শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০১১

লং মার্চ

কিসের ভয় সাহসী মন লালফৌজের
লাফিয়ে হই পার।
থাকনা হাজার অযুত বাধা
দীর্ঘ দূরযাত্রার কিসের ভয়?

হাজার পাহাড়, লক্ষ নদী কিছুই নেই ভাবার
শিখর পাঁচ - যেন বুঝি ছোট্ট নদী
ঢেউ বাহার, ঢেউ বাহার,
ওমুম পাহাড় মাটির টিলা কি সবুজ আহা
লাফিয়ে হই পার।

আকাশ ছোঁয়া পাহাড় আগুন
আঘাত হানে সোনালি স্রোত যার
লোহার সাঁকো তাতুর বুকে হিম শীতল
পথেই হই পার

তুষার ঝড়ে নিযুত শিখর।
রোদে ঝলোমল
মিঙ পাহাড় লাফিয়ে পার লাল ফৌজ আহা
হাসির মেজাজ সবার

বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০১১

দিবারাত্রির কাব্য ~ রাত্রি ও সায়ন্তন

অনিমেষকে…

অনিমেষ, তুমি কমন আছো আজ?...গিটারে কি বাজে "পরশপাথর" সুর ??
সেই ক্লাস এইট ; প্রথম কবিতাগুলো… জং ধরে গিয়ে আজ তারা ভঙ্গুর ।
স্কুলজীবনের একলা বেঞ্চি-কোণ, কতবার তুমি দেখা করেছিলে diary-র page-এ এসে;
ধোঁয়ার টানে ঘুলিয়ে ওঠে মন, জলে যেভাবে একফোঁটা কালি নরম হয়ে মেশে…
অনিমেষ, তোমায় প্রথম দেখি মানিকতলার বাসে, তুমিও হয়ত কোচিং-এই যাচ্ছিলে।
আমিও তখন সদ্য এগারো ক্লাসে, চোরাদৃষ্টিতে ঊষ্ণতা রেখেছিলে…
অনিমেষ, আজ বছর আটেক হলো, যাওয়া হয়না বহুদিন ওইদিকে,
স্কুল-কলেজেতে রঙীন গণ্ডী ছিলো, স্যুটেড ব্যুটেড মোড়কে তা আজ ফিকে।
অনিমেষ, হয়ত এখন অফিস ফাঁকা… অবসরে তুমি জানলার এক কোণে;
আমি তো রোজ-ই রাস্তা পেরোই একা, diary-তে নিয়ে তোমায় সঙ্গোপনে…
অনিমেষ, রোজ ঘুম ভেঙে উঠে দেখি, bank statement দিনে-দিনে হয় ম্লান;
কান্নারা আজ দলা পাকায় না ঠিকই, জীবন-পাশায় কৈশর খানখান।
অনিমেষ, খুব মনে পড়ে সেই দিন… ব্ল্যাকবোর্ড-এ ছিলো উপপাদ্যের নকশা,
উঠে দাঁড়িয়ে পড়া না পারার scene, শাস্তি পেলেই চোখের জলে ঝাপসা…
অনিমেষ, বড়ো একলা হয়েছি আমি ; হারিয়ে ফেলে ছোট্ট টিফিন-বাক্স,
কাড়াকাড়ি হত, ছিলো এমনই দামি, সেই বন্ধুরা রোজ এসে পাশে বসত ।
অনিমেষ, এই চিঠিখানা রইলো, মায়া লাগছিলো হঠকারিতাটি করতে…
শেষ করলাম মাঝপথে এই প্রাণ, শূন্য থেকেই আবার শুরু করতে।। 


মাধবীকে ...


মাধবী, তুই কি হারিয়ে গেছিলি,
আমার ভেতর-বাইরে মনের উল্টোদিকে?
মাধবী, তুই তো বলেছিলি কবে,
কাগজ নৌকো ভাসিয়ে দিবি
সদ্য বিকেল সাক্ষী রেখে!
মাধবী, তুই কি এখনো তেমনই,
কাটা কাটা কথা, আবেগে তেমনই
আগের মতই পাগলামি তোর?
মাধবী, তোর কি মনে আছে সেই -
পায়ে পা মিলিয়ে মিছিলে স্লোগান
মন জুড়ে থাকা "ইনকিলাব"কে?
মাধবী, তোকে যে খুব খুঁজে পাই,
এই শহরের রাজপথ থেকে,
পার্ক স্ট্রীট হয়ে আউট্রামেও।
মাধবী, আমারও বয়স বেড়েছে -
গোঁফে রুপোলি ঝিলিক-
আফটার শেভ মাখলে এখন ঘুম আসে!
মাধবী, জানিস, মাঝে মাঝে যেন
শুনে ফেলি তোর হঠাৎ করেই নিঃস্তব্ধতা
ভেঙ্গে পাগল করা 'রবীন্দ্রনাথ' - তুই ই পারতিস!
মাধবী, তুই কি সত্যিই ছিলি?
নাকি পুরোটাই কৈশোরে লেখা
metamorphic চিত্রনাট্য? 


