বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

নেশান ওয়ান্টস টু নো ~ অভিজিৎ মজুমদার

সন্মুখে সম্ভাব্য মৃত্যুসমুদ্র দেখিয়া অর্জুন কম্পিতকন্ঠে কহিলেন, "হে কেশব। আমার হস্ত শিথিল হচ্ছে, আমি গান্ডীব ধরে রাখতে পারছি না। আমার শরীরে কম্পন অনুভব হচ্ছে, সর্বাঙ্গে স্বেদনি:সরণ হচ্ছে। এ যুদ্ধ আমার পক্ষে সম্ভব নয়, মধুসূদন। তুমি আমায় পথ দেখাও।" 

অর্জুনের বিচলিত অবস্থা দেখিয়া বাসুদেব স্থিরকন্ঠে কহিলেন, "হে সখা, শান্ত হও। তোমার মত স্থিতধী পুরুষের এমন নার্ভাস ব্রেকডাউন সাজে না। যদি তুমি এই যুদ্ধে জয়লাভ কর তবে সসাগরা ধরিত্রীর অধীশ্বর হবে। আর যদি বীরগতি লাভ কর, তবে লোকে তোমার ছবি নিয়ে ভোট চাইবে। অতএব আত্মসংবরণ কর।"

অর্জুন কৃষ্ণর কথায় বিশেষ আশ্বস্ত হইলেন না। সংশয়াচ্ছন্ন কন্ঠে বলিলেন, "নিজের মৃত্যু নিয়ে শঙ্কিত নই গিরিধর। কিন্তু দুরাত্মা দুর্যোধনকে শাস্তি দিতে গিয়ে এই অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের প্রাণ নেওয়া কি জাস্টিফায়েড? শান্তি কি যুদ্ধ অপেক্ষা অধিক কাঙ্খিত নয়?"

কৃষ্ণ কহিলেন, "চুপ, চুপ। মিত্র, এমন বাক্য মুখেও এনো না। লোকে শুনলে তোমায় তো দেশদ্রোহী বলবেই, তোমার সাথে সাথে আমাকেও আরবান নক্সাল বলে দাগিয়ে দেবে। নাও, মুখ খোলো, দু-দাগ রাস টক্স খেয়ে নাও। নার্ভ চাঙ্গা হবে। এবার ভালো করে শোনো। আমি তোমায় যুদ্ধের অবশ্যম্ভাব্যতা নিয়ে কিছু উপদেশ দেব। এই উপদেশ মানুষ যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন যুদ্ধকে জাস্টিফাই করতে ব্যবহার করবে। ইয়দা ইয়দা ভোট উপস্থিত হবে, তখন তখন এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হবে।"

এতৎ বলিয়া শ্রীকৃষ্ণ তাঁহার দুইহাত প্রসার করিয়া এক অপূর্ব মায়াজাল সৃষ্টি করিলেন। চতুর্দিক এক সুগন্ধী ধূম্রে আচ্ছন্ন হইল। সেই ধূম্রজালের ভিতর হইতে শোনা গেল এক জলদগম্ভীর স্বর, "ইফ ইউ আর নট ইন ফেভার অফ ওয়ার, ইউ আর উইথ দেম। ইফ ইউ আর ইভেন্ থিংকিং অফ পীস, ইউ আর উইদ দেম। নাও টেল মি, আর ইউ উইদ দেম? টেল মি,টেল মি। নেশন ওয়ান্টস টু নো.."

অর্জুন সেই মোহক কন্ঠের জাদুকরীতে অভিভূত হইয়া পুনর্বার গান্ডীব ধারণ করিলেন। ভীমসেন কৃষ্ণের দিকে তাকাইয়া চক্ষু মারিলেন। বাসুদেব স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে স্মিত হাসিয়া আপনার সারথিকার্যে মনোনিবেশ করিলেন। 

বাকি গল্পটা তো আপনারা জানেনই।

বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

যুদ্ধ ~ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়

যুদ্ধ
রূদ্ধ
দুনিয়া
শুদ্ধ

লন্ড
ভন্ড
পাগলা
ষন্ড

বুদ্ধি
শুদ্ধি
গুলিয়ে
রদ্দি

রক্ত
ভক্ত
বোঝানো
শক্ত

কষ্ট
নষ্ট
বিরোধ
স্পষ্ট

যুদ্ধ
রুদ্ধ
শুদ্ধ
চিন্তা
 
রুদ্ধ
যুদ্ধ
মুক্ত
চিন্তা

মুনাফা কার? ~ আর্কাদি গাইদার

ইংরেজিতে একটা শব্দবন্ধ রয়েছে -a gift that keeps on giving. একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের শাসকরা এরকম একটা উপহার আবিষ্কার করেছে - low scale conflict বা ক্ষুদ্র আকারের সংঘাত।এ যেন সোনার ডিম দেওয়া হাঁস, হাঁসটাকে যতদিন বাঁচিয়ে রাখা যায়,ততদিন সোনার ডিম দেবে।ইজরায়েলের প্যালেস্তাইন, রাশিয়ার চেচনিয়া,আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য,ভারতের কাশ্মীর,এই সংঘাতগুলো দীর্ঘকালীন সময় ধরে চলছে,তার প্রধান কারণ এটাই যে এই সংঘাতগুলো মিটিয়ে ফেলায় মুনাফা নেই।

