মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০০৯

ফিরে আসা ~ অনির্বাণ ঘটক

অচেনা ছুটির খোঁজে পুরোনো লাল রঙ,
গুটি গুটি হেঁটে চলা সেই দিকে,
যে দিকে শ্রেনিশত্রুর ভীড়,

বেয়নেট এ ভয় ছিল না সেদিন,
ভয় নেই আজও।

শুধু মাঝখানের কয়েক দফা গুটিয়ে থাকা শিউলি-আম-বসন্ত-মহামারী,
আজ আবার, সব ভুলে,
মিছিলের হাতেই তুলে নেওয়া লাল,

পুলিশে তো ভয় ছিল না সেদিন,
ভয় নেই আজও।

সেইদিন ডেকে নিয়েছিলাম সাত্যকি কে,
চোখের দিকে তাকাতে পারিনি ওর,
ঝোপের পিছনে পড়ে থাকা বাকিটার দিকেও না,

রক্ততে তো ভয় ছিল না সেদিন,
ভয় নেই আজও।

কিন্তু,

আজ যখন,
দুঃসময়,
দীর্ঘ দিন,
ক্লান্ত শ্বাস,
আজ যখন,
টুকরো লাল,
জিভ শানায়,
রক্তপাত,
আজ যখন,
জীর্ণ বুক,
ভাঙ্গছে রোজ,
ভুল বোঝায়,
আজ যখন,
দিক ভুলে,
খেলছে যুগ,
সর্বনাশ,
আজ যখন,
মৃত্যুবাণ,
লক্ষ্য এই,
কলজেটাই...

তখন ধীর পায়ে হেঁটে চলা সেই দিকে,
যেদিকে শ্রেণীশত্রুর ভীড়,
যাদের কলজের বিনিময়ে
আজ আমি আশ্চর্য গৃহপালিত,
আজ আমি অদ্ভুত দৈনন্দিন

ক্ষমা চাইতে সেদিনও ভয় পেতাম,
ভয় পাই আজও।

সেদিন ছিলো ৩ রা এপ্রিল, ১৯৭০ ... উৎসব

দ্বিতিয় যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দেওয়া হল ১৬ ই মার্চ। একটা অদ্ভূত বাংলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিলো ব্রিগেডের মিটিং থেকে, তারিখ টা না ঘোষোনা করে। যেদিন অজয় মুখার্জি পদত্যাগ করবেন, তার পরের দিনই বন্ধ!

১৭ ওই সকাল থেকেই (আগেই প্রস্তুতি ছিলো) সারা পশ্চিম বঙ্গ তে অন্ধকারের জিবরা নখ , দাঁত বার করেছিল আর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সি পি আই এম কর্মিদের ওপর। সেদিন সকাল থেকেই শুরু হয় আক্রমণ , চারিদিকে আহত এবং নিহত হতে থাকেন কমরেড গন। নৈহাটির গৌরিপুর জুট মিলের গেটে পিকেট করতে গিয়ে গুলি খান কর্মিরা, শ্রমিকেরা, কয়েকজনের প্রানহানিও হয়। টুকরো টুকরো অনেক ঘটনা ঘটে যায় সারা বাংলাতে। এরই মধ্যে কুন্তিঘাট স্টেশনে কমরেড ননী দেবনাথ কে মেরে টানতে টান্তে নিয়ে গিয়ে কেশরাম রেয়নের বয়লারে ফেলে দেওয়া হয়। এর পর থেকে নেমে আসে আঘাতের পর আঘাত। এলাকার পর এলাকাতে শুরু হয় গুন্ডাদের সাথে পূলিসের ঘোরা-ঘুরি, আরেস্ট, মিথ্যা মামলাতে জড়িয়ে দেওয়া, মারধর আর খুন। কিন্ত সব থেকে উল্লেখ্যযোগ্য ঘটনা ঘটে বর্ধমানে, আমাদের একটা মিছিল যাচ্ছিল বন্ধের সমর্থনে সকাল ৮ টা - ৯ টার সময়ে। পাশ দিয়ে এ কটা মৃতদেহ নিয়ে কয়েকজন যেতে চান।, পথ ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা মিছিলের সামনে গিয়ে মড়ার খাটিয়াটা নামিয়ে রাখে, মড়ার ওপরের ঢাকা সরিয়ে রেখে দিয়ে বোম লাঠি এসব কাজে লাগানো হয়, প্রথম আহত হয় গৌরি রায়, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে তাকে আরেস্ট করা হয়। গৌর হরি যখন আহত হয়ে ভর্তি হয় তখন সাঁইবাডি তে কিছু ঘটে নি!

