tag:blogger.com,1999:blog-90639197553966697592024-03-25T19:36:29.030+05:30পাঁচফোড়ন | Bangla Blog | Bengali Pnachforonপাঁচফোড়ন বাংলা পদ্য গদ্য ব্লগ। আঁতলামি তে নেই, আলুকাবলিতেও নেই।সোমনাথhttp://www.blogger.com/profile/16653915054167487020noreply@blogger.comBlogger1266125tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-78125009262644240062024-03-23T02:05:00.001+05:302024-03-23T02:05:29.372+05:30একটি ল্যাম্প পোস্ট এবং ৬২৩টি মেয়ে ~ ডঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত <p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj36UHUpliUf1YUzKEulYAhbmiktVFWn2wppzC8K335fd7cyCL4D8nt2mff1YkjkTKfOAkhP9EFDR17qyoaI0OkVBERBlrYg6ipyaWc3MgaUC59lreMq9nJVsAZthSmJR6hsoGXWDUQ1pzR4KPiFsQu3Cpj0YjfAWlihpF7seUAcbi-Y28WHEF0V6-who0"><img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj36UHUpliUf1YUzKEulYAhbmiktVFWn2wppzC8K335fd7cyCL4D8nt2mff1YkjkTKfOAkhP9EFDR17qyoaI0OkVBERBlrYg6ipyaWc3MgaUC59lreMq9nJVsAZthSmJR6hsoGXWDUQ1pzR4KPiFsQu3Cpj0YjfAWlihpF7seUAcbi-Y28WHEF0V6-who0=s320" border="0" alt="" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7349289190484405106" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">পাশের বাড়ির বৌদি, বিগত যৌবনা হলেও সাজগোজ করতে কিঞ্চিৎ ভালোবাসেন। আপনি আড় চোখে দেখেন আর পাড়ার চায়ের ঠেকের খাপ পঞ্চায়েতে তাকে আখ্যা দেন ঢলানি মেয়েছেলে বলে। অফিসে নতুন কাজে জয়েন করা মেয়েটি স্বচ্ছন্দে সবার সাথে মেলামেশা করছে দেখে আপনি তাকে আখ্যা দেন বেহায়া বলে। বন্ধু'র কনিষ্ঠ কন্যা, সদ্য কলেজ ছাত্রীকে জিন্স পরতে দেখলে, সিগারেট ফুঁকতে দেখলে আপনার স্থির সিদ্ধান্ত হয়, মামনি গোল্লায় গেছে। শাড়ির আঁচল অবিন্যস্ত দেখলে আপনার ল্যাম্প পোস্টের নিচে দাঁড়ানো মেয়েদের কথা মনে পড়ে। একটা সময় পশ্চিম ইউরোপের ইতালিতে মেয়েদের দেখে আপনার মতো কিছু নীতি পুলিশ সাজা কাকু/ কাকিমা ওই সিদ্ধান্তে আসতেন যে ওদেশের মেয়েগুলি কিঞ্চিৎ বেহায়া, ঢলানী ও বয়ে যাওয়া এম্পটি হেডেড। অথচ কি আশ্চর্য্য দেখুন ওদেশের সেই মেয়েগুলি দ্বিতীয় বিশ্ব মহাযুদ্ধের সময় কি অবাক কান্ডই না ঘটিয়ে ছিল। আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে যে ওই ইতালি দেশটাতেই ফ্যাসিবাদ নামক কুখ্যাত মতবাদের জন্ম। ইউরোপের আর পাঁচটা দেশেও ফ্যাসিস্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওই দেশে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী, যাদের পার্টিজান বলে, সেটা গঠিত হয়ে ছিল। কিন্তু আপনার কি জানা আছে যে দু লক্ষ পঞ্চাশ হাজার সংগ্রামী মানুষ দ্বারা গঠিত সেই বাহিনীর এক লক্ষ পাঁচ হাজার মানে প্রায় চল্লিশ শতাংশ সদস্য ছিল মহিলা ? যারা পুরুষ কমরেডদের পাশাপাশি স্টেনগান হাতে নিয়ে লড়াই দিয়েছিল ? আজ্ঞে হ্যাঁ যেই "বেহায়া", "ঢলানি" "মেয়েছেলে"র দল। আপনাকে কেউ কি কোনোদিন বলেছে যে ওই মেয়েদের মধ্যে চার হাজার ছশ জন গ্রেপ্তার হয়েছিল, দু হাজার সাতশো পঞ্চাশ জনকে পাঠানো হয়েছিল বিভিন্ন কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে। ওই মহিলাদের আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি কিন্তু। ফ্যাসিবাদীদের পরাজয় হয়েছিল। আঠাশ এপ্রিল, ১৯৪৫ ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে বড় নায়ককে পার্টিজানরা গুলি করে মারে। মেরে ফেলে দিয়ে যায় মিলান এর প্রধান রেল স্টেশনের চত্বরে। যার পরে ক্রুদ্ধ বিক্ষুব্ধ জনতা পাশবিক আক্রোশে সেই একনায়কের মৃতদেহ উল্টো করে ঝুলিয়ে দেয় ল্যাম্পপোস্টে, জনতা জড়ো হয়ে উল্লাস করে সেই ল্যাম্পপোস্টের নিচে। এর পরে সবাই ঘরে ফেরে। মেয়েরা বন্দুক ফেলে ফিরে যায় অভ্যস্ত জীবনে, ঘরকন্নয়, গেরস্থালির কাজে, মাঠে ফসল তোলার কাজে, ফ্যাশন শো এর রেম্পে। ফেরেনি কেবল ফ্যাসিস্ট/ নাৎসি বাহিনীর হাতে শহীদের মৃত্যু বরণ করা ছশো তেইশ জন মহিলা পার্টিজান। কোনো অজানা সবুজ পাহাড়ের কোলে, আরো সবুজ শান্ত গাছের ছায়ায় তারা চিরকালের মতো ঘুমিয়ে আছে। তাদের মিনি স্কার্ট হাই হিলের খুট খুট শব্দে মুখরিত হবে না আর মিলানের পাথর বাঁধানো রাস্তা। যখনই কেউ "ঢলানি মেয়েছেলে" দের শরীর নিয়ে কথা বলে, মেয়েদের "ডিগনিফায়েড" বেশভূষা নিয়ে জ্ঞান দিতে আসে তখনই কেন জানি সেই মেয়েদের কথা মনে পড়ে যায়। গুডবাই বিউটিফুল। বেলা চাও, বেলা চাও, বেলা চাও চাও চাও।<br></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-3490432485995524452024-03-23T01:55:00.000+05:302024-03-23T02:09:56.632+05:30সন্দেশখালির সাতকাহন ~ রাধাবল্লভ রায়<div dir="auto"><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">রায়মঙ্গল-কলাগাছি নদীর কূল ধরে সন্দেশখালির মণিপুর, আতাপুর, ধুচনিখালি, শীতলিয়া। এগুলি একটু পুরনো আবাদ। ওই ধরুন, গত শতকের প্রথম দিকে বা তার একটু আগে আবাদ হয়েছে। লট অঞ্চল। কলকাতার বাবুদের পয়সায় বন-জঙ্গল কাটা হয়েছিল। দারুণ জমি সব। ধান হতো দেখার মতো। বছর সাত-আট আগেও সবুজ ধানের ক্ষেতে মায়াবি ঢেউ খেলে যেত। কিন্তু এখন সে সব নেই প্রায়। সবুজ ধানক্ষেতের জায়গায় ঘোলা-বোবা জল। সেই জলের বুকে ঢেউ ওঠে ঠিকই। কিন্তু সেখানে আকাশের ছায়া পড়ে না, সবুজশাড়ি পরা গ্রাম পুকুরের জানালায় উঁকি মারে না। বোবা-বধির ফিসারি মাঠ। অদ্ভুত এক আঁধারের মধ্যে সে শুধু টাকা প্রসব করে। কোটি কোটি টাকা। সে টাকার কোনও মা-বাপ নেই। জারজ। কিন্তু জারজ হলে কী হবে রাজা-বাদশারা তার কদর বোঝেন। এককালে এখানকার গরিব চাষিদের ঘামরক্ত ভেজা খাজনার পয়সায় জমিদারবাবুদের নাচমহলের ঝাড়বাতি গৌরব ছড়াত। কল্লোলিনী কলকাতায় টাকা উড়ত। আর এখন সন্দেশখালি-গোসাবার পাড়ায় পাড়ায় নাচমহল। ডান্স হাঙ্গামার মত্ত আসরে টাকা ওড়ে। জারজ টাকা। পাড়ায় পাড়ায় রাজা-বাদশা। ঘরে ঘরে শাহাজাদা। বিহার-উত্তর প্রদেশ থেকে নাচনি আসে জুয়ামেলার জলসায়। সেখানে টাকা উড়িয়ে কোমর দোলান পঞ্চায়েত প্রধান, ডিলারবাবু, সমিতির নেতা থেকে ভেড়িমালিক সবাই। কম যান না পরিযায়ী শ্রমিকেরাও। আলোর ঝলকানির সঙ্গে ডিজে মিউজিক ডুম ডুম। তন্বী নৃত্যপটিয়সীর শরীরের ভাঁজে ভাঁজে জারজ বেহিসেবী টাকার চুম্বন, শীৎকার। তারপর অদ্ভুত অশ্লীল এক আঁধারের মধ্যে টাকাদের পাখনা হয়। তারা নতুন মহলবাড়ির চিলেকোঠায় উড়ে যায় সুখসন্ধানী কবুতরের মতো। আর জুয়ার নেশায় ফতুর হয় চাষির সন্তান। হারিয়ে যায় আবাদি মাটির নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। লোনাজল আর মাদকজল পাল্লা দিয়ে মুছে যায় সন্দেশখালির কয়েক প্রজন্ম ধরে অর্জিত শিক্ষা-দীক্ষা-সংস্কৃতি। এবারে সর্বার্থে সর্বহারা হয় কৃষক। নিভে যায় তাঁদের কঠিন সংগ্রামের কথা। যে সংগ্রাম এগিয়ে চলেছিল আলোর পথে। বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ এবং শিক্ষা-সংস্কৃতির পথে।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> সন্দেশখালির ভুবন মণ্ডলের কথা এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল। আমার বাড়ি সন্দেশখালি নয়। তবু ভুবন মণ্ডলকে আমি চিনি। সরকারপাড়ার ভুবন মণ্ডলের বয়স এখন সাতাত্তর। খুলনা জেলার পাইকগাছা থেকে এদেশে যখন এসেছিল তখন ওর বয়স ছিল সতেরো। হজরতবাল মসজিদের ঘটনা নিয়ে ওদেশে গোলমাল শুরু হতে ১৯৬৪ তে ওরা সপরিবারে হাসনাবাদে এসে ঠাই নিয়েছিল। তারপর সেখান থেকে দণ্ডকারণ্য। কিন্তু ভুবন বাবা-মায়ের সঙ্গে যায়নি। শীতলিয়ার বাছাড় বাড়িতে গরু রাখালির কাজে ভর্তি হয় সে। বাছাড়েরা ধনী লোক। তিন-চারশো বিঘে জমি। ভুবন প্রথম বছর পেটেভাতে কাজ করত। তারপর এক সন্ধ্যায় নিতাই বাছাড়ের গিন্নিকে মা বলে ডাকায় ওর পদোন্নতি হয়। পেটেভাতের রাখাল থেকে মাহিন্দার। ছয়-সাত মণ ধানে সারা বছর খেটে দিত বাবুর বাড়ি। বেশি বেশি খাটত। বাবুরা সন্তুষ্ট হত তাতে। যা কিছু ইনকাম হত সব থাকত নিতাই বাছাড়ের গিন্নির কাছে। বছর চার-পাঁচ কেটে যায় এমনিভাবে। কিন্তু কথায় আছে, অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়। দুর্ঘটনা ঘটল একটা। এক রাতে বাছাড় বাড়িতে ডাকাত পড়ল। লুঠ হয়ে গেল টাকা-পয়সা সোনাদানা। রাতারাতি নিঃস্ব হয়ে যায় অত বড় বাছাড়বাড়ি। মুখ শুকিয়ে গেল ভুবনের। তিল তিল করে জমানো হাজার কয়েক টাকা নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল সে। জমি কিনবে, বিয়ে করবে। মা-বাবাকে দণ্ডকারণ্য থেকে বাংলায় আনবে। কিন্তু সে সব আর বোধহয় হল না। ভাগ্যলক্ষ্মী তার প্রতি কি এতটাই নির্দয় হবে! মাথার মধ্যে দলাপাকানো একটা চিন্তা টন টন করে ভুবনের। কিন্তু দুর্ভাগ্য একা পথ চলে না। সৌভাগ্যও তার পিছনে থাকে।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> এক সকালে অদ্ভুত এক আলো ভাদুরে ধান ক্ষেতে খেলা করছিল। ভুবন সেদিকে তাকিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসেছিল। বাছাড়গিন্নি দোতলার জানালা থেকে দেখতে পায় তাকে। সেইদিন দুপুরে ভুবনের ভাগ্য ফেরে। একসঙ্গে অনেকটা আলো যেন তার দুর্গম যাত্রাপথটি সুগম করে দেয়। সন্দেশখালির সরকার পাড়ায় বাছাড়গিন্নির বাপের বাড়ি। কুসুম তার খুড়তুতো ভাইয়ের মেয়ে। ভুবনের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেন তিনি। বিস্ময়ভরা চোখে সে ফিরে তাকাতে বাছাড় গিন্নি বলেছিলেন, " সাত নম্বরের কলোনিখাল পাড়ের চারবিঘে জমি তুই নে। সংসারধর্ম কর। তিনবিঘে জমি তোর টাকায়, আর এক বিঘে আমার আশীব্বাদ। যা।" ভুবন গিন্নিমাকে ঢপ করে একটা প্রণাম করতে বাছাড়গিন্নি ওর মাথায় হাত রেখে বলেছিল, "সবসময় আলোর পথে থাকবি। আঁধারে হাঁটবি না। তাহলি শান্তিতে থাকবি দেখিস। এইটি আমার পরামশ্য।"</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> সে বছর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হল। আর ভুবন শুরু করল নতুন জীবন। বাড়ি করল, বিয়ে করল, মা-বাবাকে মানা ক্যাম্প থেকে নিয়ে এল। তারপর অনেক কাল কেটে গেছে। দুই ছেলে আর দুই মেয়ে ভুবনের। নিজে হাতে তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছে, বিয়ে দিয়েছে। জমির পরিমাণও বাড়িয়েছে কয়েক বিঘে। এখন সে বৃদ্ধ। খাটাখাটনি করতে পারে না আর। বড় ছেলের কাছে থাকে। কিন্তু মনে তার শান্তি নেই। তাহলে কি আলোর পথ থেকে সে বিচ্যুত হয়েছে? অথচ সারাজীবন বাছাড় গিন্নির দেখানো পথেই তো থাকতে চেয়েছে সে। নাতি-পুতিদেরও এগিয়ে দিতে চেয়েছে সেই পথে। তারা লেখাপড়া করুক, প্রতিষ্ঠিত হোক, জগতকে চিনুক। কিন্তু এইখানে ঘটে গেছে বিভ্রম। নতুন সময়ে ভুবনের ছেলেমেয়ে এবং নাতিপুতিরা কোন পথে চলেছে সে আর বুঝতে পারে না। ওরা জমি বোঝে না, টাকা বোঝে। শিক্ষা বোঝে না, স্ট্যাটাস বোঝে। শান্তি বোঝে না, ক্ষমতা বোঝে। সিভিক ভলেন্টিয়ার হয়েছে একজন। মোটরবাইকে গাঁক গাঁক করে ছোটে আর পাড়াসমেত চমকায়। পার্টির মিছিলে হাঁটে আর বোতল বোতল মদ খায়। পঞ্চায়েতবাবুদের সঙ্গে তার ওঠাবসা। মান্যিগণ্যি করে লোকে। ভুবন এটাকে আলো বলবে না আঁধার বলবে বুঝে পায় না। অনুদানের টাকায় পাকা বাড়ি বানিয়েছে সেই নাতি। একটা নয়, দু-দু'খানা। কিন্তু বাড়ির মধ্যে লক্ষ্মীশ্রী নেই, শান্তি নেই। শান্তি নেই ভুবনের মনেও। জমিগুলো চলে গেছে সেখবাবুদের ফিসারিতে। লোনাজল তো বারণ মানে না কোনও। এক ঘেরিতে দু-চারজন রাজি হয়ে গেলে বাকি সকলের কপাল পোড়ে যে। ভুবনের সেই আলোর পথ, সাত বিঘে জমিও এখন লোনাজলের তলায়। কী করবে ভুবন?</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> সাত বিঘে জমি থেকে লিজবাবদ বছরে আয় বিয়াল্লিশ হাজার টাকা। দুই কিস্তিতে দুই ছেলে নগদানগদি বুঝে নেয়। ভুবন কিছুই বলতে পারে না। যে জমির সঙ্গে তার জীবন জড়িয়ে সেই জমি আর নেই ভাবতে গিয়ে কষ্ট হয় তার। কিন্তু নিরুপায় সে। সময়কে মেনে নিতেই হয়। চাষবাস উঠে যেতে ওর ছেলেরা এখন সংসার ছেড়ে মহারাষ্ট্রের নাসিকে। বিল্ডিং-এর কাজ করে। মাসে মাসে টাকা আসে বৌমাদের একাউন্টে। আবার সরকারি অনুদান আছে। মাসে মাসে রেশনের চাল, আয়লার চালও। ঘরে ভাতের অভাব নেই। তবু কোনও এক অজানিত কারণে বুকটা ধড়ফড় করে তার। সামনে কোথাও আলো দেখতে পায় না সে। নাতিরা বলে, "এ বুড়ো জমি জমি করে মরলো যে! বুদ্ধি হবে কবে তোমার? শ্মশানে গেলি? ভাবতি পেরেছিলে কোনওদিন পাকা ঘরে শোবে?" ভুবন বোকার মতো তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> ভুবনের বড়ছেলের ছোট মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়তে পড়তে বিয়ে করেছে। শরীর হয়নি, তবু শাঁখা-চুড়িতে ঠমক দেয়। মেজ মেয়েটা ডান্স হাঙ্গামার দলের সঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়েছিল। তারপর বিহারের এক যৌনপল্লিতে তার খোঁজ মেলে। কিন্তু বাড়িতে ফেরানো যায়নি আর। ফিসফাস কানে এসেছে, মেয়েবাবদ এক লাখ টাকা পেয়েছে বড় ছেলে। সেই টাকায় ফ্রিজ আর রঙিন টিভি কিনেছে বড়বৌমা। ভুবন কিছু বলে না, শুধু দেখে। কেননা সে বুঝতে পারে না এগুলো আলো নাকি অন্ধকার। ছোট ছেলের ছেলেমেয়ে দুটো বই-খাতার বদলে রাতদিন মোবাইল নিয়ে বসে থাকে। হাসি-কান্না সব সেখানেই। খেলার মাঠ ছেড়ে ওরা মোবাইলে মজে থাকে। ছোট বৌমা কিছু বলতে দেয় না। এগুলি শেখা নাকি দরকার। এখানেও ভুবন নিরুপায়। আলো নাকি আঁধার সে ধোঁয়াশা ঘোচে না তার কিছুতেই। ছোট বৌমা গ্রামে হনুমান মন্দির বানানোর জন্য চাঁদা তোলে পাড়ায় পাড়ায়। কখনও মনে ভেবেছে ওটাই বোধহয় আলো। কিন্তু দু-চারদিন ছোট ছেলের বাড়িতে থাকার পর তার মোহভঙ্গ হয়েছে। এপাড়ার নতুন নেতা বিপ্লব হাজরার সঙ্গে ছোটবৌমা কলকাতায় যায় প্রতি সপ্তায়। ছেলের অনুপস্থিতিতে সে-ই এ বাড়ির মালিক। রাত কাটায় এবাড়িতে। গ্রামের লোকে পাঁচ কথা শোনায়। কিন্তু ভুবন বুঝে উঠতে পারে না আলো নাকি অন্ধকার। তাই কিছু বলা হয় না তার। ধানমাঠের লোনাজলের মতো অশান্তির ঢেউ রাতদিন ফেনা তোলে তার মুখের কাছে, বুকের কাছে। গ্যাস্ট্রিকের চুয়া ঢেকুরে পেট জ্বলে যায়, বুক জ্বলে যায়। একটা লাঠি হাতে খালপাড়ে বসে শুকনো মাটির গায়ে দাগ কেটে যায় সে সকাল-বিকেল।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"> ভুবনকে চেনা লাগতে পারে আপনাদের অনেকের। এত নিচে দৃষ্টি পড়ে না তো, তাই হয়ত মনে থাকে না। কিন্তু দেখলে নিশ্চয়ই চিনতে পারবেন। গত কাল থেকে গ্রামে হরি নামের মহোৎসব চলছে। আটখানা মাইকের আওয়াজে হরিনাম হুঙ্কারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে ফিসারি জলার বুকে। একবার হরি নামে যত পাপ হরে, জীবের সাধ্য নাই তত পাপ করে। হাজার হাজার মানুষ দু'বাহু তুলে নাচছে ওখানে। একে অপরকে জড়িয়ে জড়িয়ে কাঁদছে। ওই দলের মধ্যে ভুবন আছে নিশ্চয়ই। আলোর পথ খুঁজে না পাওয়ার যন্ত্রণা ওখানে অশ্রুধারায় গড়িয়ে পড়ছে জানি।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"><br /></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-5468354064793754462024-03-15T09:49:00.001+05:302024-03-15T09:49:16.498+05:30কার্ল মার্ক্স ~ ডঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত<div dir="auto"><div dir="auto">নিজেকে মার্ক্সিস্ট বলে দাবি করার খোয়াব কবেই মিলিয়ে গেছে ঠিক যেমনটা মিলিয়ে যায় সুগন্ধির সুবাস এক নিমেষে যখন দামী এসইউভি গাড়ির দরজা দড়াম করে খুলে দিলে। নিজেকে মার্ক্সসিস্ট বলে দাবি করার খোয়াব মিলিয়ে গেছে বাতাসে বিলাস বহুল বিয়েবাড়ির হাজার টাকা প্লেটের ডিনার শেষের তোলা তৃপ্তির উদগার এর মতো। নিজেকে মার্কসিস্ট বলে দাবি করতে হওয়ার মতো ধৃষ্টতার আর কিছুই অবশেষ বাকি নেই নাগাসাকি বিস্ফোরণ শেষের ধ্বংসস্তুপ এর মতো দুনিয়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে। তবুও আজকের দিনটায় রাউল, রাউল ব্র্যাংকো কেন যেন ভেসে আসেন চিন্তা চেতনায় নিশির ডাকের মতো। পেরুর স্বৈরাচারী শাসক এর হাতে আগুনে আধপোড়া কবি রাউল মনে করেই দেন, মানুষ মারা গেলেও তার চিন্তা চেতনা বেঁচে থাকে, যদি তিনি হন পৃথিবী এর শ্রেষ্ট চিন্তা নায়ক। কার্ল মার্ক্স ইজ ডেড, লং লিভ কার্ল মার্ক্স।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কার্ল মার্ক্স</div><div dir="auto">---------------------------</div><div dir="auto">মার্ক্স, যখন পুঁজি গোটাচ্ছে তার তহবিল, ছড়াচ্ছে চিহ্ন জড়াচ্ছে ভূগোল, নগ্ন দিগন্তে ধেয়ে উড়ে চলেছে তার প্ৰযুক্তির ডানা;</div><div dir="auto">তখন মার্ক্স, আপনার কণ্ঠস্বর আবারো গমগম করে, গমগম করে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পুঁজি বারে বারে তারে তারে নাচে কুঁদে অকাতরে,</div><div dir="auto">পুঁজি কর্ক ফুঁসে ওঠা কোকাকোলার বোতলে বোতলে,</div><div dir="auto">পুঁজি নিকারাগুয়া থেকে নাইজেরিয়ার কারখানায়,</div><div dir="auto">পুঁজি ফিক করে হাসা ফিকশনে ফিকশনে,</div><div dir="auto">পুঁজি বেয়নেটে বিদ্ধ পোয়াতি নারীর পেটে,</div><div dir="auto">পুঁজি টুপটাপ টুপটাপ রক্ত আর খুনের লাল ফিনকি,</div><div dir="auto">পুঁজি বাজারে ছন্দে ছন্দে দুলে ওঠা দানবীয় হাত,</div><div dir="auto">পুঁজি খুবলে খাওয়া ডলারের দাঁত বসানো সাম্রাজ্যবাদ;</div><div dir="auto">মার্ক্স, এখানেই অনিবার্য হয়ে ওঠে আপনার কণ্ঠস্বর, আবারো গমগম করে, গমগম করে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বিপ্লবী শিল্পীদের ভায়োলিনে ভায়োলিনে জাগে আপনার তত্বের মূর্ছনা,</div><div dir="auto">ফিলিপিন্সের গেরিলার বন্দুকে বন্দুকে বেরিয়ে আসে আপনারই তরতাজা অক্ষর সব, মহান মার্ক্স।