বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১০

মমতার মুসলিম প্রেম ~ তৃনমাও কংগ্রেস বলছি

মমতার হাত ধরে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মুসলিম ছাত্র ছাত্রীদের আশা পুরনের সম্ভাবনা তৈরী হল আজ। মমতা আজ প্রতিশ্রুতি দিলেন ক্ষমতায় এলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের আগে মাদ্রাসা শব্দটি যুক্ত হবে।বাম সরকার শুধু মা্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়টি করে আর রাজ্য জুড়ে তার বিভিন্ন শাখা খুলেই কাজ সেরে দিয়েছিল, এর পিছনে কোটি কোটি টাকা ঢেলেই কাজ সেরে দিয়েছিল কিন্তু মমতা যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা আজ জানালেন সেটা সিপিএম কোনদিন ভাবতেই পারেনি। এত বড় কাজের সদিচ্ছাও সিপিএম এর নেই। কাজের সদিচ্ছাতেই মমতার কাছে সিপিএম হেরেগেছে।

এর আগে মেট্রোরেলের সম্প্রসারনের কাজ প্রায় সম্পুর্ন করেও তাকে উদ্বোধনের মতো গুরুত্ব পুর্ন কাজটি কেন্দ্র সরকার ফেলে রেখেছিল। মমতা এসে তার উদ্বোধন করেছিলেন। রাজ্য সরকার মেট্রো সম্প্রসারনে মাত্র ৫০ শতাংশের বেশী ব্যায় করেছিল তাই যথার্থ ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রন করেননি।
রেলের ক্ষেত্রেও মমতা দেখালেন তার অভূতপুর্ব ভাবন। আগে সমস্ত স্টেশন গুলো ক্যাটক্যেটে লাল রঙের ছিল। তাতে ঘুরিয়ে সিপিএমর নির্বাচনী প্রচার হয়ে যেত, মমতা সব স্টেশন সবুজ রঙের করলেন , যা চোখের পক্ষে কিন্তু খুব ভাল। শুধু কি তাই - কিছু স্টেশন তিন চারটি করে কম্পিউটার বসিয়ে কোটি কোটি টাকা তিনি উদ্বোধনের পিছনে ও বিজ্ঞাপনের পিছনে খরচ করেছেন। ব্যঙ্ক গুলো প্রতিবছর তাদের শাখা গুলিতে কম্পিউটার বসায় কিন্তু কোন ব্যঙ্ক তার শাখা গুলিতে গন্ডায় গন্ডায় কম্পিউটার বসিয়ে উদ্বোধনের ভাবনা ভাবতে পেরেছে। মমতা পেরেছেন।

মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১০

বদল-চরিত ~ তুলি

তিনি বলিলেন, "বুইলি মদন, বদলাতে হবে সঙ্গী",

শুঁড়ির সাক্ষী মদন কহিল, "কাকে নেবে তবে, জঙ্গী?",
একথা শুনেই তিনি কহিলেন, "মদনা কি ডাকি সাধে?
বাংলা আমার, কংগ্রেসীদের কেন তুলি তবে কাঁধে?"!

এ'কথা শুনেই মদনা : "তবে কি পদ্ম খুঁজিবে পাঁকে",
..."Intelligent!" তিনি কহিলেন "চল ফিরি কই ঝাঁকে"।
হতভাগা দেশ পেঁয়াজ কিনিছে একশত টাকা কিলো,
"পরিবর্তন" "Shining India"-র ফুটেজ বাড়ায়ে দিলো।

শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১০

আমার শহর, আমার বড়দিন ~ অনির্বাণ ঘটক

আমার শহরে আধপেটা জাগে রাই ও কানুর দল,

কুয়াশায় মুড়ে ঝুপ করে নামে লাল-সাদা বড়দিন,

এসপ্লানেডের ফুটপাথ ঢাকে খিদেতে এবং শীতে,

প্রতি ঝুপড়িতে যীশু আসে আর সাথে আসে কোটি ঋণ...