মুনাফা।একশো বছরেরও বেশি সময় আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে রাশিয়ার লেনিন নামে একজন লোক একটা তিন প্যারাগ্রাফের নোট লিখেছিলেন।নাম ছিলো 'কার লাভ' (who stands to gain)?নোটে বলা ছিলো যে,যে কোন ঘটনাকে বিশ্লেষণ করতে গেলে সেই ঘটনার সরাসরি অংশগ্রহণকারী কারা,কারা তার স্বপক্ষে বা বিপক্ষে গলা ফাটাচ্ছে,কারা প্রতিক্রিয়ার তত্ত্ব এনে জনমানসকে প্রভাবিত করবার চেষ্টা করছে, এই বিষয়গুলোর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে মুনাফা কার? তাই কাশ্মীরের সংঘাতের পেছনে কারণ খুঁজতে একশোটা বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ লেখা যেতে পারে, হাজারটা তর্কে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে, কিন্তু এর সমাধান খুঁজতে গেলে অন্যতম যে প্রশ্নটাকে এড়ানো চলবে না, তা হলো - মুনাফা কার? ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠীর মাথাদের, যারা এই কাশ্মীরের মতন উপদ্রুত অঞ্চলের বাসিন্দাদের ক্ষোভকে মূলধন করে তাদের মধ্যে থেকে নিজেদের সংগঠনের সদস্যদের সাপ্লাই লাইনের যোগানের ব্যবস্থা করে?পাকিস্তান এবং ভারতের শাসকগোষ্ঠীর,যারা নিজেদের দেশের যে কোন সমস্যার থেকে নাগরিকদের নজর ফেরাতে কাশ্মীর এবং বর্ডারের সংঘাতকে ব্যবহার করে? আমাদের দেশের হিন্দু মৌলবাদীদের, যারা কাশ্মীর (মুসলমান সন্ত্রাসবাদী) এবং পাকিস্তান (মুসলমানদের দেশ) এর ইস্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনীতির দিকে ঝোল টানতে? চীন, যার কাশ্মীর এবং বর্ডার অঞ্চলে বিশাল বিনিনিয়োগ রয়েছে পরিকাঠামোর স্তরে, ব্যবসা এবং সামরিক ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করতে?

না। প্রধান মুনাফা এদের না।এরা তো স্রেফ একটি সংঘাতের আনুষাঙ্গিক সুবিধে উপভোগ করে।আসল মুনাফা তাদেরই, যাদের নিয়ে সেই ১৯১৩তেও লেনিন তাঁর প্রবন্ধ লিখেছিলেন।অস্ত্র ব্যবসায়ীদের।বিশ্বে এই মুহুর্তে সামরিক খাতে খরচা হলো ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার।সর্ববৃহৎ অস্ত্র রপ্তানি করা দেশ কে? আমেরিকা।

আর সর্ববৃহৎ অস্ত্র আমদানি করা দেশ? ভারত।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের মধ্যে 'মোস্ট হেভিলি মিলিটারাইজড জোন' কাশ্মীরের সংঘাত যতদিন টিকে থাকবে, ততদিন মুনাফা করবে এই ব্যবসায়ীরা।মুনাফা করবে রাফায়েল বিমান বেচে, বোফর্স বেচে। দুদিকের লোককেই অস্ত্র বেচবে তারা। ডিজিটাল যুগে অস্ত্র মানে শুধু গোলা বারুদ বন্দুক না, সাইবারসিকিউরিটি এই সামরিক শিল্পের এখন এক অন্যতম অংশ।তাহলে শান্তিচুক্তি করে,গোল টেবিল বৈঠক করে, বা উলটো দিকে নির্ণায়ক যুদ্ধ করে এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা তো ব্যবসায়ীদের পক্ষে ক্ষতিকর।ওষুধ কোম্পানিগুলোর মতনই, অস্ত্র কোম্পানিরাও জানে, সুস্থ বা মৃত মানুষে মুনাফা নেই। মুনাফা আছে খালি অসুস্থ মানুষে।