এরপর সাঁবাড়ির (কাছেই ছিলো তখন) ওপর থেকে গরম তেল আর জল (আগের থেকেই প্রস্তুতি ছিল, জড় হয়েছিলো সমাজবিরোধিরাও) ঢালা হয় মিছিলের ওপর, ভেতর থেকেই ইট আর বোম ফেলা হয়। এর পর মিছিলকে আটকানো সম্ভব ছিলো না, সেরকমও কোনো শীর্ষস্থানীয় নেতাও ছিলেন না ওই মিছিলে। মিছিল ঢোকে বাড়িতে আর বাড়ির লোকেদের ওপর হামলা করে। সংঘর্ষে ২- ৩ জন মারা যান। রাত থেকে ই শুরু হয় আরেস্ট এর ওপারেসন আর ঘন্টায় ঘন্টায় ক্রমবর্ধমান তালিকা সম্বলিত এফ আই আর! রোজই নাম বাড়তে থাকে আর নতুন নতুন ওয়ারেন্ট বেরোতে থাকে। শুধু শহর নয়, সংলগ্ন গ্রামগুলিও চলে যায় পূলিসের বুটের তলায়। এই ঘটনার পর ব্রিগেড এর সভাতে কমঃ হরেকিষান কোঙ্গার বলেছিলেন “ আমি গর্বিত বর্ধমানের ছেলেদের জন্যে, তারা মারের মুখে ছুটে পালায় নি, তারা প্রতিরোধ করেছে আর সেই প্রতিরোধ করতে গিয়ে কিছু ঘটে থাকলে তা আইন এ স্বীকৃত আত্মরক্ষার অধিকার প্রতিষ্টা করা” ( ভাষা টা এক নাও হতে পারে তবে এটা ছিলো তাঁর বক্তব্য) ।

এই সন্ত্রাস কবলিত বর্ধমান শহরে ৩ রা এপ্রিল মিটিং হয়, বিশাল, সেখানে অভূতপূর্ব ভাবে বক্তা ছিলেন কমরেড প্রমোদ দাসগুপ্ত, জ্যোতি বসু আর হরেকিষান কোঙ্গার একই মঞ্চে। সেই বক্তৃতা তি আর্কাইভ করবার ব্যাবস্থা করেছিলেন কমরেড রা, দিকে দিকে সংগ্রামী জনগন এর কাছে ছড়িয়ে দিতে।