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বদলাও পৃথিবী, পৃথিবী বদলাও, বদলাও পৃথিবী;</div><div dir="auto">বুলেট ব'লে, বদলাও পৃথিবী,</div><div dir="auto">প্রেম ব'লে, বদলাও পৃথিবী,</div><div dir="auto">ঘৃণা ব'লে বদলাও পৃথিবী,</div><div dir="auto">নদী ব'লে বদলাও পৃথিবী,</div><div dir="auto">মা ব'লে বদলাও পৃথিবী।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তৃতীয় বিশ্বের প্রতিটি শ্রমিকের আর কৃষকের দেহে দেহে, ঘামে ঘামে, জবানে জবানে</div><div dir="auto">আপনি মার্ক্স, ঝলকাতে থাকেন, কেবল ঝলকাতে থাকেন; আর</div><div dir="auto">আপনার তত্ব, বুলেট আর বারুদ হয়ে,</div><div dir="auto">ঘৃণা আর প্রেম হয়ে,</div><div dir="auto">ভাঙ্গন আর নির্মাণ হয়ে বেরোতে থাকে; অবিরাম বেরোতে থাকে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পুয়েরটরিকো থেকে ফিলিপিন্স,</div><div dir="auto">ব্রাজিল থেকে বাহামাস</div><div dir="auto">মার্ক্স, আপনি মহান মার্ক্স,</div><div dir="auto">থাকেন এইখানে, মুহুর্তের উদ্ভাসনে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কার্ল মার্ক্স ইজ ডেড, লং লিভ কার্ল মার্ক্স।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-61779882364830068212024-02-14T21:18:00.001+05:302024-02-14T21:18:24.968+05:30ত্রাণ শিবিরের সনেট ~ শুভাশীষ মোদক চৌধুরী<div dir="auto"><div dir="auto">১২ই নভেম্বর ২০০৭: ওই বছরে নিহত নন্দীগ্রাম এলাকার ২৭ জন সিপিএম কর্মীদের নাম প্রকাশ হলো। একই সাথে গত এগারো মাস ঘরছাড়া শতাধিক সিপিএম পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল অস্থায়ী ত্রান শিবিরে। সেই ঝুপড়িগুলো পুড়িয়ে দিল তৃণমূল, অতিবাম, বিজেপি চক্র। বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া আশঙ্কা ব্যক্ত করলো - পরিবার গুলি বাড়ি ফিরতে চাইলে সংঘাত বাড়বে। কবিতাটা ওই সময়েই লেখা। তারপর গত ষোলো বছরে অনেক জার্সি বদল হয়েছে, ঘর পুড়েছে, পুড়ছে। লেখাটার প্রাসঙ্গিকতা বদলায়নি বোধ হয়...</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto"><b>ত্রাণ শিবিরের সনেট</b></div><div dir="auto"><b>শুভাশীষ মোদক চৌধুরী</b></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চেষ্টাও কোরোনা, তোমার ঘরে ফিরতে মানা।</div><div dir="auto">তোমার জন্যে এই কলমে কান্না ঝরবেনা।</div><div dir="auto">তোমার মরা ছেলের শরীর আঁকবেনা রং-তুলি,</div><div dir="auto">তোমার গায়েও চিহ্ন আছে। বাতাসেতে শুনি</div><div dir="auto">সেটার বাজার বিশেষ নেই। তুমি অপাঙক্তেয়।</div><div dir="auto">আমরা তোমার বেঁচে থাকাই করেছি সন্দেহ!</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তোমার ভাঙ্গা বাড়ির কথা দু-এক জনে জানে,</div><div dir="auto">কিন্তু বাড়ি ফিরতে গেলে জানবে উনিশ কোটি।</div><div dir="auto">এখন সুশীল সমাজ কাঁদি এগারো মাস পরে -</div><div dir="auto">তোমার দিকে নজর দিলেই তৃতীয় পাতার ক্ষতি।</div><div dir="auto">বদলে জামা সেই পাতাতেই জায়গাটুকু করে,</div><div dir="auto">বুদ্ধিজীবীর নিয়ম মত পাল্টি খাবো পরে</div><div dir="auto">সময়বুঝে। বিকিকিনি খানিক চোখের জল...</div><div dir="auto">মিডিয়া চায়, আমিও চাই - জানতে তোমার দল।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-29214154454587106772024-01-31T00:08:00.001+05:302024-01-31T00:08:54.722+05:30গান্ধীজি ও কুষ্ঠ রোগ ~ ডঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত<div dir="auto"><div dir="auto">সেবাগ্রামে থাকার সময় গান্ধীজি সময় পেলেই লম্বা হাঁটা লাগাতেন। ১৯৩৯ এর ডিসেম্বর আশ্রম থেকে বেড়িয়ে গান্ধীজি দেখলেন হাতে পুঁটুলি নিয়ে এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি এগিয়ে এসে পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলেন। গান্ধীজি চিনতে পারলেন, শাস্ত্রীজি। গান্ধীজির মুখে একটা চিন্তার ছায়া পড়লো। শাস্ত্রীজি সেটা লক্ষ করেই বললেন, "আপনার কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছিলাম তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল আমার। কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারলাম না। হরিদ্বারে বসে নিজের হাতে কাটা সুতো আপনার হাতে তুলে দিতে এসেছি। আমি আশ্রমের ভেতরে যাবো না, এই গাছতলায় শুয়ে রাতটা কাটিয়ে দেবো সকালে চলে যাবো"। কে এই শাস্ত্রীজি, কেনই বা তিনি আশ্রমে না ঢুকেই চলে যেতে চাইছেন এটা জানতে গেলে আমাদের একটু ফিরে যেতে হবে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গান্ধীজি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরে আসেন এবং তার সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করেন। উনি ও অন্য নেতারা গ্রেপ্তার হন, পুনের ইয়েরওয়ারা জেলে পাঠানো হয়। জেলে থাকার সময়, গান্ধীজি জেলসুপার ভান্ডারী সাহেবের কাছে দত্তাত্রেয় পারচুরে শাস্ত্রী নামের সহবন্দী সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। উনি ভান্ডারী কে অনুরোধ করেন খোঁজ নিতে যে কোথায় শাস্ত্রীজিকে আটকে রাখা আছে, ভান্ডারী কে বলেন " যদি উনি আমার সংগে একসাথে থাকেন তাহলে আমরা একে অন্যকে সংগ দিতে দিতে পারি, আলাপ আলোচনা করে সময় কাটাতে পারি।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ভান্ডারী তার উত্তরে বলেন, " শাস্ত্রীজির কুষ্ঠ আছে বলে তাকে জেলের অন্য সেকশনে রাখা হয়েছে।" এটা শুনে গান্ধীজি স্তম্ভিত হয়ে যান। শাস্ত্রীজি একজন পড়াশোনা করা শিক্ষিত, পন্ডিত মানুষ যার বেদ সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এরপরে গাঁধীজি শাস্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন মন খারাপ না করতে এবং অনুরোধ জানান চিঠিপত্র এর মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখতে, কোনো প্রয়োজন এ সাহায্য চাইতে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">শাস্ত্রীজি তার উত্তরে লেখেন, " যদি সম্ভব হয় তাহলে কিছু তুলোর ব্যবস্থা করবেন যাতে আমি আমার ক্ষত গুলি পরিস্কার রাখতে পারি; আর যদি কিছু বই এর ব্যবস্থা করা যায়।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চিঠি পাওয়ার পরে মহাদেব দেশাই যখন গাঁধীজি কে দেখতে আসেন জেলে, তখন গাঁন্ধীজির নির্দেশে দেশাই ওইসব ব্যাবস্থা করেন ও শাস্ত্রীজিকে খবর পাঠান যে "শরীর আমাদের অসুস্থ হতে পারে কিন্তু চৈতন্য আমাদের জাগিয়ে রাখবে।"</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গান্ধীজীর এই চিঠি "মৃত সঞ্জীবনী এর মতো কাজ করে শাস্ত্রীজির জন্য এবং তিনি গাঁধীজির এই কথাতে বিপুলভাবে উজ্জীবিত হন।</div><div dir="auto"> </div><div dir="auto">কোনোও সময়ে গাঁধীজি জেলে অনশন করতেন। তাঁর জীবন যখন একটা সুতোয় ঝুলছে, সেই সময়ে সরকার সমঝোতা করেছে। কে গাঁধীজিকে অনশন ভঙ্গ এর সময় প্রথম ফলের রস খাওয়াবে সে প্রশ্ন উঠে এসেছে। বাপু চেয়েছিলেন শাস্ত্রীজি এই কাজের ভার নিক। সরকার বাহাদুর মেনে নেওয়ার পরে সেটাই হয়। শাস্ত্রী এগিয়ে আসেন।। জেলার ভাণ্ডারী সাহেব এই দৃশ্য দেখে নিজের চোখের জল আটকাতে পারেন নি।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কুষ্ঠরোগীর প্রতি গান্ধীজির এই মনোভাবের শুরু কিন্ত অনেক আগে। দক্ষিণ আফ্রিকায়, নাটাল এ এক জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন গাঁধীজি। হটাৎ খেয়াল করলেন দূরে একটা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একদল লোক খুব মন দিয়ে তাঁর কথা শুনছে। হাত নেড়ে কাছে এসে ভিড়ের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য ডাকলেও তারা সাড়া দিল না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গাঁন্ধীজি ওদের দিকে এগিয়ে এলেন ব্যাপারটা বোঝার জন্য। এগিয়ে আসা মাত্রই ওদের একজন চেঁচিয়ে উঠলো, "গান্ধীভাই আমাদের কাছে আসবেন না।। আমরা লেপার, কুষ্ঠরুগী।" এসব শোনার পরেও গান্ধী এগিয়ে এলেন, কথা বললেন ওদের সাথে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কয়েকজনের হাতের আঙ্গুল খসে গেছে তো কারুর পায়ের আঙ্গুল। কারুর ভুরুর লোম উঠে গেছে। ওরা কে কি চিকিৎসার সুযোগ পায়, গান্ধী জানতে চাইলেন। উত্তর শুনে স্তম্ভিত, স্তব্ধ।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ওদের কথায়, " কোনো ডাক্তার আমাদের চিকিৎসা করতে চায় না; আমরাই যে যার নিজের চিকিৎসা করি নিমপাতার রস দিয়ে।" যখন জানতে চাওয়া হল যে ওই রসে কোনো উপকার হচ্ছে কি না, তখন সবারই উত্তর না, ওরা কেবল ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ঠিক ওই মুহূর্তে গান্ধীজি ঠিক করলেন যে ওই মানুষগুলির জন্য ওনাকে কিছু করতেই হবে। উনি ওদের বাড়িতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চলে গেলেন কিন্তু দিনের বেলায় কারুর সাহস হল না তার বাড়ি গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ার। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গান্ধীজি যখন রাতে ঘুমোতে যাচ্ছেন তখন ওরা গিয়ে উপস্থিত। ওদের ডেকে নিলেন ভেতরে। ওদের ঘা পরিষ্কার করে দিলেন, কিছু খাবার দাবার বের করে খাওয়ালেন, আর ওদের জীবন কাহিনী শুনলেন, কিভাবে ওরা গ্রামের বাইরে একটা খণ্ডহরে বাসা করে থাকে আর বাঁচার চেষ্টা করে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ওদের জলের অভাব, নাগাল পায় না, তাই বরুনদেব যখন কৃপা করে মুখ তুলে চান তখন ওরা সেই বারিধারাতে স্নান করে। তা না হলে ওরা ওদের সেই ছেঁড়াখোঁড়া জামাকাপড় ই না কেচে দিনের পর দিন পড়ে থাকে কারণ স্নান করার বা কাপড় কাচার জল থেকে ওরা বঞ্চিত। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গ্রামের আনন্দ-অনুষ্ঠানের উচ্ছিষ্ট দিয়েই পেট ভরাতে হয়। জীবন কাহিনী বর্ণনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে লোকগুলি বিদায় নিতে চায়। গান্ধীজি বিদায়ের সময় বলেন যে তিনি ওদের জন্য কিছু করতে চান। করেওছিলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা, ওষুধপত্র এর ব্যবস্থা।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সেবাগ্রামের সেই দিনটাতে ফেরত যাই আমরা। </div><div dir="auto">এই সেই শাস্ত্রীজি। গাঁধীজি দক্ষিণ ভারতীয় স্বেচ্ছাসেবক ভেলাধুন কে নির্দেশ দেন শাস্ত্রীজির জন্য একটি নতুন ধুতি ও বেনিয়ান আনতে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পরের দিন যথানিয়মে প্রার্থনা সভায় মিলিত হলেন সব আশ্রমিকরা। যেখানে গাঁধীজি ঘোষণা করেন, "আজ আমাদের মধ্যে বেদ ও অন্যান্য বিষয়ে পারঙ্গম একজন পন্ডিত মানুষ শাস্ত্রীজি আমাদের মধ্যে উপস্থিত। উনি কুষ্ঠ রোগ এ ভুগছেন। আপনারা কি ওনাকে সমর্থন করবেন ও ওনাকে এই আশ্রমে থাকতে দেবেন ? " </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চারদিকে তখন সূচ পতনের নীরবতা। আশ্রমিকদের অনুৎসাহিত মনোবাসনা বুঝে গাঁধীজি আবেদন রাখলেন, " যদি আপনাদের বিবেক অনুমোদন দেয় তাহলেই আপনারা সম্মতি দেবেন।"</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গান্ধীজীর কথায় সেদিন কাজ হয়েছিল। মানুষ তার কথায় ভরসা রেখেছিল। শাস্ত্রীজি আশ্রমেই থেকে যান। আশ্রমের পূর্বদিকে তার জন্য একটি কুটির তৈরি হয়। গান্ধীজি প্রতিদিন সময় পেলে নিজের হাতে তার সেবা করতেন, ক্ষতস্থান ধুয়ে দিতেন, জামাকাপড় পড়িয়ে দিতেন। তার সাথে সংস্কৃত কাব্য আবৃত্তি করতেন। ডাঃ জীবরাজ মেহেতা এর দেওয়া ওষুধ সেবনের পরে শাস্ত্রীজির উন্নতি দেখে গাঁধীজি খুবই সন্তুষ্ট হন। কাছেই দত্তপুরে ওয়ার্ধায় মনোহর দেওয়ান কুষ্ঠ পুনর্বাসন কেন্দ্র খোলেন। শাস্ত্রীজি সেখানে স্থানান্তরিত হ'ন ও আমৃত্যু সেখানেই থেকে যান। গান্ধীজি এই মনোহর দেওয়ান কে "প্রকৃত মহাত্মা" খেতাবে সম্ভাষিত করেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কুষ্ঠরোগ নিয়ে গান্ধীজির এই অবদানের দুটি বৈশিষ্ট্য আছে। এক। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন লোক দেখানো ঘটনা নয়। এর ধারাবাহিক ইতিহাস আছে। আগ্রহী পাঠক-পাঠিকার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত কালানুক্রম দেওয়া হল। দুই। গান্ধীজির এর সেবার মনোভাবের সাথে আগাগোড়া বিজ্ঞান জড়িয়ে ছিল। দেশ বিদেশের বিখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মী যারা কুষ্ঠরোগ নির্মূল করার অভিযানে জড়িত তারা অনেকেই নিয়মিতভাবে ওয়ার্ধা সেবাগ্রামে এসেছেন গান্ধীজির সাথে আলাপ আলোচনা পরামর্শ করেছেন। উনি আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে কিভাবে এই রোগ দূর করা যায় তাতে উৎসাহী ছিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আজ ৩০শে জানুয়ারি। শহীদ দিবস। সারা ভারত জুড়ে পালিত হচ্ছে কুষ্ঠ-বিরোধী দিবস গান্ধীজীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। একজন সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ গাঁধীজিকে আজকের দিনে খ্যাপা কুকুরের মতো রাগের জ্জ্বালায় গুলি করে খুন করে। সেই সাইকোপ্যাথ মানসিক রুগীকে আজ ততোধিক মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত কিছু মানুষ হিরো বানাতে চাইছে। কুষ্ঠরুগীদের মানুষ হিসেবে বাঁচার লড়াইতে কুষ্ঠ রোগের নির্মূল অভিযানে জড়িত একজন সামান্য স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আজ বাপুকে এই স্মরণ। উনি বড় মাপের মনের অধিকারী ছিলেন। আশা রাখি বিপরীত মেরুর মতাদর্শের রাজনীতির একজন ভারতবাসীর কাছ থেকেও উনি এই শ্রদ্ধাঞ্জলি গ্রহণ করবেন, ফিরিয়ে দেবেন না। ঘেন্না ও বিদ্বেষ এর সব রকম চাষ আবাদ বন্ধ হয়ে আমার দেশ হয়ে উঠুক "সকল দেশের সেরা"</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">জাতীয় কুষ্ঠ-বিরোধী দিবসে শপথ: ঘেন্না মুক্ত ভারত, কুষ্ঠ মুক্ত ভারত। আসুন মানুষে মানুষে হাত বাড়াই।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সংক্ষিপ্ত কালানুক্রম:</div><div dir="auto">১৮৯৪-৯৫: ডারবান: রাস্তায় গান্ধীজির সাথে কুষ্ঠরোগীর সাক্ষাৎ।</div><div dir="auto">১৮৯৭: ডারবান: নিজের বাড়িতে গান্ধীজি কুষ্ঠরোগীর পরিচর্যা করলেন।</div><div dir="auto">১৯০৫: দক্ষিণ আফ্রিকা: ভারতে কাজ করতে গিয়ে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন একজন মিশনারিকে নিয়ে গান্ধীজি একটি ছোট প্রবন্ধ লিখলেন।</div><div dir="auto">১৯১৩-১৪: পুনে: সান্ধ্য ভ্রমণে বেরিয়ে গান্ধীজি একজন কুষ্ঠরোগীকে উদ্ধার করলেন।</div><div dir="auto">১৯১৩-১৫: মাদ্রাজ: একজন কুষ্ঠরোগী যিনি বিশিষ্ট রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন তার ক্ষতস্থান গান্ধীজি নিজের কাপড় দিয়ে মুছে দিলেন।</div><div dir="auto">১৯১৭: চম্পারণ: বিখ্যাত চম্পারণ যাত্রার সময় গান্ধীজি একজন কুষ্ঠরোগীকে সঙ্গে করে পৌঁছে দিলেন গন্তব্যে।</div><div dir="auto">১৯২৫: কটক: ১৯শে আগস্ট, গান্ধীজি কটক কুষ্ঠ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন।</div><div dir="auto">১৯২৫: পুরুলিয়া: ১২ই সেপ্টেম্বর গান্ধীজি পুরুলিয়া কুষ্ঠ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন।</div><div dir="auto">১৯২৭: কটক: ২১শে ডিসেম্বর গান্ধীজি কটক কুষ্ঠ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। ওয়ার্ড ছেড়ে চলে আসার আগে কয়েকজনের সাথে মেলালেন হাত।</div><div dir="auto">১৯২৯: আলমোড়া: কাঁসাই, বাগেশ্বর এর কুষ্ঠ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন গান্ধীজি।</div><div dir="auto">১৯৪৪: সেবাগ্রাম: কস্তুরবা ট্রাস্ট গঠিত হ'ল। কুষ্ঠরোগ নিয়ে কর্মসূচি ওই ট্রাস্টের অন্যতম লক্ষ্য।</div><div dir="auto">১৯৪৪: সেবাগ্রাম: গান্ধীজি দত্তপুর কুষ্ঠ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন ও তার কর্ণধার মনোহর দেওয়ানকে "প্রকৃত মহাত্মা" বলে আখ্যা দিলেন।</div><div dir="auto">১৯৪৫: সেবাগ্রাম: ৯ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বিখ্যাত কুষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ডঃ ককরেন এসে দেখা করলেন গান্ধীজির সাথে।</div><div dir="auto">১৯৪৬: মাদ্রাজ: ৪ঠা ফেব্রুয়ারি চেনগেলপুট উইলিংডন কুষ্ঠ হাসপাতালে রুগীদের সাথে দেখা করলেন গান্ধীজি।</div><div dir="auto">১৯৪৭: ১২ই জানুয়ারি গান্ধীজি হরিজন পত্রিকায় কলম ধরলেন সিন্ধ প্রদেশের কুষ্ঠরোগীদের বাধ্যতামূলক বন্ধ্যাকরণ নিয়ে উত্থাপিত বিল কে ধিক্কার জানিয়ে।</div><div dir="auto">১৯৪৭: নোয়াখালী: ৫ই ফেব্রুয়ারি তার প্রার্থনা শেষে সভায় গান্ধীজি কুষ্ঠরোগী ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের বিশেষ প্রতিনিধিত্ব এর কথা উল্লেখ করলেন।</div><div dir="auto">১৯৪৭: কলকাতা: ৪ঠা সেপ্টেম্বর গান্ধীজি দেখতে গেলেন গোবরা মানসিক হাসপাতাল, বললেন যে এদের দুর্দশা কুষ্ঠরোগীদের চেয়েও খারাপ।</div><div dir="auto">১৯৪৭: দিল্লি: ২৩শে ও ২৪শে অকটবর পরপর দু'দিন প্রার্থনা শেষের সভায় গান্ধীজি কুষ্ঠরোগের উল্লেখ করলেন। বার্তা পাঠালেন সারা ভারত কুষ্ঠরোগ কর্মী সম্মেলনে।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-58071583260937807232024-01-26T09:09:00.001+05:302024-01-26T09:09:38.594+05:30বাল্মিকী রামায়ণের যুদ্ধ কান্ডের ১১৫তম এবং ১১৬তম সর্গ ~ নবারুণ ঘোষাল<div dir="auto"><div dir="auto">বাল্মিকী রামায়ণের যুদ্ধ কান্ডের ১১৫তম এবং ১১৬তম সর্গ দুটিতে লঙ্কার অশোকবনে রামের সাথে সীতার দেখা হওয়ার পর তাঁদের কথোপকথন বাংলায় অনুবাদ করলাম। 