তাহলে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ায়, যে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের বা পাকিস্তানের আসলে যে বিদেশনীতি, বা সামরিক নীতি, তা আদতে ভারত বা পাকিস্তান নামক জাতিরাষ্ট্রের নীতিই না।তা হলো ব্যবসায়ীদের কর্পোরেট নীতি, সেই নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আমেরিকা আছে, চীন আছে, ইজরায়েল আছে, বা বলা ভালো এই দেশগুলোর ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে। স্বাধীন বিদেশনীতি আসলে সোনার হরিণ, ওটা নাগরিকদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যে, জাতিরাষ্ট্রের নীতি আসলে কর্পোরেটদের মুনাফার নীতি। প্রায় দশ বছর আগে ইংরেজি সংবাদপত্র গার্জেনে একটি লেখা বেরিয়েছিলো, যে নেশন স্টেটের এক্সপেরিমেন্ট শেষের পথে, নেশন স্টেটের শবদেহের ওপর কর্পোরেট স্টেটের নির্মাণ চলছে। যদিও শবদেহটাকে পুড়িয়ে ফেলা হয়নি বা কবর দেওয়া হয়নি, নাগরিকদের বোকা বানাতে ওইটূকু রাখতেই হবে।

আমরা যারা নিজেদের যুক্তিবাদী, প্রগতিবাদী এবং গণতান্ত্রিক স্রোতের অংশ মনে করি, তাদেরকেও এই ভারত, পাকিস্তান, চীন, আজাদ কাশ্মীরের গোলকধাঁধার মধ্যে থেকে নিজেদের আখ্যানকে বার করে আনতে হবে, তৈরি করতে হবে সঠিক আখ্যান, বারবার বলতে হবে মুনাফাবাজদের কথা, যেই মুনাফাবাজদের ব্যালেন্স সীট মেলাতে পুলওয়ামাতে মরতে হয় ৪৪ জন দরিদ্র পরিবারের জওয়ানকে, বা গত ২০ বছর ধরে শয়ে শয়ে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের, গুলি খেতে হয় কাশ্মীরের বাসিন্দাদের, বারবার চিহ্ণিত করতে হবে সেই গোষ্ঠীকে যাদের মুনাফা বাড়াতে অস্ত্র কেনা হয় আমাদের পয়সা দিয়ে। মোদী, যুবরাজ সালমান, দোভাল, ইমরান খান, এরা আদতে গ্লোরিফায়েড ব্রোকার।এদের মালিক আম্বানি, লকহিড মার্টিন, বোয়েইং, আমেরিকা, ইজরায়েল, ফ্রান্স - সেই চক্রটা যাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স বলেছিলো। এই চক্রকে চিহ্নিত করা প্রথম কাজ - নাহলে এদের মুনাফার স্বার্থে এরকম আরও অনেক পুলওয়ামা হবে, আর আমরাও মেকি জাত্যাভিমান আর দেশপ্রেমের আখ্যানে ভেসে গিয়ে ধ্বংস হবো।

বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

চুমুৎকার রিভিজিট ~ আশুতোষ ভট্টাচার্য্য

চুমু খায় রাজা রানী, সেনাপতি সৈন্য
জ্যাঠা বলে এতো স্রেফ চিন্তার দৈন্য;
বিপ্লবী চুমু খায় , অবিচল লক্ষ্যে
একে তাকে টেনে নেয় ভালোবেসে বক্ষে;
বিজ্ঞানী চুমু খায় সুদে ভগ্নাংশে
কিছু চুমু নিষিদ্ধ খানদানি বংশে!
চুমু খেলে শিক্ষক, গার্জেন ক্রুদ্ধ
বিক্ষোভ অবরোধ সারা দেশ শুদ্ধ;
গবেষক চুমু খায় পেপারে কি থিসিসে
সাল্মান বলে হাম কম নেহি কিসি সে;
গায়কের কিবা দোষ চুমু দিলে ভক্ত
চুন বালি সিমেন্টে প্রেম পাকাপোক্ত;
চুমু খায় প্রমোটার ক্যাডার কি আমলা
নমো বলে রাগা তুই মহাজোট সামলা!
পুটিনেও চুমু খায়, চুমু খায় ট্রাম্পে
লঙ্কায় গিয়ে কেউ জেতে হাইজাম্পে;
কবিগন চুমু খায় বসন্তে ফাগুনে
প্রকাশক সুখে থাকে পোকা কাটা বেগুনে;
চুমু খায় মন্ত্রীরা ছোট বড় নেতারা
সুরে গানে চুমু খায় করতাল দোতারা;
চুমু খায় ব্যবসায়ী গোয়ালা কি বেকারে
পুস্তকে লেখা থাকে চুমু শত প্রকারে;
রাশিয়ান চুমু নাকি ফিকে লাল উদাসী
চুমু নাকি কিস হয় আজ যারা প্রবাসী;
ধার্মিক চুমু খায় চুপিচুপি গোপনে
মাধবীকে চুমু খেল তপাদার স্বপনে;
চুমু নাকি নিষিদ্ধ লেখা আছে শাস্ত্রে
বুমেরাং হবে দেখ নিজেদের অস্ত্রে!
ব্যস্ততা সারাদিন মৌলবি পুরুতে
কেউ থাকে আড়ষ্ট চুম্বন শুরুতে;
গুণধর চুম্বনে মহা পারদর্শী
থাকে কেউ ধান্দায় হাতে ছিপ বড়শি;
চুম্বন অশ্লীল সেন্সর বিধানে?
কি যে আছে কার মনে জনগন কি জানে!
চুমু খায় চাঁদ মামা টিপ দেয় কপালে
দু কলম লিখে দেব শুধুশুধু খ্যাপালে।।

শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

সিবিয়াই ~ অমিতাভ প্রামাণিক

রোব্বারের সন্ধে। অমিতভাইকে টা টা করে দিয়ে মোদিজি 'মদীয়' বাসভবনে খাড়ি-শক্কর কি চায় আর দুটো ফাফরা নিয়ে সোফায় বসে টিভিতে আস্থা চ্যানেলে অনুকূল ঠাকুরের 'জয় রাধে রাধে কিষ্ণো কিষ্ণো গোবিন্দ গোবিন্দ বলো রে' দেখছিলেন। অমিতভাই চালু মাল, প্রিয়াঙ্কা ফিল্ডে নামতেই ওর বরের পেছনে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট লেলিয়ে দিয়েছেন। পাঁচ-পাঁচটা বছর গেল, এতদিন রবার্ট ভদ্র রবারের মত নমনীয় ভদ্র বালক ছিল। তার আগে, মানে আগের ইলেকশনের আগে অবশ্য সে ছিল এক নম্বর ইস্যু। কং পার্টির স্ক্যামস্টারদের পাশাপাশি তার নামও রোজ খবরের প্রথম পাতায় আর যাবতীয় প্রি-ইলেকশন জনসভায় শোনা যেত। ইলেকশনে জিতে যেতেই সব ধামাচাপা। আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে, এখন আবার রবার্টকে নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়া হবে। রবার্টের তুলসীপাতা কতটা ধোয়া, সেই জানে। জনগণের টাকা কেউ চুষে নেয় বছর বছর। জনগণ কাগজে দ্যাখে, তার পেছনে আছে অমুক। কেউ অবশ্য জেলে যায় না। জনগণের টাকা চক্কর কাটে খবরের কাগজে আর ইলেকশনের র‍্যালিতে। 

অনুকূল ঠাকুরের বংশধর শ্রীশ্রীবড়দা ভুঁড়ি পেতে বসে পৈতেটা ধরে হাওড়া-শিয়ালদা করতে করতে টিভির পর্দা জুড়ে বিরাজ করছেন। পেছনে 'জয় রাধে রাধে' গান বাজছে। সেদিকে তাকিয়ে মোদিজি ফোঁস করে এক বড় নিঃশ্বাস ফেললেন। রামদেব তো তাও ভুঁড়িতে ঢেউ খেলাতে পারেন, ইনি স্রেফ ঐ ওঁচা একটা গান গেয়েই এ রকম একটা বিজনেস বানিয়ে ফেললেন! হেড অফিস দেওঘর। বাঙালি নাকি বিজনেস বোঝে না! বোঝে, বোঝে। তাঁর নিজের যে চায়ের বিজনেস ছিল, চা-টা আসত কোথা থেকে? ঐ বাংলা-আসাম দেশেরই তো চা। এখন অবশ্য বাংলায় চায়ের চেয়ে চপটাই বেশি চলছে বিজনেসের জন্যে। মোদিজি চপ জিনিসটা তেমন খাননি। কেমন খেতে, ঢোকলা-ফাফরার চেয়ে ভাল কি? বাংলার দিদিকে জিজ্ঞেস করতে হবে। দিদি তো মোদি বলতে অজ্ঞান। জনসভা হলেই মোদি-মোদি করে কানের পোকা বের করে দেন।

ভাবতে ভাবতেই ফোন। দিদিরই ফোন। 

- কেয়া করতা হ্যায় মোদিজি? বসে বসে ছাস পি রাহা হ্যায়? এদিকে বিগেড মে ক্যা হুয়া আপকো পাতা হ্যায়? বামফন্ট নে বিগেড পুরা ভর দিয়া। ম্যায় ডিম্ভাত দেকে যো নেহি কর পায়া ও রুটি তরকারি সে কর লিয়া। 

- তো আপকা ক্যা, দিদিইইই? আপ তো মেলে মে মোদি মোদি করকে মেরা দিমাগ চাটোগি। আব দেখো কিৎনা প্যাডি মে কিৎনা রাইস। 