অনিমেষকে... কিছু প্রশ্ন...

অনিমেষ, কিছু প্রশ্ন ছিলো তোমায়, বহুদিনের অপেক্ষা আজ ক্লান্ত,
থিতিয়ে গিয়েছে ঘলা জলের মাটি, উপেক্ষিত হয়ে সে আজ শান্ত।
অনিমেষ, সেই সোনালী দিনের স্কেচ, কোনো এক ট্রামে পাশেই দাঁড়িয়ে দুজন ;
বৃষ্টিরা সব অকারণ ছিলো বেশ…. বড় নিশ্চুপে ভিজে গেলো দুটি মন ।
অনিমেষ, রোজ কলেজ শেষের পর; বন্ধুরা মিলে তোমাদের গোলটেবিল,
হঠাৎ ছোঁয়ায় শিহরণ তারপর, বাস্তব থেকে বহু দূরে তার মিল…
কলেজে তখন ছাত্রনেতা তুমি, কাঁধে ঝোলা ব্যাগ, ছেঁড়া জিনস্… পাঞ্জাবি,
একগাল দাড়ি, হাসিমুখ হলো বিষ… পান করে আরো নিলচে হলাম আমি।
একদিন ছিলো মনখারাপের দুপুর, ক্যান্টিনেতে এক কাপ চা, আমি একা…
ঝড়ের বেগে দিয়েই চলে গেলে, সেই চিঠিখানা আজও ডাইরিতে রাখা ।
অনিমেষ, সত্যি কিছুই জানিনা আমি, দিশেহারা আমি বুঝতে চাইনা কিছু ;
বেঁচেই যেতাম হলে অন্তর্যামী, মায়াবী শহরে আমি যে এখনও শিশু…
পেশা জানা নেই, নেশায় বাউল জানি… বুঝিনি ঝড়ে একলা পড়ে তুমি,
একা দাঁড়িয়ে আউট্রামের পাড়ে, ক্লান্ত….. তবুও তোমারই দিন গুনি ।
ভাঙা দেওয়ালেতে তোমার স্লোগান আজও, ঢেকে যায়নি বিজ্ঞাপনের পাশে,
প্রশ্নগুলো আজকে বরং থাক ; বোবা দৃষ্টিতে এখনও স্বপ্ন আসে… 



মাধবী কে - যে জবাব চায়নি কোনদিন

একেকটা দিন কলেজে যখন স্কোয়াড করেছি,
মনে আছে তোর? বুকে রাগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছি।
সেই দিন গুলো, যখনই চেয়েছি পাশে পেয়ে গেছি তোকে,
সঙ্গিনী ছিলি, বিপ্লব আনতে, সর্বনাশের ঝোঁকে।
সেই মাধবীটা খুব চেনা ছিলো খুব খুব চেনা,
বদলেছে দিন, এই বদলটা ভাল লাগছেনা।
বুঝতে পেরেছি সেদিন আবেগে ঠোঁট কেঁপেছিল,
উত্তেজনায় ছল ছল চোখে, পরিণত মেয়ে হাত ধরেছিল।
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে নিজেই নিজের মুখোমুখি,
চারমিনারের ধোঁয়া - বয়সের নিয়মেই সুখী!
পালিয়েছিলাম তোর কাছ থেকে, তোর চোখে দেখা স্বপ্নের থেকে,
নীরব চাহনি অনেক কথাই বলতে চাইত ক্যানভাসে এঁকে।
পরিচিত কিছু অভিব্যক্তি কখনো কখনো ভাষায় প্রকাশ,
কখনো দেখেছি তোর চোখ দিয়ে, খুঁজতে চেয়েছি ইচ্ছে-আকাশ।
এখন রাত্রি, আরেকটা ভোর দেখবো আবার একটু পরে,
তোকেই যে কেন দিইনি আমার সবটুকু 'আমি' উজার করে!


