রোরেলের সম্প্রসারনের কাজ প্রায় সম্পুর্ন করেও তাকে উদ্বোধনের মতো গুরুত্ব পুর্ন কাজটি কেন্দ্র সরকার ফেলে রেখেছিল। মমতা এসে তার উদ্বোধন করেছিলেন। রাজ্য সরকার মেট্রো সম্প্রসারনে মাত্র ৫০ শতাংশের বেশী ব্যায় করেছিল তাই যথার্থ ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রন করেননি।
রেলের ক্ষেত্রেও মমতা দেখালেন তার অভূতপুর্ব ভাবন। আগে সমস্ত স্টেশন গুলো ক্যাটক্যেটে লাল রঙের ছিল। তাতে ঘুরিয়ে সিপিএমর নির্বাচনী প্রচার হয়ে যেত, মমতা সব স্টেশন সবুজ রঙের করলেন , যা চোখের পক্ষে কিন্তু খুব ভাল। শুধু কি তাই - কিছু স্টেশন তিন চারটি করে কম্পিউটার বসিয়ে কোটি কোটি টাকা তিনি উদ্বোধনের পিছনে ও বিজ্ঞাপনের পিছনে খরচ করেছেন। ব্যঙ্ক গুলো প্রতিবছর তাদের শাখা গুলিতে কম্পিউটার বসায় কিন্তু কোন ব্যঙ্ক তার শাখা গুলিতে গন্ডায় গন্ডায় কম্পিউটার বসিয়ে উদ্বোধনের ভাবনা ভাবতে পেরেছে। মমতা পেরেছেন।

মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১০

বদল-চরিত ~ তুলি

তিনি বলিলেন, "বুইলি মদন, বদলাতে হবে সঙ্গী",

শুঁড়ির সাক্ষী মদন কহিল, "কাকে নেবে তবে, জঙ্গী?",
একথা শুনেই তিনি কহিলেন, "মদনা কি ডাকি সাধে?
বাংলা আমার, কংগ্রেসীদের কেন তুলি তবে কাঁধে?"!

এ'কথা শুনেই মদনা : "তবে কি পদ্ম খুঁজিবে পাঁকে",
..."Intelligent!" তিনি কহিলেন "চল ফিরি কই ঝাঁকে"।
হতভাগা দেশ পেঁয়াজ কিনিছে একশত টাকা কিলো,
"পরিবর্তন" "Shining India"-র ফুটেজ বাড়ায়ে দিলো।

শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১০

আমার শহর, আমার বড়দিন ~ অনির্বাণ ঘটক

আমার শহরে আধপেটা জাগে রাই ও কানুর দল,

কুয়াশায় মুড়ে ঝুপ করে নামে লাল-সাদা বড়দিন,

এসপ্লানেডের ফুটপাথ ঢাকে খিদেতে এবং শীতে,

প্রতি ঝুপড়িতে যীশু আসে আর সাথে আসে কোটি ঋণ...

  

আমার শহরে শীতঘুম যায় রাই-কানু-কম্বল,

স্বপ্নেই আসে স্বপ্নে বিদায় স্বপ্নের বড়দিন,

একা পড়ে থাকে ভেজা ট্রাম আর ধোঁয়া ওঠা কাঠকয়লা,

প্রতি রাত মিছে স্বপ্নপূরণ, তাই বাঁচে প্রতিদিন!

 

 

আমার শহরে নাহুম-ফ্লুরিজ, কানু-রাই নেশাভোর,

রঙ্গ পোষাক, রঙমাখা রাত, রঙ্গীলা বড়দিন,

হুকুম তামিল বেয়ারা-র সাজে লাল-সাদা ঈশ্বর,

বিগত জন্ম? অপাপবিদ্ধ; এ জন্ম... রঙ্‌গীন!


বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১০

পেঁয়াজি ~ অনামিকা

পেট্রোলে দাম অবাধে বাড়ছে ডিজেলেরও বাড়ে তাই!
দ্রব্যমূল্য তাতে বাড়ে? ছি ছি! ওকথা বলতে নাই!

সিংগুরে ওরা কেড়েছিল জমি, পেঁয়াজ তাইতো ষাট।
ফেরৎ চাইছি চারশ' একর পেঁয়াজ ভর্তি মাঠ।

ওটা পেয়ে গেলে আগামীকল্য পেঁয়াজ দু'টাকা কিলো!
ভাগ্যিস এই মিথ্যে কথায় পোক্ত জিভটা ছিল।

দিল্লিতে দর আশি হল কেন? সোনিয়া আন্টি জানে।
আমি শুধু রেল। সকাল বিকেল ... শিলা পুঁতি সবখানে!

মনোমোহনের খেলা জানি ঢের, পাকা চুল পাকা ভুরু।
ও কী সামলাবে? এ ইউপিএর এইতো শেষের শুরু!

মাঝে মাঝে জপি যৌথ বাহিনী। "এই ছাড়লাম জোট" ...
এই হুমকি যে ক'বার দিয়েছি, ভুলেই গিয়েছি মোট!

অবশ্য তার পরপরই আমি প্রতিবার গিলি ঢোঁক।
"কিল গেম শো"তে আমি যে নেত্রী ... মানতে আজ্ঞা হোক!

বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১০

হয় বামপন্থা নয় মৃত্যু ৩ ~ তৃনমাও কংগ্রেস বলছি

কথাই সব, নির্বাচন উপলক্ষে পার্থ কথা বলেন, কথা বলেন মমতা। বুদ্ধ কথা বলেন, কথা বলেন বিমান। আমরা সরাসরি নাশুনলেও শুনিয়ে দেয় কাগজ টিভি। বুদ্ধদেব এক কথা বলেছিলেন সাম্প্রদায়িক শক্তির মাথা ভেঙে গুডিয়ে দেব। ব্যাস আর যায় কোথায়, আমরা মিডিয়ার ব্যাখ্যায় শুনলাম বুদ্ধ নাকি বাংলার মানুষের মাথা গুড়িয়ে দেবে বলেছেন। কোলকাতা টিভি, বর্তমান, প্রতিদিন আনন্দবাজার বিশেষ করে প্রতিদিন খরাজ মহাশয় টিভিতে নিজের কন্ঠে শুনিয়ে দেয়- মাথা ভেঙে গুড়িয়ে দেব। কি নৃশংস কথা । বললেন বুদ্ধ। আসল কথা শনেছিলেন ৫০০লোক , আমরা শুনিয়েদিলাম ৫লক্ষ লোককে মাথা ভেঙে গুডিয়ে দেব। আরে বুদ্ধের হাতে আজকাল আর ২৪ঘন্টা, আর আমাদের পাশে যা মিডিয়া গুনে শেষ হবেনা। সব মিডিয়া ব্যবসায়ী বুদ্ধের বিরুদ্ধে। খুব ট্রেড ইউনিয়ন করেছিল এই বুদ্ধদেবরা।

বুদ্ধবাবু সেদিন বললেন হয় বামপন্থা নয় মৃত্যু, অর্থাৎ করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে, না আমরা শোনালাম বামপন্থা নাকরলেই সিপিএম সবাইকে খুন করবে। বুদ্ধদেব প্যাচে পড়েছেন ভালই।

তৃনমুলের মিডিয়ার এই কাজকে সিপিএম বলছেন নীতিহীন কাজ। ভূল- কারন রাজনীতিতে নৈতিকতা বলে কোন দিন কিছু ছিলনা আজও নেই। এটা হল ক্ষমতার প্রতি প্রেম ,প্রতিপক্ষর সঙ্গে যুদ্ধ যেখানে জেতাটাই সব। মমতা ও তার সাথিরা অর্জুন হতে মাঠে নেমেছেন যুধিষ্টির হতে নয়। ভগবান চিরকাল অর্জুনের পাশেই থাকে।

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১০

সিবিআই রহস্য ~ অনামিকা

সিবিআই মানে মহান ধাপ্পা, মহা পবিত্র নাম।
ঘুষটুস খেয়ে ওরাই সিদ্ধ করবে মনষ্কাম।*

সাত সাতজন মন্ত্রী হয়েছি। "কেন্দ্র"টি করে আলো।
আমি তবু নই শাসক পক্ষ, দাবী করি জমকালো।

যে "কেন্দ্র" পেটে লাথি মারে রোজ ... যে "কেন্দ্র" ছাপে টাকা ...
যে "কেন্দ্রে" পোষা আছে সিবিআই ... যে "কেন্দ্র" মধুমাখা ...

যে "কেন্দ্র" টু জি, ভাগ বোঝাবুঝি ... আমার পরমারাধ্য ...
সে "কেন্দ্রে" আছি, জেড ক্যাটেগরি ... সবাই মানতে বাধ্য ...

তবু আমি নই "শাসক" পক্ষ! শাসক হচ্ছে বুদ্ধ।
শাসক হবার জন্য আমার যাবতীয় সব যুদ্ধ!