- ও সব বাৎ ছোড়ো মোদিজি। বাদ মে দিখা যায়েগা। অব বাতাও হাম ক্যা করেঙ্গে? হাম এ বামফন্টকো সহ্য নেহি কর সকতা হ্যায়। কোই হেমবম বোলকে এক মহিলা ডায়লগ মারকে গিয়া, উসকো বহুৎ হাততালি মিলা। এ হামদম মুঝে বরদাস্ত নেহি হোগা। কুছ উপায় বাতাইয়ে। 

- ম্যায় ক্যা উপায় বাতায়ুঙ্গা দিদিইই? উপায় তো আপকো মালুম হ্যায়। আপ তো ইলেকশন ভি ঠিক তরে সে হোনে নেহি দেতে হ্যায়। 

- উফ, ফির ইলেকশন ইলেকশন করকে মুঝে সাতাও মৎ। কুছ বোলো।

- ক্যা বোলুঁ দিদিইইই?

- অ্যায়সা কুছ বোলো, যাতে এ বিগেড কা নিউজ লোগো তক না পৌঁছায়। কাল পেপারমে ও নেহি আনা চাহিয়ে। আপ কুছ করো না। আপকা হাত মে তো সিবিয়াই হ্যায়। 

- সিবিয়াই হ্যায় তো ক্যা? বামফ্রন্ট মে স্ক্যাম হ্যায় কিধর? লোগ হি নেহি হ্যায় তো স্ক্যাম। বঙ্গাল মে স্ক্যাম কা পুরা ফিল্ড তো আপ কা হাথ মে। বামফ্রন্ট কা কিসকা পিছে সিবিয়াই ডালুঁ, দিদিইইই?

- আরে ধুর, উসকা নেহি, মেরে পিছে ডাল দো। ম্যায় দেখ লুঙ্গি ক্যা কর সাকতা হুঁ। ডামা হোগা রাতভর। সুবে লোগ বিগেড ভুল যায়গা। পেপারমে ডামা কা খবর ছাপেগা। 

- ক্যা বোল রহী হো, দিদিইইই? আপ ভুবনেশ্বর যানে কে লিয়ে তৈয়ার হ্যায়? ম্যায়নে শুনা হ্যায় কি ও জেল মে টয়লেট আচ্ছা নেহি হ্যায়। ছ্যাৎলা পড় গয়া, ইসি লিয়ে হাওয়াই চটি ভি স্লিপ কাটতা হ্যায়।

- আরে ধুর, ভুবনেশ্বরে আমি মরতে যাব নাকি? আচ্ছা, ঠিক হ্যায়, এ বাৎ ছোড়ো। অব মুঝে ইধারকা লোগ দিদি নেহি, পিসি বোলতা হ্যায়। আপ সিবিয়াই কো বোল দো কলকাত্তা সে পিসিকো উঠানে কে লিয়ে। 

- ফির? 

- ফির বাদ মে দিখা যায়েগা। আব মেরা পাস টাইম নেহি হ্যায়। বুকফেয়ার চল রাহা হ্যায় মেরা অনুপ্পেরণা সে। আপ তো কিতাব-সিতাব পঢ়তে ভি নেহি হো, লিখতে ভি নেহি। মেরা সাত সাত নয়া কিতাব হ্যায়। এ লেকে সাতাশিটা হুয়া। আপ তো খাতা ভি নেহি খুলা, ওদিকে চিল্লাতে হো মেরা নামমে খিল্লি উড়াকে। সাতাশি কিতাব এ জনম মে পঢ়া ভি নেহি হোগা। মেলে মে নয়া সাতকা মোড়ক উন্মোচন হোগা এক এক করকে, গোপাল বৈঠা হ্যায় চেয়ার-টেয়ার মুছকে। বিগেডবালা ভি উধার গিয়া হ্যায়। আভি ভেজো সিবিয়াই। কোলকাতা মে যো অফিসার হ্যায় উস্কোই ভেজ দো। দিল্লি সে লানেকা টাইম নেহি হ্যায়। বোল দো নীল শাট পহনকে ফটাফট যাকে পিসিকো উঠা লো। ফির ম্যায় দেখতা হুঁ, কী করা যায়। ম্যায় যো করেগি, আপ চুপচাপ দেখতে রহেনা, ফট করকে ফোর্স মোর্স নেহি ভেজনা মোদিজি। খুব খারাপ হো যায়েগা।

- এ ক্যা বাৎ হুয়ি দিদিইই। উধার কেজরি হামে ডাঁটতে হ্যায়, ইধার আপ হামে ডাঁটতে হো। ডাঁট খাকে খাকে মেরা তো সারে খানা ডাঁটা য্যায়সা লাগতে হ্যায়। 