আরেকবার অনিমেষকে…

অনিমেষ,আজ নিজেকেই ছোট মনে হয়,দূরদৃষ্টিতে হেরেছি তোমার কাছে,
দেখব আবার মিছিলে স্লোগানে তোমায়, অবুঝ প্রেম এই আশা করে আজো বাঁচে..
অনিমেষ, সেই কবেকার ফোন-নম্বর,রিসিভার ধরে মেঘলা দু'চোখে জল,
ছেড়ে গেছ বুঝি একতলা ভাড়াবাড়ি, একা দাঁড়িয়ে ঠায় সে টিউব-কল।
কড়া বাস্তব সহজপাচ্য নয়, অ্যান্টাসিড-এ তিক্ততা বাড়ে শুধু…
অফিস-ফেরত রোজ স্যারিডন নেশা, ভাবের জগতে ওষুধেরা ঢালে মধু।
রাতের বালিশে মাথা রাখলেই দেখতাম… রঙীন স্বপ্ন; গেলাস ভর্তি শরাব;
গভীর ঘুম আর আসেনা কেন যে আজ, ফাঁকা ঘরে তাই স্বেচ্ছাবন্দী খোয়াব।
অনিমেষ,কত দ্রুত পাল্টালো সব; নয় নয় করে বছর দশেক হবে,
ছেড়ে এসে সেই গলির মুখের বাঁক… কেন বারেবারে ফিরে চাই যে নিরবে…
ভিড়ে,বাজারে আমি তোমায় দেখি রোজ, তোমারি মতন দাড়ি-মুখ, হাসি চোখ;
যে বিপ্লব তুমি শুরু করেছিলে সেদিন; কিশলয় থেকে মহিরূহে পৌঁছোক।
অনিমেষ, কেন সত্যিই মনে হয়, "রঞ্জনা" আর "বেলা বোস" আজ আমি…
কাজলেতে ঢাকি প্রাত্যহিকের ক্লান্তি, চশমায় ঢাকি স্বপ্নের হাতছানি।
কি-বোর্ড চালিয়ে ক্ষয়াটে আঙুল আমর, লালিমা হারিয়ে হয়েছি কর্পোরেট…
যে মাধবীর সঙ্গী ঝর্ণা-কলম,দূর থেকে অস্ফুটে বলে… 'চেকমেট' !!!
শুকনো পাতারা সমব্যাথী বুঝি আমার, যেখানেই যাই টুপটাপ খসে পড়ে,
দিনে রোদ্দুর… রাতে বৃষ্টি-ঝড়… বোবা চাউনিতে স্বপ্নরা পুড়ে মরে। 


মাধবীকে - খোলা খামে...

আমার শহর - একলা কোণ,
বারোয়ারী এক ফালি উঠোন,
দশ ফুট বাই বারো ফুট জোড়া ঘর -
দিন আসে দিন চায়ের গ্লাস,
জীবন-যাপনে মিডল ক্লাস,
ভিতর-সত্ত্বা যান্ত্রিক যাযাবর।

সকাল এখনো আলি আকবরে,
শুরু হয়ে - চলে ঘুর পথ ধরে;
মন চোরাস্রোতে হারাতে দিইনি কিছু।
দিনান্তে রাত চোখে ঘুম আনে,
অনেক টুকরো কথা বাজে কানে;
ফেলে আসা পথে সময় নিয়েছে পিছু।

কলেজ ফেরত বাইপাসে হাঁটা,
লাল রঙে লেখা পোষ্টার সাঁটা,
বাপিদা-র চায়ে চুমুকে তুলেছি ঝড়।
কলেজ জীবন স্বপ্ন দেখাতো,
দিন-যাপনের সূত্র শেখাতো,
হিসেব মেলেনি - বছর সাতেক পর।

এখনো যখন কেরালার গ্রামে,
"কমরেড", বলে দৃঢ় গলা থামে,
তাদের চোখেও সে আগুন দেখি - যেমনটা ছিলো তোর।
অনিমেষ আজও এ'ভাবেই বাঁচে,
পুড়তে পুড়তে আগুনের আঁচে;
মাধবীলতার জন্য থাকুক "অন্য গানের ভোর"।