বিদ্বজ্জন খুঁজে বার করে নিবিড় করেছি সখ্য।
রেলকমিটির দই খাক নেপো, জনগন উপলক্ষ্য!

কোরাসে গাইছি ... পরিবর্তন ... অন্য শাসক চাই ...
কেন তা হয়নি, তদন্ত করে বলে দিক সিবিআই।

এখনও কি তুই জীবিত আছিস? কেন আজও বেঁচে? কেন?
সেটা সিবিআই তদন্ত করে বলে দিয়ে যায় যেন!

একটাই ভয় সিবিআই যদি বুঝে ফেলে আমি মেকি!
পাপ তো শুনেছি বাপকে ছাড়েনা! আমাকে সে ছাড়বে কি?


--------------------------------------------
* তাপসী কাণ্ডের সিবিআই ইনস্পেক্টর শ্রীমান পার্থর কথা মনে আছে?

 

সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১০

লাভ জনক বলেই কি খুনোখুনিতে টিএমসির আগ্রহ? ~ তৃণমাও কংগ্রেস বলছি

জ্ঞানেশ্বরীতে মাওবাদী গণহত্যার দায় সিপিএম এর ঘাড়ে চাপিয়ে মমতা চাটুকার বুদ্ধিজীবিরা বলেছিলেন এতে লাভ হচ্ছে সিপিএম এর। তাই ওই ঘটনার পিছনে সিপিএমই আছে। পরে সিবিআই তৃণমুল ঘনিষ্ট জনসাধারনের কমিটিকেই দায়ী করে। ফলে মমতা বিষয়টি নীরবতার রাজনীতিই করছেন এখন। এখন স্বপন কোলে হত্যার পর টিএমসি বলছে বাংলায় এতখুনোখুনি প্রশাসনের ব্যর্থতা। সুতরাং সিপিএম এর পদত্যাগ করা উচিত। তাহলে খুনোখুনিটা রাজনৈতিক ভাবে টিএমসির পক্ষেই লাভজনক হয়েযাচ্ছে। আর একারনেই বাংলায় পরিকল্পিত ভাবে খুনের রাজনীতি করছে টিএমসি? প্রশ্নটা উঠছে।

এর পিছনে কিকি লাভ দেখছে টিএমসি?
এক্ষেত্রে সিপিএম এর ব্যাপক সংখক মানুষকে খুন করে প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় সিপিএম এর ঘাড়েও চাপান যাবে। দ্বিতীয়ত যারা অ্যাকটিভ কর্মী তাদের খুনের দায়িত্ব মাওবাদীরা যে সকল অঞ্চলে নেয়নি সেখানে সরাসরি খুন করবে টিএমসি। এর ফলে সিপিএম এর অ্যকটিভ কর্মীর সংখ্যা কমবে যাতে সিপিএম এর সংগঠন দূর্বল হবে। তৃতীয়ত এর ফলে বহু সিপিএম কর্মী বিধানসভা ভোটের আগে ভয়ে কাজ করবে না।
কিন্তু টিএমসির সমস্যা অন্য জায়গায়-- তাহল নিজের দলের দুএকটা না মরলে গোটা জিনিষটার বিশ্বাস যোগ্যতা থাকেনা। কিন্তু টিএমসি কর্মীরা মরছে খুব কম। সিপিএম হত্যার রাজনীতিতে গিয়ে দেখেছে লাভ নেই। কারন এতে টিএমসি বা মাওদের সঙ্গে পারা যাবেনা। সেক্ষেত্রে মাওবাদী বা ঝাড়খন্ড পার্টির বা জনসাধারনের কমিটির কেউ মারা গেলে তাকেই নিজের শহীদ হিসাবে না তুলে ধরে টিএমসির কোন উপায় নেই।আসলে জনসাধারনের কমিটি বা মাওবাদীরা অনেকেই প্রত্যক্ষ ভাবে বা পরোক্ষ ভাবে তৃণমুলের কর্মী। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া রেখে যে কোন মাওবাদী মারাগেলেই তাকে নিয়ে রাজনীতি করে জনমত পাশে আনা যাবে। তাই দেখা গেল জনসাধারনের কমিটির কেউ মারা যেতেই তাকে মেদনিপুর থেকে আমদানি করে কোলকাতায় নিয়ে এসে মিছিল করলো তৃণমুল। ঠিক স্বপন হত্যার পরের দিন।

লাশ

মানুষ যখন চাইছে
আশু মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস,
ওরা তখন বলছে শুধু
লাশ চাইগো,লাশ।

রাখতে গদি,কাড়তে গদি,
দৌড়ে বেড়ায় ওরা,
লক্ষ্য ওদের করবে মিছিল
চাই যে নতুন মরা।

গুলের শিলা পুঁতছে ওরা
বাড়ছে বেকার রোজ,
গোদের ওপর বিষফোড়াটার
রাখছেনা কেউ খোঁজ।

আত্মহনন বাড়িয়ে দিতে
বাড়বে রেলের লাইন,
বাড়ীর কাছেই মরবে বেকার
মৃত্যুর সানসাইন।

বহুতলের রমরমা আজ
বেওসায়ীদের বাসা,
খুইয়ে জমি কাঁদছে লাঙ্গল
কাঁদছে গ্রামের চাষা।

কারখানা চুপ,বন্ধ যে চাষ
সারা বাংলায় ত্রাস,
সমস্বরে বলছে ওরা
লাশ চাইগো,লাশ।

রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১০

সাগরচুরি ~ দীপক

সাতসকালে তে-মাথার মোড়ে
দু বাহু তুলে পাগলটা নৃত্য করে

---হাঃ হাঃ হাঃ
পুকুর নয় দিঘীও নয়
সাগর হয়েছে চুরি
আকাশ করেছে চুরি সাগর
দ্যাখো গিয়ে
সাগরে ঢেউ নেই একটিও---


পাগলের কথায় ফুটপাথের সব্জীউলি ফুটকাটে-
ওরে ও বেস্পতি শুনিছিস ?
হে হে হে , শোন শোন কথা শোন
ওলো, সাগর নাকি হইয়েছে চুরি?
সব্জীউলির টিপ্পনীতে বেস্পতি'তো বটেই
বেবাক পথচারীর খ্যাক খ্যাক হাসি

সম্যক অর্থ উপলব্ধকারীর অধিকাংশ
পুকুর চুরিতে এতকাল যারা অভ্যস্ত
সাগর চুরিতে তারা যথারীতি নিস্পৃহ

শুধু, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের চোয়াল হয় শক্ত

শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১০

মা'র দাবী ~ অনামিকা

আশায় আশায় থাকি, এ ছেলেটা বড় হলে পরে
সংসারে সুরাহা হবে। আমাদের মধ্যবিত্ত বাড়ি।
দিন আনে দিন খায়। তাই এই ছেলের ওপরে
এতটা ভরসা করি। ছেলে বড় হোক তাড়াতাড়ি।

বিনা মেঘে বাজ যেন নেমে এল হতচ্ছাড়া দিনে।
প্রত্যয় করিনি আমি। আমার উঠোনে ভাসে ভেলা।
এইতো কলেজে গেল, পাড়ার দোকানে খাতা কিনে।
কি বলছ? সে নাকি নেই? খবর দিয়েছে কালবেলা।

ভাত বেড়ে বসে আছি, সেই স্বপ্ন ফেরেনি এখনও।
ওরা বলে দাগ আছে, দংশনের দাগ অবিকল
চোখে দেখ জল নেই। এই বুকে জল নেই কোনও।
সাপটাকে না মারলে, পৃথিবীতে নামবে না জল।

হেন্তালের লাঠি নেই। আমি নই চাঁদ সদাগর।
বুক ভরা শোক আর ঘৃণা আছে সাগরপ্রমাণ।
শিল্প নয় কৃষি নয়, নয় সপ্তডিঙা মধুকর!
আমি তো মা। আমি চাই তোরা ওই সাপ মেরে আন।

বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০

নেপথ্য ডায়ালগ ~ অনামিকা

ইনি---

লালুদা'র রেখে যাওয়া প্রকল্পগুচ্ছ
পাথরে পুঁতছি আর নাচাচ্ছি পুচ্ছ।
পেট্রোলে ফের দাম বাড়ালে যে টাকা তিন,
সেটা যে খারাপ খুব, বলেছি কি কোনও দিন?
লিটার কিনতে টাকা লেগে যাবে ষাটটা।
জনগণ মানছে না এইসব ঠাট্টা!
এলে না প্রণবদাদা, ছিল কথা দেয়া না!
"বি টিম"রা কবে থেকে এত হল সেয়ানা?

তিনি---
আদরের বোকা খুকি শুধু শুধু রাগলি!
অধীর না হলে পরে কে জেতাতো, পাগলি?
এই যে বলছি এত,পৌঁছেছি এ্যাদ্দুর,
পারতাম এত কিছু, না হলে জঙ্গীপুর?