- ইসি লিয়ে তো সেম জোক বোল বোলকে ছিবড়ে কর ডালা। মেরা য্যায়সা নয়া নয়া শুনাও। নেক্সট উইক সরস্বতী পূজা হ্যায়। আ যাও বাংলা মে, মা কি পুজো করো তো পেট মে থোড়া বিদ্যা আয়েগা। মন্ত্র বোলুঁ ম্যায় ইয়ে বসন্ত্‌ উৎসব কা? সরসোতি মোয়াভাগে –

- নেহি নেহি, রহনে দিজিয়ে। ম্যায় সিবিয়াই ভেজ রহা হুঁ। সিবিয়াই, সিবিয়াই – 

(পরবর্তী ঘটনা সোমবারের আনন্দবাজারে পড়েছেন নিশ্চয়)

মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

আমরা - ওরা ~ সুশোভন পাত্র

'আমরা', 'ওরা' পার্থক্যটা চোখে পড়ছে? রাজ্যে আট বছর ক্ষমতায় নেই বামপন্থীরা। মিডিয়ার ভাষায় বামপন্থীরা 'ফিনিশ'। কেতাদুরস্ত নবান্নের মালকিন বলেছেন, 'সিপিএম খুঁজতে দূরবীন লাগবে'। আম্বানি-আদানির মালাইয়ে কব্জি ডুবিয়ে চর্বি জমানো অমিত শাহ'দের খোয়াবনামা, 'কমিউনিস্ট মুক্ত দেশ গড়বেন'। গত এক দশকে রাজ্যে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হয়েছেন বামপন্থীরা। সালকু সরেন, অজিত লোহার, পূর্ণিমা ঘড়ুই থেকে শুরু করে, সুদীপ্ত-সইফুদ্দিন হয়ে হালফিলের কাকদ্বীপ -বামপন্থীদের রক্তে প্রতিদিন ভিজেছে বাংলার মাটি। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পার্টি অফিস, জবরদখল গন সংগঠনের হাজারো দপ্তর, ঘরছাড়া অসংখ্য কর্মী-সমর্থক। লেনিনের মূর্তি থেকে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত ফলক, ভিটে-মাটি থেকে শুরু করে মা-বোনদের ইজ্জত -মদ্যপ লুম্পেন বাহিনীর হাতে রক্ষা পায়নি কিছুই। দলদাস প্রশাসনের কাছে 'আমাদের' ব্রিগেডের জন্য নুন্যতম সহযোগিতা পাওয়া যায়নি, ইউনিয়নের রক্তচক্ষু তে যথেষ্ট গাড়ি জোগাড় করা যায়নি, প্রবল শীতে রাত্রি বাসের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা যায়নি, সকলের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেওয়া যায়নি। 
'ওঁদের' ব্রিগেডে 'পাগলু' ড্যান্স'র আকর্ষণ ছিল। আগের রাতে খিচুড়ি মাংসের পাত পড়ে ছিল। মদের বোতলের চুইয়ে পড়া মাদকতা ছিল। সানগ্লাসের আড়ালে ভেঙ্কটেশ ফিল্মের ভাড়া করা টলিউড তারকাদের ভিড় ছিল। মাথায় অক্সিজেনের কমে যাওয়া কেষ্ট-বিষ্টু সংগঠক ছিল। বাঁকুড়ার গরমে ভোটের প্রচারের জন্য নতুন 'সানস ক্রিম' খোঁজা মুনমুন সেনের মত সাংসদ ছিল। সরকারী প্রকল্পে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন ছিল। হুমকি ছিল, ধমকি ছিল। মঞ্চে ২৪দলের নেতাদের ভজকট ভিড় ছিল। কৌন বানেগা প্রধানমন্ত্রীর  মিউজিক্যাল চেয়ার কম্পিটিশন ছিল। আর 'আমাদের' ব্রিগেডে সরজমিনে মানুষ ছিল। নেতা নয়, নীতি বদলের ডাক ছিল। জান কবুল, মান কবুল লড়াইয়ের শপথ ছিল। আপামর বাংলার মেহনতি মানুষের চোখে স্বপ্ন ছিল। নতুন লড়াই'র রসদ ছিল। 'আমাদের' ব্রিগেডে প্রাণ ছিল।
'আমরা', 'ওরা' পার্থক্যটা চোখে পড়ছে? রাজ্যে ব্যাঙের হাঁচি হলেও সিবিআই তদন্ত চেয়ে তখন পাড়া মাথায় তুলতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টানা বাহাত্তর দিন পুলিশ-প্রশাসনের প্রবেশ নিষিদ্ধ তখন নন্দীগ্রামে। বিরোধী নেতা-সাংসদ'দের মদতে বে-আইনি অস্ত্রের পাহাড় জমছে তখন নন্দীগ্রামে। একদিনে সিপিএম'র ২৫টা পার্টি অফিসে আগুন জ্বলছে তখন নন্দীগ্রামে। নিয়ম করে শঙ্কর সামন্ত'দের লাশ পড়ছে তখন নন্দীগ্রামে। প্রশাসনের ডাকা সাত-সাতটা শান্তি বৈঠকে যোগ দিলো না তৃণমূল। ৯'ই ফেব্রুয়ারি  মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হেড়িয়ার জনসভায় বলেছিলেন "মানুষ না চাইলে ক্যামিকাল হাব হবে না নন্দীগ্রামে। অধিগ্রহণ হবে না এক ইঞ্চি জমিও।" তবুও নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে সিপিএম'র 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের' দ্বিতীয়বর্ষ পূর্তির জনসভাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন বলেছিলেনে "নন্দীগ্রামের গণহত্যার সিবিআই তদন্ত চাই।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবী মতই সিবিআই তদন্তও হয়েছিল। পেটোয়া আইপিএস দিয়ে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে হয়নি, পুলিশ পাঠিয়ে তদন্তকারী সিবিআই অফিসারদের গ্রেপ্তার করতে হয়নি, প্রশাসন কে রাস্তায় বসিয়ে মেট্রো চ্যানেলে শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে ধর্নার নামে রকবাজি করতে হয়নি। 