  

আমার শহরে শীতঘুম যায় রাই-কানু-কম্বল,

স্বপ্নেই আসে স্বপ্নে বিদায় স্বপ্নের বড়দিন,

একা পড়ে থাকে ভেজা ট্রাম আর ধোঁয়া ওঠা কাঠকয়লা,

প্রতি রাত মিছে স্বপ্নপূরণ, তাই বাঁচে প্রতিদিন!

 

 

আমার শহরে নাহুম-ফ্লুরিজ, কানু-রাই নেশাভোর,

রঙ্গ পোষাক, রঙমাখা রাত, রঙ্গীলা বড়দিন,

হুকুম তামিল বেয়ারা-র সাজে লাল-সাদা ঈশ্বর,

বিগত জন্ম? অপাপবিদ্ধ; এ জন্ম... রঙ্‌গীন!


বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১০

পেঁয়াজি ~ অনামিকা

পেট্রোলে দাম অবাধে বাড়ছে ডিজেলেরও বাড়ে তাই!
দ্রব্যমূল্য তাতে বাড়ে? ছি ছি! ওকথা বলতে নাই!

সিংগুরে ওরা কেড়েছিল জমি, পেঁয়াজ তাইতো ষাট।
ফেরৎ চাইছি চারশ' একর পেঁয়াজ ভর্তি মাঠ।

ওটা পেয়ে গেলে আগামীকল্য পেঁয়াজ দু'টাকা কিলো!
ভাগ্যিস এই মিথ্যে কথায় পোক্ত জিভটা ছিল।

দিল্লিতে দর আশি হল কেন? সোনিয়া আন্টি জানে।
আমি শুধু রেল। সকাল বিকেল ... শিলা পুঁতি সবখানে!

মনোমোহনের খেলা জানি ঢের, পাকা চুল পাকা ভুরু।
ও কী সামলাবে? এ ইউপিএর এইতো শেষের শুরু!

মাঝে মাঝে জপি যৌথ বাহিনী। "এই ছাড়লাম জোট" ...
এই হুমকি যে ক'বার দিয়েছি, ভুলেই গিয়েছি মোট!

অবশ্য তার পরপরই আমি প্রতিবার গিলি ঢোঁক।
"কিল গেম শো"তে আমি যে নেত্রী ... মানতে আজ্ঞা হোক!

বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১০

হয় বামপন্থা নয় মৃত্যু ৩ ~ তৃনমাও কংগ্রেস বলছি

কথাই সব, নির্বাচন উপলক্ষে পার্থ কথা বলেন, কথা বলেন মমতা। বুদ্ধ কথা বলেন, কথা বলেন বিমান। আমরা সরাসরি নাশুনলেও শুনিয়ে দেয় কাগজ টিভি। বুদ্ধদেব এক কথা বলেছিলেন সাম্প্রদায়িক শক্তির মাথা ভেঙে গুডিয়ে দেব। ব্যাস আর যায় কোথায়, আমরা মিডিয়ার ব্যাখ্যায় শুনলাম বুদ্ধ নাকি বাংলার মানুষের মাথা গুড়িয়ে দেবে বলেছেন। কোলকাতা টিভি, বর্তমান, প্রতিদিন আনন্দবাজার বিশেষ করে প্রতিদিন খরাজ মহাশয় টিভিতে নিজের কন্ঠে শুনিয়ে দেয়- মাথা ভেঙে গুড়িয়ে দেব। কি নৃশংস কথা । বললেন বুদ্ধ। আসল কথা শনেছিলেন ৫০০লোক , আমরা শুনিয়েদিলাম ৫লক্ষ লোককে মাথা ভেঙে গুডিয়ে দেব। আরে বুদ্ধের হাতে আজকাল আর ২৪ঘন্টা, আর আমাদের পাশে যা মিডিয়া গুনে শেষ হবেনা। সব মিডিয়া ব্যবসায়ী বুদ্ধের বিরুদ্ধে। খুব ট্রেড ইউনিয়ন করেছিল এই বুদ্ধদেবরা।

বুদ্ধবাবু সেদিন বললেন হয় বামপন্থা নয় মৃত্যু, অর্থাৎ করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে, না আমরা শোনালাম বামপন্থা নাকরলেই সিপিএম সবাইকে খুন করবে। বুদ্ধদেব প্যাচে পড়েছেন ভালই।