হরেকৃষ্ণ কোঙারের একটি বক্তৃতার লিংক - http://www.esnips.com/web/HarekrishnaKonar


প্রচারমাধ্যম তার উপযুক্ত ভূমিকা পালন করেছিল মিথ্যা কাহিনী আর নাটকীয় ছবি সাজিয়ে সি পি আই এম কে খুনির দল হিসাবে দেখানো, ক্লান্তিহীন ভাবে কাজ করে গেছে এই বাজারই কাগজগুলি। আনন্দবাজারে একটা ছবি বেরিয়েছিল, ঘটনার পরের দিন, নবকুমার সাঁই মৃতদের দাদা বোধহয়, তার চোখে ব্যান্ডেরজ, ঘটনার পরের দিন, তার চোখ নাকি খুবলে তুলে নিয়েছে সি পি আই এম এর খুনিরা আর চোখে এইয়াসিড ঢালা হয়েছে। ১৫ দিন পর আবার আনন্দবাজারেই ছবি সমেত ওই নবকুমারের চিত্রের একটা মিটিং এ বক্তৃতা দেওয়ার খবর ছাপা হয়েছিলো, কোথাও কোনো ব্যান্ডেজ ছিলো না !!! রাজ্যপাল গিয়েছিলেন কনভয় আর সংবাদমাধ্যম নিয়ে নাকি-কাঁদতে, প্রেসের সামনে তিনি অনেক নাটক করেছিলেন। এর পরের দিন থেকে শুরু হয়েছিলো গ্রামে গ্রামে খাস জমি পূনর্দখল, যেগুলো জোতদার দের হাথ থেকে কেড়ে নিয়ে ভূমিহীন দের বিলি করা হয়েছিল যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে ( যা ছিল আমাদের ওপর আক্রমণের সবথেকে বড় কারণ)। তারপরের ৭ বছরের লম্বা- নিদারূণ ইতিহাসের কাহিনি সবারই যানা। সেইগুলো আরেকবার বলার কোনো কারণ নেই আপাতত। একদম শেষের দিকে আসি।

১৯৭৭ এ ইন্দিরা হারার পর কেন্দ্রে অ-কংগ্রসী সরকার হয়েছিল, কিন্তু তখনও এখানে সিদ্ধার্থ- সরকার! আমি (বাড়ি-ছাড়া) সাউথ সিথিতে থাকি। আমরা কেউ ই যেখানে থাকতুম সেখানে কোনো রাজনৈতিক কাজকর্ম দেখাতুম না, আর ওখানে ছিলই না।। একদিন মাঝ রাতে বোমের আওয়াজ়ে ঘুম ভাঙ্গে, দেখলাম রাস্তায় একটা বাচ্চা ছেলে চকলেট বোম ফাটাচ্ছে, জিজ্ঞ্যাস করাতে বললে, যানেন একটু আগে ফল বেরোলো, ইন্দিরা আর সঞ্জয় দুটোই হেরে গেছে, ওকে শুধু বললাম ঘরে ঢুকে পড়ো, বলে শুয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে সব পরিষ্কার হলো, কংগ্রেস হেরেছে, মানে জরুরি অবস্থার অবসান, মানে তাহলে আমরা কি বাড়ি ফিরবো? এর আগে (জুলাই ‘ ১৯৭১ থেকে) এটা ভাবতেও পারছিলুম না। কয়েদিন বাদে একটা ছেলে এল, পাড়াতে দেখেছি ওকে, মাঝে মাঝে, বললে আপনার নামে চিঠি আছে, নিলুম, দেখি পার্টির নামে একটা চিঠি, আমাকে লেখা, যে অমুক তারিখে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম যেতে হবে, মিটিং আছে, আমি ওকে বললুম, এসব কেনো, আমি তো তোমাদের পার্টি করিনা ( তখন আমাদের ওপর নির্দেশ আছে খোলাখুলি পার্টির পরিচিতি না জানাতে)। আর এসব কোরছো, প্রাণ ভয় নেই? সে বললে, না নেই। আপনি যাবেন। আমি তারিখ আর সময়টা দেখে ওটা ফেলে দিলুম, ভাবলুম এরকম কি করে হয়? আমাকে কে চেনালো? পরে জানলুম, পার্টির কর্মিরা সমূর্ণভাবে পাড়া ছাড়া ছিলো, কিন্তু লোকালে মানে এল সি তে হিসাব ছিলো, কে কে অন্য জায়গা থেকে পালিয়ে এসে এখানে আছে, যদিও তারা সব ক্ষেত্রে এটা জানতেন না যে কে কোন যায়গা থেকে এসেছেন। কি ব্যবস্থাপনা, কি নেটওয়ার্ক!!! গেলুম ইন্ডোরের মিটিং এ। দুই জন বক্তা, প্রমোদ দাসগুপ্ত আর জ্যোতি বসু। মোট মিটিং হ্ল তিরিশ থেকে চল্লিশ মিনিটের! দুইজন একই কথা বললেন
- “গত ৫ বছরে কংগ্রেস এখানকার মানুষকে অনেক অশান্তির আর রক্তপাত দেখিয়েছে, তাঁরা যেনো আর কষ্ট না পান। কোনো প্রতিশোধ নেওয়া চলবে না। মাথা নিচু করে যান মানুষের কাছে, ভেঙ্গে যাওয়া সংগঠন ঠিক করুন, সামনে বিধান সবার নির্বাচণ আসছে, আমাদেরও অ-কংগ্রেসী সরকার প্রতিষ্টা করতে ই হবে।” এর দুই দিন পর বাড়ি ফিরলুম, স্টেশন থেকে নেমে আমি আর আমার দাদা স্কুলে গিয়ে শিক্ষক দের সাথে দেখা করলুম, বাড়ি গেলুম, জঙ্গল চারদিকে, বাড়ির অনেক কিছুই ভেঙ্গে নিয়ে গেছে!! আর বিকালে দেখলুম রাস্তায় বেরলে লোক-জন আমাদের কাউকে দেখলে রাস্তার উলটো দিক দিয়ে পালাচ্ছে!! পাছে কথা বললে খুন হতে হয়! এবং যাদের জন্যে পাড়া ছাড়া হতে হয়েছিলো, তাদেরকেও দেখলাম। অনেক মিইয়ে গেছে যদিও। মানে সেই খুনিদের সামনে দেখেও আমরা কিছুই করি নি, ক্ষমতা প্রথম দিকে ছিল না, পরে এল, কিন্তু তারা নিরাপদেই থাকলো এলাকাতেই!! (পার্টি এরকমই নির্দেশ দিয়েছিল)।

বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০০৯

কলকাতা জ্বালিয়ে দিতাম ….........এক তৃণমূলী ভাইয়ের জবানবন্দী ~ জ্যোতির্ময়

কাল রাতে সল্টলেকে দিদির উপর হামলার পর এক উঠতি তৃণমূল কর্মীর কথা শুনেছি আমি ঝড়ের গতিতে বলছিলেন দিদির ভাই
লিখে লিখে শোনা তো তাই ভুল থাকতে পারে তবু পড়ে দেখুন ভাল লাগবে

কলকাতা জ্বালিয়ে দিতাম ….........

আবার শালা আমাদের দিদি কে মারতে আসা। আলিমুদ্দিনে বসে এই সব শালা বুদ্ধদেবের ছক। সল্টলেকে যেখান দিয়ে দিদির গাড়ী যাচ্ছে সেখান গুলো সায়িন্টিফিক লোডশেডিং করার ছক করেছে শালা বুদ্ধদেব, সব জায়গায় আলো আছে আর দিদি যেখানে যাচ্ছে সেখানে আলো নেই ভাবুন একবার কি ছক। শালা রিপোটার সেজে ছত্রধরকে ধরেছে বলে, রিপোটার সেজে দিদি কে মারার ছক, কি সাহস। সবে দিদি নচিকেতার সাথে আড্ডা দিয়ে গাড়ীতে উঠেছে আর তার পর থেকে দিদি কে ফলো করা কি সাহস। নেহাত শালা কাল দু পাত্রর বেশি হয়ে গিয়েছিল না হলে কাল রাতেই কলকাতা জ্বালিয়ে দিতাম , বাংলা বনধ করতাম , আমাদের দিদিকে মারতে আসা সাহস তো কম নয়। আপনাদের মনে আছে তো বেদিভবনে দিদি কে পুলিশ যখন দিদিকে গুলি করার ছক করেছিল, আর দিদির শাড়ীটা গেটে লেগে ছিঁড়ে গেল, সি পি এমের চক্রান্ত ছিল সব আমরা শালা ১৪ টা বাস পুড়িয়ে দিয়েছিলাম, ট্রেন আটকে দিয়েছিলাম । কাল রাতেই কলকাতা জ্বালিয়ে দিতাম নেহাত শালা কাল দু পাত্রর বেশি হয়ে গিয়েছিল। আর সেবার নন্দীগ্রামে দিদির পায়ের কাছে গুলির খোল, শালা সি পি এক এর সায়েন্টিফিক গুলি, খোল শুদ্ধু বন্দুক থেকে বের হয়, যে গুলি ছোঁড়ে তার কাছে পড়ে না । তাই দিয়ে দিদিকে মারতে আসা , আমরা শালা সেদিন ই নন্দীগ্রাম জ্বালিয়ে দিতাম , কিন্তু তখন তো কোন সি পি এম ছিল না ওখানে কি লাভ হত।