দিদি-মোদীর সেটিং-এ ঝুলিয়ে রেখে নয় বরং ২০১৪'তেই নন্দীগ্রামের ঘটনার চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। সিপিএম'র 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের' কোন নিদর্শনই খুঁজে পায়নি সিবিআই। তালপাটি খালে চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে 'সিপিএম'র হার্মাদ বাহিনীর হাতে পা চিরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া একটাও শিশুরও লাশ খুঁজে পায়নি সিবিআই। গোটা নন্দীগ্রাম ঘুরে একটাও 'স্তন কাটা মহিলা' খুঁজে পায়নি সিবিআই। 
'আমরা', 'ওরা' পার্থক্যটা চোখে পড়ছে? বছর দশ আগে, একটা স্টিং অপারেশনে, নন্দীগ্রামের সিপিআই'র প্রাক্তন বিধায়ক মহম্মদ ইলিয়াসের হাতে প্রায় জোর করেই গুঁজে দেওয়া হয় ১০,০০০ টাকা। বিধানসভায় স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনেন নারদা ঘুষ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত 'পাঁচ লাখি' সৌগত রায়। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে সেদিন পদত্যাগ করেন ইলিয়াস। বহিষ্কৃত হন পার্টি থেকেও। মানসিক অবসাদে আজ কোন রকমে বেঁচে আছেন ইলিয়াস। দু-বিঘা জমি বেঁচে চিকিৎসার খরচা চলে। বিধায়কের পেনশন চলে সংসার। পরে অবশ্য সিবিআই জানিয়েছিল ইলিয়াস নির্দোষ। আর ওদের সেই স্টিং অপারেশনর সাজানো সাংবাদিক শঙ্কুদেব পণ্ডা ও নাটের গুরু শুভেন্দু অধিকারী আজ চিট ফান্ডের আর্থিক তছরুপের দায়ে সিবিআই'র খাতায় অভিযুক্ত। জনাব শুভেন্দু বাবু জানলে দুঃখ পাবেন যে গত রোববার ইলিয়াসের ছেলেও এসেছিলেন ঐ ইনকিলাবি ব্রিগেডে।   
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ৫কোটি টাকা দিয়ে সতেরোটা কমিশন গড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।সিপিএম'র নেতাদের পিণ্ডি তর্পণের দিবাস্বপ্নে বিগলিত বুদ্ধিজীবীরা কমিশন'কেই দরাজ সার্টিফিকেট বিলিয়ে বলেছিলেন "এহি হ্যা রাইট চয়েস বেবি।" কিন্তু শত চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তো দূরের কথা, একজন বামপন্থী নেতারও কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেননি দিদিমণি। ৩৪ বছরের একটা দুর্নীতিও প্রমাণ করতে পারেননি দিদিমণি। আর আজ কান টানলে  মাথা আসার সূত্রে নিজেই পথে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শাগরেদ আমলার কেঁচো খুড়তে কেউটে বেরিয়ে যাবার ভয়ে সিঁটকে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লজ্জার মাথা খেয়ে নৈতিক জয়ের গল্প ফাঁদছেন মুখ্যমন্ত্রী। কথায় আছে, চোরের মায়ের বড় গলা। 
আর আমাদের মা ছিতামনি সরেন। যে ছিতামনি সন্তান কে শহীদ হতে দেখেও লাল ঝাণ্ডার রাজনীতি করেন। প্রবল অসুখ নিয়েও ব্রিগেড আসার জন্য শিশু সুলভ ঝোঁক ধরেন। বয়সের ভারে ন্যুজ হয়েও দেওয়াল জুড়ে কাস্তে-হাতুড়ি আঁকেন। এরকম অসংখ্য ছিতামনি-দেবলীনা-ইলিয়াসদের ঠিকানা এই লাল ঝাণ্ডা। যারা পেটে গামছা বেঁধে নিঃস্বার্থে রাজনীতি করেন। রোদে পুড়ে, জলে ভিজে পার্টির ডাইরেক্টিভস অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। যাদের কোনদিন কোনও স্টিং হয়নি। একটা ঘন্টাখানেক হয়নি। মিডিয়া ফুটেজ দেয়নি। এনারাই স্বচ্ছ রাজনীতির মুখ। আমাদের আদর্শ। আমাদের ভরসা। আমাদের নেতা। আর যে রাজনীতি, যে রাজনৈতিক দল ঘুষখোর ক্ষমতা লোভীদের দল চালানোর দায়িত্ব দেয়, দুর্নীতিবাজ'দের নেতা-মন্ত্রী বানিয়ে মাথায় তুলে নাচে, ফাঁদে পড়লে আঁচল দিয়ে আগলে রাখেন তাঁদের আমরা ঘেন্না করি। আমাদের গর্ব, আমাদের সাধ্যমত, আমরা সেই রাজনীতির বিরুদ্ধেই লড়াই করি।