তৃনমুলের মিডিয়ার এই কাজকে সিপিএম বলছেন নীতিহীন কাজ। ভূল- কারন রাজনীতিতে নৈতিকতা বলে কোন দিন কিছু ছিলনা আজও নেই। এটা হল ক্ষমতার প্রতি প্রেম ,প্রতিপক্ষর সঙ্গে যুদ্ধ যেখানে জেতাটাই সব। মমতা ও তার সাথিরা অর্জুন হতে মাঠে নেমেছেন যুধিষ্টির হতে নয়। ভগবান চিরকাল অর্জুনের পাশেই থাকে।

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১০

সিবিআই রহস্য ~ অনামিকা

সিবিআই মানে মহান ধাপ্পা, মহা পবিত্র নাম।
ঘুষটুস খেয়ে ওরাই সিদ্ধ করবে মনষ্কাম।*

সাত সাতজন মন্ত্রী হয়েছি। "কেন্দ্র"টি করে আলো।
আমি তবু নই শাসক পক্ষ, দাবী করি জমকালো।

যে "কেন্দ্র" পেটে লাথি মারে রোজ ... যে "কেন্দ্র" ছাপে টাকা ...
যে "কেন্দ্রে" পোষা আছে সিবিআই ... যে "কেন্দ্র" মধুমাখা ...

যে "কেন্দ্র" টু জি, ভাগ বোঝাবুঝি ... আমার পরমারাধ্য ...
সে "কেন্দ্রে" আছি, জেড ক্যাটেগরি ... সবাই মানতে বাধ্য ...

তবু আমি নই "শাসক" পক্ষ! শাসক হচ্ছে বুদ্ধ।
শাসক হবার জন্য আমার যাবতীয় সব যুদ্ধ!

বিদ্বজ্জন খুঁজে বার করে নিবিড় করেছি সখ্য।
রেলকমিটির দই খাক নেপো, জনগন উপলক্ষ্য!

কোরাসে গাইছি ... পরিবর্তন ... অন্য শাসক চাই ...
কেন তা হয়নি, তদন্ত করে বলে দিক সিবিআই।

এখনও কি তুই জীবিত আছিস? কেন আজও বেঁচে? কেন?
সেটা সিবিআই তদন্ত করে বলে দিয়ে যায় যেন!

একটাই ভয় সিবিআই যদি বুঝে ফেলে আমি মেকি!
পাপ তো শুনেছি বাপকে ছাড়েনা! আমাকে সে ছাড়বে কি?


--------------------------------------------
* তাপসী কাণ্ডের সিবিআই ইনস্পেক্টর শ্রীমান পার্থর কথা মনে আছে?

 

সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১০

লাভ জনক বলেই কি খুনোখুনিতে টিএমসির আগ্রহ? ~ তৃণমাও কংগ্রেস বলছি

জ্ঞানেশ্বরীতে মাওবাদী গণহত্যার দায় সিপিএম এর ঘাড়ে চাপিয়ে মমতা চাটুকার বুদ্ধিজীবিরা বলেছিলেন এতে লাভ হচ্ছে সিপিএম এর। তাই ওই ঘটনার পিছনে সিপিএমই আছে। পরে সিবিআই তৃণমুল ঘনিষ্ট জনসাধারনের কমিটিকেই দায়ী করে। ফলে মমতা বিষয়টি নীরবতার রাজনীতিই করছেন এখন। এখন স্বপন কোলে হত্যার পর টিএমসি বলছে বাংলায় এতখুনোখুনি প্রশাসনের ব্যর্থতা। সুতরাং সিপিএম এর পদত্যাগ করা উচিত। তাহলে খুনোখুনিটা রাজনৈতিক ভাবে টিএমসির পক্ষেই লাভজনক হয়েযাচ্ছে। আর একারনেই বাংলায় পরিকল্পিত ভাবে খুনের রাজনীতি করছে টিএমসি? প্রশ্নটা উঠছে।