ফিরে দেখলাম তোমায়…

মাধবী আজ আর জবাব চায় না, ঠান্ডা স্রোতে স্তব্ধ,
শরীর জুড়ে ক্লান্ত ভীষণ, মনের জানলা বন্ধ।
অনিমেষ, তুমি একই রয়ে গেলে, উদ্ধত; বিপ্লবী…
মধ্যবিত্ত সহজ বুনোটে খামখেয়ালের ছবি।
দিন কাটে তোমার মিটিংএ-মিছিলে জবাবী স্লোগান দিয়ে-
শ্রমিক স্বার্থে আগ্রাসী তুমি আগুনের রূপ নিয়ে।
যে আগুনে আমিও প্রদীপ জ্বালিয়ে ছিলাম কোথাও-
নিভে গিয়ে শেষে জ্বললো না আর,পরম ব্যর্থ তাও।
অনিমেষ, বড় হিংসে হচ্ছে, কেন তুমি সংগ্রামী?
কিসে জিতলাম; কি চেয়েছলাম; কিইবা পেলাম আমি।
অনিমেষ, আমি হেরে গেছি আজ "মাধবীলতার" কাছে,
তোমার মাধবী "শ্রেণী" খুইয়েছে বহুজাতিকের পাশ-এ।
মাধবীর ঘর শ্মশান- স্তব্ধ, জ্বলে টিমটিমে দীপ..
চাওয়া-পাওয়ার শরিকের মাঝে জীবন্ত শহীদ।
স্বপ্ন ছিলো ধরব আকাশ সাথের সাথীকে নিয়ে;
বালি হয়ে তা ঝরেছে কখন আঙুলের ফাঁক দিয়ে…
মাস কেটে যায় রুটিনমাফিক, মেশিনের মত ঠিক।
কুয়াশায় ঢাকা ভাবুক চোখের শূন্যস্থানে শীত। 

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ৮ই মার্চ, ২০১১

 বামফ্রন্ট সরকার আর পশ্চিমবঙ্গে মা-বোনেরা


ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার

l রাজনৈতিক ক্ষমতায়নই মানুষকে সমাজ পরিচালন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নেয়ভারতের মধ্যে পঞ্চায়েতে পৌরসভায় পশ্চিমবঙ্গের মহিলারাই এই ক্ষমতা প্রথম পেয়েছেনপঞ্চায়েত পৌরসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ কেন্দ্রীয় সরকার করার পরে বামফ্রন্ট সরকার এই রাজ্যে সেটি সর্বপ্রথম প্রয়োগ করে

l ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে সব আসন মিলিয়ে হিসেব করলে ৩৮.৪৮% সদস্যই মহিলাঅর্থাৎ, সংরক্ষিত আসনের চেয়ে অনেক বেশি

l রাজ্যের ১৮টি জেলার মধ্যে ৯টি জেলায় সভাধিপতি মহিলা

l গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ৪১.৭৩% প্রধান মহিলা

l পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে ৩৯.৬৯% মহিলা

l সপ্তম বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েতের সব স্তরেই মহিলাদের জন্য ৫০% আসন এবং পদ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে

l পৌরসভাতেও মহিলাদের জন্য ৫০% সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নীতিগতভাবে নিয়েছে রাজ্য সরকার

l এই রাজ্যের বিধানসভায় মহিলাদের সংখ্যা ৩৭ জনশতাংশের হারে ১২ শতাংশের বেশি

 

মহিলা কমিশন

l ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মহিলা কমিশন

 

শিক্ষায় অগ্রাধিকার

l মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা এখন বেশি২০১০ সালে লক্ষ ৬৫ হাজার ছিলো ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিলো লক্ষ ৮৩ হাজার ১৫৮ জনচলতি বছরেও রাজ্যের ১০লক্ষ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছাত্রী

l উচ্চমাধ্যমিকে ২০১০- পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ৪৪.৫৬% ছিলেন ছাত্রী

l এম এস কে-গুলিতে পড়ুয়াদের ৫৪.২৭% ছাত্রী এবং এস এস কে- পড়ুয়াদের ৫০.১৬% ছাত্রী

l মাদ্রাসার পড়ুয়াদের ৬৫% ছাত্রী

l উচ্চশিক্ষায় স্নাতকস্তরে (উচ্চশিক্ষা দপ্তর অনুমোদিত ‍‌শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হিসেব) ছাত্রীর সংখ্যা শতকরা ৪০.১৭ ভাগস্নাতকোত্তর স্তরে শতকরা ৪৫.২২ ভাগ

l অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ বিভাগ কর্তৃক পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত তফসিলী জাতি আদিবাসী ছাত্রীদের মেধা বৃত্তি প্রদান