আবার দিদি কে মারার ছক, শালা আলিমুদ্দিনে বসে এই সব শালা বুদ্ধদেবের ছক।আর এবার তো বুদ্ধদেবের বাপের চ্যানেল ২৪ ঘন্টা রিপোটার সেজে সুপারি কিলার পাঠালো। শুভপ্রসন্ন দা আবার সুপারি কিলার কে বলেছেন ওর বাপ মার শিক্ষা নেই, দোলা দি ওর মুখ চেপে ধরেছিল, ধুস এরা কিছু কাজের নয় আমরা থাকলে সুনীতা বানিয়ে দিতাম , সল্টলেকে তো গাছ আছে নাকি …...। সোমা না কি যেন নাম সুপারি কিলারটার ওকে আবার দিদি ভালোবেসে ডাইরি দিয়েছিল। মুকুল দা কোন কাজের নয় থানাতে নিয়ে যায় কেউ। ও তো শালা বুদ্ধদেবের বাপের থানা আমরা থাকলে সুনীতা বানিয়ে দিতাম নেহাত শালা কাল দু পাত্রর বেশি হয়ে গিয়েছিল। মুকুল দা একটা যা তা বলে কিনা স্বরাষ্ট মন্ত্রী কে ফোন করেছে, আরে শালা ও তো কংগ্রেসের স্বরাষ্টমন্ত্রী আর তাপস দা তো বলেই দিয়েছে , কংগ্রেস হলো সি পি এম এর পা চাটা কুকুর। তাদের কাছে বলে কি হবে। শালা দিদি এতবার বলছে মাওবাদীরা ভাল কি পটাপট সি পি এম মারছে ওদের বিরুদ্ধে কিনা মিলিটারী পাঠাচ্ছে কংগ্রেস। শালা দিদির কথার একটা দাম নেই , সব শালা সি পি এম এর বি টিম। শালা শিলিগুড়ি দেখেও শিক্ষা হল না । থাকত মদন দা দেখতো তা হলে এক দুই তিন গুণতো শুধু , তার মধ্যে সোমা না কি নাম যেন সুনীতা করে দেওয়া যেত, নেহাত শালা কাল দু পাত্রর বেশি হয়ে গিয়েছিল।


শালা মাওবাদী মাওবাদী করে যত ফালতু কথা, ছত্রধর কে ধরলো , কি সার্ভিস দিচ্ছিল ছত্রধর প্রায় প্রতিদিন একটা করে মাকু খালাস আর তাকে কিনা মাওবাদী বলে ধরা , শালা সি পি এম হল আসল মাওবাদী , দিদি ঠিক বলেছে দেখলেন না কি রকম বুদ্ধদেবের বাপের চ্যানেল সুপারি কিলার পাঠিয়ে দিদিকে মারতে এলো ।নেহাত শালা কাল দু পাত্রর বেশি হয়ে গিয়েছিল না হলে কলকাতা জ্বালিয়ে দিতাম ।

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০০৯

বিজ্ঞাপণের মোড়কে ঢাকা রেল পরিষেবা... আসলে রেলের যাত্রী পরিষেবার করুণ কাহিনী ~ জ্যোতির্ময়