এর পিছনে কিকি লাভ দেখছে টিএমসি?
এক্ষেত্রে সিপিএম এর ব্যাপক সংখক মানুষকে খুন করে প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় সিপিএম এর ঘাড়েও চাপান যাবে। দ্বিতীয়ত যারা অ্যাকটিভ কর্মী তাদের খুনের দায়িত্ব মাওবাদীরা যে সকল অঞ্চলে নেয়নি সেখানে সরাসরি খুন করবে টিএমসি। এর ফলে সিপিএম এর অ্যকটিভ কর্মীর সংখ্যা কমবে যাতে সিপিএম এর সংগঠন দূর্বল হবে। তৃতীয়ত এর ফলে বহু সিপিএম কর্মী বিধানসভা ভোটের আগে ভয়ে কাজ করবে না।
কিন্তু টিএমসির সমস্যা অন্য জায়গায়-- তাহল নিজের দলের দুএকটা না মরলে গোটা জিনিষটার বিশ্বাস যোগ্যতা থাকেনা। কিন্তু টিএমসি কর্মীরা মরছে খুব কম। সিপিএম হত্যার রাজনীতিতে গিয়ে দেখেছে লাভ নেই। কারন এতে টিএমসি বা মাওদের সঙ্গে পারা যাবেনা। সেক্ষেত্রে মাওবাদী বা ঝাড়খন্ড পার্টির বা জনসাধারনের কমিটির কেউ মারা গেলে তাকেই নিজের শহীদ হিসাবে না তুলে ধরে টিএমসির কোন উপায় নেই।আসলে জনসাধারনের কমিটি বা মাওবাদীরা অনেকেই প্রত্যক্ষ ভাবে বা পরোক্ষ ভাবে তৃণমুলের কর্মী। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া রেখে যে কোন মাওবাদী মারাগেলেই তাকে নিয়ে রাজনীতি করে জনমত পাশে আনা যাবে। তাই দেখা গেল জনসাধারনের কমিটির কেউ মারা যেতেই তাকে মেদনিপুর থেকে আমদানি করে কোলকাতায় নিয়ে এসে মিছিল করলো তৃণমুল। ঠিক স্বপন হত্যার পরের দিন।

লাশ

মানুষ যখন চাইছে
আশু মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস,
ওরা তখন বলছে শুধু
লাশ চাইগো,লাশ।

রাখতে গদি,কাড়তে গদি,
দৌড়ে বেড়ায় ওরা,
লক্ষ্য ওদের করবে মিছিল
চাই যে নতুন মরা।

গুলের শিলা পুঁতছে ওরা
বাড়ছে বেকার রোজ,
গোদের ওপর বিষফোড়াটার
রাখছেনা কেউ খোঁজ।

আত্মহনন বাড়িয়ে দিতে
বাড়বে রেলের লাইন,
বাড়ীর কাছেই মরবে বেকার
মৃত্যুর সানসাইন।

বহুতলের রমরমা আজ
বেওসায়ীদের বাসা,
খুইয়ে জমি কাঁদছে লাঙ্গল
কাঁদছে গ্রামের চাষা।

কারখানা চুপ,বন্ধ যে চাষ
সারা বাংলায় ত্রাস,
সমস্বরে বলছে ওরা
লাশ চাইগো,লাশ।

রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১০

সাগরচুরি ~ দীপক

সাতসকালে তে-মাথার মোড়ে
দু বাহু তুলে পাগলটা নৃত্য করে

---হাঃ হাঃ হাঃ
পুকুর নয় দিঘীও নয়
সাগর হয়েছে চুরি
আকাশ করেছে চুরি সাগর
দ্যাখো গিয়ে
সাগরে ঢেউ নেই একটিও---


পাগলের কথায় ফুটপাথের সব্জীউলি ফুটকাটে-
ওরে ও বেস্পতি শুনিছিস ?
হে হে হে , শোন শোন কথা শোন
ওলো, সাগর নাকি হইয়েছে চুরি?
সব্জীউলির টিপ্পনীতে বেস্পতি'তো বটেই
বেবাক পথচারীর খ্যাক খ্যাক হাসি

সম্যক অর্থ উপলব্ধকারীর অধিকাংশ
পুকুর চুরিতে এতকাল যারা অভ্যস্ত
সাগর চুরিতে তারা যথারীতি নিস্পৃহ