দিদির Ten son ~ অনির্বান মাইতি

দিদির আমার দশটি ছেলে
করছিল দেশ জয়
একটি গেল হসপিটালে (মদন)
রইল বাকি নয়।

এখন দিদির নয়টি ছেলে
পেরোয় না চৌকাঠ
একটি খেলো CBI এ (রজত)
রইল বাকি আট।

আটটি ছেলে ভীষন রকম
করছিল উৎপাত
একটি হল বহিষ্কৃত (আরাবুল)
রইল বাকি সাত

সাত জনাতে হাপুসনয়ন
বুকের ভিতর ভয় 
একটি খেলো ঘুমের বড়ি (কুনাল)
রইল বাকি ছয়।

শেষ ছয়টির একটি ছেলে
আগাম না পেয়ে আঁচ
হঠাৎ করে অ্যারেস্ট হল (টুম্পাই)
রইল বাকি পাঁচ।

আজকে দিদির পাঁচটি ছেলের 
একটি পগার পার
নবান্নে আর বসবে না কাক (শুভাপ্রসন্ন)
রইল বাকি চার।

দিদি আমার কাঁদল আবার 
খোদার দয়া নাই 
হাসপাতালের বাছা আমার (মদন রিভিজিটেড) 
ধরল সিবিআই।

শেষকালে এই চারটে ছেলের 
ভয়েই কাটে দিন
একটি পেল ইডির নোটিস (শঙ্কুদেব)
রইল বাকি তিন 

বাদবাকি ওই তিন ছেলেরও 
কপাল হল ফুটো 
একটি গেলো পাল্টি খেয়ে (মুকুল)
আর তো বাকি দুটো :(  

আর বাকি দুই, খোদায় মালুম
বিশ্ব বোকাহাঁদা
গোলাপ কাঁটায় পাল ও গেল (তাপস)
রইল পালের গোদা।

শেষ ছেলেটি আগলে রেখে (রাজীব)
যেমন নয়নমনি
মেট্রো চ্যানেল অবস্থানে
গুমড়ে কাঁদেন উনি

.......

সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

তলব ~ আর্যতীর্থ

।তলব।

কে কাকে তলব করে বুঝে লাভ নেই 
আমরা তো শুয়ে আছি মাটি জাপটেই।
একে ধরে ওকে ধরে তাকে করে জেরা
সিরিয়াল হেন শুধু বাড়ে গল্পেরা।
পরোয়ানা নিয়ে চলে এত হইচই,
কেউ জানে গরীবের টাকা গেলো কই?
ফেরত পাবে না জানি, পায়না এ দেশে
তারিখ পে তারিখরা অনন্তে মেশে
 তদন্ত চালু থাকে ঠিক ইতিউতি,
কোন কোন গায়ে লেপা ঘুষের বিভূতি,
সে কথা নানান মুনি বলে নানামতে,
প্রলেপ পড়ে না তবু অভাবের ক্ষতে।
গিয়েছে কাদের টাকা , হারিয়েছে ভিড়ে,
যে আঁধারে কাল ছিলো আজও সে তিমিরে,
কেউ মরে গেছে ঝুলে, কেউ ফলিডলে,
 রাজনীতি সব ভুলে দাবা খেলে চলে..

কে কাকে তলব করে বয়ে গেছে ভারী
তুমি,আমি এলেবেলে আদার ব্যাপারী।

আর্যতীর্থ