সময়টাই এখন বিজ্ঞাপনের , সব কিছু হাজির হচ্ছে দারুণ মোড়কে। ভিতরের জিনিসটা কি রকম তার কথা নয় আসল কথা হল মোড়কটা কি রকম। সেটা কত চকচকে তাই দিয়ে জিনিসের মান ঠিক হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় রেল ব্যবস্থা , তাও যে একটা বিজ্ঞাপনের সামগ্রী তা জানা ছিল না। চারদিকে যে ভাবে নতুন রেলমন্ত্রীর ঢাক বাজানো হচ্ছে তাতে বোঝার উপায় নেই রেলের যাত্রী পরিষেবার হাল কি।

রেলকে বেসরকারী করার গল্প আজ থাক, সে হবে আরেক দিন।

যবে থেকে দিদি মন্ত্রী হয়েছেন তবে থেকে শোনা যাচ্ছে আজ মহিলা রেলগাড়ী তো কাল নতুন গাড়ী পরশু নতুন লাইন , আর উদ্বোধন হচ্ছে রোজ কিছু না কিছু । মেট্রোরেল তো দু মাসে হয়ে গেল, এতদিনে হয় নি। নাই বা সব স্টেশানে টিকিটের গেট বসল, নাই বা নতুন রেক এলো, নাই বা নতুন কর্মী নিয়োগ হলো মেট্রো দুই মাসে চালু করা দিদি ছাড়া সম্ভব ছিল কারুর। আমার বাড়ির সামনে দিয়ে মেট্রো যাচ্ছে কি আনন্দ, আহা সত্যি কি আনন্দ । লোকসভা ভোটের আগে থেকে মেট্রো চলছিল পরীক্ষামূলক ভাবে, স্টেশান তৈরি ছিল তাতে কি দিদি না হলে দুই মাসে মেট্রো চালু হতো ? ছবি তোলার নেশাতে আমার সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে লোকসভা ভোটের ঠিক পরে ২৪ মে ২০০৯ কুঁদঘাট থুঁড়ি নেতাজী স্টেশানে উঠেছিলাম সিড়ি দিয়ে , আমার ছেলে বলল বাবা বসার সিট গুলো কোথায়? ওর চোখে তখন কুঁদঘাট স্টেশানে শুধু সিট লাগানো বাকি। আর বাকি ছিল চলমান সিড়ি গুলো চালু করা। তাতে কি দিদি না রেলমন্ত্রী হলে দুমাসে মেট্রো চালু হতো কি ? আর স্টেশানের এই রকম নামকরণ দিদি ছাড়া কারুর মাথা থেকে আসবে ? এতদিন ধরে রেল স্টেশানের নামকরণ হচ্ছে কেউ পেরেছে ইতিহাস আর ভূগোল কে গুলিয়ে দিতে ? দিদি সব পারে। জয়দেব বসু আপনি যদি মেট্রো করে টালিগজ্ঞে যেতে একটা উত্তমকুমার দিন বলতে না পারেন তাতে কি, আপনি সি পি এম তাই এসব বুঝবেন না , রাজ্যপাল পারলেন আর আপনি কিনা পারবেন না যতসব।


আর উদ্বোধন এর ঘটা দেখেছেন, একে বলে চাঁদের হাট সমস্ত সুশীল এক মঞ্চে হাজির আর রাজ্যপাল, সঙ্গে মদন অরুপ পার্থের ডাকে হাজার হাজার তৃণমূলী ভাই পতাকা নিয়ে। তবে না তৃণমূলের রেলমন্ত্রী ভারতের নয় তো । সরকারী অনুষ্ঠান না তৃণমূলের মিটিং বোঝার দরকার কি ? স্বাধীনতা দিবসে রেল স্টেশানে তৃণমূলের পতাকা তোলা হতে পারে আর সরকারী অনুষ্ঠানে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে দিদির ভাইয়েরা থাকতে পারে না ? মাঝখান থেকে রাজ্যসরকার এর মন্ত্রী নেই এই সব সি পি এম মার্কা প্রশ্ন তুলে রসভঙ্গ করার কোন মানে হয়। রাজ্যসরকার না হয় মেট্রোরেলের সম্প্রসারণের ৩৩ শতাংশ টাকা দিয়েছে তাতে কি , তা বলে ওরা কেন উদ্বোধনে আসবে। আর উদ্বোধনের টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন করে লাভ কি ওটা ভারতের জনগণ নামক গৌরী সেনের টাকা ওটা নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই।