শুধু, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের চোয়াল হয় শক্ত

শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১০

মা'র দাবী ~ অনামিকা

আশায় আশায় থাকি, এ ছেলেটা বড় হলে পরে
সংসারে সুরাহা হবে। আমাদের মধ্যবিত্ত বাড়ি।
দিন আনে দিন খায়। তাই এই ছেলের ওপরে
এতটা ভরসা করি। ছেলে বড় হোক তাড়াতাড়ি।

বিনা মেঘে বাজ যেন নেমে এল হতচ্ছাড়া দিনে।
প্রত্যয় করিনি আমি। আমার উঠোনে ভাসে ভেলা।
এইতো কলেজে গেল, পাড়ার দোকানে খাতা কিনে।
কি বলছ? সে নাকি নেই? খবর দিয়েছে কালবেলা।

ভাত বেড়ে বসে আছি, সেই স্বপ্ন ফেরেনি এখনও।
ওরা বলে দাগ আছে, দংশনের দাগ অবিকল
চোখে দেখ জল নেই। এই বুকে জল নেই কোনও।
সাপটাকে না মারলে, পৃথিবীতে নামবে না জল।

হেন্তালের লাঠি নেই। আমি নই চাঁদ সদাগর।
বুক ভরা শোক আর ঘৃণা আছে সাগরপ্রমাণ।
শিল্প নয় কৃষি নয়, নয় সপ্তডিঙা মধুকর!
আমি তো মা। আমি চাই তোরা ওই সাপ মেরে আন।

বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০

নেপথ্য ডায়ালগ ~ অনামিকা

ইনি---

লালুদা'র রেখে যাওয়া প্রকল্পগুচ্ছ
পাথরে পুঁতছি আর নাচাচ্ছি পুচ্ছ।
পেট্রোলে ফের দাম বাড়ালে যে টাকা তিন,
সেটা যে খারাপ খুব, বলেছি কি কোনও দিন?
লিটার কিনতে টাকা লেগে যাবে ষাটটা।
জনগণ মানছে না এইসব ঠাট্টা!
এলে না প্রণবদাদা, ছিল কথা দেয়া না!
"বি টিম"রা কবে থেকে এত হল সেয়ানা?

তিনি---
আদরের বোকা খুকি শুধু শুধু রাগলি!
অধীর না হলে পরে কে জেতাতো, পাগলি?
এই যে বলছি এত,পৌঁছেছি এ্যাদ্দুর,
পারতাম এত কিছু, না হলে জঙ্গীপুর?

ইনি ---
ন্যাকা ন্যাকা কথাগুলি অন্যকে বুঝিয়ো।
সব বুঝি তহলকা ... টেলিকম ... টু জি ও।
নাশকতা! ফুটো করে দিল হেলিকাপটার,
মুন্ডু চিবোবো ওই অধীরের বাপটার!
সব খেলা জানি আমি। ধর্মের জিগিরে,
দখল করব আমি ও সাগরদীঘিরে!

এনডিএ জানে আমি কোনও কিছু মানিনি।
এই আছি এই নেই ... বড় অভিমানিনী!
সেই আমি টুঁ অবধি করছিনা শব্দ।
কেননা অনেক বড় আমার আরব্ধ।
দুর্নীতি হলে হোক। প্রতিবাদ চাইনি।
বাংলাকে একা খাব, আমি একা ডাইনি!

তিনি---
মনোমোহনের গেছে ছিরকুটে দন্ত।
সুপ্রিম কোর্ট না কি করাবে তদন্ত!
এনডিএ ইউপিএ উঠেছিস দু'টোতে।
সব নৌকোই ফেঁসে বড় বড় ফুটোতে।
দু'হাজার এক থেকে দু'হাজার দশ তক
কী বেরোবে ভেবে ভেবে ফেটে যায় মস্তক!

ইনি---
কী ভাবে সিএম হব, আমি নিজে? তা ছাড়া,
উপোসী রয়েছে সব ছারপোকা বাছারা!
মিডিয়াতে তড়পাই। বাস্তবে পারি না।
নেই গতি, তাই সতী! ইউপিএ ছাড়ি না।

তিনি---
ছোটো হলে ছোটোখাটো লাথিটাথি প্রাপ্য।
ভাবিস না এ'কাহিনি এখনই সমাপ্য!