🙏🙏</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধ কান্ড ১১৫ সর্গ</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">প্রথম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">तां तु पार्श्वे स्थितां प्रह्वां रामः संप्रेक्ष्ये मैथिलीम् |</div><div dir="auto">हृदयान्तर्गतं भावं व्याहर्तुमुपचक्रमे ||</div><div dir="auto">অতঃপর অবনতা মৈথিলীকে পার্শ্বে দেখিয়া রাম হৃদয়ের অন্তর্গত ভাব ব্যক্ত করিলেন।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বিতীয় শ্লোকঃ</div><div dir="auto">एषासि निर्जिता भद्रे शत्रुं जित्वा रणाजिरे |</div><div dir="auto">पौरुषाद्यदनुष्ठेयं मयैतदुपपादितम् ||</div><div dir="auto">হে ভদ্রে, শত্রুকে রণক্ষেত্রে পরাজিত করিয়া তোমাকে আমি জয় করিয়াছি। পৌরুষের দ্বারা যাহা করণীয়, তাহা আমি সম্পন্ন করিয়াছি।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তৃতীয় শ্লোকঃ</div><div dir="auto">गतोऽस्म्यन्तममर्षस्य धर्षणा संप्रमार्जिता |</div><div dir="auto">अवमानश्च शत्रश्च युगपन्निहतौ मया ||</div><div dir="auto">আমার লজ্জাজনক অবস্থা এবং আমার প্রতি অন্যায়ের অবসান হইয়াছে। আমার অবমাননাকারী এবং আমার শত্রু যুগপৎ আমার দ্বারা নিহত হইয়াছে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্থ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">अद्य मे पौरुषं दृष्टमद्य मे सफलः श्रमः |</div><div dir="auto">अद्य तीर्णप्रतिज्ञोऽहं प्रभवाम्यद्य चात्मनः॥</div><div dir="auto">অদ্য আমার পৌরুষ প্রদর্শিত হইয়াছে, অদ্য আমার শ্রম সফল হইয়াছে। অদ্য আমি প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করিয়াছি, অদ্য আমি নিজেই নিজের প্রভু।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">या त्वं विरहिता नीता चलचित्तेन रक्षसा |</div><div dir="auto">दैवसंपादितो दोषो मानुषेण मया जितः ||</div><div dir="auto">যে তুমি এক চপলমতি রাক্ষসের দ্বারা অপহৃতা হইয়াছিলে, আমি এই মনুষ্য, দৈবদোষের অপসারণ করিয়া তাহাকে জয়লাভ করিয়াছি।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষষ্ঠ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">संप्राप्तमवमानं यस्तेजसा न प्रमार्जति |</div><div dir="auto">कस्तस्य पौरुषेणार्थो महताप्यल्पचेतसः ||</div><div dir="auto">যিনি নিজের তেজের দ্বারা নিজ অবমাননা দূর করিতে না পারেন, সেই অতি অল্পচেতন পুরুষের পৌরুষের কি অর্থ?</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সপ্তম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">लङ्घुनं समुद्रस्य लङ्कायाश्चापि मर्दनम् |</div><div dir="auto">सफलं तस्य च श्लाघ्यमद्य कर्म हनूमतः॥</div><div dir="auto">যিনি সমুদ্র লঙ্ঘন করিয়া লঙ্কা ধ্বংস করিয়াছিলেন, সেই হনুমানের প্রশংসনীয় কর্ম অদ্য সফল হইয়াছে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অষ্টম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">युद्धे विक्रमतश्चैव हितं मन्त्रयतस्तथा |</div><div dir="auto">सुग्रीवस्य ससैन्यस्य सफलोऽद्य परिश्रमः ||</div><div dir="auto">যিনি যুদ্ধে বিক্রম দেখাইয়াছেন এবং হিতকারী মন্ত্রণা দিয়াছেন, সেই সুগ্রীব এবং তাঁহার সেনাদিগের পরিশ্রম অদ্য সফল হইয়াছে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">নবম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">विभीषणस्य च तथा सफलोऽद्य परिश्रमः |</div><div dir="auto">विगुणं भ्रातरं त्वक्त्वा यो मां स्वयमुपस्थितः ||</div><div dir="auto">যে বিভীষণ তাঁহার গুণহীন ভ্রাতাকে পরিত্যাগ করিয়া স্বয়ং আমার নিকট উপস্থিত হইয়াছেন, তাঁহার পরিশ্রম অদ্য সফল হইয়াছে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দশম শ্লোকঃ</div><div dir="auto">इत्येवं वदतः श्रुत्वा सीता रामस्य तद्वचः |</div><div dir="auto">मृगीवोत्फुल्लनयना बभूवाश्रुपरिप्लुता ||</div><div dir="auto">রামের মুখে এইরূপ বচন শুনিয়া মৃগীর ন্যায় উৎফুল্লনয়না সীতা অশ্রুপরিপ্লুতা হইলেন।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">একাদশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">पश्यतस्तां तु रामस्य समीपे हृदयप्रियाम् |</div><div dir="auto">जनवादभयाद्राज्ञो बभूव हृदयं द्विधा ||</div><div dir="auto">নিজ সমীপে হৃদয়প্রিয়াকে দেখিয়া জন অপবাদের ভয়ে রামের হৃদয় দ্বিধাগ্রস্ত হইল।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বাদশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">सीतामुत्पलपत्राक्षीं नीलकुञ्चितमूर्धजाम् |</div><div dir="auto">अवदद्वै वरारोहां मध्ये वानररक्षसाम् ||</div><div dir="auto">বানর এবং রাক্ষসদিগের মধ্যে উৎপলাক্ষী, নীলকুঞ্চিতকেশী, সুনিতম্বিনী সীতাকে দেখিয়া (রাম) এইরূপ বলিলেন</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রয়োদশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">यत्कर्तव्यं मनुष्येण धर्षणां प्रतिमार्जता |</div><div dir="auto">तत्कृतं रावणं हत्वा मयेदं मानकाङ्क्क्षिणा ||</div><div dir="auto">নিজ অপমানের প্রতিকার করিবার জন্য মনুষ্যের যাহা কর্তব্য, সম্মানার্থে রাবণকে হত্যা করিয়া আমি তাহা করিয়াছি।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্দশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">निर्जिता जीवलोकस्य तपसा भावितात्मना |</div><div dir="auto">अगस्त्येन दुराधर्षा मुनिना दक्षिणेव दिक् ||</div><div dir="auto">যে দক্ষিণ দিক বিশুদ্ধহৃদয় তপস্বী অগস্ত্যের পক্ষেও দুরতিক্রম্য ছিল, সেই জীবলোককেও (দেশকেও) আমি জয় করিয়াছি।</div><div dir="auto">পঞ্চদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">विदितश्चास्तु भद्रं ते योऽयं रणपरिश्रमः |</div><div dir="auto">सुतीर्णः सुहृदां वीर्यान्न त्वदर्थं मया कृतः ||</div><div dir="auto">হে ভদ্রে, তোমার জানা উচিত যে এই রণকার্য যাহাতে আমি আমার সুহৃদদিগের বীরত্বের সাহায্যে উত্তীর্ণ হইয়াছি, তাহা তোমার নিমিত্ত করি নাই।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষোড়শ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">रक्षता तु मया वृत्तमपवादम् च सर्वतः |</div><div dir="auto">प्रख्यातस्यात्मवंशस्य न्यङ्गं च परिमार्जता ||</div><div dir="auto">(আমি ইহা করিয়াছি) সর্বত্রব্যাপী অপবাদ হইতে রক্ষা পাইবার জন্য এবং আমার প্রখ্যাত বংশের হীনাবস্থার পরিমার্জনের জন্য।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সপ্তদশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">प्राप्तचारित्रसंदेह मम प्रतिमुखे स्थिता |</div><div dir="auto">दीपो नेत्रातुरस्येव प्रतिकूलासि मे दृढम् ||</div><div dir="auto">চরিত্রসন্দেহ প্রাপ্ত হইয়া আমার সম্মুখে উপস্থিত তুমি নেত্ররোগীর সম্মুখে দীপের ন্যায় অত্যন্ত অবাঞ্ছিত হইয়া আছ।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অষ্টাদশ শ্লোকঃ</div><div dir="auto">तद्गच्छ त्वानुजानेऽद्य यथेष्टं जनकात्मजे |</div><div dir="auto">एता दश दिशो भद्रे कार्यमस्ति न मे त्वया ||</div><div dir="auto">সেইহেতু হে জনকাত্মজা, অদ্য আমি তোমাকে এই দশ দিকের মধ্যে যে কোনও দিকে যথেচ্ছ যাইবার অনুমতি দিতেছি, তোমাকে দিয়া আমার আর কোনো কাজ নাই।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">উনবিংশতি শ্লোকঃ</div><div dir="auto">कः पुमांस्तु कुले जातह् स्त्रियं परगृहोषिताम् |</div><div dir="auto">तेजस्वी पुनरादद्यात् सुहृल्लेख्येन चेतसा ||</div><div dir="auto">কোন সদ্বংশজাত তেজস্বী পুরুষ পরগৃহে আশ্রিতা স্ত্রীকে প্রফুল্লচিত্তে পুনরায় গ্রহণ করিবে?</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বিংশতি শ্লোকঃ</div><div dir="auto">रावणाङ्कपरिक्लिष्टां दृष्टां दुष्टेन चक्षुषा |</div><div dir="auto">कथं त्वां पुनरादद्यां कुलं व्यपदिशन् महत् || </div><div dir="auto">তুমি রাবণের অঙ্কে ক্লিষ্ট হইয়া, তাহার দুষ্ট চক্ষুর দ্বারা দৃষ্ট হইয়া কিরূপে আমার মহৎ কুলে পুনরায় গৃহীত হইবে তাহা বল। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">একবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">तदर्थं निर्जिता मे त्वं यशः प्रत्याहृतं मया |</div><div dir="auto">नास्थ् मे त्वय्यभिष्वङ्गो यथेष्टं गम्यतामितः || </div><div dir="auto">তোমাকে আমি জয় করিয়াছি আমার হৃত যশের পুনরুদ্ধারের জন্য। তোমার সম্পর্কে আমার আর কোনো গভীর অনুভূতি নাই, তুমি যথা ইচ্ছা গমন করিতে পার। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বাবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">तदद्य व्याहृतं भद्रे मयैतत् कृतबुद्धिना |</div><div dir="auto">लक्ष्मणे वाथ भरते कुरु बुद्धिं यथासुखम् || </div><div dir="auto">হে ভদ্রে, সেই হেতু অদ্য আমি কৃতবুদ্ধি হইয়া তোমায় বলিতেছি, তুমি যথাসুখে লক্ষ্মণ কিম্বা ভরতের প্রতি মনঃসংযোগ করিতে পার। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রয়োবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">शत्रुघ्ने वाथ सुग्रीवे राक्षसे वा विभीषणे |</div><div dir="auto">निवेशय मनः सीते यथा वा सुखमात्मनः || </div><div dir="auto">শত্রুঘ্ন অথবা সুগ্রীব অথবা রাক্ষস বিভীষণ যাহার কাছে সুখী হইবে, হে সীতা তুমি তাহাতে মনোনিবেশ কর। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্বিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">न हि त्वां रावणो दृष्ट्वो दिव्यरूपां मनोरमाम् |</div><div dir="auto">मर्षयेत चिरं सीते स्वगृहे पर्यवस्थिताम् || </div><div dir="auto">হে সীতা, তোমার ন্যায় দিব্যরূপা মনোরমা নারীকে স্বগৃহে অবস্থিত দেখিয়া রাবণ দীর্ঘকাল নিজেকে সংযত রাখিতে পারে না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">ततः प्रियार्हश्रवणा तदप्रियं प्रियादुपश्रुत्य चिरस्य मैथिली |</div><div dir="auto">मुमोच बाष्पं सुभृशं प्रवेपिता गजेन्द्रहस्ताभिहतेव वल्लरी ||</div><div dir="auto">ততঃপর চিরকাল প্রিয়বাক্য শ্রবণে অভ্যস্ত মৈথিলী প্রিয়মুখে এইরূপ অপ্রিয় বাক্য শুনিয়া হস্তীর দ্বারা আক্রান্ত লতার ন্যায় দীর্ঘক্ষণ কম্পমান হইয়া প্রভূত অশ্রু মোচন করিতে লাগিলেন।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ইতি ঋষি বাল্মিকী বিরচিত আদিকাব্য রামায়ণের যুদ্ধ কান্ডের পঞ্চদশোত্তর শততম সর্গ। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধ কান্ড ১১৬ সর্গ </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">প্রথম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">एवम् श्रुत्वा तु वैदेही परुषं लोमहर्षणम् |</div><div dir="auto">राघवेण सरोषेण भृशं प्रव्यथिताभवत् || </div><div dir="auto">রাঘবের এরূপ রোষপূর্ণ কঠোর লোমহর্ষক কথা শুনিয়া বৈদেহী অত্যন্ত ব্যথিত হইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বিতীয় শ্লোকঃ</div><div dir="auto">सा तदश्रुतपूर्वं हि जने महति मैथिली |</div><div dir="auto">श्रुत्वा भर्तृवचो रूक्षं लज्जया व्रीडिताभवत् || </div><div dir="auto">এতজনের সম্মুখে পতির এসকল অশ্রুতপূর্ব কথা শুনিয়া মৈথিলী লজ্জায় ব্রীড়াবনতা হইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তৃতীয় শ্লোকঃ </div><div dir="auto">प्रविशन्तीव गात्राणि स्वान्येव जनकात्मजा |</div><div dir="auto">वाक्षल्यैस्तैः सशल्येव भृशमश्रूण्यवर्तयत् ||</div><div dir="auto">স্বীয় গাত্রে এইসকল সুতীক্ষ্ণ বাক্যবাণগুলির প্রবেশ অনুভব করিয়া জনকদুহিতা অজস্র অশ্রুবর্ষণ করিতে লাগিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্থ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">ततो बाष्पपरिक्लिष्टं प्रमार्जन्ती स्वमाननम् |</div><div dir="auto">शनैर्गद्गदया वाचा भर्तारमिदमब्रवीत् ||</div><div dir="auto">ততঃপর নিজ বাষ্পপূর্ণ আনন পরিমার্জন করিয়া ধীরে ধীরে গদগদ বাক্যে পতিকে বলিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">किं मामसदृशं वाक्यमीदृशं श्रोत्रदारुणम् |</div><div dir="auto">रूक्षं श्रावयसे वीर प्राकृतः प्राकृताम् इव ||</div><div dir="auto">হে বীর, কিহেতু আমার ন্যায় নারীকে এইরূপ দারুণ রুক্ষ বাক্য শুনাইতেছেন, যেরূপ কোনও সাধারণ পুরুষ কোনো সাধারণ নারীকে শুনাইয়া থাকে? </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষষ্ঠ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">न तथास्मि महाबाहो यथा त्वमवगच्छसि |</div><div dir="auto">प्रत्ययं गच्छ मे स्वेन चारित्रेणैव ते शपे ||</div><div dir="auto">হে মহাবাহু, আপনি যেরূপ ভাবিতেছেন, আমি সেইরূপ নহি। আমি নিজের চরিত্রের দিব্য দিয়া বলিতেছি, আমার কথা বিশ্বাস করুন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সপ্তম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">पृथक्स्त्रीणां प्रचारेण जातिं त्वं परिशङ्कसे |</div><div dir="auto">परित्यजेमां शङ्कां तु यदि तेऽहं परीक्षिता || </div><div dir="auto">আপনি আশঙ্কাবশতঃ আমাকে পতিতা স্ত্রীজাতিসদৃশ বলিয়া প্রচার করিতেছেন। যদি আমি আপনার দ্বারা পরীক্ষিতা হইয়া থাকি, তবে এই আশঙ্কা ত্যাগ করুন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অষ্টম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">यद्यहं गात्रसंस्पर्शं गतास्मि विवशा प्रभो |</div><div dir="auto">कामकारो न मे तत्र दैवं तत्रापराध्यति || </div><div dir="auto">হে প্রভু, যদি আমি গাত্রসংস্পর্শে যাইবার জন্য বাধ্য হইয়া থাকি, তবে তাহাতে আমার কোনও ভূমিকা নাই, তাহা দৈবের বশে হইয়াছে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">নবম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">मदधीनं तु यत्तन्मे हृदयं त्वयि वर्तते |</div><div dir="auto">पराधीनेषु गात्रेषु किं करिष्याम्यनीश्वरा ||</div><div dir="auto">আমার অধীন যে হৃদয়, তাহা আপনাতেই স্থির ছিল। পরাধীন এই গাত্রের আমি অসহায় অবস্থায় কি করিতে পারিতাম? </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দশম শ্লোকঃ </div><div dir="auto">सहसंवृद्धभावाच्च संसर्गेण च मानद |</div><div dir="auto">यद्यहं ते न विज्ञाता हता तेनास्मि शाश्वतम् || </div><div dir="auto">হে মানদ, একসঙ্গে বৃদ্ধিলাভ করিয়া এবং এক সংসর্গে থাকিয়াও যদি আমি আপনার কাছে অজ্ঞাত হইয়া থাকি, তবে আমি চিরকালের জন্য হতসর্বস্ব হইলাম। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">একাদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">प्रेषितस्ते यदा वीरो हनूमानवलोककः |</div><div dir="auto">लङ्कास्थाहं त्वया वीर किं तदा न विसर्जिता || </div><div dir="auto">হে বীর, আমি লঙ্কায় থাকাকালীন যখন আপনি বীর হনুমানকে অবলোকন করিবার জন্য প্রেরণ করেন, সেই সময়েই কেন আমাকে বিসর্জন দিলেন না? </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বাদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">प्रत्यक्षं वानरेन्द्रस्य त्वद्वाक्यसमनन्तरम् |</div><div dir="auto">त्वया सन्त्यक्तया वीर त्यक्तं स्याज्जीवितं मया ||</div><div dir="auto">হে বীর, বানরশ্রেষ্ঠের মুখে আপনার দ্বারা ত্যক্ত হইবার সংবাদ শুনিবামাত্র আমি তাঁহার সম্মুখে জীবন ত্যাগ করিতাম। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রয়োদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">न वृथा ते श्रमोऽयं स्यात्संशये न्यस्य जीवितम् |</div><div dir="auto">सुहृज्जनपरिक्लेशो न चायं निष्फलस्तव || </div><div dir="auto">তাহা হইলে আপনার এই বৃথা শ্রমব্যয় হইত না, আপনার জীবনও বিপন্ন হইত না, আপনার সুহৃদজনেরও এই নিষ্ফল ক্লেশভোগ হইত না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্দশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">त्वया तु नरशार्दूल क्रोधमेवानुवर्तता |</div><div dir="auto">लघुनेव मनुष्येण स्त्रीत्वमेव पुरस्कृतम् || </div><div dir="auto">হে নরশার্দুল, আপনি ক্রোধের বশবর্তী হইয়া আমার সহিত লঘু মনুষ্যের স্ত্রীর ন্যায় আচরণ করিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">अपदेशेन जनकान्नोत्पत्तिर्वसुधातलात् |</div><div dir="auto">मम वृत्तं च वृत्तज्ञ बहु ते न पुरस्कृतम् ||</div><div dir="auto">জনকের দ্বারা আমার জন্ম এক ছল, আমি বাস্তবে বসুধার সন্তান। আমার এই বৃত্তান্ত জানিয়াও হে বৃত্তজ্ঞ আপনি তাহার মর্যাদা দিলেন না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষোড়শ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">न प्रमाणीकृतः पाणिर्बाल्ये बालेन पीडितः |</div><div dir="auto">मम भक्तिश्च शीलं च सर्वं ते पृष्ठतः कृतम् || </div><div dir="auto">আমার বাল্যকালে আপনি আপনার বাল্যাবস্থায় আমার পাণিপীড়ন (বিবাহ) করিয়াছিলেন, তাহার অমর্যাদা করিলেন, আমার ভক্তি, শীলতা সকলই আপনি অগ্রাহ্য করিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সপ্তদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">इति ब्रुवन्ती रुदती बाष्पगद्गदभाषिणी |</div><div dir="auto">उवाच लक्ष्मणं सीता दीनं ध्यानपरायणम् ||</div><div dir="auto">বাষ্পাকুল গদগদ কন্ঠে এত বলিয়া ক্রন্দনরতা সীতা দুঃখিত, চিন্তান্বিত লক্ষ্মণকে বলিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অষ্টাদশ শ্লোকঃ </div><div dir="auto">चितां मे कुरु सौमित्रे व्यसनस्यास्य भेषजम् |</div><div dir="auto">मिथ्यापवादोपहता नाहं जीवितुमुत्सहे || </div><div dir="auto">হে সৌমিত্র, আমার জন্য চিতা প্রস্তুত কর, যাহা আমার এই দুর্দশার ঔষধ। মিথ্যা অপবাদের ভাগিনী হইয়া আমি আর জীবিত থাকিতে ইচ্ছা করি না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">উনবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">अप्रीतेन गुणैर्भर्त्रा त्यक्ता या जनसंसदि |</div><div dir="auto">या क्षमा मे गतिर्गन्तुं प्रवेक्ष्ये हव्यवाहनम् ||</div><div dir="auto">পতি যখন আমার চরিত্র সম্পর্কে অসন্তুষ্ট হইয়া জনসমক্ষে আমাকে ত্যাগ করিয়াছেন, তখন অগ্নিতে প্রবেশ করাই আমার একমাত্র গতি। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">एवं ब्रुवाणा रुदती बाष्पगद्गदभाषिणी |</div><div dir="auto">अब्रवील्लक्ष्मणं सीता दीनं ध्यानपरं स्थितम् || </div><div dir="auto">ক্রন্দনরতা সীতা বাষ্পাকুল গদগদ কন্ঠে গভীর চিন্তামগ্ন দুঃখিত লক্ষ্মণকে এই সকল বলিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">একবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">स विज्ञाय मनश्छन्दं रामस्याकारसूचितम् |</div><div dir="auto">चितां चकार सौमित्रिर्मते रामस्य वीर्यवान् || </div><div dir="auto">রামের ইঙ্গিতে রামের মনোভাব জানিয়া বীর সৌমিত্র রামের মতানুসারে চিতা সাজাইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বাবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">न हि रामं तदा कश्चित्कालान्तकयमोपमम् |</div><div dir="auto">अनुनेतुमथो वक्तुं द्रष्टुं वा प्यशकत्सुहृत् || </div><div dir="auto">সেই সময়ে রামের কালান্তক যমের ন্যায় মূর্তি দেখিয়া সুহৃদবর্গের কেহই তাঁহাকে কিছু বলিতে অথবা তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে সাহস করিল না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রয়োবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">अधोमुखं ततो रामं शनैः कृत्वा प्रदक्षिणम् |</div><div dir="auto">उपासर्पत वैदेही दीप्यमानं हुताशनम् || </div><div dir="auto">অতঃপর ধীরে ধীরে অধোমুখ রামকে প্রদক্ষিণ করিয়া বৈদেহী প্রজ্জ্বলিত হুতাশনের প্রতি অগ্রসর হইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্বিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">प्रणम्य देवताभ्यश्च ब्राह्मणेभ्यश्च मैथिली |</div><div dir="auto">बद्धाञ्जलिपुटा चेदमुवाचाग्निसमीपतः || </div><div dir="auto">দেবতাগণ এবং ব্রাহ্মণগণকে প্রণাম করিয়া মৈথিলী কৃতাঞ্জলিপুটে অগ্নির সমীপে গিয়া এইরূপ কহিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">यथा मे हृदयं नित्यं नापसर्पति राघवात् |</div><div dir="auto">तथा लोकस्य साक्षी मां सर्वतः पातु पावकः ||</div><div dir="auto">যেহেতু আমার হৃদয় কখনো রাঘব হইতে অপসৃত হয় নাই, অতএব জগৎকে সাক্ষী মানিয়া অগ্নিদেব আমাকে সকল দিক হইতে পরিত্রাণ করুন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষড়বিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">यथा मां शुद्धचरितां दुष्टां जानाति राघवः |</div><div dir="auto">तथा लोकस्य साक्षी मां सर्वतः पातु पावकः ||</div><div dir="auto">যেহেতু আমি শুদ্ধচরিত হওয়া সত্ত্বেও রাঘব আমাকে দুষ্টা বলিয়া জানিয়াছেন, অতএব জগৎকে সাক্ষী মানিয়া অগ্নিদেব আমাকে সকল দিক হইতে পরিত্রাণ করুন।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সপ্তবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">कर्मणा मनसा वाचा यथा नातिचराम्यहम् |</div><div dir="auto">राघवं सर्वधर्मज्ञं तथा मां पातु पावकः || </div><div dir="auto">যেহেতু আমি কর্মে, চিন্তায়, বাক্যে কখনো ধর্মজ্ঞ রাঘবের বিরুদ্ধাচরণ করি নাই, অতএব অগ্নিদেব আমাকে সকল দিক হইতে পরিত্রাণ করুন।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অষ্টবিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">आदित्यो भगवान् वायुः दिशश्चन्द्रस्तथैव च ।</div><div dir="auto">अहश्चापि तथा सन्ध्ये रात्रिश्च पृथिवी तथा ।</div><div dir="auto">यथान्येऽपि विजानन्ति तथा चारित्रसंयुताम् ॥</div><div dir="auto">যেহেতু ভগবান সূর্য, বায়ু, চন্দ্র, দিবা, সন্ধ্যা, রাত্রি, পৃথিবী সকলেই আমাকে সচ্চরিত্রা বলিয়া জানেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">উনত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">एवमुक्त्वा तु वैदेही परिक्रम्य हुताशनम् ।</div><div dir="auto">विवेश ज्वलनं दीप्तम् निःशङ्केनान्तरात्मना ॥</div><div dir="auto">এই বলিয়া বৈদেহী হুতাশনকে পরিক্রমা করিয়া নিঃশঙ্কচিত্তে একাত্ম মনে জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">जनः स सुमहांस्तत्र बालवृद्धसमाकुलः ।</div><div dir="auto">ददर्श मैथिलीं दीप्ताम् प्रविशन्तीं हुताशनम् ॥</div><div dir="auto">তথায় উপস্থিত বিপুল সংখ্যক আবালবৃদ্ধজন মৈথিলীকে জ্বলন্ত হুতাশনের মধ্যে প্রবেশ করিতে দেখিল।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">একত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">सा तप्तनवहेमाभा तप्तकाञ्चनभूषणा ।</div><div dir="auto">पपात ज्वलनं दीप्तम् सर्वलोकस्य सन्निधौ ।</div><div dir="auto">তপ্ত নবহেমবর্ণা তিনি তপ্তকাঞ্চন ভূষণে সজ্জিতা হইয়া সর্বজনের সম্মুখে জ্বলন্ত অগ্নিতে পতিত হইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্বাত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">ददृशुस्तां विशालाक्षीम् पतन्तीं हव्यवाहनम् ।</div><div dir="auto">सीतां सर्वाणि रूपाणि रुक्मवेदिनिभां तदा ॥</div><div dir="auto">সর্বরূপা বিশালাক্ষী সীতাকে সকলে স্বর্ণবেদীর ন্যায় জ্বলন্ত অগ্নিতে পতিত হইতে দেখিল। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ত্রয়োত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">ददृशुस्तां महाभागाम् प्रविशन्तीं हुताशनम् ।</div><div dir="auto">सीतां कृत्स्नास्त्रयो लोकाः पुण्यामाज्याहुतीमिव ॥</div><div dir="auto">ত্রিলোক দেখিল, মহাপুণ্যবতী সীতা পুণ্য ঘৃতাহুতির ন্যায় হুতাশনে প্রবেশ করিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">চতুর্তিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">प्रचुक्रुशुः स्त्रियः सर्वान् तां दृष्ट्वा हव्यवाहने ।</div><div dir="auto">पतन्तीं संस्कृतां मन्त्रः वसोर्धारामिवाध्वरे ॥</div><div dir="auto">তাঁহাকে মন্ত্রপূত পবিত্র ঘৃতের ন্যায় অগ্নিতে পতিত হইতে দেখিয়া উপস্থিত সকল স্ত্রীগণ চীৎকার করিয়া উঠিল। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পঞ্চত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">ददृशुस्तां त्रयो लोका देवगन्धर्वदानवाः ।</div><div dir="auto">शप्तां पतन्तीं निरये त्रिदिवाद्देवतामिव ॥</div><div dir="auto">তিন লোকের দেব, গন্ধর্ব, দানব সকলেই দেখিল, তিনি যেন অভিশপ্তা দেবীর ন্যায় স্বর্গ হইতে নরকের অগ্নিতে পতিত হইলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ষড়ত্রিংশতি শ্লোকঃ </div><div dir="auto">तस्यामग्निं विशन्त्यां तु हाहेति विपुलस्वनः ।</div><div dir="auto">रक्षसां वानराणां च सम्बभूवाद्भुतोपमः ॥</div><div dir="auto">তাঁহাকে অগ্নির গভীরে প্রবেশ করিতে দেখিয়া বানর এবং রাক্ষস সকলেই বিপুল হাহাকার করিয়া উঠিলে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির উদ্ভব হইল। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ইতি ঋষি বাল্মিকী বিরচিত আদিকাব্য রামায়ণের যুদ্ধ কান্ডের ষোড়শোত্তর শততম সর্গ।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto"><br></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-90766844558578116362024-01-22T16:13:00.001+05:302024-01-22T16:13:17.416+05:30উনিজি ~ অরিন্দম বসু<div dir="auto"><div dir="auto">"চিত্ত যেথা ভয়পূর্ণ লুচ্চা যেথা বীর,</div><div dir="auto">জ্ঞান যেথা শুষ্ক যেথা কারার প্রাচীর</div><div dir="auto">আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী</div><div dir="auto">পেয়াদারা ভাবিতেছে আজ কাকে ধরি</div><div dir="auto">যেথা কটুবাক্য নির্দয়ের উৎসমুখ হতে</div><div dir="auto">উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে</div><div dir="auto">গোটা দেশে দিকে দিকে গুণ্ডাগণ ধায়</div><div dir="auto">অজস্র সহস্রবিধ চাটুকারিতায়</div><div dir="auto">যেথা উচ্চবিত্তের ধনরাশি রাশি</div><div dir="auto">বিচারের পথটিকে পুরোটাই গ্রাসি,</div><div dir="auto">পৌরুষের সে কি স্পর্ধা, নিত্য যেথা</div><div dir="auto">উনিজিই সর্ব কর্ম চিন্তনের নেতা,</div><div dir="auto">নিজহস্তে নির্দয় আঘাত করি, বস</div><div dir="auto">ভারতেরে সেই নরকে কোর না কো টস" </div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-32604509128029438672024-01-22T15:58:00.001+05:302024-01-22T15:58:35.205+05:30মোহ ~ রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়<div dir="ltr"><div class="gmail_default" style="font-family:trebuchet ms,sans-serif;color:#000000"><div class="gmail-xdj266r gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-x126k92a" style="margin:0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit"><b>মোহ</b> </div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="margin:0.5em 0px 0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit">আলপনা কাটা ছিল বাবুদের চাতালের মাঝে,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">মনোরম ছবি, আহা, ঠিক যেন পিকাসোর আঁকা,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">হিজিবিজি কারুকলা, আচমকা মুখ গোঁজা খাঁজে,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">তার <span style="font-family:inherit"><a tabindex="-1" style="color:rgb(56,88,152);font-family:inherit"></a></span>পাশে হাত, কান, নাভিমূল, খানিকটা বাঁকা।</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="margin:0.5em 0px 0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit">সুন্দর আলপনা, তাও দেখি বাবু মাথা নেড়ে</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">রাগ ভরে বলে যান, হয়নি মোটেও কাজ ভালো,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">ছবিতে দেখছি রাম, হনুমান, সীতা, সব ছেড়ে</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">মানুষের বাঁকা ছবি আঁকা আছে, তাও কিনা কালো?</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="margin:0.5em 0px 0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit">রূপকার এই শুনে হেসে ওঠে, বলে, বাবু, শোনো,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">জানো কি সীতার নাম, জানো কি সীতার কী বা মানে?</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">হাল চাষ দেখেছো কি? শুনেছো কি ইউ টুর বোনো?</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">দেখেছো কী ভাবে দালি ছবি আঁকে বুরুশের টানে?</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="margin:0.5em 0px 0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit">আসলে, সব তো মায়া, সব মরীচিকা, স্থলে জলে,</div><div dir="auto" style="font-family:inherit">ক্ষ্যাপা তাও ক্রমাগত পরশ পাথর খুঁজে চলে।</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="margin:0.5em 0px 0px;font-family:"Segoe UI Historic","Segoe UI",Helvetica,Arial,sans-serif;color:rgb(5,5,5);font-size:15px"><div dir="auto" style="font-family:inherit"><i>রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়</i></div><div dir="auto" style="font-family:inherit"><i>(২২/০১/২০২৪)</i></div></div></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-11201210528565445692024-01-21T23:57:00.001+05:302024-01-21T23:57:28.117+05:30লেনিন কে নিয়ে কুৎসা ~ ডঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhqHfFt0QzKZV8Fyi2fKpP60HEJFrCh8bzc2LuZrU3hOtD2lCSF9-Np0uphp6IbZdIy5Cz_HWSPFCLsOxrpuSJSK7Wyx-JcNdVyqEyfD8QX7XezoFJDU6GCoC4mD_UlYo8zXTtUbO94CFkpIWnc7LGzfMKU-nSoXajOoP1yU8JDTbUrXnzehgAk0ss3gnk"><img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhqHfFt0QzKZV8Fyi2fKpP60HEJFrCh8bzc2LuZrU3hOtD2lCSF9-Np0uphp6IbZdIy5Cz_HWSPFCLsOxrpuSJSK7Wyx-JcNdVyqEyfD8QX7XezoFJDU6GCoC4mD_UlYo8zXTtUbO94CFkpIWnc7LGzfMKU-nSoXajOoP1yU8JDTbUrXnzehgAk0ss3gnk=s320" border="0" alt="" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7326620004907975314" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">কুৎসা প্রচার টা কেউ কেউ আর্টের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আর সুলভ ইন্টারনেট ও গুগল বাবার দৌলতে এই উত্তর সত্য কালে কোনটা যে সত্যি আর কোনটা যে মিথ্যে সেটা ধরাও মুশকিল। আজকের দিনেও দেখলাম লেনিনের মারা যাওয়া নিয়ে সেই কুৎসা অব্যাহত। লেনিন নাকি সিফিলিসে মারা গেছিলেন। এই জাতীয় বক্তব্য পশ্চিমা গণমাধ্যমে অনেক সাংবাদিক, গবেষক, ঐতিহাসিক নানান সময়ে হাজির করেছেন এমনকি ইজরায়েল এর তিনজন ডাক্তার একটি প্রবন্ধও লিখে ফেলেছেন বৈজ্ঞানিক জার্নালে। এসব থেকে উৎসাহিত হয়ে আমাদের দেশেও একটি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা বলে থাকেন যে "সিফিলিস"!! "যৌনরোগ"!! এমনকি সেই যৌনকর্মীর নাম অবধি বের করে ফেলেছেন কেউ কেউ। যথারীতি হোয়াটস এপ, ফেসবুক টুইটারে এসব গল্প ঘরে। এর একটা ফ্যাক্ট চেক দরকার। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">১৯১৮ এর তিরিশ আগস্ট ফানি কাপলান লেনিনকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি চালান। ব্রাউনিং পিস্তলের একটি বুলেট লেনিনের কোটের মধ্যে দিয়ে চলে যায়, একটি বুলেট লেনিনের বাম কাঁধে লাগে, তৃতীয় বুলেটটি লেনিনের গলার বাম দিক দিয়ে বাম ফুসফুসে প্রবেশ করে বেরিয়ে এসে ডান কলার বোন এ আটকে যায়। প্রচুর রক্তপাত হলেও গুলির আঘাতে লেনিন মারা যান নি। গুলি চালানো পরে লেনিনের অপারেশন হয়।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ওই হত্যা প্রচেষ্টা মামলার একজন সাক্ষীর বয়ান অনুযায়ী বুলেটগুলো বিষ মাখানো ছিল। থাকতে পারে, কিন্তু ফরেনসিক মেডিসিন অনুসারে ওই হাই টেম্পারেচারে ওই বিষ এর যা কেমিক্যাল চেঞ্জ হবে তাতে ওটা কাজ করার কথা নয়, করেও নি, লেনিনের শরীরে বিষক্রিয়ার কোনও লক্ষণ ছিল না। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">লেনিনের উপসর্গ শুরু হয় ১৯২১ সালে - মাথাব্যাথা, অনিদ্রা, মাঝে মধ্যে মাথা ঘুরে পরে যাওয়া। গোর্কিকে চিঠিতে লেনিন লিখছেন, "খুব ক্লান্ত লাগে। কিছুই করতে ইচ্ছে করে না।" </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">২২শে এপ্রিল বিঁধে থাকা বুলেট বের করার জন্য লেনিনের অপারেশন হয়। এর পরে ১৯২২ সালের ২৬শে মে লেনিন প্রথমবারের জন্য স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। এফাসিয়া ও রাইট হেমিপ্লেজিয়া হয়। লেনিন আস্তে আস্তে সেরে ওঠেন। এর পরেও লেনিনের আরো দুটি স্ট্রোক হয় - ১৯২২ এর ডিসেম্বর ও ১৯২৩ এর মার্চ। শেষ পর্যন্ত লেনিন মারা যান ১৯২৪ এর ২১শে জানুয়ারি। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বুলেট এর আঘাত নয়, লেনিন এর মৃত্যুকে ঘিরে যাবতীয় বিতর্কের মূলে ওই স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের পক্ষাঘাত। এই পক্ষাঘাত এর কারণ খুঁজতে গিয়ে কেউ কেউ এই তত্ত্ব হাজির করেন যে ওই কারণটা হল সিফিলিস বা নিউরোসিফিলিস। এই তত্ত্বের মস্তবড় ফাঁক এটাই যে লেনিন যদি সত্যি সত্যি সিফিলিসে আক্রান্ত হতেন তাহলে শুধুমাত্র মস্তিক নয়, লেনিনের অন্যান্য অংঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতো। লেনিনের হৃদযন্ত্র বা হাড়ে সিফিলিস এর কোনও চিন্হ পাওয়া যায় নি। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এই বিভ্রান্তির জন্য অপপ্রচারই কেবল দায়ী নয়, লেনিনের নিজের কিছু চিকিৎসকও দায়ী। ওই "অল্পবয়সে" লেনিনের স্ট্রোক হওয়ার কথা নয়, লেনিন ধূমপান করতেন না, মদ্যপান পরিমিত, হরমোনের কোনো অসুখ ছিল না, যথেষ্ট শক্ত সমর্থ ছিলেন ওভারওয়েট ছিলেন না, তাঁর সেরিব্রাল আর্টারিতে অমন পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়, তাই ডায়াগনোসিস হিসেবে কেউ কেউ নিউরোসিফিলিস এর কথা ভেবেছিলেন এমন কি সেই মতো চিকিৎসাও করেছিলেন। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পরে প্রমাণিত হয়েছে যে রোগটা সিভিয়ার আথেরোস্ক্লরসিস। ধমনীতে পরিবর্তন, বিশেষ করে মস্তিষ্কের ধমনীতে। এই পরিবর্তন এতটাই ছিল যে অটোপসির সময়, সার্জেন বলেছিলেন যে ফরসেপস লাগাতে "ধাতব আওয়াজ হচ্ছে।" লেনিনের পারিবারিক হিস্ট্রিও আছে। একই রোগে ৫৪ বয়সে লেনিনের বাবাও মারা যান, আরো তিন ভাইবোন মারা যান। তাই জিনগত কারণেই অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সে লেনিনের ওই অসুখ হয়েছিল। তাতেই উনি মারা যান। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এতদিন আগে মৃত এই বিপ্লবী এখনও বহু দক্ষিণ পন্থীদের হাড় মজ্জায় আতঙ্ক তৈরি করে। তাই লেনিনের সুনাম ধ্বংস করার এত আয়োজন। আমরা যদি একটু সজাগ থাকি তাহলে যে যেখানে পারি যেভাবে পারি এই চক্রান্তের প্রতিবাদ আমরা করতে পারি। লেনিন অমর হয়ে থাকুন আমাদের মননে। </div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-64191033727353069832024-01-21T12:25:00.001+05:302024-01-21T12:25:55.336+05:30বড় হব কবে (পান্তুম) ~ রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়<div dir="auto"><div dir="auto"><b>বড় হব কবে</b></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">(<i>পান্তুম</i>)</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সকলেই বসে ভাবে বড় হব কবে।</div><div dir="auto">পিপীলিকা ডানা মেলে পাখি হতে চায়।।</div><div dir="auto">বনসাই পাতা খোলে দেড় ফুট টবে।</div><div dir="auto">কোলা ব্যাঙ কল ঘরে সা রে গা মা গায়।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পিপীলিকা ডানা মেলে পাখি হ'তে চায়।</div><div dir="auto">পাঁচ গজ উড়ে ভাবে, পৃথিবী কী বড়।।</div><div dir="auto">কোলা ব্যাঙ কল ঘরে সা রে গা মা গায়।</div><div dir="auto">কচি খোকা সেই শুনে ভয়ে জড়সড়।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পাঁচ গজ উড়ে ভাবে, পৃথিবী কী বড়।</div><div dir="auto">অথচ ওপরে তারো আকাশ অশেষ।। </div><div dir="auto">কচি খোকা সেই শুনে ভয়ে জড়সড়।</div><div dir="auto">কোলে মুখ গুঁজে খোঁজে চেনা পরিবেশ।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">অথচ ওপরে তারো আকাশ অশেষ। </div><div dir="auto">নভচর উড়ে চলে ছোট পরিসরে।।</div><div dir="auto">কোলে মুখ গুঁজে খোঁজে চেনা পরিবেশ।</div><div dir="auto">নদী পারে আড় বাঁশি মেঠো সুর ধরে।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">নভচর উড়ে চলে ছোট পরিসরে।</div><div dir="auto">কখনো বা বসে যায় ছাতিমের ডালে।।</div><div dir="auto">নদী পারে আড় বাঁশি মেঠো সুর ধরে।</div><div dir="auto">নিমেষেই মিশে যায় কোন মহাকালে।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কখনো বা বসে যায় ছাতিমের ডালে।</div><div dir="auto">ওড়ে ফের অজানা সে খেয়ালের টানে।।</div><div dir="auto">নিমেষেই মিশে যায় কোন মহাকালে।</div><div dir="auto">মৌমাছি গান গায় গোলাপের কানে।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ওড়ে ফের অজানা সে খেয়ালের টানে।</div><div dir="auto">ভোলা মন খোঁজে ফেরে পরশপাথর।।</div><div dir="auto">মৌমাছি গান গায় গোলাপের কানে।</div><div dir="auto">পাষাণের মন তবু কাঁপে থরোথর।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ভোলা মন খোঁজে ফেরে পরশপাথর।</div><div dir="auto">বনসাই পাতা খোলে দেড় ফুট টবে।।</div><div dir="auto">পাষাণের মন তবু কাঁপে থরোথর।</div><div dir="auto">সকলেই বসে ভাবে বড় হব কবে।।</div><div dir="auto">.</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">~ রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">(কলকাতা, জ্যানুয়ারি ২০১২)</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-46798829592789052602024-01-19T22:59:00.001+05:302024-01-19T22:59:24.215+05:30অঞ্জন দত্ত ~ অমিতাভ গুপ্ত<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjH_2IUeniBDC4IunIPTu9eqCsIE--lQbrNYJXuyK5-6njBEt-L2Mzn9V9vu0vlvi5XhYQ1pkF7KKl58dRSrj0lEYcfAGfkHCu-MX1fmbGtDdJL_ddUbi0n_i_8mJiiIaEbGJ4JZZW4duqEMT7W9X8uwD0bQOjfN4YEjOJZ3SbAHh4EMhlAG1WuG4b0GNM"><img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjH_2IUeniBDC4IunIPTu9eqCsIE--lQbrNYJXuyK5-6njBEt-L2Mzn9V9vu0vlvi5XhYQ1pkF7KKl58dRSrj0lEYcfAGfkHCu-MX1fmbGtDdJL_ddUbi0n_i_8mJiiIaEbGJ4JZZW4duqEMT7W9X8uwD0bQOjfN4YEjOJZ3SbAHh4EMhlAG1WuG4b0GNM=s320" border="0" alt="" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7325862867280724370" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">ছেলেটা বাংলায় ৭০পেত। মাছ - ভাত ভালোবাসত। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ছেলেটা রঞ্জনা নামের একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসত।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ছেলেটা ভরদুপুরে সাইকেল নিয়ে রঞ্জনার পাড়ায়, রঞ্জনার বাড়ির সামনে এসে ঘুরপাক খেত - একবার বারান্দায় রঞ্জনাকে দেখবে বলে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ছেলেটা অল্প বয়সী ছিল, সদ্য প্রেমে পড়েছিল।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">প্রেমে পড়ার সাহস থাকলেও, রঞ্জনার মেজদা'র কব্জির কারিকুরি মোকাবিলা করার সাহস ছিল না, নিজের ঠ্যাং হারানোর মত বুকের পাটাও ছিল না</div><div dir="auto">ছেলেটার। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ছেলেটা রঞ্জনাকে দুপুরে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে, কোনো একটা নির্জন বিকেলে রঞ্জনার জীবন থেকে নিশ্চুপে সরে গেছিল। আমরা অঞ্জন দত্তর গলায় শুনেছিলাম সেই অসফল প্রেমের গল্প। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ততদিনে আমরা পা দিয়েছি কৈশোরের দোরগোড়ায়.... দেখে নিয়েছি ভেঙে পড়েছে সোভিয়েত রাশিয়া, উদার অর্থনীতি কড়া নেড়েছে আমদের দোরগোড়ায়... সুদূর অযোধ্যায় চোখের সামনে এক এক করে ভেঙে গেছে বাবরি মসজিদের তিনটে আস্ত গম্বুজ... সেই ধূলোয় ঢেকে গেছে গোটা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আকাশ। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আবছা হয়ে আসছিল আমাদের চারপাশ; দমবন্ধ লাগছিল; খুব দ্রুত মসজিদের সামনে দিয়ে সাইকেল চালিয়ে চলে যেত ছেলেরা, প্রাণপণে মন্দিরের রাস্তা এড়ানোর চেষ্টা করত একটা সম্প্রদায়। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আমরা আরো একটু বড় হলাম, জিভের তলার কষাটে স্বাদটা আরো একটু বাড়ল... সুদূর গুজরাটের গোধরার একটা পোড়া কামরার গন্ধ কিভাবে যেন চারিয়ে গেল গোটা দেশটায়। অবাক হয়ে দেখলাম, ভোটার লিস্ট ধরে মুসলমান খুন করা একজন নেতা আবার যখন মসনদে বসেন, আমার বাংলা থেকে তাকে হলুদ গোলাপের তোড়ার মোড়কে বন্ধুত্বের ইঙ্গিত পাঠান বাংলারই এক নেত্রী.... </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">শিখ দাঙ্গা - বাবরি মসজিদ ভাঙার কলঙ্কিত অধ্যায় - গোধরার লজ্জার মধ্যেও যেখানে আমার বাংলায় একটাও লাশ পড়ে নি, সেখানেই কোথাও খুব সংগোপনে চাষ হচ্ছিল বিষবৃক্ষের। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">রঞ্জনার মুসলিম প্রেমিক হারিয়ে গেছে... কোথায় গেছে আমরা কেউ জানি না... রঞ্জনাও হয়ত আজ কারো গৃহিণী... ওর মেজদাদা হয়ত কাল বা পরশু ট্রেন ধরবে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে... </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">রাম বাড়ি পাবেন ২২তারিখ... </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">ধন্যবাদ অঞ্জন দত্ত, আজ আপনার জন্মদিন, আপনি আমাদের কিশোরবেলাতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আগামী ভারতের ছবিটা... </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আমরা বুঝি নি - দোষ আমাদের।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-21168899257743210612024-01-16T13:35:00.001+05:302024-01-16T13:38:58.377+05:30সিঙ্গুরে বিপ্লব ~ সৌম্য চট্টোপাধ্যায়<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjlsxxq9t132HiSwFU41re2GFEDaf8pa1poawBIxyCFqvlus67H_Fq4JwlheNO-q0gThnqkW3zjuDJkKHRphhtWGAO4og8oQXMdSriFGPDJqhgiCSdP9BTkX2I8XPBt7F4Yjrsh5Asq7kI0LLV26YXMRZ8hOL-3dHJuSrHXO01CF5NkZV7DCX1jW4BZg0I" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="225" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7324604355099185458" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjlsxxq9t132HiSwFU41re2GFEDaf8pa1poawBIxyCFqvlus67H_Fq4JwlheNO-q0gThnqkW3zjuDJkKHRphhtWGAO4og8oQXMdSriFGPDJqhgiCSdP9BTkX2I8XPBt7F4Yjrsh5Asq7kI0LLV26YXMRZ8hOL-3dHJuSrHXO01CF5NkZV7DCX1jW4BZg0I=w400-h225" width="400" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">কোলকাতা থেকে গাড়িতে সিঙ্গুরের রাস্তা গুগল ম্যাপে দেখায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। যে সময়ের কথা বলছি, তখন ২০০৮ এর সেপ্টেম্বর মাস।পুরো দেশ, হুগলির সিঙ্গুরের দিকে তাকিয়ে, জমি আন্দোলন তুঙ্গে। ন্যাশানাল হাইওয়ে অবধি যখন তখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শয়ে শয়ে ট্রাক চুপচাপ দাঁড়িয়ে, এখানে ওখানে টায়ার পোড়ানো, রাস্তায় বিভিন্ন জায়গা আটকে, যে পারছে শুয়ে-বসে পড়ছে।বোম্বে রোডের ঝামেলা বাইপাস করে সিঙ্গুরে আসার অন্য রাস্তা হচ্ছে জিটি রোড ধরে সোজা শেওড়াফুলি- বৈদ্যবাটী, সেখান থেকে তারকেশ্বর রোড। এভারেস্টের যেমন বেস-ক্যাম্প হয়, তেমনি স্ট্যালিনগ্রাদ সিঙ্গুর যাবার বেস-ক্যাম্প হলো শেওড়াফুলি। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">ফাঁড়ির মোড়ে, বৈদ্যবাটী চৌমাথায় আকছার ইটিভি বা আজতকের গাড়ি দাঁড়িয়ে। গলায় ব্যাজ ঝুলিয়ে রিপোর্টার পরোটা খাচ্ছে, কোল্ড ড্রিঙ্কস কিনছে।ফাস্ট-ফুডের দোকানের বেঞ্চে খদ্দরের পাঞ্জাবী, লিনেন শাড়ি, অক্সিডাইজড জুয়েলারি পরা বিপ্লবীদের দল। শান্তিতে গোল্ডফ্লেক কিংসটা শেষ করে, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেবেন। প্রণয় রায় ন্যাশানাল টেলিভিশানে বললেন, মনে রাখবেন, হুগলীর এই ছোট্ট গ্রাম ঠিক করে দেবে জমির অধিকার কার! এরকম আনন্দমেলার কমিকস পড়তাম, এস্টেরিক্স-ওবেলিকস, গলেদের ছোট্ট গ্রাম, রোমানরা ঘিরে ফেলেছে, কিন্তু এই গ্রাম লড়ছে। সিঙ্গুরও তাই, চারিদিকে লোভী বুর্জোয়ারা জিতে গিয়ে কোকা-কোলা খাচ্ছে। বিবেক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একা সিঙ্গুর, এযুগের লেনিন সাদা শাড়ি পরে ধর্নায় বসে। </div><div dir="auto"> </div><div dir="auto">এনডিটিভির রিপোর্টার সেদিন যেখানে দাঁড়িয়ে ন্যাশানাল টেলিভিশানে লাইভ এসেছিলো, সেটা সিঙ্গুর ছিলো না, শেওড়াফুলি ছিলো, চৈতালি সঙ্ঘ ক্লাবের সামনে।তার পাশে আমরা আড্ডা মারতে যেতাম। আমার এক বন্ধু আজো দাবী করে ন্যাশানাল টেলিভিশানে তাকে দেখিয়েছিল, স্ট্যালিনগ্রাদ সিঙ্গুরে ক্যাপিটালিস্টদের চোখে চোখ রেখে, সে হাফপ্যান্ট পরে বিড়ি খাচ্ছে।অক্টোবরের ৩ তারিখ, ২০০৮, দিনটা স্পষ্ট মনে আছে। সেদিন রতন টাটার কলকাতায় প্রেস কনফারেন্সে টাটাদের পাততাড়ি গোটানো কনফার্ম হয়েছিলো। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">স্টেশান থেকে বেরিয়ে ওষুধের দোকানে দাঁড়িয়েছি যখন, দেখি জিটি রোড বন্ধ করে বিজয় মিছিল হচ্ছে। মিছিলের শেষে একটা রিকশায় লাল ভেলভেটের জামা পরে একটা ছেলে কীবোর্ডে "সাত সমুন্দর পার ম্যায় তেরে পিছে পিছে আ গ্যয়ি' বাজাতে বাজাতে যাচ্ছে, সামনে ড্রাম বাজাচ্ছে আরো কয়েকটা লাল ভেলভেট। ব্যাঞ্জো থেমে গেলে, মাইকে ঘোষণা হয় আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সিঙ্গুর থেকে শেওড়াফুলি আসছেন মহাশ্বতা দেবী, মেধা পাটেকার সবাই। উত্তেজনা তুঙ্গে। শেষ সেলেব নাম ঘোষণা হয়, অপর্ণা সেন। মিছিলের জনতা ফুটছে পাগলা আনন্দে, মনে হচ্ছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সেই নাম ঘোষণার পরেই সেদিন শনি-মন্দিরের সামনে ফলের দোকানদার তপাদাকে ফেলে পেটানো হয়, ছোট্ট ঘটনা বলতে পারেন। বিপ্লবে তো তাই হয়, বুর্জোয়া মার খায় ইত্যাদি প্রভৃতি। বড় পিয়ারা আর নাসপাতিগুলো তপাদার দোকানে সাদা ফোমের নেটে জড়ানো থাকতো। মেরে যখন তপাদার মাথাটা ড্রেনে ঢুকিয়ে দিয়েছে, জল থেকে বিজগুড়ি কাটছে শ্বাসটুকু, তপার মাথার পাশেই ড্রেনের জলে ক্যাম্বিস বলের মতো ভাসছে ইয়া বড়ো বড়ো পিয়ারা। রিকশার লাল ভেলভেটের জামা বাজাচ্ছে, 'ও জুলফি মেরী জাআন, তেরে কাদমো কে নীচে আ গাই, ও ও সাত সমুন্দর...'। মেধা পাটেকার, মহেশ্বতা দেবী সেদিন আসেননি। অপর্ণা সেনও না। আসার কথাও ছিলো না মনে হয়। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">পরের দিন শাসক, মানে তখনকার শাসক, সভা করে বলেছিলো, আমরা জবাব দেবো, ভুলবো না একদম, এইসব আরকি। যিনি বলেছিলেন, তিনি একমাস পরে দলবদল করেন। ভদ্রলোক বলতেন ভালো। বিরোধী দলে, মানে তখনকার আরকি, গিয়ে গ্রামীণ সাবঅলটার্ণদের উত্থান, ভদ্দরলোকেদের এলিটিজমের পতন, উচ্চবর্ণের বাবুদের উঁচু-নাক তিনি দেখেছেন, এসব বলতেন। হাততালিও পেয়েছেন মন্দ না। সেইদিনটার তেরো বছর পর, ৩১শে জানুয়ারী, ২০২২, রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের জমিতে মাটি কেটে ভেড়ি বানিয়ে চারাপোনা চাষের সিদ্ধান্ত নেয়। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">জানি না এই লেখা কি করে শেষ করবো, কথায় কথা আসে হইহই করে। ফেসবুকে এরকম লেখা মুশকিল, ফেসবুক বড় লেখার জায়গা না। এই লেখাতে কোন গন্তব্য নেই, এইরকম বহমান লেখা ফেসবুকের পোলারাইজড স্পেকট্রামে দাঁড়াতে পারে না। সোশ্যাল মিডিয়া এনগেজমেন্টে বেঁচে থাকে। কিন্তু সবদিন একটা শোম্যানশিপ, প্লেয়িং টু দ্য গ্যালারি থেকে লেখা আসে না, কিছু লেখা শুধুই কথা বলার জন্য। যেটা বলে শেষ করি, তপাদার ছেলে পলিটেকনিক করে বাইরে থাকে জানতাম। কাল পাড়ার হোয়াটসয়াপ গ্রুপে জানলাম মুম্বাইয়ের অটল সেতুর কাজে যুক্ত ছিলো বেশ কয়েকবছর। আর নিতান্ত কাকতালীয় ভাবে, কদিন আগেই দেখলাম, সেই জ্যেঠু পোস্ট দিয়েছেন ইউক্রেন না প্যালেস্টাইন কোথায় একটা অত্যাচারের বিরুদ্ধে, ক্যাপশানে, মানুষের এতো কষ্ট ...সব ইয়াদ রাখ-খা জায়গা। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">না হে জনাব, কিছুই কেউ ইয়াদ রাখে না, ওরকম শুধু বলতে হয়, শুধু আমাদের বয়স বেড়ে যায়। কারুর ছেলে ব্রিজ বানায়, বন্দর বানায়। কেউ মাছের ভেড়ি আর চব্বিশ পরগণায় বাগানবাড়ি কিনতে থাকে, কিনতেই থাকে। আর আমি ১৫টা বছর পার করে হাসির গল্প লিখতে বসি।সোফায় বাদামী চশমা পরে বিবেক সেজে অপর্ণা সেনকে এনে বসাই। সেদিনের মতো, আজো ওনার আসার কথা নয়, তাও আসতে বাধ্য হন। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">আমি দেখি আমার টাইমলাইন জুড়ে মানুষ হাসছে, হাসতেই থাকছে।</div><div dir="auto">সব রম্য নির্মল নয়। কিছু রম্য ব্যঙ্গ।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-24033012071740921562024-01-08T18:21:00.000+05:302024-01-16T13:38:40.024+05:30ইনসাফ ব্রিগেড ~ অবিন দত্তগুপ্ত<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhToQQ4SATCsoaCBs3F6vhhOPddfFzdqPuZsXIdeVzl_YFxunTssQP3Mp1gJzBCQGcZU3wRAznDEpT5ZtEUoSV9tVliV68QG06SRZOE0eM1yREh1nB6kwp9IVlpBKgebyLpoEHZtj_K7FjsJ12DsRNrwozIL20b-kzKXV8gUaFd3O-B9FrPu5thiTosi9Q" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="205" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7321709485781996146" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhToQQ4SATCsoaCBs3F6vhhOPddfFzdqPuZsXIdeVzl_YFxunTssQP3Mp1gJzBCQGcZU3wRAznDEpT5ZtEUoSV9tVliV68QG06SRZOE0eM1yREh1nB6kwp9IVlpBKgebyLpoEHZtj_K7FjsJ12DsRNrwozIL20b-kzKXV8gUaFd3O-B9FrPu5thiTosi9Q=w400-h205" width="400" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">সাংবাদিক - জমায়েত দেখে খুশি তো মীনাক্ষী?</div><div dir="auto">মীনাক্ষী - সংখ্যার থেকেও বেশি খুশি মেজাজ দেখে।</div><div dir="auto">সাংবাদিক - শুধু মেজাজ দিয়ে হয় নাকি। সংখ্যা কি বেশি গুরুত্বপূর্ন নয়?</div><div dir="auto">মীনাক্ষী - একেবারেই না। কিউবার বিপ্লব শুরু হয়েছিল ৫০ জনের থেকেও কম লোক নিয়ে। কিন্তু মেজাজটা ছিল। </div><div dir="auto">সাংবাদিক - সেই মেজাজটা দেখলেন?</div><div dir="auto">মীনাক্ষী - কুচবিহার থেকেই দেখছি। আজকে সারা মাঠ জুড়ে সেই মেজাজকেই দেখলাম।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এটা মেজাজ অথবা সংখ্যা, এসব কিছুই নয়। ভবিষ্যতের ছবি।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto"><br /></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-83937181220680593962024-01-06T00:33:00.001+05:302024-01-06T19:06:36.519+05:30মাল, চাট ও কলকাতা ~ মানস নাথ<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEifkF6ka_LQOxDldHUa_o5mWtngVSbGyPm2tIzPLQWzTeblkhRq2TWuOPjBnKtXGvkNqFCu8Ncz2k6UcavHEUr1MSw65IAxGU8rBoXTVWVzkI_nt4H_6fxLo1lWp3qpgZjPE3fKB9Qw190BHo6gnz5oNzR7qqWS3GlJ1ohwZuuoGGb3Cl3nX2QJll7-KkY" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7320691952508358162" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEifkF6ka_LQOxDldHUa_o5mWtngVSbGyPm2tIzPLQWzTeblkhRq2TWuOPjBnKtXGvkNqFCu8Ncz2k6UcavHEUr1MSw65IAxGU8rBoXTVWVzkI_nt4H_6fxLo1lWp3qpgZjPE3fKB9Qw190BHo6gnz5oNzR7qqWS3GlJ1ohwZuuoGGb3Cl3nX2QJll7-KkY=s320" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">কলকাতার বার বা মদের ঠেকগুলো নিয়ে নানা কারুকার্যময় গালগল্প, মিথ ঘুরে বেড়ায় রসিক সমাজে। এই সব গল্প ঠেক আড্ডার একটা নিজস্ব জগৎ আছে।