রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১১

চড়াই ~ নবারুন ভট্টাচার্য

মদ না খেলেও
স্ট্রোক না হলেও
আমার পা টলে যায়
ভূমিকম্প উঠে আসে বুকে ও মাথায়

মোবাইল টাওয়ার চিত্কার করে
চড়াই পাখীরা পরে থাকে মরে
ওদের আকাশ ফুরিয়ে গেছে
আকাশ চুরি করেছে তস্করে

পরে থাকে, বড়ই একাকী
চড়াইপাখি
পালকে কী জংলি ছাপ
ঠোঁটে, চোখে লেগে ও কি নীল
পাশে থাকে খড়কুটো, একে ফর্টিসেভেন
এভাবেই শেষ হলো এবারের লেনদেন

একটু চুপ করবেন, বিশিষ্ট শকুনেরা
থামাবেন আপনাদের কর্কশ হাঁকডাক
কিছুক্ষণ, বিনা শ্রবনযন্ত্রে, চড়াইয়ের
কিচিরমিচির
শোনা যাক

নবারুন ভট্টাচার্য
২৫ নভেম্বর

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১১

তবুও ~ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী

এই যে আমাকে দেখছ,
কিছুটা গোঁয়ার, কোনও নির্দেশে থামিনা ...
এটা কিন্তু আসলে আমি না!
কোটি কোটি অর্বুদ ভিতু আর বোকা অনুপ্রাণী
একা একা বেঁচে থাকা অসম্ভব জেনে আশাহত, হয়নি তবুও!
ভাগ করে নিল কাজ ... রেচন জনন
গাঢ় রক্ত চলাচল, মন্দ্রিত মনন!
যৌথখামার এক ... এ শরীর নেহাত্ই কলোনি!
অভিশাপ বাক্য যত, জেনে রাখো, ওদের বলেছ ...
কোনও দিনই ... আমাকে বলোনি!
মহামারী উল্কাপাত যুদ্ধ ঝড় ... ইতিহাস ... বোবা সাক্ষী থাকে,
অভিশাপ ছুঁইনি তাই, বিশালাক্ষি আমিও তোমাকে,
নালন্দা তক্ষশীলা নদীতীরে সমুদ্রে গুহায়
স্থাপন করেছি নির্দ্বিধায়।
মেঘের নিবাস ছেড়ে ,ভুল করে ... যদি ঘরে আসো সৌদামিনী ...
দেখে যেও বেঁচে আছি।
অন্বেষণ করে যাচ্ছি ... এখনও থামি নি!

লীলা ~ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী

এসো নবকৃষ্ণ ... এসো ... বসে আছি ... এসো মনিটরে
বাজাও প্রতিটি তন্ত্রী কি বোর্ডে বোবা অক্ষরে
চ্যাটে কি চন্দ্রাবলী? ওকে আজ একটু থামিও।
জানি তুমি একা নও। একা নই জানো তো আমিও!

প্রতিটি সাইটে করি সাইন ইন দ্রুত যাতায়াত
সবাইকে অকাতর ভালবাসা দিই দিনরাত
একশ' আটটি নামে ভূগোলক জুড়ে চলে লীলা
তুমি বহুগামী, তাই আমি নই তেমন সুশীলা

ভার্চুয়াল ফাঁসে টানো ডিজিটাল চির পরকীয়া
অফিসে কাজের চাপে ঘরে নেই নিজের পুরুষ
না কি সে নিজেও কোনও অজুহাতে নির্জনতা খুঁজে
নিষিদ্ধ অক্সিজেনে ধুয়ে নিচ্ছে ক্লান্ত ফুসফুস

অশরীরী ওগো শ্যাম, সাইন অফ কোরো না এখুনি
ক্রীতদাস এ'শরীরে ঢালো প্রেম নিষিদ্ধ আমোদ
ছবি আপলোড কর ... ব্ল্যাকমেল কর ... হও খুনি
এমএমএসএ ভেসে যাক টলটলে তিলক কামোদ

মুখোসে আড়াল খোঁজো। বয়ে যাচ্ছে বসন্তের সেল।
ডেটিংএর প্রথামত হাতে নাও প্রথম আপেল
নতুন সফটওয়্যার হরমোনে করে নাও লোড।
এখুনি আরম্ভ হবে আকাঙ্খার নেক্সট এপিসোড।

ভবিতব্য ~ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী

আমি সিস্টেম ভাঙতে পারিনি,
সে'ই বরঞ্চ অল্পে অল্পে
গিলেছে আমাকে। আজ আয়নায়
নিজেকে খোঁজার নয়া প্রকল্পে
নেমেই অবাক, দর্পণ ভাঙা
জলে ঝাঁপাবার প্রাকমুহূর্তে
যে'রকম ভাবে বোঝে মাছরাঙা
জলের ভেতর হাজার টুকরো করছে নিজেকে

অযথা তুচ্ছ মাছের জন্য
আসলে তার এই লোককে দেখান
সাহসিকতাটা ... অযথা বন্য ...

ছিন্নমস্তা প্রেমের খাতিরে
আরও কত কাজ বাকি পৃথিবীর
দু'দিকে সাজানো অক্ষৌহিনী
বড় মেজো ছোটো সৈন্যশিবির
মধ্যে নিঝুম অভয়ারণ্য,
পায়ে চলা পথ ... হাঁটি অগত্যা ...
যদি দেখা হয় ... চোখে চোখ ... বলি
অনুমতি দাও করব হত্যা

আমি সিস্টেম ভাঙতে চাইছি
কিন্তু ব্যর্থ। সে'ই বরঞ্চ
আমাকে মহান করার জন্য
পুষ্পে সাজায় ফাঁসির মঞ্চ