 

চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

l প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, সিদো-কানু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যপদে এখন মহিলারাই

 

বিদ্যালয় শিক্ষিকা

l ২০০৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে ৪১.১০ শতাংশই শিক্ষিকা


সংখ্যালঘু ছাত্রীদের সাহায্যে

l সংখ্যালঘু বিষয়ক মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মাদ্রাসার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর সকল ছাত্রীদের পোশাক বিতরণ, অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীদের বছরে ১২০০ টাকা উৎসাহভাতা প্রদান, ছাত্রছাত্রীদের বই কেনার জন্য বছরে ২৫০ টাকা অর্থপ্রদান

l স্নাতক স্নাতকোত্তর স্তরে গরিব সংখ্যালঘু পরিবারের ছাত্রীদের উৎসাহ ভাতা দেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার বছরই৪০% নম্বর পেলেই এই ভাতা পাওয়া যাবেস্নাতকস্তরের ছাত্রীরা পান বছরে ৯০০০ টাকাস্নাতকোত্তর স্তরে বছরে ১৪৪০০ টাকা

l সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে একগুচ্ছ বৃত্তিপ্রাক্ মাধ্যমিক (উপকৃত হবেন লক্ষ), মাধ্যমিকোত্তর (উপকৃত হবেন ৯০ হাজার), মেধাসঙ্গতি বৃত্তি (উপকৃত হবেন হাজার), বিশেষ মেধা বৃত্তি, হাজী মহঃ মহসীন বৃত্তি (উপকৃত হবেন ১০ হাজার) এছাড়া আছে শিক্ষাঋণএই বৃত্তি প্রাপকদের শতকরা ৩০জনই ছাত্রীএছাড়া দুঃস্থ ইমাম মোয়াজ্জিনদের ছেলেমেয়েদের বৃত্তি দেওয়া হয়

l মুসলিম ছাত্রীদের জন্য ১১টি হস্টেল রয়েছেআর‍‌ ১১টি ছাত্রী হস্টেলের কাজ চলছেপার্ক সার্কাসের দিলখুশা স্ট্রিটে কর্মরতা মহিলাদের জন্য একটি হস্টেল তৈরি করা হচ্ছে

l আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ভোকেশনাল স্টাডিজ একগুচ্ছ বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের কোর্স চালু করেছেএর মধ্যে কয়েকটি কোর্স মূলত সংখ্যালঘু মহিলাদের জন্যইযেমনজরির কাজ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রভৃতিপ্রশিক্ষণের জন্য যে টাকা লাগে তার ৯০% দেয় রাজ্য সরকারমাত্র ১০% টাকা দেয় প্রশিক্ষণ প্রার্থীরা১১০৮ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে

 

সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন কর্মসূচী

l সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন কর্মসূচী সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের অসামান্য উদ্যোগস্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করা ছাড়াও নানা ধরনের কর্মসূচী রূপায়ণ করা হচ্ছে এই প্রকল্পের আওতায়

l পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আর কোথাও সংখ্যালঘু মহিলাদের স্বনির্ভরগোষ্ঠীকে ৫০% ভরতুকি দেওয়া হয় না

l বয়স ২০-৪৫ বছরের মধ্যে হলে ব্যক্তিগতভাবে অন্ততপক্ষে 'জন সংখ্যালঘু মহিলাকে নিয়ে গঠিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়া হয়সুদ বার্ষিক মাত্র % হারে

l পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্ত নিগমের মাধ্যমের বিভিন্ন ধরনের ঋণদান প্রকল্পে এযাবৎ ৫১,৩৮৩ জন মহিলাকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে ৯৯ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে

l সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত দরিদ্র মহিলাদের বিশেষত বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত বিপন্ন অবস্থায় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের জন্য আবাসন, প্রশিক্ষণ, ছেলেমেয়েদের বৃত্তি প্রদানের কাজ শুরু হচ্ছে২০১০-১১ সালে জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছেএছাড়া বিধবা বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হয়

l রোকেয়া গ্যাস ওভেন প্রকল্প : সংখ্যালঘু মহিলাদের পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দ্য সুবিধার দিকে নজর দিতে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্ত নিগমের মাধ্যমে প্রায় হাজার মহিলাকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা প্রদান করে গ্যাস উনুন দেবার ব্যবস্থা হয়েছে