এই ঠেকগুলোর আছে নিজস্ব ডাকনাম বা আদরের নাম। এক দাদার হাত ধরে ভবানীপুরের গ্রীন প্যালেস বারে যাওয়া থেকে সেই জগতে আমার এন্ট্রি। তবে আজকে মদের নয় চাটের গল্প বলতে ইচ্ছে করছে।</div><div dir="auto">নেশাড়ু সার্কিটে গ্রীন প্যালেস বার জিপি নামেই পরিচিত। সেখানে মালের সাথে ফ্রিতে বারের তরফ থেকে চাট ছিল এক বাটি কম মশলার সাদা চানাচুর,ভিনিগারে চোবানো পিঁয়াজ আর সরু সরু করে কাটা আদার সাথে বিটনুন। প্রতি পেগ অর্ডারের সাথে চানাচুরটা রিপিট হত। আমি তখন একপেগ রাম নিয়ে টেবিলে বসে থেকে দাদাদের মুখের গল্প শোনার পাবলিক। এক বয়স্ক নেপালী ওয়েটার ছিল জিপিতে। সবাই তাকে সাথীদা বলে ডাকত। তিনি আমাকে এক প্লেট চানাচুর এক্সট্রাই দিতেন।</div><div dir="auto">উল্টোদিকে যদুবাবুর বাজারের উপরে তৃপ্তি বার। একটা সরু প্রায়ান্ধকার গলি দিয়ে ঢুকে মান্ধাতার আমলের মচমচে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে পৌছাতে হয় সেই গুহায়। বড় বড় রাস্তার ধারের জানালা আর গোল গোল শ্বেতপাথরের টেবিল। দাম বেশ সস্তা। তবে বিটনুন আর আদা ছাড়া চাটে আর কিছু দিত না তখন।আলু কাবলি পাওয়া যেত, সেটার পরিমান দুজনের পক্ষে যথেষ্ট। </div><div dir="auto"> ঠেকের মধ্যেই রকমারি চাটের দোকান সাজিয়ে বসতে দেখেছি খালাসীটোলায়। যাকে বন্ধুরা কেত মেরে কেটি বলে ডাকত। খাঁচার আড়ালের কাউন্টার থেকে বোতল কিনে নিয়ে এসে টেবিলে বসতে হত। এবারে পাশেই সারি দিয়ে লাগানো চাটের দোকান থেকে ইচ্ছামত খাবার কিনে নিয়ে এসো। রকমারি মাছ ভাজা... এমনকি আমি কাতলা মাছের মুড়ো ভাজাও দেখেছি! কারা মাছের মাথা দিয়ে মদ খায় কে জানে! চিকেন, খাসির ছাঁট, মেটের তরকারি সাজানো থাকত। আলুকাবলি, চানা, ছোলা এসব তো ছিলই। শুঁটকি মাছের রসা অব্ধি দেখেছি! আমি যদিও দু তিনবারই গিয়েছি কেটিতে। তারমধ্যে একবার শর্মিদির সাথে কবি ফাল্গুনী রায়ের উপর একটা ডকু ছবির শুটিং করতে গিয়ে খুব মজা হয়েছিল। সে অন্য গল্প। </div><div dir="auto"> অলিপাবে মদ খেতে গিয়ে প্রথম খেয়েছিলাম বিফ স্টেক। আমার খুব একটা সুবিধার লাগেনি যদিও ; আর ছিল চিকেন আলা কিয়েভ। ছুরি দিয়ে কাটলেই এত্তটা গলানো মাখন বেরিয়ে পড়ে! তবে চাটের প্যারাডাইস হল গিয়ে ধর্মতলার মেট্রোগলির শ বার। সন্দীপনের লেখাতে পড়েছিলাম তারা সেই বারের নামকরণ করেছিলেন ছোটা ব্রিস্টল। সন্দীপনের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন শ বারের গেট দিয়ে ঢুকে বাঁ হাতের নোটশবোর্ডে ওনার ছবি সহ শোকবার্তা ঝুলতে দেখেছি।এখানে ওয়েটারের কাছে আগে পয়সা দিয়ে টেবিলে বসতে হয়! একসাথে তিন চারটে টেবিলের গোটা পনেরো গ্লাস ওয়েটার একের উপর এক সাজিয়ে একসাথে ব্যালেন্স করে নিয়ে আসে আর প্রত্যেকের সামনে অর্ডার অনুযায়ী নামিয়ে রাখতে থাকে! আমি প্রতিবার ভাবি কার কোনটা গ্লাস মনে রাখে কী করে!! তবে শ বারের আসল মজা হল রানিং চাট এর পসরা। ট্রেতে সাজানো চাটের প্লেট নিয়ে টেবিলের পাশ দিয়ে ঘুরতে থাকে বিক্রেতারা। রকমারি সিজিনের ফল থেকে নানা রকমের ভাজাভুজি, বাদাম, ছোলা, মটর থেকে চিজ। মাছ এবং মাংসের বিভিন্ন পদ থেকে মেটে চচ্চড়ি অব্ধি। আর দামও বেশ সস্তা। অনেকে উল্টোদিকের টিপু সুলতান মসজিদের গলি থেকে বিফ শিক কাবাব নিয়ে আসত ঠোঙায় করে। </div><div dir="auto"> মধ্য কলকাতার বিভিন্ন বারের মধ্যে এককালে মন্টি কার্লোর কথা সবাই বলত মৌরলামাছ ভাজা খাওয়ার জন্য। ইদানীং তার অবস্থা ভাল নয়। পাশের চাংওয়া অবশ্য পর্দাঘেরা কেবিনের জন্য বিখ্যাত।মদের সাথে পর্দার আড়ালে চুমু খেয়েই পেট ভরে যায়। চাট নিয়ে আর ভাবার টাইম থাকে না। সেন্ট্রাল বারে মালের সাথে ধোঁয়া ওঠা ছোলা সেদ্ধ চাট হিসাবে টেবিলে আসে সাথে আসে আদা বিটনুন,জলজিরার বাটি! তবে ইদানীং কালে সবচেয়ে বেশি ক্রেজ ব্রডওয়ে বার নিয়ে।ফেসবুকের চেনাজানাদের মিলনমেলা এখন ওখানেই। ওখানকার একটা চাটের খোঁজ দিয়েই আজকের গল্প শেষ করব। </div><div dir="auto"> ব্রডওয়ের মেনুকার্ড হাঁতড়েও আপনি সে পদটির সন্ধান পাবেন না। গুরু ধরতে হবে, জানতে হবে। পাশেই আনন্দবাজার এর অফিস,তাদের অনেকেরই নিত্য আনাগোনা ব্রডওয়েতে।আমিও এক আনন্দবাজারের কর্মীর থেকেই সেই গুপ্তধনের আর তার দরজা খোলার চিচিং ফাঁক মন্ত্রের খোঁজ পেয়েছিলাম। আপনারাও পরেরবার গিয়ে এ্যাপ্লাই করে দেখতে পারেন।ফ্লোর ম্যানেজারকে ডেকে বলতে হবে আজ ভালো ভেটকি এসেছে? উনি যদি একগাল হেসে সম্মতি দেন তাহলে বলতে হবে, এক প্লেট মাস্টার্ড ফিস বানিয়ে দেওয়া যাবে কী? উনি রান্নাঘরে ঘুরে এসে যদি মুন্ডি হেলিয়ে যান তাহলে নিশ্চিত জেনে রাখুন আপনার দিনটা ভালো হয়ে গেলো। তবে যদি ফিরে এসে বলে স্যার মাস্টার্ড চিকেন বানিয়ে দেবো? তবে আপনার ইচ্ছা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবেন কিনা।<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjX8w1_8YN1S2c7b8FdD25UJg3NbSFKWdR-KuASulEuKCzxfHEeyu5M2uUKSaxs5f5bMZieefDyB9TbTnzzYV90w2AYRA-tI5Vfc2V8tqwyvhS1LKoiDbTivJIHZP7VWTLI9Gg3D7eKsVtmmGr74CD1STEoxOZOPVeUEGjaiDIeU8SlFJOWqmFU6HFaErs" style="clear: right; float: right; margin-bottom: 1em; margin-left: 1em;"><img alt="" border="0" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7320691972094386578" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjX8w1_8YN1S2c7b8FdD25UJg3NbSFKWdR-KuASulEuKCzxfHEeyu5M2uUKSaxs5f5bMZieefDyB9TbTnzzYV90w2AYRA-tI5Vfc2V8tqwyvhS1LKoiDbTivJIHZP7VWTLI9Gg3D7eKsVtmmGr74CD1STEoxOZOPVeUEGjaiDIeU8SlFJOWqmFU6HFaErs=s320" /></a></p></div><div dir="auto"> আমার এক বান্ধবীর সাথে বারকয়েক ব্রডওয়েতে মাস্টার্ড ফিস খেয়ে এই পদটির প্রেমে পাগল হয়ে যৌথভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নি এটা একদিন বাড়িতে বানিয়ে দেখতেই হবে কতটা ধারেকাছে আসে। সেইমত বাজারে আসল কলকাতা ভেটকি কিনতে গিয়ে জোর ধাক্কা খাই। বিয়ের সিজিন, বেটাচ্ছেলে গোটা মাছ ছাড়া বেচবে না! শেষে বাধ্য হয়ে দুজনের মত ভোলা ভেটকি নিয়ে আসি। কম্পোমাইজময় মধ্যবিত্ত জীবন শালা। কোন রেসিপি ছিল না, স্বাদের অভিজ্ঞতা থেকে রাঁধা। তাই আমিও কোন রেসিপি লিখছি না। আমার বান্ধবী রন্ধনে দ্রৌপদী না হলেও কাছাকাছি। ভালোই নামিয়েছিল পদটা, ছবি দিলাম। সাথে ব্রডওয়ের মাস্টার্ড ফিসের ছবি দিলাম।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-35243349367319700662024-01-04T12:58:00.001+05:302024-01-04T13:05:48.829+05:30একটা মেঠো প্রেমের গল্প ~ শেখ ফইজুল অালম<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEisYYYuUP955KQ5uXkyB-rwORKi5SvB50foEgnzQlgCPb6hMtP2Qe9vGrBHjpo6Il5jCwKZYCVuP4e0u7rWDDeZvyfS2gaLkLh2EYmLj1iX3inzppC6j6mKx-zl-3T7LEXKWbcEIyqkzlHGI9JABXrcK1YdzD2i6ntmVW9W_ckn__dfa8K9cBqOyuekfp0" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="225" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7320141803032940434" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEisYYYuUP955KQ5uXkyB-rwORKi5SvB50foEgnzQlgCPb6hMtP2Qe9vGrBHjpo6Il5jCwKZYCVuP4e0u7rWDDeZvyfS2gaLkLh2EYmLj1iX3inzppC6j6mKx-zl-3T7LEXKWbcEIyqkzlHGI9JABXrcK1YdzD2i6ntmVW9W_ckn__dfa8K9cBqOyuekfp0=w400-h225" width="400" /></a></p><div dir="ltr"><div class="gmail_default" style="color: black; font-family: "trebuchet ms", sans-serif;"><div class="gmail-xdj266r gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">একটা মেঠো প্রেমের গল্প........ <span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="💘" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/teb/1/16/1f498.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">এটা ওদের কম বয়সের ছবি, চোখ মুখ দেখুন। কি উজ্বল, ঝকঝকে, বুদ্ধিদীপ্ত! ওরা নাটক করতো। করতো কারন, ছেলেটি অার বেঁচে নেই। মেয়েটি ছেলেটির স্মৃতি অাঁকড়ে বয়সের ভারে ক্লান্ত। অাজ একটু পরে ওদের কম বয়সের একমাত্র প্রেম ওদের নাটক ওরা করবে গাজিয়াবাদের সাহিবাবাদে, ঝান্ডাপুর এলাকায়।</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">পিছিয়ে চলুন তিন দশক, মনে করুন অাজ ১৯৮৯ সালের ১লা জানুয়ারী। ওরা রাস্তায় নাটক করে। সাধারন মানুষ, খেটে খাওয়া মজুর, দোকানি, পথচলতি মানুষ ভীড় করে দেখে সে নাটক। ওরা নাটকে <span style="font-family: inherit;"><a style="color: #385898; font-family: inherit;" tabindex="-1"></a></span>শোষনমুক্তির কথা বলে। নাটকের নাম তাই " হল্লা বোল "। গাজিয়াবাদ পৌরসভার র্নিবাচনে ওরা খেটে খাওয়া মানুষের জোট কে অারো শক্তিশালী করতে চায়। সফদর হাসমি অার মলয়শ্রী। নাম দেখে আবার ধর্মের নিক্তি বার করবেন না যেন! বরং ভালোবাসার গল্পটা শুনুন অাজ অাপনার এই ফুর্তির দিনে, মন ভালো হবে। <span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="♥️" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/tac/1/16/2665.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">নাটক শুরু হতেই ভীড় জমে গেল। বেশ জমে উঠছে নাটক এমন সময়ে স্থানীয় এক রাজনৈতিক মাফিয়া মুকেশ শর্মা অার তার দলবল ঝাঁপিয়ে পড়লো নাটকের উপর। বোমার পর বোমা, রড়, লাঠি চলতে লাগলো। সফদরকে ওরা ফেলে রড়, লাঠি দিয়ে মারতে লাগলো। মলয়শ্রী, অন্য সহকর্মীরা অাপ্রান বাঁচাতে চাইলো ওকে। জনতা ছত্রভঙ্গ। সফদর মারা গেছে ভেবে ঘাতকরা তাদের কাজ সেরে চম্পট দিলো। তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলো সবাই। না, জ্বলজ্বলে চোখের ছেলেটি বাঁচেনি। পরদিন চলে গেল মেয়েটিকে একা রেখে। মেয়েটি শ্রমজীবি মানুষের কাঁধে চড়ে অন্তিমের পথে যেতে দেখেছিলো তার ভালোবাসাকে। <span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="🔥" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t50/1/16/1f525.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">সেদিন মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়েনি। প্রতিটি স্রষ্টার কাছে সৃষ্টি যেমন সন্তানসম তেমনি ওদের সন্তান নাটক কে যে সম্পুর্ন করতে হবে। শ্রেনীশত্রুর চোখে চোখ রেখে যে বলতে হবে... " এ দেশ তোমার লুঠের জন্য নয়! "</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;">তারপর মাত্র দুদিনের অপেক্ষা, মেয়েটি তাদের সৃষ্টি, তাদের ভালোবাসা কে মঞ্চস্থ করলো ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে ওই একই জায়গায়, একই সময়ে! হ্যাঁ, মঞ্চ.... রাস্তাই যে ওদের মঞ্চ। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;">সে রাস্তায় ছিল সেদিন মেহনতি মানুষের অধিকারের গর্জন........ <span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="🛑" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t9b/1/16/1f6d1.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div><div dir="auto" style="font-family: inherit;">" জব ইনকিলাব কি ঝান্ডা লহরায়েগা....</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;">তব না কৌই সফদর নুক্কড় পে মারা যায়েগা...." </div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">ভালোবাসা শুধু পার্কস্ট্রিটে, সিটি সেন্টারে গুনগুন করেনা। কান পাতো, সে অাওয়াজ তোমার হৃদয়ে। খালি সোচ্চারে বলতে শেখো সে ভালোবাসার কথা...." হল্লাবোল ভাই হল্লাবোল "<span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="🔥" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t50/1/16/1f525.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">৩০ বছর পরে সফদরের নামটাই হয়তো জানে না আজকের প্রজন্ম। কিন্তু যাঁদের কাছে বর্ষবরণ শুধুমাত্র আনন্দের জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেওয়ার নয়, কিংবা যাঁরা সেই দিনটিতেও জীবনের সেই চরম সত্যটা ভুলতে পারেন না যে সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ বর্ষবরণের রাতে ঘুমোতে গিয়েছেন ভুখা পেটে! অন্তত সেই মানুষগুলির কথা ভেবে আজ অন্তত একবার স্মরণ করুন সফদর হাসমি আর মলয়শ্রী জুটিকে, ওদের অনবদ্য প্রেমকে ! <span class="gmail-x3nfvp2 gmail-x1j61x8r gmail-x1fcty0u gmail-xdj266r gmail-xhhsvwb gmail-xat24cr gmail-xgzva0m gmail-xxymvpz gmail-xlup9mm gmail-x1kky2od" style="display: inline-flex; font-family: inherit; height: 16px; margin: 0px 1px; vertical-align: middle; width: 16px;"><img alt="♥️" class="gmail-xz74otr" height="16" src="https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/tac/1/16/2665.png" style="border: 0px; object-fit: fill;" width="16" /></span></div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">মূল রচনা: শেখ ফইজুল অালম</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;">ভাষান্তর ও সম্পাদনা: স্বপন সেন</div></div></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-80920939599754243592023-12-31T09:23:00.001+05:302023-12-31T09:23:28.524+05:30পাকী তিন পোয়া হুইস্কি ~ সোমা ব্যানার্জী<div dir="auto"><div dir="auto">কয়েকদিন জ্বরের ঘোরে পড়েছিলাম। আর আট ভাট কত কথাই ভাবছিলাম। কেন জানিনা কফি হাউজের ভেটকির কথা খুব মনে পড়ছিল। আমি তখন ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। কোন এক দাদা যেন ভেটকিকে দেখিয়ে আমাকে বলেছিলো, ওই দেখ ভেটকি, কফি হাউজের মহাপুরুষ। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মদ খায়। বাকি সবার সঙ্গেও মদ খায়। মাঝে লিভারটা একটু খারাপ হয়েছিল। তাই এখন লিভ ফিফটি টু দিয়ে মদ খায়। ভেটকিকে দেখেও যেন মনে হল দ্রব্যগুণেই আছে। চোখ মুখে সামান্য একটু লালচে আভা, যেন ঝামরে জ্বর আসছে। আমি মানসচক্ষে দেখতে পেতাম যে ভেটকি এক মনে মদ খাচ্ছে আর তার পাশে রাখা আছে চাটের বদলে একটি লিভ ফিফটি টু এর কৌটো। বিগড়ে যাওয়া মেটে, রগড়ে ঠিক করে নেওয়ার জন্য গম্ভীর মুখে, কয়েক চুমুক মদের পরেই একটি করে ট্যাবলেট গলাধঃকরণ করছে সে।<br></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আমার তখন বাস্তবে মদ খাওয়া নিয়ে ধারণা খুব একটা স্পষ্ট ছিলো না। মদ খাওয়া যা দেখেছি সব সিনেমায়। বাবার কাছে বরাবর শুনেছি যারা মদ বা সিগারেট খায় তাদের চরিত্র খুবই খারাপ হয়। আর যে সব মহিলারা ওইসব খায় তাদের সম্পর্কে তো ইয়ে, যত কম বলা যায় ততই ভালো! হাউজে কিছুদিন আসার পর, টেবিলে এর ওর থেকে সিগারেট চেয়ে দু-এক টান দিয়ে দেখলাম। ভালোই লাগলো। আমার চরিত্র কেউ টান মেরে ধরে হিড় হিড় করে অনেক নিচে নামিয়ে নিয়ে গেল বলে তো মনে হলো না। বরং স্বামী বিবেকানন্দের মতো জিজ্ঞাসু মনে এর তার হুঁকোয় পরীক্ষামূলক টান মেরে দেখা হল জাত যায় কিনা। পরীক্ষার ফলাফল? দেখা গেল আমার মন পবিত্র হলে কি হবে আশেপাশের ছেলেরা খুবই হিংসুটে। দু'দিন যেতে না যেতেই তারা বললো তুই তোর সিগারেট কিনে খা! আমারটা দেব না, ইত্যাদি। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তবে কফি হাউজের নিভে আসা মরা মরা আড্ডায় সবসময় দেখতাম মাতালদের নিয়ে চুটকি বলা হতো। ডজন খানেক এইধরণের চুটকি সব টেবিলেরই হট ফেভারিট ছিল। আড্ডার মরা আঁচে ফুঁ দিতে, বহু ব্যবহৃত ক্লিশে চুটকি গুলো কিন্তু বেশ কাজে দিত! মাঝে মাঝে ওই সবকটা জোকস পুনরায় বসে শোনবার ভয়েও লোকজন তাড়াতাড়ি উঠে বসে কথা শুরু করে দিত! ছেলেরা কোথাও তিনদিনের জন্য বেড়াতে গেলে ফিরে এসে সাতাশ দিন ধরে তার গল্প শোনাত। এক দিন বলতো বেড়াতে গিয়ে কি কি দেখেছে, আর ছাব্বিশ দিন ধরে বলতো কে কে মদ খেয়ে কি কি বিচিত্র আচরণ করেছে! এইসব খিল্লির ফার্স্ট হ্যান্ড অভিজ্ঞতা থেকে আমরা মেয়েরা বঞ্চিতই রয়ে যেতাম। কারণ বাড়ি থেকে কোনোভাবেই অনুমতি পাওয়া যেত না বেড়াতে যাওয়ার। একদল ছেলের সঙ্গে চার-পাঁচ দিন টানা বেড়াতে যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলাই যেত না বাড়িতে। আমার বাড়িতে তো একটা একদিনের পিকনিক যাওয়ার জন্য অনুমতি নিতে যা পরিশ্রম করতে হতো, যে আসল পিকনিকের দিনটায় আমার খুব ক্লান্ত লাগতো। মনে হতো গাছতলায় শুয়ে একটু বিশ্রাম নিই। বা এইসব তুশচু হাসি ঠাট্টা খাওয়া দাওয়ার প্রলোভন পরিত্যাগ করে বানপ্রস্থে চলে যাই। চিত্রকূট পাহাড়ে গিয়ে দুর্বাসা মুনির পেছনে লুকিয়ে থাকি। যে শালা আমাকে খুঁজতে আসবে সে ভস্ম হয়ে যাক বা হাফ ডজন অভিশাপের গুঁতোয় ধরাশায়ী হোক!</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">যাই হোক, বহু ক্লাস মিস করে, গভীর মনোযোগ সহ সব বেড়ানোর গল্প শুনে, ভালো রেজাল্টের আশা অলকানন্দার জলে ভাসিয়ে দিয়ে, আমি আমার চেনা বন্ধুদের মনে মনে কিছুটা ক্লাসিফাই করতে শুরু করি। প্রথম দল ছিলো চার আনার খেয়ে আট আনার নাটক করা টাইপ। এই দলে সবার আগে নাম ছিল বোধহয় বুম্বা আর কামুর। এরা শক্ত পানীয় দু তিন চুমুক খেয়েই, নিজ নিজ বন্ধুবৃত্তে নিজেদেরকে হলমার্ক যুক্ত 'আসল মাতাল' প্রমাণ করার জন্য মহা উৎসাহে ড্রামা আরম্ভ করতো। টিভির সব ঝুল সিরিয়ালে এবং হলে সব হিট সিনেমায় মাতালদের যা যা করতে দেখেছে সবই এক এক করে করত এরা। কিছুই বাদ যেত না।