বইওআলা। বই -- বই -- ভালো বই!
অমল। বইওআলা, বইওআলা, ও বইওআলা!
বইওআলা। ডাকছ কেন? বই কিনবে?
অমল। কেন কিনব! আমি তো ই-বুক পড়ি।
বইওআলা। কেমন ছেলে তুমি। কিনবে না তো আমার বেলা বইয়ে দাও কেন?
অমল। আমি যদি তোমার জায়গায় থাকতুম তো অন্য ব্যবসা করতুম।
বইওআলা। অন্য ব্যবসা!
অমল। হাঁ। তুমি যে কত হাঁক পেড়েও কিছু বিক্রী করতে পারছ না তা দেখে আমার মন খারাপ লাগছে।
বইওআলা। (বইর ব্যাগ নামাইয়া) বাবা, তুমি কি বিজনেস কনসাল্ট্যান্ট?
অমল। আমি তো ফেসবুকের ওপর ডক্টরেট করছি তাই আমি সারাদিন ল্যাপটপ খুলেই বসে থাকি।
বইওআলা। আহা, বাছা তোমার কী হয়েছে?
অমল। আমি বড় হয়েছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিখেছি। বইওআলা, তুমি কোথা থেকে আসছ?
বইওআলা। আমাদের গ্রাম থেকে আসছি।
অমল। তোমাদের গ্রাম? অনে--ক দূরে তোমাদের গ্রাম?
বইওআলা। আমাদের গ্রাম সেই পাঁচমুড়া পাহাড়ের তলায়। শামলী নদীর ধারে।
অমল। পাঁচমুড়া পাহাড় -- শামলী নদী -- কী জানি,হয়তো গুগল ম্যাপে তোমাদের গ্রাম দেখেছি -- কবে সে আমার মনে পড়ে না।
বইওআলা। তুমি দেখেছ? পাহাড়তলায় কোনোদিন গিয়েছিলে নাকি?
অমল। না, কোনোদিন যাই নি। কিন্তু আমি ছবি দেখেছি। অনেক পুরোনোকালের খুব বড়ো বড়ো গাছের তলায় তোমাদের গ্রাম -- একটি লাল রঙের রাস্তার ধারে। না?
বইওআলা। ঠিক বলেছ বাবা।
অমল। সেখানে পাহাড়ের গায়ে সব গোরু চরে বেড়াচ্ছে।
বইওআলা। কী আশ্চর্য! ঠিক বলছ। আমাদের গ্রামে গোরু চরে বই কি, খুব চরে।
অমল। মেয়েরা সব নদী থেকে জল তুলে মাথায় কলসী করে নিয়ে যায় -- তাদের লাল শাড়ি পরা।
বইওআলা। বা! বা! ঠিক কথা। আমাদের সব গয়লাপাড়ার মেয়েরা নদী থেকে জল তুলে তো নিয়ে যায়ই। তবে কিনা তারা সবাই যে লাল শাড়ি পরে তা নয় -- কিন্তু বাবা, তুমি নিশ্চয় কোনোদিন সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলে!
অমল। সত্যি বলছি বইওআলা, আমি একদিনও যাই নি। ঘরে বসেই যদি সব জানা যায় তাহলে কী দরকার গিয়ে তোমাদের গ্রামে?
বইওআলা। ঠিক কথা বাবা, খুব সত্যি কথা!
অমল। আমি বরং তোমায় অনলাইন বই বেচতে শিখিয়ে দেব। ঐরকম ব্যাগ কাঁধে নিয়ে -- ঐরকম খুব দূরের রাস্তা দিয়ে আর তোমাকে ঘুরে বেড়াতে হবে না।
বইওআলা। মরে যাই! বই বেচতে যাব কেন বাবা। আমি আর তুমি মিলে বরং ও এল এক্স এর মতো কিছু সাইট খুলব।
অমল। না, না, আমি কক্খনো অনলাইনে ব্যবসা করব না। আমি একটা বিজনেস কন্সাল্টেন্সি ফার্ম খুলব। একে ওকে শুধু উপদেশ দেব, প্রয়োজনে ট্রেনিং ও দেব।
বইওআলা। হায় পোড়াকপাল! এ কেরিয়ার ও কি কোনো কেরিয়ার হল!
অমল। না, না, এ আমার অনেক দিনের স্বপ্ন। ওয়াই ফাই খুব স্ট্রং হলে যেমন অনেক দূর থেকে নেট কানেক্ট করা যায় -- তেমনি ঐ রাস্তার মোড় থেকে ঐ গাছের সারির মধ্যে দিয়ে যখন তোমার ডাক আসছিল, আমার মনে হচ্ছিল – ফেসবুকে ডক্টরেট করা হয়ে গেলে আমাকে কন্সাল্টেন্সি ফার্ম খুলতেই হবে!
বইওআলা। বাবা, এই এক ব্যাগ বই তুমি রাখো।
অমল। আমার তো বাজেট অ্যালোকেটেড নেই।
বইওআলা। না না না না -- বাজেটের কথা বোলো না। আমার বইগুলো বিদেয় হলে আমি কত খুশি হব।
অমল। তোমার কি অনেক দেরি হয়ে গেল?
বইওআলা। কিচ্ছু দেরি হয় নি বাবা, আমার কোনো লোকসান হয় নি। বই বেচা যে কত ওয়েস্ট অফ টাইম সে তোমার কাছে শিখে নিলুম।
অমল। বইওআলা, বইওআলা, ও বইওআলা!