 

সামাজিক সুরক্ষায় অগ্রাধিকার

l বালিকা সমৃদ্ধি যোজনায় কন্যা সন্তানের পরিচর্যায় বিশেষ নজর, দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনায় অনুদানের ব্যবস্থা এবং এককালীন ৫০০ টাকা সহায়তা যা ব্যাঙ্কে জমা রাখা হয়

l পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন বিভাগ, সমাজকল্যাণ বিভাগ, অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, কৃষি বিভাগ, ক্ষুদ্র ছোট উদ্যোগ এবং বস্ত্রদপ্তর কর্তৃক বার্ধক্যভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে মহলিাদের প্রতি বিশেষ নজর

l রাজ্যের সমাজকল্যাণ বিভাগ বিধবা ভাতা দেয় দীর্ঘদিন যাবৎদুঃস্থ বিধবাদের জন্য এই ভাতা চলতি আর্থিকবর্ষ থেকে মাথাপিছু মাসে ১০০০ টাকা করা হয়েছে

l জাতীয় বিধবা পেনশন প্রকল্প : ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় বিধবা ভাতা প্রকল্প রাজ্যে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী ৪০-৬৪ বছর বয়সী বিধবা মহিলাদের জন্যমাসে ৪০০ (চারশত) টাকা পেনশন পাওয়া যায়২০০ টাকা দেয় রাজ্য সরকার, বা‍‌কি ২০০ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার

l ইন্দিরা আবাস যোজনায় গৃহনির্মাণে পুরুষ মহিলাদের যৌথ মালিকানা প্রদান

 

জমির পাট্টা

l রাজ্যে ভূমিসংস্কারের মারফত বণ্টিত জমির প্রায় ৩০% পেয়েছেন মহিলারাই

l নারী পুরুষ যৌথ পাট্টা লক্ষ ১৪ হাজারের বেশি

l শুধুমাত্র মহিলাদের পাট্টা লক্ষ ৬১হাজারেরও বেশি

 

কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার

l একশো দিনের কাজে মহিলা অংশগ্রহণ ২০০৮-০৯ সালে ছিলো ২৬.%। ২০০৯-১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩.৪২%।

l ১২লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোটি ২০ লক্ষ সদস্যের ৯০ শতাংশই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যাঙ্কঋণ শোধে ভরতুকি দিচ্ছে রাজ্য

l বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে ১৫.৭৮% উদ্যোগপতি মহিলা

l প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনা প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে উদ্যোগীদের ২৫% মহিলা (২০০৯-১০ অর্থবর্ষ)। প্রকল্প রূপায়ণ করে ক্ষুদ্র ছোট উদ্যোগ এবং বস্ত্রদপ্তর

l স্বর্ণজয়ন্তী শহরী রোজগার যোজনায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার ক্ষুদ্র সঞ্চয় ঋণদান গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছেএই প্রকল্পে উপকৃত শহর এলাকার প্রায় লক্ষ ৬৫ হাজার বি পি এল পরিবারভুক্ত৮১,৭০৪ জন কারিগরি প্রশিক্ষণ পেয়েছেন

l আদিবাসী মহিলা স্বশক্তিকরণ যোজনা: অনগ্রসর শ্রেণী বিভাগের অধীন পশ্চিমবঙ্গ তফসিলী আদিবাসী উন্নয়ন বিত্ত নিগম পরিচালিত এই প্রকল্পে আদিবাসী মহিলারা সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেনসুদের শতকরা হার টাকাচলতি আর্থিকবর্ষে ২৫০০ জনকে প্রায় কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে

l পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণী উন্নয়ন বিত্ত নিগমের প্রতিষ্ঠা ১৯৯৫ সালে বি সি সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলাদের জন্য মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা রূপায়ণ করা ছাড়াও মেয়াদী ঋণ দেয় এই নিগমদেয় শিক্ষাঋণ