ইনি ---
ন্যাকা ন্যাকা কথাগুলি অন্যকে বুঝিয়ো।
সব বুঝি তহলকা ... টেলিকম ... টু জি ও।
নাশকতা! ফুটো করে দিল হেলিকাপটার,
মুন্ডু চিবোবো ওই অধীরের বাপটার!
সব খেলা জানি আমি। ধর্মের জিগিরে,
দখল করব আমি ও সাগরদীঘিরে!

এনডিএ জানে আমি কোনও কিছু মানিনি।
এই আছি এই নেই ... বড় অভিমানিনী!
সেই আমি টুঁ অবধি করছিনা শব্দ।
কেননা অনেক বড় আমার আরব্ধ।
দুর্নীতি হলে হোক। প্রতিবাদ চাইনি।
বাংলাকে একা খাব, আমি একা ডাইনি!

তিনি---
মনোমোহনের গেছে ছিরকুটে দন্ত।
সুপ্রিম কোর্ট না কি করাবে তদন্ত!
এনডিএ ইউপিএ উঠেছিস দু'টোতে।
সব নৌকোই ফেঁসে বড় বড় ফুটোতে।
দু'হাজার এক থেকে দু'হাজার দশ তক
কী বেরোবে ভেবে ভেবে ফেটে যায় মস্তক!

ইনি---
কী ভাবে সিএম হব, আমি নিজে? তা ছাড়া,
উপোসী রয়েছে সব ছারপোকা বাছারা!
মিডিয়াতে তড়পাই। বাস্তবে পারি না।
নেই গতি, তাই সতী! ইউপিএ ছাড়ি না।

তিনি---
ছোটো হলে ছোটোখাটো লাথিটাথি প্রাপ্য।
ভাবিস না এ'কাহিনি এখনই সমাপ্য!

ইনি---
ভান করি চটবার। তুমি কেন চটে যাও?
যাই হোক ... জোট চাই। ভোট এলে জোটে নাও!

তিনি---
তাই বল! পথে আয় ... করিস না ফোঁসফোঁস।
চোখ মোছ। আয় তু ... তু... এসে পদতলে বোস!

মা ... মাটি ... ফানুস ... ~ অনামিকা

বীজের থেকে গাছ জন্মায়, এ'তথ্য খুব শিক্ষণীয়।
সিঙ্গুরে বীজ পুঁতলে, এবার সাঁকরাইলের বৃক্ষ নিয়ো!

কোথায় জমির দশ শতাংশ ফেরত দেবার ফেরেব্বাজি?
পার ফ্যামিলি একটা করে চাকরি সবাই চাইছে আজই!

আসল তথ্য জানত সবাই, বক্তৃতা সব ভাঁওতা বেজায়।
মিথ্যে কথার চ্যাম্পিয়নের কুম্ভীরাশ্রু মঞ্চ ভেজায়।

আম বাংলায় সবাই চেনেন ঘাসের নীচের ভাঁওতা শেকড়।
খ্যাঁটন সেরে অনশন আর সাক্ষীগোপাল চারশ' একর!

ডক্টরেটের মিথ্যে মায়ায় লোকসভা পায় নকল নথি।
জয়প্রকাশের গাড়ির মাথায়, তুমিই কি সেই নৃত্যবতী?

পাইয়ে দেবার রাজনীতিতেও ভাঁওতাবাজী করলে ঠিকই;
একবছরে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অশ্বডিম্ব পাড়ল কী কী?

মিথ্যেকথার জোঁকের মুখে আন্দোলনের লবন দিলে,
যেমন কাণ্ড ঘটার কথা, তাই ঘটেছে সাঁকরাইলে।
------------------------------------------
*সাক্ষীগোপাল= সঠিক সময়ে মুখে কুলুপ আঁটা হাড় হিম শয়তান গোপালটি, যে পুরো ঘটনার সাক্ষী ছিল,
কিন্তু শিল্পধ্বংসের সর্বনাশের সময় টুঁ শব্দটি করেনি!

মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১০

ম্যাও পাঁচালি ~ রাত্রি

শোনো শোনো সুধিজন সুশীল speaking...
পুরনো আ্যজেন্ডাতেই we are sticking !!
যত পাবি হার্মাদ করে ফ্যাল শেষ।
চাপ নেই বারুদের stock আছে fresh ।।
তুলে আন বাড়ী থেকে সম্ভব হলে ।
ধড় থেকে মুন্ডুটা পিস্ করা গেলে ।।
শুইয়ে দিস বডিটাকে পোসটার সমেত ।
ভোরবেলাতেই হবে live update ।।
একবার মিডিয়াতে গেলে crack করা ।
আমরা তো রেডি নিয়ে নোটের তাড়া ।।
পৌছবে স্নাইপার, wireless phone,
গুলি বোমা পেটো @ মাওবাদী zone ।।
মিডিয়াওয়ালারা তোর শ্যুটিং-এ এলে ।
গামছায় মুড়ে মুখ পিছন ফিরে ।।
release চাইবি তোরা "বিপ্লবিদের" ।
কারাবাস course শেষে শুরু হবে ফের ।।
নাম mention করে দিদি দেবেন খেতাব ।
সঙ্গে মেডেল পাবি চপ্পল ছাপ ।।

ফর্ম বনাম কনটেন্ট ~ অনামিকা

ফর্মে যদি ঘাটতি থাকে সেইটি ক্ষমার যোগ্য।
কনটেন্টের ঘাটতি যেটা, সেইটি কিন্তু রোগ গো!
ভুল ধরেছ বেশ করেছ। ভুল সে শুধু ফর্মে।
অল্পস্বল্প ভুল তো হবেই থাকলে কাজে কর্মে।
কিন্তু যখন প্রমাদ সেঁধোয় কনটেন্টের মধ্যে
ধ্বস্ত সময় চাইবে ফেরত ... যা নিয়েছিস শোধ দে!
শোধ কে দেবে? তোমরা তখন চতুর হাঁটায় চলায়
ফল খাচ্ছ বৃক্ষে উঠে ... কুড়োচ্ছ গাছতলায়।
কনটেন্টে ভেজাল তবু নিখুঁত থেকে ফর্মে,
একসঙ্গেই বিরাজ কর, জিরাফে আর ধর্মে!
যাদের জোরে সব ক্ষমতা তাদের রাখ প্রান্তে।
ভেতরদিকে ভাঙ্গন ছিল চাওনি সেটাও মানতে!
পরস্পরকে হারাও যেন ম্যাঞ্চেস্টার চেলসি।
তোমরা আমার জোনাল ... ডিসি ... চোখের মণি এলসি!
দশ আঙুলের মুক্তো প্রবাল মার্ক্সকে করে ঠাট্টা।
বড়দা খেলেন সুপারলোটো, ছোড়দা তুমুল সাট্টা।
বড়দা' খোঁজেন আবগারি মদ, চুল্লু শোঁকেন ছোড়দা।
আমার উঠোন দাপিয়ে বেড়ায় অসভ্য আস্পর্ধা।
মিডিয়াদের দোষ দিওনা। ওদের কাজই কেচ্ছা।
নিজেও তো কই সামলাওনি আত্মহনন ইচ্ছা।
নিজের পক্ষে তুলবে হাওয়া ওদের এমন গুণ নেই
বাতাস তোমায় ছাড়ছে তোমার উপার্জনের পুণ্যেই।
তোমার ভরসা করছি না আর। সাজছি নিজের বর্মে।
সামনে লড়াই, ফিরবো নিজেই কঠিনতম ফর্মে।

রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১০

অ্যাজেন্ডা ~ অনামিকা

ভোট চলে এল। আয় ছবিটা গোছাই।
যে করেই হোক ক'টা মৃতদেহ চাই।

তাপসী ... নন্দীগ্রাম নয় মোটে তাজা।
ঠান্ডা জিলিপি যায় কতবার ভাজা?
রাজারহাটের লোক বড়ই চতুর।
মিছিলেই আসছেনা, মরা বহুদূর!

আর বাকি যে ক'জন রোজদিন মরে,
সবই সিপিএম তারা, বলছে খবরে।
বুদ্ধিজীবীরা তাই বড় চুপচাপ।
সিপিএম মরলে কি কাঁদা যায় বাপ?

উসখুস করি রোজ। কী যে করি আমি!
চাইছি মরুক কিছু তৃণঅনুগামী।
হায় হায়, কী উপায় বলছে না কেহ,
কোথায় কীভাবে পাই ক'টা মৃতদেহ!

ভোটের যে কমিশন ... ভারি বদমাস।
এগোতেই চাইছেনা শেষ কয়মাস।
আসলে চাকর তারা, তবু জেদি বোকা।
আজ হবে, কাল হবে, দিয়ে যায় ধোঁকা।

মানছে না মিছে কথা, ভোটার গাধারা।
গণতন্ত্রে যে কেন বোকা বোকা ধারা
অযথা বহাল থাকে। কী হবে উপায়
জনগণ শেষমেস যদি বেঁকে যায়।

কল্যান পার্থরা তারাও কি আর
দেরি হলে রাজি হবে? শুধুই বিয়ার!
এ কেমন ককটেল? আর কতকাল
মাংস খাবে না তারা, শুধু ভাত ডাল?