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এদের ঠিক বিপরীত মেরুতে ছিল আরেকটি দল। এরা অনভ্যস্ত শরীরে কিছু পরিমাণ অ্যালকোহল ঢোকায় মাথা ভোঁ ভোঁ করলেও কিছুতেই তা স্বীকার করত না। কিচ্ছুটি হয়নি ভাব দেখিয়ে, নির্লিপ্ত মুখে ঘরের এক কোনায় একটি চেয়ারে চুপ করে বসে থাকতো। হঠাৎ করে 'একটু আসছি' বলে বাইরে গিয়ে বমি করে আবার এসে অম্লানবদনে বসে থাকতো। 'কিছুই হয়নি'র প্রমাণ স্বরপ মাঝে মাঝে স্মিত হেসে 'পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল করে, দেয়ালে দেয়াল, কার্নিশে কার্নিশ' আবৃত্তি করে শোনাতো। তিন চার লাইন আবৃত্তির পর যেখানটাতে হোঁচট খেত, সেখানে থমকে গিয়ে আবার গোড়া থেকে শুরু করতো। তারপর কেমন একটা লুপে পড়ে যেত। এটা মোটামুটি চলতেই থাকতো।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আর একদল ছিল যারা নিজেদের মস্ত বড় কনোসার ভাবতো। কোনরকম লঘু ক্রিয়া-কলাপ বা বালখিল্যের মধ্যে এরা নিজেকে জড়াতে অপছন্দ করতো। এরা এসে থেকে আকাশে নাক তুলে বসে থাকতো আর বলতো, এই তোরা যে যা পারবি খেয়ে নে। দেখি কার কতটা দম আছে। একটু পরেই অ্যামেচারের দল কাত হয়ে গেলে এরা গম্ভীর মুখে নীলকন্ঠ অবতারের মতন এসে যেখানে যা মদ পড়ে আছে সব ঢক ঢক করে অনায়াসে খেয়ে শেষ করে ফেলত। তবে এরা নিজেদের যোগ্য সম্মান পেতো না দলের কাছে। এদেরকে সবাই ব্লটিং পেপার বলে ডাকতো। অথবা স্পঞ্জ।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এইসবের বহু বছর পরে আমি বাচ্চা নিয়ে সুকল্পদের সাথে বেড়াতে গিয়ে মোনালিসার অভিজ্ঞতা শুনি। সেটা এখানে না বললেই নয়। বিয়ের আগেই সুকল্প তার প্রেসিতে পড়া মিষ্টভাষী হবু স্ত্রীকে বলে নিয়েছিল, আমি কিন্তু বেড়াতে গেলে মদ খাই। মোনালিসা বেচারা এতে দোষের কিছুই দেখতে পায়নি । সে সোনামুখ করে আচ্ছা বলেছিল। বিয়ের দু এক মাস বাদেই সুকল্প বলে চলো, বেড়াতে চলো। তারপর সুকল্প তার তিরিশজন বন্ধুর বিশাল দলে বউ নিয়ে মহাসমারোহে দীঘা ঘুরতে গেল।</div><div dir="auto">সকালবেলায় বন্ধুদের নিয়ে সমুদ্রে চান করতে গেল। গেল তো গেল, আর ফেরার নাম নেই! উদ্বিগ্ন মোনালিসা তখন জনে জনে জিজ্ঞেস করতে থাকলো, হ্যাঁ গো, আমার বর কোথায়? অধিকাংশই টইটুম্বুর মদ খেয়ে ওকে পাত্তাই দিলো না। পরে, কে একজন মায়া করে আঙুল দেখিয়ে বলে দিল, ওই তো আসছে। সেদিকে তাকিয়ে মোনালিসা কিছুই দেখতে পেল না। তারপর সেদিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে দেখতে পেল সুকল্পকে চ্যাংদোলা করে আনা হচ্ছে। হুঁশ নেই। বিকেলবেলায় মোনালিসা সুকল্পকে অনেক ডাকাডাকি করেও তার ঘুম ভাঙাতে পারেনি। সন্ধ্যেবেলায় নিরুপায় মোনালিসা দলের মধ্যে এক দাদার সঙ্গে কি সব মালা ফালা কিনতে দোকানে গেছে। সেখানে আবার এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা হয়েছে। দু এক কথার পরেই সে জুলজুল করে চেয়ে মোনালিসাকে ফিসফিস করে বলে, তোর বরের ছবি তো আমরা দেখেছি আগে। তোর সাথে আজ যাকে দেখছি এ তো তোর বর নয়! থতমত খেয়ে মোনালিসা হ্যাঁ মানে, না মানে, বর নয় ঠিক, বরের বন্ধুর সাথে... এইসব আবলান জাবলান অসংলগ্ন উত্তর দিয়ে রাগ করে হোটেলে ফিরে আসে...</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">কাল বছরের শেষ দিন। তাই আজ সমস্ত মদের দোকানে প্রচণ্ড ভিড়। বুড়ো বাচ্চা লেডিজ জেন্টস সবাই লাইন দিয়েছে। বছর শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে। হয় দুঃখে নয় আনন্দে, কি জন্যে ঠিক বলতে পারবো না। হেমিংওয়ে বলতেন, "I drink to make other people more interesting." সেটাই হল কি? আমরা সকলে কি একে অপরের মুখ দেখে খুব বোর হচ্ছি? চারপাশে সবার সবাইকে খুব বিস্বাদ লাগছে? নিজের মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতেই ভাবি, সত্যি মাইরি, কি আত্মমগ্ন, যান্ত্রিক লোকজন আমরা সবাই। এর চেয়ে ভেটকি অনেক ভালো ছিলো, ইন্টারেস্টিং ছিলো! কাব্যলোকে আসছে কাল মনে হয় মোবাইল নিয়ে ঢোকা বারণ। মধ্যরাতে মুমূর্ষু তেইশ সালটিকে আলতো করে মদিরায় ভাসিয়ে দেবেন শক্তি আর ভেটকি। নতুন বছরের চিবুক ধরে আদর করে বলবেন, "থুৎনিপরে তিল তো তোমার আছে/ এখন? ও মন, নতুন দেশে যাবি?"</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-70622675539708263342023-12-19T23:34:00.001+05:302023-12-19T23:34:39.712+05:30জীবনের ধাঁধা ~ রজত শুভ্র ব্যানার্জী<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEiH3wzXk6DFDXFD5-yLg1j7gehLTo_kV7GTWgvkiamlYK1T7xBVf8zpZmfMr-WqnnobtozETGoICEHGCAq_Y4WfZirrdfELwoV87896ajkdwOQDRKX939uL4JKAppvF8X4O6PGIIIQ4RNd7CIWhQZcMSYEo6sTEct5XFqMnzo_WoE4lFQZk0v76qENd_as"><img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEiH3wzXk6DFDXFD5-yLg1j7gehLTo_kV7GTWgvkiamlYK1T7xBVf8zpZmfMr-WqnnobtozETGoICEHGCAq_Y4WfZirrdfELwoV87896ajkdwOQDRKX939uL4JKAppvF8X4O6PGIIIQ4RNd7CIWhQZcMSYEo6sTEct5XFqMnzo_WoE4lFQZk0v76qENd_as=s320" border="0" alt="" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7314368318031217458" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">মানুষের মেজো ছেলে লোম পরে হুপ হাপ করে,<br></div><div dir="auto">নিজেকে দেখিয়ে বলে, দেখো, আমি কত বড় হনু,</div><div dir="auto">ওই দূরে বড় মাঠে গোটাকত গরু মোষ চরে,</div><div dir="auto">মেঘ কাটে অবশেষে, আকাশে গজায় রামধনু।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">উঠনে তুলসী তলা, ছাগলেরা তায় মাথা ঠোকে,</div><div dir="auto">দু'খানা নেংটি এসে এক কোণে দানা পানি গোঁজে,</div><div dir="auto">পাখিরা বাসায় ফেরে, ইয়ে ক'রে সম্মুখে ঝোঁকে,</div><div dir="auto">পাশে কটা বুড়ো ভাম বসে থাকে সুযোগের খোঁজে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">হঠাৎ পটকা ফাটে, সবাই শিউরে ওঠে ত্রাসে,</div><div dir="auto">আগুন জ্বলতে থাকে সীমানার এধারে ওধারে,</div><div dir="auto">পিপীলিকা ভ্যাবাচ্যাকা, সভয়ে লুকিয়ে পড়ে ঘাসে,</div><div dir="auto">দু'একটা সারমেয় ইতি উতি চেয়ে ল্যাজ নাড়ে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আর কেউ জানুক বা না জানুক, জন্তুরা জানে</div><div dir="auto">অবশেষে ভগবান ভুলেছেন জীবনের মানে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">RSB (2023-12-19)</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-46880498526352603442023-12-16T15:17:00.000+05:302023-12-16T15:19:55.098+05:30মৎসপুরাণ ~ আশুতোষ ভট্টাচার্য্য<div dir="auto"><div dir="auto">পারশে নাহয় সর্ষে দিয়ে রেঁধে </div><div dir="auto">শীতের দুপুর ট্যাংরা পেঁয়াজকলি</div><div dir="auto">বাজার গেলাম চিংড়ি দিল সেধে</div><div dir="auto">ইলিশ কে কি মাছের সেরা বলি!!</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">গোল বাঁধাল মৌরলা আর পুঁটি</div><div dir="auto">মাছ কাটবার বিভিন্ন পদ্ধতি </div><div dir="auto">আছেন মাসি, সামান্য ভুল ত্রুটি </div><div dir="auto">ভেটকি নিলেও এমন কি আর ক্ষতি।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">রুই কাতলা রাজার মত শুয়ে</div><div dir="auto">কেউ খুঁজেছে চিতল মাছের পেটি</div><div dir="auto">মাগুর সিঙ্গি পাবদা বরফ ছুঁয়ে </div><div dir="auto">কাজরি যেন বড়লোকের বিটি।।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বোয়াল যেন ধ্যানস্থ এক সাধু</div><div dir="auto">উদাস চোখে তাকিয়ে থাকে শোল</div><div dir="auto">ওভাররেটেড তোপসে জানে জাদু</div><div dir="auto">তেলাপিয়া বাঁধায় গন্ডগোল।। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">সাতসকালে মাছের বাজার টানে</div><div dir="auto">মৎসপুরাণ স্বাদকাহনের মানে।।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-81526396148938137892023-12-09T16:53:00.001+05:302024-01-04T13:06:12.292+05:30সুজানা ~ কৌশিক মজুমদার<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj8UV2RUjvBBFyHKS1_vdwUf6Zlb3W2rmBJX1Skr01PKZg7I72PBChPj6MeN5DSMlOWGxHMH05JdB6qGzUy4YzNE_vWbIgun-uMPlp7E28id0yp9oVnuIHlMwixCQp2GgThomnWrrFvcKievzegesQZRHBkeCEW05VrV4a8yPC13xHCO4QdRXHELLXPoJ4" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="308" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7310554120893243458" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj8UV2RUjvBBFyHKS1_vdwUf6Zlb3W2rmBJX1Skr01PKZg7I72PBChPj6MeN5DSMlOWGxHMH05JdB6qGzUy4YzNE_vWbIgun-uMPlp7E28id0yp9oVnuIHlMwixCQp2GgThomnWrrFvcKievzegesQZRHBkeCEW05VrV4a8yPC13xHCO4QdRXHELLXPoJ4=w400-h308" width="400" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সাত খুন মাফ সিনেমাটা আছে না? ওই যে যেখানে উষা "দিদি" উত্থুপ আর রেখা ভরদ্বাজ মিলে "ডা-র-র-র-লিং" বলে একটা গান গেয়েছিলেন (যেটা আবার রাশিয়ান গান কালিঙ্কা থেকে অনুপ্রাণিত)...মজার ব্যাপার এই সিনেমাটার আসল শিকড় লুকিয়ে আছে চুঁচুড়ার মাটিতে। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">খাদিনা মোড় থেকে প্রিয়নগরের দিকে যেতে বাঁ হাতে জি টি রোডের ধারে সাদা মন্দির টাইপ একটা স্থাপত্য চোখে পড়ে। অচেনা লোকেরা এঁকে মন্দির ভাবেনও..কিন্তু এখানকার বাসিন্দারা জানেন এই মাটিতে শুয়ে রয়েছেন "সাত সাহেবের বিবি" সুজানা আনা মারিয়া ভারকার্ক। নামটা চেনা চেনা লাগছে? রাস্কিন বন্ড তাঁর বিখ্যাত চার পাতার গল্প Susanna's Seven Husbands এ নায়িকার ঠিক এই নামই দিয়েছিলেন। গল্পের প্লট এক কথায় বন্ড এই রকম বলেছেন "When a guy visits the ruins of an old haveli on G T Road, Old Delhi, he was told the story of the mysterious haveli owner, Susanna and killings of her husbands..."</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">দিল্লীকে আপাতত ভুলে জি টি রোড আর সুজানা নাম দুটো আমাদের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। এই গল্প থেকেই কিন্তু গোটা সাত খুন মাফ সিনেমার জন্ম।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">কে ছিলেন আসল সুজানা? অষ্টাদশ শতকে ওলন্দাজ ব্যবসায়ীরা দলে দলে চুঁচুড়ায় এসে ভিড় জমালেন। সাথে তাঁদের স্ত্রীরাও। এমনই একজন ছিলেন পিটার ব্রুয়িস। তিনি ১৭৫৪ নাগাদ চুঁচুড়ায় ঘাঁটি গাড়েন। সাথে স্ত্রী সুজানা। তাঁদের একটি ছেলে , দুটি মেয়েও ছিল। ১৭৮৩ তে পিটারের মৃত্যু হয়। সুজানা এক ইংরেজ টমাস ইয়েটস-এর প্রেমে পড়েন। ১৭৯৫ সালের ৩০ মার্চ কলকাতার অ্যাংলিকান চার্চে তাঁদের বিবাহ হয়। সাথে সাথে পুত্র কন্যা সমেত সুজানা খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। এই ছিল সুজানার দুটি বৈধ বিবাহ। কিন্তু লোকে বলে মাত্র দুটি পুরুষে সন্তুষ্ট থাকার মহিলা ছিলেন না সুজানা। অসংখ্য প্রেমিক ছিল তাঁর। ওলন্দাজ, রাশিয়ান, ইংরেজ এমনকি কেউ কেউ বলেন দু -এক জন ভারতীয় থাকলেও আশ্চর্য হবার কিছু নেই। পতঙ্গরা যেমন আগুনে পুড়ে মরে, সুজানার রূপের আগুনে এসে ঝাঁপ দিত পুরুষেরা, আর সবাই কোন না কোন অদ্ভুত ভাবে মারা যেত। কেউ আত্মহত্যা করত বিষ খেয়ে,কাউকে কে যেন বুকে ছুরি বসিয়ে যেত, বাড়ি শুদ্ধু আগুনে পুড়ে মরত বা কেউ...</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">১৮০৯ সালের ১২ মে সুজানা মারা যান। তাঁকে কবর দেওয়া হয় আয়েস বাগে। কবরের উপর তৈরী করা হয় ডাচ- ভারতীয় স্থাপত্যের মিশ্রনে এক অপূর্ব সৌধ। সেখানে আজও শুয়ে আছেন সুজানা। তাঁর কবরে লেখা ""SUSANNA ANNA MARIA YEATS REBOORE VERKERK OBiIT 12 MAY ANNO 1809"। এই REBOORE VERKERK মানে তাঁর আসল পদবি হল ভারকার্ক। সাত স্বামীর সাথে সম্পর্কের পরেও সুজানা তাঁর পিতৃদত্ত পদবিকে ছাড়েন নি।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সুজানার প্রথম স্বামী পিটার ব্রুয়িসও শুয়ে আছেন চুঁচুড়ার মাটিতে। তবে সুজানার থেকে অনেক দূরে। ফুলপুকুর রোডের সেই ওলন্দাজদের কবরস্থানে। কবরখানার দক্ষিন-পশ্চিম কোণের বিশাল ওবেলিস্কটা আসলে পিটারেরই সমাধি। ভাঙাচোরা ইঁট এদিক ওদিক দাঁত বের করে আছে। তার মাঝে এখনও বিবর্ণ ফলকে দেখা যায় ৫২ বছরে মারা যাওয়া মানুষটির নাম, যারও স্ত্রীর জীবন বাস্তবিক তাঁর থেকে অনেক রঙিন ছিল।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-66861533466997436282023-12-09T14:06:00.001+05:302024-01-04T13:06:31.378+05:30রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ~ অহনা বিশ্বাস<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgEhFj6ofbp28vSZ5wgu7wG3yXIzBFC1OeMh5urdIflSWIswY4a-eayS7LvxJZFtXsEXn09C4ybliK8w20nV_7LvpqbaW2PbP5vwdmR7tSPmUWHMCFoWxc017peVPlbgUDEl_ogSPriwoYkHm4FA2VAZyNcWQTDfWtzXm3Mr1ixZXAK5DklHb-9z3yRZOM" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="400" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7310511082393764914" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgEhFj6ofbp28vSZ5wgu7wG3yXIzBFC1OeMh5urdIflSWIswY4a-eayS7LvxJZFtXsEXn09C4ybliK8w20nV_7LvpqbaW2PbP5vwdmR7tSPmUWHMCFoWxc017peVPlbgUDEl_ogSPriwoYkHm4FA2VAZyNcWQTDfWtzXm3Mr1ixZXAK5DklHb-9z3yRZOM=w374-h400" width="374" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">আজ মহামহিম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্মদিনে তাঁকে অনন্ত শ্রদ্ধা জানাই। আজ এই উপমহাদেশের সকল মেয়েদের, বিশেষত নবপর্দায় শোভিত মেয়েদের তাঁকে বড় প্রয়োজন।<br /></div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">তাঁর 'অবরোধবাসিনী' (1931) বইটি থেকে খানিক উদ্ধৃত করলাম। যদি কারুর ইচ্ছা হয় তো পড়বেন। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">'প্রায় ৪০/৪৫ বৎসর পূর্ব্বের ঘটনা-কয়েক ঘর বঙ্গীয় সম্ভ্রান্ত জমীদারের মাতা, মাসী, পিসী, কন্যা ইত্যাদি একত্রে হজ করিতে যাইতেছিলেন। তাঁহারা সংখ্যায় ২০/২৫ জন ছিলেন। তাঁহারা কলিকাতায় রেলওয়ে ষ্টেশন পৌঁছিলে পর সঙ্গের পুরুষ প্রভুগণ কার্য্যোপলক্ষে অন্যত্র গিয়াছিলেন। বেগম সাহেবাদিগকে একজন বিশ্বস্ত আত্মীয় পুরুষের হেফাজতে রাখা হয়। সে ভদ্রলোকটীকে লোকে হাজী সাহেব বলিত, আমরাও তাহাই বলিব। হাজী সাহেব বেগম সাহেবাদের ওয়েটিং রুমে বসাইতে সাহস পাইলেন না। তাঁহারা উপদেশ মতে বিবি সাহেবারা প্রত্যেক মোটা মোটা কাপড়ের বোরকা পরিয়া ষ্টেশনের প্লাটফরমে উবু হইয়া (Squat) বসিলেন; হাজী সাহেব মস্ত একটা মোটা ভারী শতরঞ্জি তাঁহাদের উপর ঢাকিয়া দিলেন। তদবস্থায় বেচারীগণ এক একটা বোচকা বা বস্তার মত দেখাইতেছিলেন। তাঁহাদিগকে ঐরূপে ঢাকিয়া রাখিয়া হাজী সাহেব এক কোণে দাঁড়াইয়া খাড়া পাহারা দিতেছিলেন। একমাত্র আল্লাহ জানেন, হজযাত্রী বিবিগণ ঐ অবস্থায় কয় ঘণ্টা অপেক্ষা করিতেছিলেন-আর ইহা কেবল আল্লাহতালারই মহিমা যে তাঁহারা দম আটকাইয়া মরেন নাই।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">ট্রেণ আসিবার সময় জনৈক ইংরাজ কর্ম্মচারীটী ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দিতে হাজী সাহেবকে বলিলেন, "মুন্সি! তোমারা আসবাব হিয়াসে হাটা লো। আভি ট্রেণ আবেগা-প্লাটফরম পর খালি আদামি রহেগা-আসবাব নেহি রহেগা।" হাজী সাহেব যোড়হস্তে বলিলেন, "হুজুর, ঐ সব আসবাব নাহি-আওরত হায়।" কর্ম্মচারিটী পুনরায় একটা "বস্তায়" জুতার ঠোকর মারিয়া বলিলেন, "হা, হা-এই সব আসবাব হাটা লো।" বিবিরা পর্দ্দার অনুরোধে জুতার গুতা খাইয়াও টু শব্দটী করেন নাই।'</div><div dir="auto">******</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">'আমরা বহু কাল হইতে অবরোধ থাকিয়া থাকিয়া অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছি সুতরাং অবরোধের বিরুদ্ধে বলিবার আমাদের-বিশেষতঃ আমার কিছুই নাই। মেছোণীকে যদি জিজ্ঞাসা করা যায় যে, "পচা মাছের দুর্গন্ধ ভাল না মন্দ?"-সে কি উত্তর দিবে?</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এস্থলে আমাদের ব্যক্তিগত কয়েকটি ঘটনার বর্ণনা পাঠিকা ভগিনীদেরকে উপহার দিব-আশা করি, তাঁহাদের ভাল লাগিবে।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এস্থলে বলিয়া রাখা আবশ্যক যে গোটা ভারতবর্ষে কুলবালাদের অবরোধ কেবল পুরুষের বিরুদ্ধে নহে, মেয়েমানুষদের বিরুদ্ধেও। অবিবাহিতা বালিকাদিগকে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া এবং বাড়ীর চাকরাণী ব্যতীত অপর কোন স্ত্রীলোকে দেখিতে পায় না।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">বিবাহিতা নারীগণও বাজীকর-ভানুমতী ইত্যাদি তামাসাওয়ালী স্ত্রীলোকদের বিরুদ্ধে পর্দ্দা করিয়া থাকেন। যিনি যত বেশী পর্দ্দা করিয়া গৃহকোণে যত বেশী পেঁচকের মত লুকাইয়া থাকিতে পারেন, তিনিই তত বেশী শরীফ।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শহরবাসিনী বিবিরাও মিশনারী মেমদের দেখিলে ছুটাছুটি করিয়া পলায়ন করেন। মেম ত মেম-সাড়ী পরিহিতা খ্রীষ্টান বা বাঙ্গালী স্ত্রীলোক দেখিলেও তাঁহারা কামরায় গিয়া অর্গল বন্ধ করেন।'</div><div dir="auto">******</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">'কবির ভাষায় বলিতে ইচ্ছা করেঃ</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">"কাব্য উপন্যাস নহে, এ মম জীবন,</div><div dir="auto">নাট্যশালা নহে, ইহা প্রকৃত ভবন!"