যাক ধান ভাঙতে শিবের গীত অনেক হলো। এবার বলি পূজোর সময় বাগ একস্প্রেস করে হাওড়া থেকে কাঠগুদাম অবধি যাওয়ার কথা , আর উপাসনা করে বেরিলি থেকে হাওড়া ফেরার কথা। রির্জাভ কামরা কথাটা বোধহয় একটা ঠাট্টা , আপনি যদি রির্জাভেশান করে যান সেটা আপনার ব্যাপার। ওয়েটিং লিষ্ট এ নাম থাকলেও আপনি কামরা তে যাবেন, সাধারণ টিকিট কেটে ফাইন দিয়ে বা টি টি'র পকেটা কিছু গুজে দিয়ে আপনি সহজেই যেতে পারেন । ঘুষ দেওয়ার কথা যদি বাদ দি তা হলে ফাইন দিয়ে আর ওয়েটিং লিষ্টে নাম থাকলে আইন সিদ্ধ ভাবে আপনি যেতে পারবেন। বসবেন কোথায় , শোবেন কোথায় সেটা আপনার ব্যাপার , আপনার দল ভারী হলে আপনি গেট বন্ধ করে , একদিকের বাথরুম বন্ধ করে রির্জাভেশান করে যাওয়া যাত্রীদের পিন্ডি চটকে আইন সিদ্ধভাবে যেতে পারবেন।


এতটা উন্নত পরিষেবা ভাবা যায় না। উপসনা তে করে বেরিলি থেকে ফেরার সময় টি টি কে ধরে নিজেদের রির্জাভ করা সিটে কোনমতে বসে এই উন্নত পরিষেবার খবর পেলাম , টি টি জানালেন সেদিন ওয়েটিং লিষ্টে যাত্রীর সংখ্যা ৫১২ জন তার মধ্যে ৪০০ জনের মত এই ভাবেই যাচ্ছেন, তবু বগি বাড়ানো হবে না , এটাই নাকি পূজোর সময় প্রতিদিনের অবস্থা। শুনে অবাক হবেন না উপসনার বগির সংখ্যা মাত্র ১০। আগের রেলমন্ত্রীর সময় বহু গাড়ী ছিল ২৫ বগির ।তাতে কি উন্নত পরিষেবা পাবেন কি করে বগি বাড়িয়ে যাত্রী সুবিধা দেখলে। আর প্রতি স্টেশানে সাধারণ যাত্রী ওঠার কথা ছেড়েই দিলাম ওটা তো পরিষেবার ফাউ ব্যাপার। আপনার মালের দায়িত্ব আপনার নিজের, রেল এর এই সব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই। আর বাথরুমের কাছে করিডোর বা ভ্যেস্টিবিউওল হলো নানা মাল বহন করার জন্য। যাওয়ার সময় বাগ একস্প্রেসে এক ট্রাভেলিং এজেন্সি মাছ নিয়ে চলল দারুন সুবাস ছড়াতে ছড়াতে, তবে নানা স্টেশানে কিছু টাকা খসল তাদের পুলিশ কে সন্তুষ্ট করতে।