বইওআলা। ডাকছ কেন? বই কিনবে?
অমল। কেন কিনব! আমি তো ই-বুক পড়ি।
বইওআলা। কেমন ছেলে তুমি। কিনবে না তো আমার বেলা বইয়ে দাও কেন?
অমল। আমি যদি তোমার জায়গায় থাকতুম তো অন্য ব্যবসা করতুম।
বইওআলা। অন্য ব্যবসা!
অমল। হাঁ। তুমি যে কত হাঁক পেড়েও কিছু বিক্রী করতে পারছ না তা দেখে আমার মন খারাপ লাগছে।
বইওআলা। (বইর ব্যাগ নামাইয়া) বাবা, তুমি কি বিজনেস কনসাল্ট্যান্ট?
অমল। আমি তো ফেসবুকের ওপর ডক্টরেট করছি তাই আমি সারাদিন ল্যাপটপ খুলেই বসে থাকি।
বইওআলা। আহা, বাছা তোমার কী হয়েছে?
অমল। আমি বড় হয়েছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিখেছি। বইওআলা, তুমি কোথা থেকে আসছ?
বইওআলা। আমাদের গ্রাম থেকে আসছি।
অমল। তোমাদের গ্রাম? অনে--ক দূরে তোমাদের গ্রাম?
বইওআলা। আমাদের গ্রাম সেই পাঁচমুড়া পাহাড়ের তলায়। শামলী নদীর ধারে।
অমল। পাঁচমুড়া পাহাড় -- শামলী নদী -- কী জানি,হয়তো গুগল ম্যাপে তোমাদের গ্রাম দেখেছি -- কবে সে আমার মনে পড়ে না।
বইওআলা। তুমি দেখেছ? পাহাড়তলায় কোনোদিন গিয়েছিলে নাকি?
অমল। না, কোনোদিন যাই নি। কিন্তু আমি ছবি দেখেছি। অনেক পুরোনোকালের খুব বড়ো বড়ো গাছের তলায় তোমাদের গ্রাম -- একটি লাল রঙের রাস্তার ধারে। না?
বইওআলা। ঠিক বলেছ বাবা।
অমল। সেখানে পাহাড়ের গায়ে সব গোরু চরে বেড়াচ্ছে।
বইওআলা। কী আশ্চর্য! ঠিক বলছ। আমাদের গ্রামে গোরু চরে বই কি, খুব চরে।
অমল। মেয়েরা সব নদী থেকে জল তুলে মাথায় কলসী করে নিয়ে যায় -- তাদের লাল শাড়ি পরা।
বইওআলা। বা! বা! ঠিক কথা। আমাদের সব গয়লাপাড়ার মেয়েরা নদী থেকে জল তুলে তো নিয়ে যায়ই। তবে কিনা তারা সবাই যে লাল শাড়ি পরে তা নয় -- কিন্তু বাবা, তুমি নিশ্চয় কোনোদিন সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলে!
অমল। সত্যি বলছি বইওআলা, আমি একদিনও যাই নি। ঘরে বসেই যদি সব জানা যায় তাহলে কী দরকার গিয়ে তোমাদের গ্রামে?
বইওআলা। ঠিক কথা বাবা, খুব সত্যি কথা!
অমল। আমি বরং তোমায় অনলাইন বই বেচতে শিখিয়ে দেব। ঐরকম ব্যাগ কাঁধে নিয়ে -- ঐরকম খুব দূরের রাস্তা দিয়ে আর তোমাকে ঘুরে বেড়াতে হবে না।
বইওআলা। মরে যাই! বই বেচতে যাব কেন বাবা। আমি আর তুমি মিলে বরং ও এল এক্স এর মতো কিছু সাইট খুলব।
অমল। না, না, আমি কক্খনো অনলাইনে ব্যবসা করব না। আমি একটা বিজনেস কন্সাল্টেন্সি ফার্ম খুলব। একে ওকে শুধু উপদেশ দেব, প্রয়োজনে ট্রেনিং ও দেব।
বইওআলা। হায় পোড়াকপাল! এ কেরিয়ার ও কি কোনো কেরিয়ার হল!
অমল। না, না, এ আমার অনেক দিনের স্বপ্ন। ওয়াই ফাই খুব স্ট্রং হলে যেমন অনেক দূর থেকে নেট কানেক্ট করা যায় -- তেমনি ঐ রাস্তার মোড় থেকে ঐ গাছের সারির মধ্যে দিয়ে যখন তোমার ডাক আসছিল, আমার মনে হচ্ছিল – ফেসবুকে ডক্টরেট করা হয়ে গেলে আমাকে কন্সাল্টেন্সি ফার্ম খুলতেই হবে!
বইওআলা। বাবা, এই এক ব্যাগ বই তুমি রাখো।
অমল। আমার তো বাজেট অ্যালোকেটেড নেই।
বইওআলা। না না না না -- বাজেটের কথা বোলো না। আমার বইগুলো বিদেয় হলে আমি কত খুশি হব।
অমল। তোমার কি অনেক দেরি হয়ে গেল?
বইওআলা। কিচ্ছু দেরি হয় নি বাবা, আমার কোনো লোকসান হয় নি। বই বেচা যে কত ওয়েস্ট অফ টাইম সে তোমার কাছে শিখে নিলুম।