ভুলে গেলি তোরা সব শ্বাপদশাবক?
দামাল বাছারা ... তোরা যে করেই হোক,
বোমা হোক ... গুলি হোক ... হোক ঘনঘটা ...
সংগ্রহ করে আন ডেডবডি ক'টা।

তারপর দেখ, আমি কি দেখাই খেল!
বনধ আর অবরোধ ... সকাল বিকেল।
ততদিনে ভোট, আর ভোট হলে পরে ...
কে না জানে আমি রাণী লাশ কাটা ঘরে!

শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১০

সামনে দিন। নেই লড়াই। ~ অনামিকা

উড়বি না আর। এবার আগাম লাগাম পড়ুক পক্ষীরাজ।
পারফিউমের সন্ধান নিক অরণ্যময় গন্ধরাজ।
খুব ক্ষমতার মিথ্যে নোটিস পৌঁছোলে কেউ তোর হাতে,
কাঁপতে কাঁপতে মার্জনা চাস, এবার থেকে জোড় হাতে।
দরকার নেই আন্দোলনের, দরকার নেই টেনশনের।
সামনেই দিন শস্যশ্যামল গ্র্যাচিউটি আর পেনশনের।

এই সময়ে পাগল না কি? দুষ্ট ক্ষতয় চুলকালি!
কি করবি তুই, সার্ভিস বুক মাখবে যখন ঝুলকালি?
আইন খুঁজেছিস? আইন কখনও ক্রীতদাসদের পক্ষে যায়?
ডাকছে মালিক ... শিরদাঁড়া খোল ... আয় কেঁচো আয় ... বক্ষে আয়!
যেমন ভাবে জীবন কাটায় আর পাঁচজন ভদ্রলোক
তেমন ধারায় দিনযাপনের এইবারে তোর ইচ্ছে হোক!

বাধ্য হয়েই ঢালছে মালিক সাধ্যমতন অসন্তোষ।
তাও কি মাথা রাখবি উঁচুই। কার ভরসায়? কী আপশোষ!
 

সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১০

সেই মেয়েটা.. ~ সুকন্যা

সেই মেয়েটা নিজের কথা ভুলে,
ঠান্ডা ঘরে অপ্সরা সাজে রাতে....
নীল আলোতে শরীরের বেচাকেনা,
না বলা কথা পর্দাগুলোর সাথে।

আজকে মেয়ের পিছুফেরার নেই,
হাতে নেই তার একটুও অবকাশ....
এসেছিল প্রেম মিলিয়েও গেছে তা,
হয়েছে শেষ পলাশের উল্লাস।

মেয়েটা হারায় বিপুল জনারন্যে,
ট্রেনের ভীড়ে রেলিং আর রাস্তায়....
রঙ্গীন গেলাসে নিরুত্তাপের ছোঁয়া,
রাতের শেষে একা বাড়ী ফিরে যায়।

স্বপ্ন বুনতো মেয়েটা কাজল চোখে,
সাজানো রঙ্গীন ঝলমল পরিবার....
আঁচলেতে বাঁধা সুখের চাবিকাঠি,
শান্তির নীড়ে স্বস্তিনিদ্রা তার।

ওলটপালট হয়ে যায় সব ছন্দ,
অভাবের থাবা গ্রাস করে অভিসার....
চোরাপথের বাঁকেতে হারায় কবিতা,
পিচসড়কে শুকোচ্ছে সংসার।

এখনো মেয়েটা মিথ্যে বলতে শেখেনি,
ঘুমের ঘোরে আঁকড়াতে চায় মা-কে....
চোখেরজলে বালিশভেজ়া রাত,
ফিরিয়ে দেয়না একটা দিনও তাকে।

সেই মেয়েটা আমার কেউ নয়,
দিইনি তাকে শান্তির স্বান্তনা....
নষ্টমেয়ের ভাঙ্গামেলার দিনে,
নীলাম হয়েছে পুরোনো যন্ত্রনা।

জেদী মেয়েটার শক্ত হয়েছে মুঠি,
দিন প্রতিদিন সমাজের সাথে লড়ে....
লজ্জা ঘৃনা সংকোচ দ্বিধা পেরিয়ে,
মাথা ঊঁচু করে অন্য একটা ভোরে।

মেয়েটা আজও বাঁচার আশায় বাঁচে,
তাকায় আবার রুদ্ধদ্বারের দিকে....
নতুন সূর্য্য উঠবেই একদিন,
বিপন্নতায় চিচিংফাঁক লিখে।

কুসুমপাড়ার কুসুমগুলোকে নিয়ে,
আলোর দিকে সূর্য্যমুখী চলে....
মেয়েটা আর নিজের জন্য নয়,
রোজ লাশ হয়ে জীবনের কথা বলে।

সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১০

ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা ~ জয়দেব বসু

গান

ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা
মন জানো না ......

দিব্যি আছো, খাচ্ছো-দাচ্ছো
সকাল-বিকেল জল মাপাচ্ছো।
বাঁও মিলছে, মনে ভাবছো,
আসলে বাঁও মিলছে না।

ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা ....

ভাবছো এমন কাটবে বঁধু
ঝোলে লাউ, অম্বলে কদু,
বাড়িওয়ালার বিপত্তারণ
ভাড়াটের লর্ড শ্রীকৃষ্ণা।
মন জানো না,
ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা ?

বলছো বটে "একটু-একটু"
আসলে খুব একটু না,
জায়গাটা তো এই বাংলা,
নরওয়ে-টিমবাকটু না;
ঠগ বাছতে গাঁ যে উজাড়
কাঁকর বেছে চাল,
সদসতের সব পাঁচালী
হয়েছে জঞ্জাল ।
মন জানোনা ,
ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা ....

কাল মিছিলে হাঁটলো যারা
ভাবছো আজকে দেবে তারা?
সাঁই হাসিছেনঃ এই তো লীলা,
হাঁটছি, কিন্তু দিচ্ছি না ।

মন জানো না,
ঘরে তোর ভোটার আছে কয়জনা ....

19/ 06 / 2000

একটি জঘন্য কবিতা ~ দীপ্তানুজ দাশগুপ্ত

চল মাগি তোকে ভাসান দেখিয়ে আনি;
জলে পড়তেই মুহুর্তে দেব-দেবী
রং-ঠং ধুয়ে কাদা-,
ভেসে চলে যায় হাজারো দৈববাণী-
চল মাগি তোকে শ্মশান দেখিয়ে আনি।

আকাশ কাঁপিয়ে বইছে তুফান- ঝড়-
কালো মেঘ চিড়ে বিদ্যুৎ নামে জোরে-
তপ্ত বুলেটে মরছে লখীন্দর,
বাঁচাও বেহুলা-, দেবতার সাথে লড়ে।

চল মাগি তোকে শ্মশান দেখিয়ে আনি;
লাশকাটা ঘরে ভগবান ভয়ে কেঁপে
মুহুর্তে হয় সাদা-
মানুষ তবুও ঘুরে দাঁড়াবেই জানি-
চল মাগি তোকে ভারত ঘুরিয়ে আনি।।

বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০১০

পুলিশ ~ জয়দেব বসু

(ঋণস্বীকার: ট্রেসি চ্যাপম্যান)

যখন তোমাকে রাস্তার কোনো মস্তান
পথ আটকিয়ে শোনায় আজিব দস্তান,
আপত্তি দেখে মুখ ঠেসে ধরে কাদায়,
ধরতেই পারে, সেই তো পাড়ার দাদা ....
তখন তোমার অবস্থা দেখে কারা
হে-হে করে হাসে, কারা বিশ্বাস হারায়?

পুলিশ....

যখন তোমার দাউ-দাউ করে ঘর
তুলে নিয়ে যায় বোন-কে সওদাগর,
সে সময়ে কারা অসন্তুষ্ট শ্বাসে
অতি অনিচ্ছা, একেবারে শেষে আসে?
কারা আসতেই উলটে এবং পালটে
চার্জশিট হয় আততায়ীকেই সাল্টে?

পুলিশ....

যখন তোমার মেয়ে রাজনীতি করে,
সেই জন্যই যারা ঢুকে পড়ে ঘরে
মাঝরাতে, বিনা অনুমতিতেই, জেনো,
পাল্টাবে না কখনোই, কোনোদিনও....
তাদের নামটা জানা আছে ওগো প্রিয়,
পৃথিবীতে তারা চিরকাল স্মরণীয়.....
 

উঁহ, পুলিশ...

সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১০

লেখা আমার মা.... ~ জয়দেব বসু

লেখা আমার মা,
আমায় ছেড়ে যেন তুমি কোথাও যেও না ....