l রাজ্যের গ্রাম উন্নয়ন সমিতিগুলিকে বছরে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়প্রতি ১০০০ জন পিছু জন মহিলা (আশা) এখন প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং স্বাস্থ্যচেতনার মৌলিক বার্তাগুলো তাঁদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেনএখনও পর্যন্ত ২১ হাজার ৭৬৩ জন প্রশিক্ষণ পেয়ে এই কাজ শুরু করেছেন১৭টি জেলার ২৩৫টি ব্লকে এই কর্মসূচী রূপায়ণের কাজ চলছে

l মৎস্য বিভাগ কর্তৃক জাল বোনা হাঁস পালনের জন্য প্রকল্প

l প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ কর্তৃক মহিলাদের পশুপালন হাঁস-মুরগী পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী

l রেশম পালন বিভাগ কর্তৃক মহিলাদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচীযৌথ বনসংরক্ষণ কমিটিগুলির প্রায় অর্ধেক সদস্যই মহিলা

l স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে (এস জি এস ওয়াই) দেখভাল করার জন্য প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে দুজন করে সম্পদকর্মী নিয়োগ করা হয়েছেএই দায়িত্বে মহিলাদেরই নিয়োগ করা হয়, মূলত স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকেইমাসে ভাতা ৫০০টাকাগ্রেডে পাস করার পর ৭৫০ টাকা

l স্বনির্ভর প্রকল্পের সদস্যাদের মাধ্যমেই সহায় প্রকল্পে অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেবার কাজ হয়এর ফলেও একটি বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে

 

 

নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আইনী ব্যবস্থা

l কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সম্ভ্রম মর্যাদা রক্ষায় বিশেষ আইনের প্রয়োগনারীপাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে রাজ্য সরকার বিশেষভাবে সক্রিয় রয়েছে

 

স্বাস্থ্যরক্ষায় অগ্রাধিকার

l মা শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ নজর দিতে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প (আই সি ডি এস)-এর রূপায়ণ‍‌শ্চিমবঙ্গে বাস্তবায়িত সুসংহত ‍‌শিশু বিকাশ প্রকল্পের সংখ্যা ৪১৪ এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা , ১০,৭০০এই কেন্দ্রগুলি থেকে ৬৩ লক্ষ বছরের নিচে শিশু, এবং ১১, ২০,০০০ গর্ভবতী প্রসূতি মায়েদের একগুচ্ছ পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে

l জননী সুরক্ষা যোজনা রূপায়ণএই যোজনার মূল উদ্দেশ্য প্রতিটি শিশু যাতে হাসপাতালে জন্মায় তা সুনিশ্চিত করা এবং মায়েদের প্রসবকালীন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করাপ্রকল্পে গর্ভবতী মায়েদের কমপক্ষে তিনবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বিধি রয়েছেএই প্রকল্পে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মায়েদের এককালীন ৫০০ টাকা এবং শিশু হাসপাতালে জন্মালে আরও ২০০টাকা এবং প্রসবের জন্য হাসপাতালে যাতায়াতের যাবতীয় খরচ দেওয়া হয়

l কন্যা ভ্রণ নষ্ট রোধে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা

l জানেন কি গড় আয়ু, জন্মহার, মৃত্যুহার এবং প্রসূতি মৃত্যুর হারে পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় হারের চেয়েও অনেক এগিয়েগড় আয়ু জাতীয় স্তরের ক্ষেত্রে মহিলা ৬৮. বছর কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে মহিলা ৭০. বছরপ্রসূতি মৃত্যুর হার জাতীয়স্তরের ক্ষেত্রে প্রতি লক্ষে ২৫৪জন; তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ১৪১জনশিশু মৃত্যুর হার জাতীয়স্তরের ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে ৫৩জন; তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ৩৫জন। (রাজ্যের স্থান চতুর্থ) নারী:পুরুষ অনুপাত জাতীয় স্তরের চেয়ে ভালো

l শহরাঞ্চলে রয়েছে মা ‍‌শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জনস্বাস্থ্য প্রকল্পশহরাঞ্চলে বস্তিবাসী গরিব শহরবাসীদের মধ্যে একাজে যুক্ত আছেন ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মীবেতন হেলথ ওয়ার্কাররা পাবে মাসে আড়াই হাজার টাকা এবং সুপারভাইজার ২৬৪০ টাকা মাসে

l প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বেড়ে ৬৯.% হয়েছে

l শিশুদের টীকাদান প্রকল্পে হার বেড়ে ৭৫.% হয়েছে