ইনি---
ভান করি চটবার। তুমি কেন চটে যাও?
যাই হোক ... জোট চাই। ভোট এলে জোটে নাও!

তিনি---
তাই বল! পথে আয় ... করিস না ফোঁসফোঁস।
চোখ মোছ। আয় তু ... তু... এসে পদতলে বোস!

মা ... মাটি ... ফানুস ... ~ অনামিকা

বীজের থেকে গাছ জন্মায়, এ'তথ্য খুব শিক্ষণীয়।
সিঙ্গুরে বীজ পুঁতলে, এবার সাঁকরাইলের বৃক্ষ নিয়ো!

কোথায় জমির দশ শতাংশ ফেরত দেবার ফেরেব্বাজি?
পার ফ্যামিলি একটা করে চাকরি সবাই চাইছে আজই!

আসল তথ্য জানত সবাই, বক্তৃতা সব ভাঁওতা বেজায়।
মিথ্যে কথার চ্যাম্পিয়নের কুম্ভীরাশ্রু মঞ্চ ভেজায়।

আম বাংলায় সবাই চেনেন ঘাসের নীচের ভাঁওতা শেকড়।
খ্যাঁটন সেরে অনশন আর সাক্ষীগোপাল চারশ' একর!

ডক্টরেটের মিথ্যে মায়ায় লোকসভা পায় নকল নথি।
জয়প্রকাশের গাড়ির মাথায়, তুমিই কি সেই নৃত্যবতী?

পাইয়ে দেবার রাজনীতিতেও ভাঁওতাবাজী করলে ঠিকই;
একবছরে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অশ্বডিম্ব পাড়ল কী কী?

মিথ্যেকথার জোঁকের মুখে আন্দোলনের লবন দিলে,
যেমন কাণ্ড ঘটার কথা, তাই ঘটেছে সাঁকরাইলে।
------------------------------------------
*সাক্ষীগোপাল= সঠিক সময়ে মুখে কুলুপ আঁটা হাড় হিম শয়তান গোপালটি, যে পুরো ঘটনার সাক্ষী ছিল,
কিন্তু শিল্পধ্বংসের সর্বনাশের সময় টুঁ শব্দটি করেনি!

মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১০

ম্যাও পাঁচালি ~ রাত্রি

শোনো শোনো সুধিজন সুশীল speaking...
পুরনো আ্যজেন্ডাতেই we are sticking !!
যত পাবি হার্মাদ করে ফ্যাল শেষ।
চাপ নেই বারুদের stock আছে fresh ।।
তুলে আন বাড়ী থেকে সম্ভব হলে ।
ধড় থেকে মুন্ডুটা পিস্ করা গেলে ।।
শুইয়ে দিস বডিটাকে পোসটার সমেত ।
ভোরবেলাতেই হবে live update ।।
একবার মিডিয়াতে গেলে crack করা ।
আমরা তো রেডি নিয়ে নোটের তাড়া ।।
পৌছবে স্নাইপার, wireless phone,
গুলি বোমা পেটো @ মাওবাদী zone ।।
মিডিয়াওয়ালারা তোর শ্যুটিং-এ এলে ।
গামছায় মুড়ে মুখ পিছন ফিরে ।।
release চাইবি তোরা "বিপ্লবিদের" ।
কারাবাস course শেষে শুরু হবে ফের ।।
নাম mention করে দিদি দেবেন খেতাব ।
সঙ্গে মেডেল পাবি চপ্পল ছাপ ।।