এই যে এত আলস্য আর নিজেকে এত ঘৃণা
ঘোষিত নির্বিবেক থেকে অমানদক্ষিণা,
এ-সব থেকে নিষ্ক্রমণের তেমন কোনো ভূমি
থাকলে পরে সেই মাটিতে পৌঁছে দিও তুমি।
লেখা আমার মা,
আঁচল দিয়ে আগলে রেখো, কোথাও যেও না।

বাতাস যদি নিজেকে দেয় বীজন
গন্ধ যদি নিজের ঘ্রাণে আকুল,
পানীয় যদি নিজেকে পান করে
জীবন তবে নিজের সমতুল।
লেখা কি তবে নিজেকে লিখে যায়,
মা কি আমি ....আমিই তবে মা?
আমায় ছেড়ে যেন আমি কোথাও যাই না ।

রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১০

প্রতিরোধের গান ~ অনামিকা

কথা মিশুক সুরে, বাঁচার আশ্বাস থাক গানে,
তিন পৃথিবী আটকে থাকুক ভালবাসার টানে।
পাহাড় নদী ধানের ক্ষেতে সবুজ ঘাসে ঘাসে
চাইছে মানুষ এই ছবিটাই, অজস্র ক্যানভাসে!



হিংসুটে কেউ সেই ছবিতে যখন ঢালে কালি,
মানুষখুনের উসকানিতে ছেটায় গালাগালি,
প্রত্যেকদিন একটা দু'টো তীব্র মৃতদেহ
চিনিয়ে দেয় হিংস্রতাকে, থাকেনা সন্দেহ,
ছদ্মবেশী মানুষখেকো লুকিয়ে রেখে নখ,
বুদ্ধিবিবেক পুঁজির কাছে রেখেছে বন্ধক!




রেলগাড়ীতে মালিক পাঠায় মাসিক মাসোহারা
সন্ত্রাসে দিনরাত্রি জাগে তোমার আমার পাড়া!


দারুণ ব্যথায় ঝলসে ওঠে যুক্তি এবং ক্রোধ
ভয় সরিয়ে জন্ম নিচ্ছে তীব্র প্রতিরোধ।
পুড়ছে মুখোশ, পয়সাখাওয়া খুনী নাটকবাজি।
রক্তমাখা বাংলা এবার শুদ্ধ হতে রাজী ...

বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০১০

গো ~ প্রদীপ দাশগুপ্ত

নাকের ওপরে হঠাৎ ঠেকে গেলে
ব্যাঘাত ঘটতে পারে নিশ্বাস-প্রশ্বাসে -
তাই যেন, অতি সন্তর্পনে
বুকের কাছ থেকে চাদরটা একটু তুলে -
আলতো করে টেনে মুখটা ঢেকে -
স্টেথোশুদ্ধ মুন্ডুটা উল্টোদিকে ঘুরে -
চলে গেল। সামনে পাথরের চোখে
বাবা-মা শুধু ফ্যাল-ফ্যাল।

'তোমরা এমন শোক পেও' -
উচ্চারিত হ'লনা তবুও -
মুনি-ঋষি নয় তাই - !
ভুমিহীন ক্ষেত-মজুর।

সামন্ত-মরণ-কামড়।
সন্ত্রাস, জঙ্গল-মহল।
সুর্য-ডোবার দিক থেকে
পৃষ্ঠপোষণা। ওবামা-বুশ-ওয়াশিংটন,
'প্রোজেক্ট ফর নিউ আমেরিকান সেঞ্চুরি'!

পরদিন -
'শহীদ-স্মরণে আপন ----'
আর কী কী সব বলে বলে
হাঁটলো - কয়েক-জোড়া পা -
চলি কাঁধে। তারপর?

তারপর থেকে পৃথিবী চলে আসছে,
যেমন আসছিল আগে থেকেই।

শুধু, আর কিছু মুঠি ও চোয়াল
আরো একটু শক্ত হলো।

'মাইলস টু গো' ।।

বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল ... পরিবর্তন মানে কি প্যারাডাইম্‌ শিফ্‌ট? ~ সীতানাথ বন্দ্যো

লেখার শিরোনামটি যাঁদের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকছে তাঁদের জানাই প্রথম প্রথম আমারও এমনটাই হয়েছিল। অচেনা শব্দগুলি একেবারে কানের ভিতর দিয়ে মরমে নয় হৃৎপিণ্ডে গিয়ে ধাক্কা দিয়েছিল। কিন্তু পরে সব ঠিক হয়ে যায়। ঠিক হয়ে যায় কারণ শ্যাম আমাকে সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছিল।

রুমালের বেড়াল হয়ে যাওয়ার কাহিনী এমনিতে অনেকেরই জানা। সেই যে প্রচণ্ড গরমে খোকা গাছতলায় শুয়ে ঘুম দিচ্ছে, এমন সময়ে ঘাম মোছবার জন্য ঘাসের ওপর রাখা রুমালটা খুঁজতে গিয়ে শোনে, 'ম্যাও' কী আপদ, রুমালটা ম্যাও করে কেন? না দেখা গেল, রুমাল আর রুমালই নেই, হয়ে গেছে বেড়াল। আর বেড়াল তো 'ম্যাও' করবেই।


সুকুমার রায়ের আমলেই যদি এমনটা ঘটে থাকে তাহলে বিজ্ঞানের এই অগ্রগতির যুগে এমন হলে আর অবাক হওয়ার কী আছে? এসব এখন হামেশাই ঘটছে। কিন্তু 'প্যারাডাইম' শব্দটা আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে শ্যামের মুখেই প্রথম শুনেছিলাম।


শ্যামের কথা বলছি, কিন্তু এতক্ষণ তার পরিচয় দিইনি। শ্যাম ছিল যাকে বলে আমার সহপাঠী এবং বন্ধু। যে বয়েসে ছেলেরা এর গাছের আম, ওর বাড়ির মুরগি চুরির সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ বইও পড়তে শেখে, সেই বয়েসে ওর সঙ্গে আমার সখ্য ছিল অটুটু। শ্যামের একটা খুব বড় গুণ ছিল, যেজন্য আমরা সকলে ওকে শ্যামখুড়ো বলে ডাকতাম, বড়দের মতো অনেক বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের একেবারে তাক লাগিয়ে দিত। আমাদের কিশোর বয়েসে সকলে রহস্য রোমাঞ্চের যে বই কাড়াকাড়ি করে পড়তাম, তা হল স্বপনকুমারের লেখা দীপক চ্যাটার্জির কাহিনী। বাড়িতে গোয়েন্দা গল্প পড়া বারণ ছিল না, কিন্তু তা সীমাবদ্ধ ছিল ব্যোমকেশ বক্সী কিংবা হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জয়ন্ত-মানিকে। অন্য সব সিরিজ আমরা স্কুলের টিফিনের পয়সা আর বাড়ির লোকের চোখ বাঁচিয়ে কিনতাম। তাতে বইটা হাতে আসতে একটু দেরি হতো ঠিকই কিন্তু তখন আমাদের কাছে সেটাই ছিল অনেক। এইসব দিনেই সকলেমিলে গোল হয়ে বসে প্রথম দু-এক পাতা পড়ার পরই শ্যাম গল্পের শেষে কী হবে, অপরাধীই বা কে, এসব অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিয়ে আমাদের অবাক করে দিত।


শেষে অবশ্য একদিন শ্যামের মেজদাদা আমাদের সকলের সামনে ওর কান পেঁচিয়ে ধরে বলেছিলেন 'হ্যারে, নতুন যে বইটা কাল কিনে এনেছি, ''খুনী কে?'' সেটা কোথায় রেখেছিস?' তখন জানা গেল, শ্যাম সব গল্পগুলো আগেই বাড়িতে পড়ে নিয়ে রহস্যভেদের ভান করে আমাদের চমকে দিত।


তবে সেজন্য অবশ্য আমাদের বন্ধুত্বের কোনও হানি হয়নি, কারণ অন্য অনেক দিকে শ্যামের ওরিজিনালিটি ছিল অকৃত্রিম। তারপর অনেক বছর কেটে গেছে। সাতাত্তরে স্কুল, তারপর কলেজ পাস করে আমরা কে কোথায় ছিটকে গেছি। আমাদের গ্রামের স্কুলের কয়েক বছরের সিনিয়র জগাদা নামকরা সাংবাদিক হয়েছে। তাকে দেখে আমারও শখ হয়েছিল সাংবাদিকতা করবার। আমার বাবা ছিলেন সেকালের আদর্শবান হেডমাস্টার, ছেলেদের জন্য কিছু করে বা রেখে যাননি। কলেজে 'বছরের জন্য এস এফ আই-এর দলে ভিড়েছিলাম, কিন্তু সেজন্য কোনও পুরস্কার বা চাকরি জোটেনি। ছেলে পড়ানোর পাশাপাশি 'স্টিং অপারেশন'-এর মতো দু'য়েকটা স্কুপ নিউজ করতে পারলেই কেল্লা ফতে করতে পারতাম, কিন্তু হল না। ২০০৭ সাল নাগাদ আবার একদিন শ্যামের সঙ্গে দেখা।