উন্নত পরিষেবার আরেক নমুনা হল বাথরুমের জল, অত্যাধিক যাত্রীর চাপে বা ভাঙ্গা কলের জন্য জল সব সময় থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই , বাথরুমের ভিতরে কোন হুক বা হ্যাঙ্গার পেলে আপনি নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন, বাগ এক্সপ্রেসে দু রাত থাকবেন আপনি স্নান করার কথা যদি ভাবেন তা হলে দড়ি নিয়ে বাথরুমে যান আর না হলে দু দিন গরমে কাটিয়ে দিন শুভপ্রসন্ন বাবুর কথা ভেবে ,তিনি আপনার সাচ্ছন্দ দেখার জন্য রেলে চাকরী পেয়েছেন। কুপের ভিতরে সব আলো জলবে আশা করবেন না বেশির ভাগ খারাপ থাকাটাই একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার আপনার অসুবিধা হলে কি আর করা যাবে। জানালায় যদি সবকটা ছিটকিনি পেয়ে যান তা হলে আপনি সৌভাগ্যবান, না হলে সাবধানে থাকবেন আপনার হাতে জানলা পড়লে কিন্তু দিদির মত কেউ ডাক্তারী করে ট্রেনে সারিয়ে দেবে না। ( ভোটের আগে স্টার আনন্দ দেখেন নি তো দিদির ডাক্তারী তে কি ভাবে শোভনবাবু হাতে জানলা পড়েও রক্ষা পেলেন তাই জানেন না।) আসলে রেলের কোচ গুলো সব বাতিল হয়ে গেছে তাও চালানো হচ্ছে, উদ্বোধনের চোটে বাতিল কোচ দিয়ে রেল চলছে। একটু মানিয়ে তো নিতে হবে।


রেলের ক্যাটারিং বহু দিন হলো বেসরকারী হাতে, কিন্তু তার মান যে এত নেমেছে না খেলে বিশ্বাস হবে না, দিদির জনতা মিল নামক গাল ভরা নামের পুরি সবজির থেকে স্টেশানের বানানো পুরি সবজি সস্তা আর টাটকা, কিন্তু সে তো ট্রেন যদি স্টেশানে থামে তবে। উপসনার মত ১৬ টা স্টপেজের ট্রেন যদি হয় আপনার ট্রেনের রেল অনুমোদিত বেসরকারী ক্যাটারিং এর উপর নির্ভর করা ছাড়া উপায় কি। আর তার খাবারের মান ! মুখে না দিলে বোঝান সম্ভব নয় কি ভাবে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে এই বেসরকারী রেল অনুমোদিত ক্যাটারিং সংস্থা।


আসলে পশ্চিমবঙ্গের এই রেলমন্ত্রীর বিজ্ঞাপনের মোড়কে খুব কাজের লোক হিসাবে যতই গগন ফাটাক স্টার আনন্দ সি এন এন- আই বি এন চ্যানেলে ইউ পি এ সরকারের ১০০ দিনের কাজের যে মূল্যায়ন বার হয়েছে। দেশের ১০০ জন প্রবীণ অগ্রণী সাংবাদিক ও সম্পাদক রা ভোট দিয়ে এই মূল্যায়ন করেছেন তাতে রেল মন্ত্রক পেয়েছে সব থেকে কম নম্বর , মাত্র ৩৪ শতাংশ। সোজা কথায় ফেল করেছেন আমাদের রেলমন্ত্রী। কিন্তু বিজ্ঞাপনের চমকের মত মোড়কে হাজির তিনি। পরিষেবার এই করুণ হাল এই জন্যই। দিদি একটা কমিটি করেছেন , তার পোষা সুশীলবাবুদের নিয়ে। যাক রেলে আর কারুর চাকরি হোক বা না হোক ওদের তো হলো। অনেক তোষামোদ করে তবে দিদির গুডবুকে ওরা। কিন্তু সাধারণ মানুষের রেল পরিষেবার কি হবে ? বিজ্ঞাপনের প্রচারে পরিষেবা হবে সে প্রশ্নের উত্তর দেবে কে ?