ফর্ম বনাম কনটেন্ট ~ অনামিকা

ফর্মে যদি ঘাটতি থাকে সেইটি ক্ষমার যোগ্য।
কনটেন্টের ঘাটতি যেটা, সেইটি কিন্তু রোগ গো!
ভুল ধরেছ বেশ করেছ। ভুল সে শুধু ফর্মে।
অল্পস্বল্প ভুল তো হবেই থাকলে কাজে কর্মে।
কিন্তু যখন প্রমাদ সেঁধোয় কনটেন্টের মধ্যে
ধ্বস্ত সময় চাইবে ফেরত ... যা নিয়েছিস শোধ দে!
শোধ কে দেবে? তোমরা তখন চতুর হাঁটায় চলায়
ফল খাচ্ছ বৃক্ষে উঠে ... কুড়োচ্ছ গাছতলায়।
কনটেন্টে ভেজাল তবু নিখুঁত থেকে ফর্মে,
একসঙ্গেই বিরাজ কর, জিরাফে আর ধর্মে!
যাদের জোরে সব ক্ষমতা তাদের রাখ প্রান্তে।
ভেতরদিকে ভাঙ্গন ছিল চাওনি সেটাও মানতে!
পরস্পরকে হারাও যেন ম্যাঞ্চেস্টার চেলসি।
তোমরা আমার জোনাল ... ডিসি ... চোখের মণি এলসি!
দশ আঙুলের মুক্তো প্রবাল মার্ক্সকে করে ঠাট্টা।
বড়দা খেলেন সুপারলোটো, ছোড়দা তুমুল সাট্টা।
বড়দা' খোঁজেন আবগারি মদ, চুল্লু শোঁকেন ছোড়দা।
আমার উঠোন দাপিয়ে বেড়ায় অসভ্য আস্পর্ধা।
মিডিয়াদের দোষ দিওনা। ওদের কাজই কেচ্ছা।
নিজেও তো কই সামলাওনি আত্মহনন ইচ্ছা।
নিজের পক্ষে তুলবে হাওয়া ওদের এমন গুণ নেই
বাতাস তোমায় ছাড়ছে তোমার উপার্জনের পুণ্যেই।
তোমার ভরসা করছি না আর। সাজছি নিজের বর্মে।
সামনে লড়াই, ফিরবো নিজেই কঠিনতম ফর্মে।

রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১০

অ্যাজেন্ডা ~ অনামিকা

ভোট চলে এল। আয় ছবিটা গোছাই।
যে করেই হোক ক'টা মৃতদেহ চাই।

তাপসী ... নন্দীগ্রাম নয় মোটে তাজা।
ঠান্ডা জিলিপি যায় কতবার ভাজা?
রাজারহাটের লোক বড়ই চতুর।
মিছিলেই আসছেনা, মরা বহুদূর!

আর বাকি যে ক'জন রোজদিন মরে,
সবই সিপিএম তারা, বলছে খবরে।
বুদ্ধিজীবীরা তাই বড় চুপচাপ।
সিপিএম মরলে কি কাঁদা যায় বাপ?

উসখুস করি রোজ। কী যে করি আমি!
চাইছি মরুক কিছু তৃণঅনুগামী।
হায় হায়, কী উপায় বলছে না কেহ,
কোথায় কীভাবে পাই ক'টা মৃতদেহ!

ভোটের যে কমিশন ... ভারি বদমাস।
এগোতেই চাইছেনা শেষ কয়মাস।
আসলে চাকর তারা, তবু জেদি বোকা।
আজ হবে, কাল হবে, দিয়ে যায় ধোঁকা।

মানছে না মিছে কথা, ভোটার গাধারা।
গণতন্ত্রে যে কেন বোকা বোকা ধারা
অযথা বহাল থাকে। কী হবে উপায়
জনগণ শেষমেস যদি বেঁকে যায়।

কল্যান পার্থরা তারাও কি আর
দেরি হলে রাজি হবে? শুধুই বিয়ার!
এ কেমন ককটেল? আর কতকাল
মাংস খাবে না তারা, শুধু ভাত ডাল?

ভুলে গেলি তোরা সব শ্বাপদশাবক?
দামাল বাছারা ... তোরা যে করেই হোক,
বোমা হোক ... গুলি হোক ... হোক ঘনঘটা ...
সংগ্রহ করে আন ডেডবডি ক'টা।

তারপর দেখ, আমি কি দেখাই খেল!
বনধ আর অবরোধ ... সকাল বিকেল।
ততদিনে ভোট, আর ভোট হলে পরে ...
কে না জানে আমি রাণী লাশ কাটা ঘরে!

শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১০

সামনে দিন। নেই লড়াই। ~ অনামিকা

উড়বি না আর। এবার আগাম লাগাম পড়ুক পক্ষীরাজ।
পারফিউমের সন্ধান নিক অরণ্যময় গন্ধরাজ।
খুব ক্ষমতার মিথ্যে নোটিস পৌঁছোলে কেউ তোর হাতে,
কাঁপতে কাঁপতে মার্জনা চাস, এবার থেকে জোড় হাতে।
দরকার নেই আন্দোলনের, দরকার নেই টেনশনের।
সামনেই দিন শস্যশ্যামল গ্র্যাচিউটি আর পেনশনের।

এই সময়ে পাগল না কি? দুষ্ট ক্ষতয় চুলকালি!
কি করবি তুই, সার্ভিস বুক মাখবে যখন ঝুলকালি?
আইন খুঁজেছিস? আইন কখনও ক্রীতদাসদের পক্ষে যায়?
ডাকছে মালিক ... শিরদাঁড়া খোল ... আয় কেঁচো আয় ... বক্ষে আয়!
যেমন ভাবে জীবন কাটায় আর পাঁচজন ভদ্রলোক
তেমন ধারায় দিনযাপনের এইবারে তোর ইচ্ছে হোক!

বাধ্য হয়েই ঢালছে মালিক সাধ্যমতন অসন্তোষ।
তাও কি মাথা রাখবি উঁচুই। কার ভরসায়? কী আপশোষ!
 

সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১০

সেই মেয়েটা.. ~ সুকন্যা

সেই মেয়েটা নিজের কথা ভুলে,
ঠান্ডা ঘরে অপ্সরা সাজে রাতে....
নীল আলোতে শরীরের বেচাকেনা,
না বলা কথা পর্দাগুলোর সাথে।

আজকে মেয়ের পিছুফেরার নেই,
হাতে নেই তার একটুও অবকাশ....
এসেছিল প্রেম মিলিয়েও গেছে তা,
হয়েছে শেষ পলাশের উল্লাস।

মেয়েটা হারায় বিপুল জনারন্যে,
ট্রেনের ভীড়ে রেলিং আর রাস্তায়....
রঙ্গীন গেলাসে নিরুত্তাপের ছোঁয়া,
রাতের শেষে একা বাড়ী ফিরে যায়।

স্বপ্ন বুনতো মেয়েটা কাজল চোখে,
সাজানো রঙ্গীন ঝলমল পরিবার....
আঁচলেতে বাঁধা সুখের চাবিকাঠি,
শান্তির নীড়ে স্বস্তিনিদ্রা তার।

ওলটপালট হয়ে যায় সব ছন্দ,
অভাবের থাবা গ্রাস করে অভিসার....
চোরাপথের বাঁকেতে হারায় কবিতা,
পিচসড়কে শুকোচ্ছে সংসার।

এখনো মেয়েটা মিথ্যে বলতে শেখেনি,
ঘুমের ঘোরে আঁকড়াতে চায় মা-কে....
চোখেরজলে বালিশভেজ়া রাত,
ফিরিয়ে দেয়না একটা দিনও তাকে।

সেই মেয়েটা আমার কেউ নয়,
দিইনি তাকে শান্তির স্বান্তনা....
নষ্টমেয়ের ভাঙ্গামেলার দিনে,
নীলাম হয়েছে পুরোনো যন্ত্রনা।

জেদী মেয়েটার শক্ত হয়েছে মুঠি,
দিন প্রতিদিন সমাজের সাথে লড়ে....
লজ্জা ঘৃনা সংকোচ দ্বিধা পেরিয়ে,
মাথা ঊঁচু করে অন্য একটা ভোরে।

মেয়েটা আজও বাঁচার আশায় বাঁচে,
তাকায় আবার রুদ্ধদ্বারের দিকে....
নতুন সূর্য্য উঠবেই একদিন,
বিপন্নতায় চিচিংফাঁক লিখে।

কুসুমপাড়ার কুসুমগুলোকে নিয়ে,
আলোর দিকে সূর্য্যমুখী চলে....
মেয়েটা আর নিজের জন্য নয়,
রোজ লাশ হয়ে জীবনের কথা বলে।