আমাদের গ্রাম ততদিনে গঞ্জে পরিণত হয়েছে। কলকাতা শহর এগিয়ে আসায় আমরা এখন প্রায় শহরের উপকণ্ঠে। দেখলাম আমার এক ছাত্রের পাশের বাড়িতে একটা ঘর ভাড়া নিয়ে শ্যাম আপিস খুলেছে। আপিসের নাম অদ্ভুত, তবে শ্যামের সঙ্গে মেলে। 'দি আইডিয়া।' আমার সঙ্গে দেখা হতেই জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে চা খাওয়াল। আর সেখান থেকেই শুরু হল এই পরিবর্তন বা প্যারাডাইম কাহিনী।


শ্যামের কথা শুনে একটু অবাকই হলাম, নাকি আইডিয়া বিক্রি করতে চায়। লোককে ভুজুং দেবার ক্ষমতা চিরকালই ওর ভাল কিন্তু তাই বলে পয়সা নিয়ে আইডিয়া কেনা! তবে শ্যামের জ্ঞানের গভীরতা দেখে আরও বিস্মিত হলাম। বিদেশের বিশেষ করে মার্কিন দেশের পণ্ডিতেরা বাজার বিস্তার নিয়ে যেসব গবেষণা করেছেন, সেসব নাকি ওর নখদর্পণে। ওসব দেশে নাকি এখন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে গবেষণা হয়, কারণ তার পরিপ্রেক্ষিতেই তৈরি হবে ওদের 'থিওরি অব মার্কেটিং' শ্যাম বললো, 'আমার কাজটা হল ঠিক উলটো, ''মার্কেটিং অব থিওরি'' আইডিয়া বেচা। কোনও লক্ষ্যে এগোতে হলে কিভাবে পাবলিকের কাছে নিজের কথাগুলো নিয়ে যাওয়া যায় সেটার ট্রেনিং দেব আমি।' 'বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলো তো আইডিয়া বেচে'— আমি বললাম। 'সে তো কর্পোরেট সেন্টারকে। আমি বেচব অন্যদের।' বললো শ্যাম। 'শ্যাম কোত্থেকে জানলি  এসব?' আমি জিজ্ঞেস করলাম।


'পিসির কাছ থেকে।' শ্যাম বলল।


‍‌‍‍‌পিসি?


শ্যাম হেসে ওর পার্সোন্যাল কম্পিউটারটা দেখাল। 'সব নেট ঘেঁটে বের করেছি বস।


তখনই ওর কাছে প্যারাডাইম সম্পর্কে জানলাম। কী জানলাম তা ক্রমশ প্রকাশ্য।


'কাল অফিস। একটা ক্লায়েন্ট আসবে। মালদার পার্টি। আইডিয়াটা গছাতে পারলে একটা লং টার্ম অর্ডার পাব বুঝলি। চাইকি ভবিষ্যতে স্টেটের ইনফর্মেশন অ্যান্ড কালচার মিনিস্টার হয়েযেতে পারি।'


আমি হাঁ হয়ে গেলাম।


'কিন্তু খুব সিক্রেট। যা জানবি, শুনবি, কাউকে বলতে পারবি না। আর নিজের ডিজগাইস, ছদ্মবেশে থাকবি।'


বুঝলাম ছেলেবেলায় পড়া গোয়েন্দা গল্পের পোকাগুলো এখনও ওর মাথার মধ্যে নড়েচড়ে বেড়ায়। যাইহোক আমিও স্কুপ নিউজের এই সুযোগটা ছাড়লাম না। পরদিন শ্যামের অফিসে একটা টেবিলের ছদ্মবেশ নিয়ে বসে পড়লাম।


ক্লায়েন্ট সবিতাবাবু। সবিতা সামন্ত। সম্পন্ন ব্যবসায়ী। একটি আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতা। এককালে বহু জমিজমার মালিক ছিলেন কিন্তু ...বামফ্রন্ট সরকার (সবিতাবাবু এক্ষেত্রে একটি ভারী গালি ব্যবহার করেন) অপারেশন বর্গা করে সেসবের অধিকাংশ কেড়ে নিয়েছে। এর বিহিত চান তিনি। আর আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতার অর্থ, তিনি তাঁর অঞ্চলে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, এবং তার নামের আগে 'অল ইন্ডিয়া' এই শব্দবন্ধটি বসিয়েছেন।


সবিতা সামন্ত এলেন দামী গাড়ির কনভয় হাঁকিয়ে। পরে জেনেছিলাম তাঁর নিজেরটি ছাড়া বাকি সবগুলোই ভাড়া করা। রাজনীতি করতে গেলে এমন ঠাঁটবাঁট বজায় রাখতে হয়, এটা ছিল তাঁর নিজস্ব থিওরি। দেখলাম দলের প্রধান হলেও তিনি স্বল্পভাষী। তাঁর হয়ে মূলত কথা বলছিলেন তাঁর দলের উপনেতারা। পরমার্থ ভট্টাচার্য, বকুল রাহা, বদন দত্ত তরুণ তুর্কি চাঁদ হালদার। আমি তার দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র দেখে চমৎকৃত হচ্ছিলাম। শ্যাম সকলের জন্য বরফঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্ক আনালো এবং কিঞ্চিৎ গরম হওয়া পর্যন্ত রাখল আমার ওপরেই। যাহোক, স্কু‍‌পের জন্য এটুকু কষ্ট সহ্য করা যেতেই পারে। 'সরাসরি কাজের কথায় আসা যাক।' বলল শ্যাম। 'আপনারা এই বামফ্রন্ট সরকারের পতন চান এবং রাইটার্সের দখল নিতে চান, এই তো?'


সবিতাবাবু সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন।


'দাদার অনেকদিনের শখ ওটাকে বেগ্নে রঙে দেখবেন। বেগুন দাদার প্রিয় সবজি।' বললেন পরমার্থ।


'আর টমেটো দু-চোখের বিষ।' বলল চাঁদ হালদার। সবিতাবাবু স্মিত হাসলেন।


বদন : কেসটা হল, কদিন ধরে দাদার মরহুম বাপ স্বর্গ থেকে দাদার স্বপ্নে এসে ল্যান্ড করছেন। মৃত্যুকালে তাঁর ইচ্ছে ছিল একটা ধর্মস্থান তৈরি করার।


বকুল : কিন্তু যে জমিতে সেটা করবার কথা বলছেন, সেটা ওই বর্ষায় বেহাত হয়ে গেছে


চাঁদ : হাত কেটে ফেলব এবার। গাঁট্টা মেরে পাট্টা কেড়ে নেব


পরমার্থ : আঃ চাঁদু। আসলে ছোটবেলায় দাদা ক্যালেন্ডারে দেখেছিলেন (পরমার্থ দু-হাতের তর্জনী দিয়ে ক্যালেন্ডার দেখালেন) 'যত মত তত পথ' যে বিল্ডিংটা তৈরি হবে তার চার মুখে চারটে ধর্মস্থান। পাশে পুকুর। ক্যালেন্ডারে অবশ্য তিনটে ছিল।


বকুল : জল, পানি, ওয়াটার। শিখরা কী বলে জলকে?


বদন : জিজ্ঞেস করে নেব। ট্যাক্সির লোকেদের সঙ্গে আমার ্যাপো ভাল।


পরমার্থ : এতে হবে কি, চার সম্প্রদায়ের ভোটও মিলল, জমি উদ্ধারও হল, আবার ধর্মস্থানও বানানো গেল। দাদার অনেকদিনের বাসনা।


শ্যাম : আপনাদের কথা শুনলাম। এবার আমি যা বলব, শুনুন। পছন্দ হোক বা না হোক, প্রথমেই টিভির টক শো' মতো থামিয়ে দেওয়া চলবে না।


সবিতাবাবু : বলুন।


শ্যাম : ইংরাজীতে একটা কথা আছে, প্যারাডাইম।


বদন : পায়রার ডিম? শান্তির প্রতীক?


চাঁদ : প্রতীক কী, ডিম শুনলে না? ডিমের মধ্যে শান্তি ঘুমিয়ে আছে


শ্যাম : হ্যাঁ তা দিলে ফুটে বেরোবে। ওসব পায়রার ডিম টিম নয়। প্যারাডাইম। PARADIGM — মানে হল, একটা নির্দিষ্ট ধারণা, চিন্তা, মূল্যবোধ এসব। একটা দৃষ্টিভঙ্গি।


বদন : দূর ওসব দিয়ে কী হবে। সত্যিকারের পায়রার ডিম হলেও না হয় ভেজে খাওয়া যেত।বদন নিজের রসিকতায় হাসেন। সবিতাবাবু বিরক্ত হন।


শ্যাম : আগেই বলেছি, বাধা দেওয়া চলবে না।


পরমার্থ : আঃ বদনা চুপ কর। আপনি বলুন।


শ্যাম : শুনুন, পশ্চিমবঙ্গে যে অ্যাদ্দিন ধরে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আছে তার কারণ হল


পরমার্থ : কারচুপি কারচুপি। বিশাল কলকাঠি নাড়া হয় এর পেছনে। অনেক ডিলিং


বদন : সিক্রেট কিলিং


বকুল : জাইগ্যান্টিক মেশিনারি


সবিতাবাবু মাথা নাড়েন।


শ্যাম : উহু ওভাবে ভাবলে ব্যাপারটা গুলিয়ে যাবে। আমার assumption  হল, মানুষের একটা বড় সমর্থন আছে ওঁদের পেছনে। বামপন্থাকে পছন্দ করে বাংলার একটা বড় অংশের মানুষ। ভরসা করে।


বকুল : ওসব ‍‌বিদেশী মতবাদ - টতবাদে আমাদের দরকার নেই। রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী, নেতাজী থাকতে আবার স্ট্যালিন, লেনিন কেন?


চাঁদ : সামনে পেলে কুকুর লেলিয়ে দিতাম। সবিতাবাবু চাঁদের দিকে তাকিয়ে সমর্থনসূচক স্মিত হাসি হাসেন।


শ্যাম : সেসব ক্ষমতায় এলে করা যাবে। কিন্তু যেটা বলছিলাম, আমাদের রাজ্যে বামফ্রন্টের লাগাতার জয়ের ফলে মানুষের একটা ধারণা হয়েছে যে, এই বামপন্থীরাই আরো অনেকদিন ক্ষমতায় থাকবে। এটা প্যারাডাইম নাম্বার ওয়ান। status quo oriented paradigm — আর এই যে এঁরাই আগমার্কা বামপন্থী, এটা প্যারাডাইম নাম্বার টু।


বকুল : তো?


শ্যাম : এটাকে ভাঙতে হবে। কিন্তু দক্ষিণপন্থী কথাবার্তা বলে হবে না। ওসবে কাজ হয় না এটা প্রমাণিত। বলতে হবে বামপন্থাই ঠিক পথ। কারণ পুঁজিবাদের দাঁত নখ যত বেরিয়ে আসবে, মানুষ ততই বামপন্থার দিকে ঝুঁকবে।


পরমার্থ : এই আপনার আইডিয়া? তো আপনি মশাই ওঁদের হয়ে কথা বলছেন?


শ্যাম : অধৈর্য হবেন না। শুনুন। কিন্তু সেই বামপন্থার প্রতীক হবেন আপনারা।

ঘরে কিছুক্ষণের জন্য অপরিসীম স্তব্ধতা নেমে এল।


চাঁদ : আমি আগেই বলেছিলাম, ফালতু সময় নষ্ট করতে যাচ্ছ দাদা। তার চে


শ্যাম : আমার বলা শেষ হয়নি। ভেবে দেখুন, দক্ষিণপন্থী ভোটারদের সমর্থন পেতে আপনাদের অসুবিধে নেই, কিন্তু আরেকটা অংশের ভোটার, যাঁরা মনে মনে বামপন্থাকে সমর্থন করেন, কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করবার সময় সুযোগ নেই, এমন সরল মানুষজনকে যদি বোঝানো যায় যে বামফ্রন্ট নয়, আপনারাই আসল বামপন্থী, তাহলে তাঁদের সমর্থনের একটা ভাগ আপনাদের দিকে যাবে। এই যে ধারণার পরিবর্তন, ওঁরা নন, আপনারাই বামপন্থী এটাই প্যারাডাইম শিফ্ট। প্যারাডাইম টু থেকে প্যারাডাইম থ্রি। এর ফলে সরকারও পালটাবে! Status quo থেকে radical change — মূল ধারণাটাই পালটে দিলে সবকিছু পালটে যাবে।


পরমার্থ : লোকে মানবে কেন?


বকুল : হ্যাঁ ঠিক, লোকে আমাদের বামপন্থী বলে স্বীকার করবে কেন?


শ্যাম : আপনারা নিজেরা তো একথা বলবেন না। বলবেন বলিয়ে-কইয়ে লোকেরা। রেটরিয়ান্স। বলবেন দল বেঁধে সমস্বরে। বাই ওয়ার্ড অব মাউথ অ্যান্ড কো সাইটেশন। বামফ্রন্ট নয়, আপনারাই আসল বামপন্থী, এই নতুন থিওরি পাবলিকের কাছে বেচা হবে।


পরমার্থ : থিওরি বেচা, জনগণকে?


শ্যাম : রাজনীতি কিছুটা তাইই। হ্যাঁ মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যে জ্ঞান সঞ্চয় করে সেটা তার নিজের অর্জন, সেটা সলিড। কিন্তু অন্যের কাছে জেনে শুনে যে ধারণায় পৌঁছায় সেটা একটা পণ্য, সেটা তাকে বেচা যায়। অবশ্যই কায়দা করে। ভেবে দেখুন, রাজ্যে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা জন্মেছেন ছয়ের দশকের শেষে বা সাতের দশকে অথবা তারও পরে। তাঁদের কাছে বামপন্থীদের বলা কথাগুলো যেমন আপনাদের হয়ে করা প্রচারগুলোও তেমনি প্রোডাক্ট। এখন যদি তাঁদের বিশিষ্টজনেদের একটা অংশ বলেন, বলতেই থাকেন যে সরকারে থাকবার কারণে ওঁরা বামপন্থা থেকে সরে গেছেন এবং আপনারাই প্রকৃত বামপন্থী, তাহলে কিছু মানুষ প্রভাবিত হবেন বইকি।


আমি টেবিল হওয়া সত্ত্বেও বুঝতে পারছিলাম শ্যাম তার পড়া রকফেলার কার্ণেগি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ওয়ার্ক ঝাড়ছে।


বকুল : কিন্তু ওই যে বললেন বলিয়ে কইয়ে লোক, ওঁরা আমাদের হয়ে বলবেন কেন?


শ্যাম : তাঁদের Sponsor করতে হবে, তাহলেই বলবেন। আপনাদের হয়ে গণসম্মতি বা Consensus আদায় করবেন। দেশে দেশে এমনই হয়ে চলেছে। ভাড়াটে অধ্যাপক, সম্ভাবনাময় ছাত্র, বুদ্ধিজীবী।


চাঁদ : হাঁ, আইডিয়া মে দম হ্যায়।


পরমার্থ : কিন্তু বামপন্থীরা তে চুপ করে বসে থাকবে না। ওরা তো আমাদের যুক্তি খণ্ডন করার চেষ্টা করবে?


শ্যাম : সেজন্যেই কখনও কোনও সর্বদলীয় আলোচনা সভায় যাবেন না। social pluralism  বা পরস্পরবিরোধী প্যারাডাইমের সহাবস্থান তখনই সম্ভব হয় যখন কোনও সমাজে বাক্স্বাধীনতা বজায় থাকে। মজার বিষয় হল, রাজ্যে সেটা বেশি পরিমাণেই আছে, নাহলে আর আপনারা টিকে থাকতেন কিভাবে। যাহোক, ওদের নো হোয়্যার করতে হবে ওদের কথায় কান না দিয়ে। নিজেদের প্রচার চালিয়ে যান চোখ বুঁজে।


বদন : কিন্তু এসব করতে তো পহা লাগবে, Sponsor করবে কে, অনেক টাকা


শ্যাম : সেটা দেবার লোক নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। এশিয়ার দিকটায় যারা ইনভেস্ট করতে চায়, কমিউনিস্টদের বাড়বাড়ন্ত থাকলে তারা সেটা অবাধে করতে পারবে না। সেজন্যে এখানে তাদের সহায়ক সরকার প্রয়োজন। আমেরিকায় নিয়ে গবেষণা হয়েছে, 'কমিউনিস্ট থ্রেট' সত্ত্বেও ব্যবসা চালু রাখা, বাড়ানোর উপায় নিয়ে রিসার্চ। আমি একটু আধটু খবর রাখি। Philanthropic funding activity- মাধ্যমে একধরনের Social engineering কে মদত দেওয়া হচ্ছে, যাতে আমেরিকা Global, Intellectual and Economic Hegemony অ্যাচিভ করতে পারে। গোটা বিশ্বে যাতে মার্কিন প্রাধান্য বজায় থাকে।


বদন : হেসে হেজিমনি আর হিজিবিজি শুনতে একরকম। আমি মনে মনে বললাম, এসবের চেয়ে হিজিবিজবিজ অনেক ভাল সবকিছুতেই মজা পায় আর হেসে খুন হয়। নিজের জগৎ নিয়েই সুখী। অন্যের দুনিয়ার দখলদারি কেন রে বাপু!


দেখলাম সবিতাবাবু গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে হাতের কলমটা রাইটিং প্যাডের পাতার ওপর বোলাচ্ছেন। শ্যাম বলে চলেছিল


একটা ধামাকা তৈরি করতে হবে। বামপন্থীদের আর ওদের নিজেদের নামে ডাকবেন না। একটা অন্য নাম দিয়ে দিন। এই যে অপারেশন বর্গা করে অনেকের সর্বনাশ করেছে, নাম দিন বর্গী। আদতে এটা অবশ্য মারাঠী সেনাবাহিনীর নাম, বারগীর। কিন্তু লোকে অত খবর রাখবে না।


বদন : বাঃ, বর্গী-ইতে ধান খেয়েছে, খাজনা দেব কিসে


বদন উত্তেজনায় টেবিল, অর্থাৎ আমার মাথা বাজিয়ে বললেন।


পরমার্থ : ওটা বুলবুলি হবে


শ্যাম : Sponsored পণ্ডিতদের দিয়ে বলিয়ে নেবেন। শুদ্ধ হয়ে যাবে। আর Paradigm shift বা পরিবর্তনের একটা স্লোগান তৈরি করুন। ধরুন, বদলাও। এটা বাংলা-হিন্দি দুটোই হল। নানাভাষার client-দের কাছে পৌঁছতে গেলে multilingual হওয়া জরুরী। নিয়ে আমার একটা রিসার্চ পেপার আমি ওদেশের একটা ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়েছি।


শ্যাম এটা পুরোদস্তুর ব্লাফ দিল বুঝলাম, ওঁদের ইমপ্রেস করবার জন্য। অবশ্য আমিও ছাত্রদের মায়েদের ক্ষেত্রে এমনটা করে থাকি।


বদন : বদলাও এর মধ্যে বেশ একটা বদলা বদলা গন্ধ আছে


শ্যাম : এবার থেকে আপনারাই আসল বামপন্থী নির্বাচনী ইশ্তেহারেও কিছু স্লোগান রাখবেন বিলগ্নীকরণ চলবে না। মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে হবে

পরমার্থ সবটা পারব না, তাছাড়া ওদিকের লোকেরাও তো আছেন


শ্যাম : বাঁচিয়ে সাঁচিয়ে করবেন, ওঁরা বুঝবেন ঠিক। পাবলিক না বুঝলেই হল।


বকুল : কিন্তু বামপন্থী হতে গেলে তো আন্দোলন চাই, সেটা কীভাবে।


শ্যাম : হবে। লোককে কিছুদিনের জন্য ভুল বুঝিয়ে, একটা জিগির তুলে খেপিয়ে দেওয়া কিছু কঠিন কাজ না। এমনিতে জীবনযুদ্ধে সব জর্জরিত, প্রতিকারের আশায় ভুল রাস্তায় যেতেও পারে। কিন্তু মিডিয়াকে সঙ্গে চাই। সবরকম। প্রিন্ট, টেলি-মিডিয়া, এমনকি রেডিও। বিজ্ঞাপন হবে, বদলাও, বদলে দাও, চল বদলাই।


বদন 'সুরভিত অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বোরোলিন'-এর সুরে স্লোগানটি গেয়ে খুশি হলেন।


শ্যাম : ওরা সকলে মিলে যখন আপনাদের ছবি দেখাবে, আপনাদের হয়ে বলবে, লিখবে সবিতাবাবুই কৃষক শ্রমিকের আশা, মধ্যবিত্তের ভরসা সকলে মিলে বলবে বদল চাই, বদলে দাও


চাঁদ : (উত্তেজনায়) ওঃ, জমে যাবে মাইরি। আমার কতদিনের সপ্নো আরবে একটা তেল কোম্পানির মালিক হব


শ্যাম : কিন্তু সবিতাবাবু, দলের প্রধান হিসেবে আপনাকে প্রচণ্ডভাবে বক্তৃতা করা রপ্ত করতে হবে। হিটলার যেমন করতেন, প্রচুর মিথ্যে আর আধা সত্যি মিলিয়ে মিশিয়ে মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিতেন আর তারা উন্মত্ত হয়ে ইহুদী আর কমিউনিস্টদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগাত, তাদের নিকেশ করত। বিষয়ে গোয়েবল্ হলেন গুরুদেব। আমি আপনাকে সাহায্য করব।


বুঝলাম শ্যাম তথ্যমন্ত্রী হবার পথে একধাপ এগোল।


সবিতাবাবু : কিন্তু সেটা, মু-উশ্কিল।


শ্যাম : কেন?


সবিতা : আমি ইয়ে একটু তো-ওত্লা। মিথ্যে কী, -ওত্যিটাও মুখ দিয়ে হোঁ-ওচট খেয়ে বেরোয়। আর -ইংরিজিটাও


পরমার্থ : আমায় দিয়ে কি -হবে?


একথায় সবিতাবাবু পরমার্থর দিকে এমন রাগত চোখে তাকালেন যে এবার তিনিও হোঁচট খেলেন।


সবিতা : (হাতের রাইটিং প্যাডটা শ্যামের দিকে বাড়িয়ে ধরে বললেন) এটা হো-ওর্ডিং কেমন আসবে?


পরমার্থ : দাদার হাত চলে দারুণ। কবি, ছবিতা, মানে ছবি, কবিতা দারুণ বেরোয়। আমাদের সব স্লোগান ওনার করা। (পড়েন)


বাংলার সবিতা

কৃষকের অন্নদাতা

শ্রমিকের পরিত্রাতা

মধ্যবিত্তের ভাগ্যবিধাতা

শাসকের অক্ষমতা

অত্যাচারীর পরাধীনতা

ন্যায়ের পরাক্রমতা


শ্যাম : হ্যাঁ মিলগুলো রেকারিং ডেসিমেলের মতো আসছে বটে

এরপর সত্যি বলতে কি আমার একটু ঘুম ঘুম পেয়ে গিয়েছিল, তাই সবিতাবাবুরা কখন চলে গেলেন টের পাইনি। টেপ রেকর্ডার, ক্যামেরা, মোবাইল তো আমার ছিল না, কাগজে নোট, নিচ্ছিলাম, তাই শেষটায় কী হয়েছিল বলতে পারব না। তবে সবিতাবাবুর সঙ্গে ডিল্টা হয়নি। সম্ভবত ওই কথা আটকে যাওয়ার কারণেই।


তারপর বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছে। চারপাশে অনেক পরিবর্তন দেখছি। শ্যামের বলা কথাগুলোর সঙ্গে মিলেও যাচ্ছে, কিন্তু ওরই কোনও পাত্তা নেই। অফিস উঠে গেছে। একবার বলেছিল, এসব কাজ করতে বিদেশী ডিগ্রি দরকার হয়। জাহাজের খালাসি হয়ে সেই ডিগ্রি আনতে চলে গেল কিনা কে জানে!


স্কুপটা নিয়ে গত বছর জগাদার কাছে গিয়েছিলাম। পড়ে মুখ ব্যাজার করে বলল, এটা না হয়েছে নিউজ, না ফিচার। তাছাড়া এসবের প্রমাণ কই? আর ভাল কথা বলছি, লাইনে আসার চেষ্টা করিস না। সেদিন গোপন মিটিং কভার করতে গিয়ে দেখলি না টেলি মিডিয়ার মেয়েটাকে আরেকটা মেয়ে সর্বনাশ করে দেবে বলে হুমকি দিল? মারধর, ক্যামেরা ভাঙা তো ছিলই, এটা আবার একটা নতুন হ্যাজার্ড। তুই  আনাড়ি, সবার সামনে এরকম ধমকি দিলে আর জীবনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবি?'


জগাদা অবশ্য আরও খারাপ ভাষায় কথাটা বলেছিল। আমি চলে এসেছিলাম।


এরমধ্যে আমার জীবনেও একটা বড় পরিবর্তন ঘটে গেছে। এস এস সি পাস করে চেতনা আমাদের এখানকার একটা স্কুলে কাজ নিয়ে এসেছিল। দু'জনের প্রিয় বিষয় একই। বাংলা। বাংলার মাটি, বাংলার জল। যেদিন পাকাপাকিভাবে আমার জীবনে এল, এল লাল শাড়ি পরে। তারপর নিরুচ্চারে আমায় অনেক কিছুই দিয়েছে। আশ্রয়, নিরাপত্তাবোধ, আত্মসম্মান, ভাল কিছু করবার ইচ্ছে। ওকে পরিবর্তনের কথা ভাবতেই পারি না, তা সে যত বছরই কেটে যাক। আগতপ্রায়সন্তানকে প্রকৃত শিক্ষা দেবার কথা যখন ভাবি, তখন এক বুড়ো আদর্শবান মাস্টারের কথা মনে পড়ে বুকের ভেতরটা মোচড় দেয়।


মূলত চেতনার পীড়াপীড়িতেই লেখাটা পাঠালাম। অনেকে অবিশ্বাস বা তাচ্ছিল্য করতে পারেন, কিন্তু জবাবে তাদের আমি সুকুমার রায়েরই ছড়ার চারটে লাইন শোনাব


তুচ্ছ ভেবে সব কথা করছে যারা হেলা,

কুমড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা।

দেখবে তখন কোন্কথাটি কেমন করে ফলে,

আমায় তখন দোষ দিওনা, আগেই রাখি বলে।

 

(অনুলিখনঃ অজয় দাশগুপ্ত)