</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">প্রায় তিন বৎসরের ঘটনা, আমাদের প্রথম মোটর বাস প্রস্তুত হইল। পূর্ব্বদিন আমাদের স্কুলের জনৈকা শিয়িত্রী, মেম সাহেবা মিস্ত্রীখানায় গিয়া বাস দেখিয়া আসিয়া সংবাদ দিলেন যে, মোটর ভয়ানক অন্ধকার···"না বাবা! আমি কখনও মোটরে যা'ব না।" বাস আসিয়া পৌঁছিলে দেখা গেল,—বাসের পশ্চাতের দ্বারের উপর সামান্য একটু জাল আছে এবং সম্মুখ দিকে ও উপরে একটু জাল আছে। এই তিন ইঞ্চি চওড়া ও দেড় ফুট লম্বা জাল দুই টুকরা না থাকিলে বাসখানাকে সম্পূর্ণ "এয়ার টাইট" বলা যাইতে পারিত।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">প্রথম দিন ছাত্রীদের নূতন মোটরে বাড়ী পৌঁছান হইল। চাকরাণী ফিরিয়া আসিয়া সংবাদ দিল-গাড়ী বড্ড গরম হয়,—মেয়েরা বাড়ী যাইবার পথে অস্থির হইয়াছিল। কেহ কেহ বমি করিযাছিল। ছোট মেয়েরা অন্ধকারে ভয় পাইয়া কাঁদিয়াছিল।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">দ্বিতীয় দিন ছাত্রী আনাইবার জন্য মোটর পাঠাইবার সময় উপরোক্তা মেম সাহেবা মোটরের দ্বারের খড়খড়িটা নামাইয়া দিয়া একটা রঙীন কাপড়ের পর্দ্দা ঝুলাইয়া দিলেন। তথাপি ছাত্রীগণ স্কুলে আসিলে দেখা গেল,—দুই তিন জন অজ্ঞান হইয়াছে, দুই চারিজনে বমি করিয়াছে, কয়েক জনের মাথা ধরিয়াছে, ইত্যাদি। অপরাহ্নে মেম সাহেবা বাসের দুই পাশের দুইটী কড়খড়ি নামাইয়া দুই খণ্ড কাপড়ের পর্দ্দা দিলেন। এইরূপে তাহাদের বাড়ী পাঠাইয়া দেওয়া গেল।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সেই দিন সন্ধ্যায় আমার এক পুরাতন বন্ধু মিসেস মুখার্জ্জি আমার সহিত দেখা করিতে আসিলেন। স্কুলের বিবিধ উন্নতির সংবাদে আনন্দ প্রকাশ করিয়া বলিলেন,—"আপনাদের মোটরবাস ত বেশ সুন্দর হয়েছে। প্রথমে রাস্তায় দেখে আমি মনে করেছি যে আলমারী যাচ্ছে না কি-চারিদিকে একেবারে বন্ধ, তাই বড় আলমারী বলে ভ্রম হয়! আমার ভাইপো এসে বলেল, "ও পিসীমা! দেখ, সে Moving Black Hole (চলন্ত অন্ধকূপ) যাচ্ছে।" তাই ত, ওর ভিতর মেয়েরা বসে কি করে?"</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">তৃতীয় দিন অপরাহ্নে চারি পাঁচ জন ছাত্রীর মাতা দেখা করিতে আসিয়া বলিলেন, "আপকা মোটর ত খোদা কা পানাহ! আপ লাড়কীয়োঁ কো জীতে জী ক্ববর মে ভয় রহি হয়ঁ।" আমি নিতান্ত অসহায়ভাবে বলিলাম, "কি করি, এরূপ না হইলে ত আপনারাই বলিতেন, "বেপর্দ্দা গাড়ী।" তাঁহারা অত্যন্ত উত্তেজিত হইয়া বলিলেন, 'তব কেয়া আপন জান মারকে পর্দ্দা করেঙ্গী? কালসে হামারী লাড়কীয়াঁ স্ড়্গুল নেহী আয়েঙ্গী।" সে দিনও দুই তিনটী বালিকা অজ্ঞান হইয়াছিল। প্রত্যেক বাড়ী হইতে চাকরাণীর মারফতে ফরিয়াদ আসিয়াছিল যে, তাহার আর মোটর বাসে আসিবে না।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সন্ধ্যার পর চারিখানা ঠিকানারহিত ডাকের চিঠি পাইলাম। ইংরাজী চিঠির লেখক স্বাক্ষর করিয়াছেন, "Muslim Brotherhood" বাকী তিনখানা উর্দ্দু ছিল-দুইখানা বেনামী আর চতুর্থখানায় পাঁচজনের স্বাক্ষর ছিল। সকল পত্রেরই বিষয় একই-সকলেই দয়া করিয়া আমাদের স্কুলের কল্যাণ কামনায় লিখিয়াছেন যে, মোটরের দুই পার্শ্বে যে পর্দ্দা দেওয়া হইয়াছে, তাহা বাতাসে উড়িয়া গাড়ী বে-পর্দ্দা করে। যদি আগামীকল্য পর্য্যন্ত মোটরে ভাল পর্দ্দার ব্যবস্থা না করা যায়, তবে তাঁহারা তাতোধিক দয়া করিয়া "খবিছ" "পলীদ" প্রভৃতি উর্দ্দু দৈনিক পত্রিকায় স্কুলের কুৎসা রটনা করিবেন এবং দেখিয়া লইবেন, এরূপ বে-পর্দ্দা গাড়ীতে কি করিয়া মেয়েরা আসে।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এ তো ভারী বিপদ,—</div><div dir="auto">"না ধরিলে রাজা বধে,—ধরিলে ভুজঙ্গ!"</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">রাজার আদেশে এমন করিয়া আর কেহ বোধ হয় জীবন্ত সাপ ধরে নাই! অবরোধ-বন্দিনীদের পক্ষে বলিতে ইচ্ছা করিল,—</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">"কেন আসিলাম হায়! এ পোড়া সংসারে,</div><div dir="auto">কেন জন্ম লভিলাম পর্দ্দা-নশীন ঘরে!"</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-49350393185280075952023-12-01T18:22:00.001+05:302024-01-04T13:07:04.430+05:30পুরনো লেত্তি পুরনো লাট্টু ~ সংকলন সরকার<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhLXk2on-wlYXXAeG6N5DKuKZ_--yIafZSWV66Y4WOI-zT6L-BUwzE_jvlTXuVpwocGWB3uxSJpZxAlXUR_7DhXVC55FefRtnNiHPCJxKNoy0_yzceFQT4eoEHusEfmPgBSDcKQPJA5N4DhE_swjFSdDixpVnUdgY5DnLshYRGgiivwG8Y6O2yZNtPTJj4" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="225" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7307608298158884674" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEhLXk2on-wlYXXAeG6N5DKuKZ_--yIafZSWV66Y4WOI-zT6L-BUwzE_jvlTXuVpwocGWB3uxSJpZxAlXUR_7DhXVC55FefRtnNiHPCJxKNoy0_yzceFQT4eoEHusEfmPgBSDcKQPJA5N4DhE_swjFSdDixpVnUdgY5DnLshYRGgiivwG8Y6O2yZNtPTJj4=w400-h225" width="400" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">সে অতি অদ্ভুত বিদঘুটে ভূতুড়ে জায়গা বাপরে বাপ! সাত সক্কাল বেলা ঘুম ভেঙ্গে গেলেই খিদে পেয়ে যায়। বরং বলা ভালো অত সকালে খিদের চোটেই ঘুম ভাঙ্গে! খিদে পেলে হাতের কাছে কিছু না থাকলে চাদর দিয়ে নিজেকে মুড়ে নিয়ে হালকা কুয়াশা ঠেলে গুটি গুটি হেঁটে পৌঁছে যাও থানার পাশে পাঁড়েজীর চায়ের দোকানে। শীত এখানে ভালই পড়ে গেছে। এই সকাল সাড়ে ছটার সময় পাঁড়েজীর দোকানে গরমা গরম চা ছাড়া আর কিছুই গরম পাবে না। কিন্তু খিদে পেয়ে গেছে যে...! একটু মাথা ঘোরালে দেখবে দোকানে মোটে তিন রকমের বিস্কুট আছে, একটা কাচের ঘেরাটোপে গুটিকয় গতকাল সন্ধ্যেবেলার বানানো শিঙ্গাড়া আর গতকাল বিকেলের বানানো জিলিপি। সারারাতের ঠাণ্ডা খেয়ে সে সব খাদ্যবস্তুর গায়ে জমাট ডালডার সাদা পরতের কারুকার্য্য! প্রথম দর্শনে মনে মনে তলপেট থেকে একটা কাল্পনিক চোঁয়াঢেঁকুর খাদ্যনালী বেয়ে উঠে আলজিভের তলায় ঘুরপাক খেতেই পারে। হাজার হোক বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার বায়ু বাংলার ফল খাওয়া পেট তো! কিন্তু বাস্তব ঘটনা আরো খারাপ। সেটা হল পেটের বেসমেন্ট থেকে পেটের টপ ফ্লোর অবধি এখন কম করে খান কুড়ি ছুঁচো দৌড়চ্ছে! তাই আর ডালডার আর্টওয়ার্ক না দেখে ঐ বাসি শিঙ্গাড়া আর জিলিপিই সই। চোখ কান বুজে খেয়েই নেওয়া যাক আপাতত। পরের কেস নাহয় পরে সাল্টে নেওয়া যাবেখন! </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">পাঁড়েজীর লোক এখন সবে খোসা সমেত আলুর তরকারীর মালমশলা কেটে বীর বিক্রমে আটা মাখতে লেগেছে। গরমাগরম পুরি তরকারী পেতে পেতে কমকরে আরো ঘন্টা দেড়েক দেরী। সকাল আটটা সোয়া আটটার আগে কোনো মতেই নয়! এখন দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করলে ছুঁচোগুলো সংখ্যায় বেড়ে খান চল্লিশেক হয়ে গিয়ে ছুটোছুটি করে পেট ফুটো করে দিতে পারে। অতএব ছুঁচোগুলোকে ঐ আগের দিনের গোটাচারেক করে ডালডা জমা ঠাণ্ডা বাসি শিঙ্গাড়া জিলিপি খাইয়েই ঠাণ্ডা করে দাও আপাতত। তারপর ছোটো কাচের গেলাসে গরম চা দু' হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে আয়েশ করে ছোটো ছোটো চুমুকে শেষ করে আবার গুটি গুটি হেঁটে ফিরে আসা যাক নির্ভেজাল ভূতেদের আড্ডার জন্য বিখ্যাত লালকোঠিতে। এবার এটা ওটা খুটখাট করতে করতে সকালের কাজকম্মো গুলো সেরে নেওয়ার পালা, আমাদের কাজ বলতে সামান্যই। দাঁতমাজা, দাড়িছাঁটা বড়বাইরে ইত্যাদি বাথরুমের কাজ মূলত। এ ছাড়া বেড়াতে এসে তোমার আর কাজ কী! </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">অদ্ভুত রকমের রুক্ষ অথচ সতেজ প্রকৃতি শিমুলতলায়। এখানকার লোকজনদের জীবনযাপন আরো অদ্ভুত... কিছুটা সপাট সতেজ কর্মঠ সময় দেখার পরেই দেখতে পাবে, এখানে আর কোনো কাজ নেই। সব কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে... অতএব আবার যেদিকে তাকাবে দেখবে আলস্য বাবাজী সবখানে চাদর বিছিয়ে ঠ্যাং ছড়িয়ে বসে আছে। ভাবখানা এই... আয় আয়, আয় এবার একটু চুপটি করে আমার দালানে ঠেস দিয়ে বোস দিকিনি... হুশহুশিয়ে অনেক কাজ তো করলি রে বাপ, এখন আমায় একটু শান্ত হয়ে বল তো দেখি কী কী কাজ করলি এতক্ষণ ধরে অত হৈহল্লা করে?! তো, এই সব ভাবতে ভাবতে প্রায় পৌনে আটটা বেজে যাবে, আর আমরা আবার প্রচণ্ড অবাক হয়ে খেয়াল করব যে জানলা দিয়ে একটা মন উদাস করা মৌরীফোড়োন দেওয়া খাবারের সুগন্ধ আসছে। সেটা সম্ভবত পাঁড়েজীর দোকানে আলুর তরকারী রেডি হয়ে যাওয়ার গন্ধ... এইবার এক কড়াই গরম তেলে আটার লাল লাল পুরি ভাজা হবে! এবং আরো ভয়ানক অবাক হয়ে আমরা খেয়াল করব, পেটে গোটাপাঁচেক ছুঁচো নড়াচড়া শুরু করেছে! কোলকাতা বা তৎসংলগ্ন অঞ্চলে থাকলে কিন্তু ওই একগন্ডা বাসী শিঙ্গাড়া আমাদের বিকেল পাঁচটা অবধি খিদে পাওয়া থেকে বিরত করে রাখতে পারত। কিন্তু আমরা এখন বাড়িতে নেই... তাই এবার একটা হাফ সোয়েটার চাপিয়ে গুটি গুটি আবার রওয়ানা দেব পাঁড়েজীর দোকানের উদ্দেশ্যে। এবার অবশ্য আর আমরা আর চাদর নেব না। ঝকঝকে রোদ উঠেছে যে... রোদ মাখতে মাখতে হাঁটা যাক। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">তারপর সারাদিন অল্প ঘোরাঘুরি খানিক আড্ডা, ঘুরতে ঘুরতে চলে যাওয়া ধু ধু মাঠে পড়ে থাকা বিশাল রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষের কাছে... তারপর আবার গঞ্জের দিকে ফিরে এসে ফের আমরা ঘুরঘুর করব বিশাল বিশাল গেট ওয়ালা এক কালে জাঁকিয়ে বসা, অধুনা পলেস্তরাখসা ইটের মধ্যে থেকে গাছ গজানো পরিত্যক্ত বাড়িগুলোর চারপাশে... কারো কোনো গেটের থামে মুখোমুখি বসে আছে এক জোড়া বিগতশ্রী সিমেন্টের সিংহ... যাই হোক... দুপুরে আবার একচোট ভাত ডাল দেশীমুরগীর ঝোল দিয়ে পেটপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে নেওয়ার পরে নাহয় ভাবতে বসা হবে, আমাদের এত খিদে ছিলো কোথায়!? এবং, এই বিকট পরিমাণ খাদ্যাখাদ্য পেটের কোথায় কোথায় চালান হচ্ছে শেষ অবধি?!!!! </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শীতের বেলা ঝটপট শেষ হয়ে আসার তাড়ায় থাকবে। এখানে এখনো লো ভোল্টেজ থাকে। টিমটিমে বাল্বের আলোয় দিনের শেষে সন্ধ্যাকে বরণ করে নেওয়া হবে... এটাই এখানকার দস্তুর। ঝকঝকে তকতকে কোনো ব্যাপার কোত্থাও নেই, সবই ম্যাড়ম্যাড়ে আর ভয়ানক মায়াবী। মায়াবী সন্ধ্যে নেমে গেলেই দেখতে পাবে এই এলাকায় কী বেশী পরিমাণে থিকথিক করছে ভূত! </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এলাকার সমস্ত গহন অন্ধকার জুড়ে কনসেনট্রেটেড ঘন ভূতের দল মাইল কে মাইল ছড়িয়ে পড়ে থাকা অতীত ঘিরে গিজগিজ করছে। ভূতেদের মধ্যে সাহেব বাঙালি দেহাতি সবাই রয়েছে। দু' চারটে ঘোড়া আর অ্যালসেশিয়ান কুকুরের ভূতও রয়েছে। রাতের রাস্তা জুড়ে ঘোড়া ভূতে সওয়ার সাহেব ভূত তার সঙ্গে প্রিয় পোষ্য অ্যালসেশিয়ান কুকুরের ভূতকে সঙ্গে নিয়ে এ অঞ্চলের ভুতুড়েহাওয়া খেতে বের হয়। এখানকার ভূতের দল ভীষণ নির্লিপ্ত। এরা কাউকে একেবারেই ভয় টয় কিচ্ছু দেখায় না! শুধু লম্বা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে! কিন্তু বেড়াতে আসা কেউ কেউ হয়ত অত পরিমাণ ভূত একসঙ্গে দেখে ফেলে ভয় পেতেই পারে! তার জন্য অবশ্য এখানকার ভূতদের কোনোভাবেই দোষ দেওয়া উচিৎ নয়! </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">রাতের টিমটিমে আলোমাখা জমাট অন্ধকারে ভূতেদের দু হাতে ঠেলে সরিয়ে সরিয়ে আমাদের এক পা দু' পা করে এগিয়ে যেতে হবে তাজা সবজীর দোকানে। সেই সবজীর দোকান থেকে আমরা ড্যামচিপ তাজা বেগুন কিনবো, পোকা এবং রাসায়নিক ছাড়া সস্তায় তাজা বড় বড় বেগুন কিনে আমরা আবার দু' হাতে ভূত সরাতে সরাতে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে যাবো পাঁড়েজীর দোকানে। পাঁড়েজী ওই তাজা বেগুনগুলোর গায়ে মাপ মতন ছুরি চালিয়ে ছ্যাঁদা করে ঢুকিয়ে দেবে চার পাঁচ কোয়া রসুন আর কাঁচা লঙ্কা। তারপর কয়লার উনোনো বেগুনগুলোকে দেশী টমেটোর সঙ্গে খুব যত্ন করে নিজের হাতে পোড়াতে পোড়াতে পাঁড়েজী আমাদের বলবে, যে এখন তো এখানে আর কিছুই নেই... তবে একসময় এই যায়গাটার একটা 'সময়' ছিলো বটে! পাঁড়েজীর সহকারীরা মুখ বন্ধ করে একের পর এক রুটি বেলে তাওয়ায় সেঁকে উনোনে চিমটে দিয়ে ফুটবলের মতন ফুলিয়ে নরম কাপড়ের ওপর রেখে পাঁজা খানেক রেডি হয়ে গেলে চিল চিৎকার করে কর্কশ গলায় বলবে - ফুলকা তৈয়ার হো গ্যায়া হ্যায়। আমরা অবাক হয়ে নিজনিজ পেটে সেই পাঁজা পাঁজা রুটি অবলীলায় পাকস্থলীর বারমুডা ট্র্যাঙ্গেলে ঠেসেঠুসে ভ্যানিশ করে দিয়ে, দু' হাত দিয়ে ঠেলেঠুলে ভূত সরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার ভূতের ডেরার লালকোঠিতে পৌঁছে যাবো। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">হ্যাঁ মশাই শিমূলতলার কথা বলছিলাম... আগামী সপ্তাহের মাঝখানে দিন চারেকের জন্যে আবার একবার বিহারের শিমূলতলা ঢুঁ মারতে চলেছি একটা ছোটোখাটো ড্রাইভে। যাওয়ার আগে ব্যাগ পত্তর গোছাতে গোছাতে হালকা করে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছিলাম তাই ছোট্টো একটা স্মৃতিনির্ভর ভূমিকা ছেড়ে রাখলাম। এরপর ফাঁকে ফোঁকরে অথবা ফিরে এসে দু একটা ছবিছাবা আপলোডিয়ে দেবোখন! আসানসোলের পর থেকে চিত্তরঞ্জন পেরিয়ে 'জামতাড়া-গোড্ডা রোড ধরে' নিলেই রাস্তার দু'পাশ পৌঁছানোর আগেই পয়সা উশুল করে দেবে! আশা করছি প্রতিবারের মতন এবারেও শিমূলতলায় পৌঁছে নেট ফেট পাবো না! আর ইয়ে, একটা ভীষণ জরুরী ইনফো দিয়ে রাখি। যাঁরা শিমূলতলা গিয়ে ইঁদারার মিনারেল মেশানো জলের বদলে প্লাস্টিকের বোতলে কেনা মিনারেল ওয়াটার খেয়ে থাকেন তাঁরা অবশ্যই অ্যান্টাসিড ক্যারি করবেন। নইলে ঐ ডালডা মাখা ঠাণ্ডা শিঙ্গাড়া জিলিপি কিন্তু আপনাদের মাথায় চড়ে চেপে বসবে। ওসব হজম করানো বা পাকস্থলীতে বারমুডা ট্র্যাঙ্গেল বানানো কেনা প্লাস্টিকের জলের বোতলের কম্মো নয়... এইবেলা সবাইকে বলে কয়ে রাখলুম!</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">পুরনো লেত্তি পুরনো লাট্টু... </div><div dir="auto">শিমুলতলা, ডিসেম্বর ২০১৭</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">An idea, like a ghost, must be spoken to a little before it will explain itself... </div><div dir="auto">...Lord Sinha's place, Shimultala. </div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-2921338958189120442023-11-23T17:21:00.001+05:302023-11-23T19:29:31.191+05:30বেলা আর বাতুল ~ অরিজিৎ গুহ<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjrNfZWlLsVRXv16fsOOwb-8TxsMptISObR4ujFQD6Csfd3Fr-A0_skUFLCtJigQtrlQzJS6Wuo8SjazoBRgKX3W8HvYymRGT6ORdNrhyLpuMJKpDdz67ydvhY2fYg8q7s7ocPqZqiy8CYfTrpijGC43LJ4Vh8BS3fb88UWqJtIgLtAmsuGQ8NP21MldkI" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="400" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7304623864242165618" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjrNfZWlLsVRXv16fsOOwb-8TxsMptISObR4ujFQD6Csfd3Fr-A0_skUFLCtJigQtrlQzJS6Wuo8SjazoBRgKX3W8HvYymRGT6ORdNrhyLpuMJKpDdz67ydvhY2fYg8q7s7ocPqZqiy8CYfTrpijGC43LJ4Vh8BS3fb88UWqJtIgLtAmsuGQ8NP21MldkI=w400-h400" width="400" /></a></p><div dir="ltr"><div class="gmail_default" style="color: black; font-family: "trebuchet ms", sans-serif;"><div class="gmail-xdj266r gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;">বেলা আর বাতুল এর গল্প শুনেছেন? অনেকেই শোনেন নি হয়ত। আসুন শুনে নি। গল্পটা আমরা শুনছি বোম্বের প্রসিদ্ধ ফরাস রোডের এক তওয়াইফের মুখ থেকে।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> বেলা ছিল রাওয়ালপান্ডির কাছের একটা গ্রামের মেয়ে। ক্লাস ফোরে পড়ত। বাবার খুব আদরের মেয়ে ছিল। এগারো বছর বয়স। আর কয়েকবছর পরেই হয়ত গ্রামেরই কোনো গরীব ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত, তারপর সুখে ঘরকন্না করতে পারত। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> কিন্তু হঠাৎ করেই কী হল, একদিন আল্লাহ হো আকবর বলে একদল লোক ঝাঁপিয়ে পড়ল বেলার বাড়ির ওপর। বেলার বাবাকে তরোয়ালের কোপে ধর থেকে মুন্ডুটা <span style="font-family: inherit;"><a style="color: #385898; font-family: inherit;" tabindex="-1"></a></span>আলাদা করে দিল, মায়ের স্তন কেটে দিল, আর আরো যেসব হিন্দু বাড়ি ছিল সব বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল। গ্রান্ট রোডের এপারে ফরাস রোডে জিন্নাহ্ সাহেব কোনোদিনও আসবেন না। শরিফ আদমিরা কখনো গ্রান্ট রোড ক্রস করেন না।কিন্তু জিন্নাহ্ সাহেব একবার যদি বেলার সাথে দেখা করতেন, তাহলে হয়ত বেলাকে বোঝাতে পারতেন বেলার সাথে যা হয়েছে তা করার অধিকার কোরাণে কোনো মুসলমানকে দেয় নি। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> বেলা এরপর পালিয়ে চলে আসে রাওয়ালপিন্ডি। সেখানে এক মুসলিম দালাল ওকে নিজের হেপাজতে করে নেয়। সেই দালালের থেকে আরেক দালাল ওকে কিনে নেয়। তারপর বেলার ঠাঁই হয় ফরাস রোডের তওয়াইফখানায়। বেলার মুখটা যদি জিন্নাহ্ সাহেব দেখতে পেতেন, তাহলে বুঝতেন 'মাসুমিয়াত কি কোই মজহব নেহি হোতি'। এক সরল নিষ্পাপ বাচ্চা মেয়ের মুখ। সেই মুখে ধর্ম লেখা নেই। সেই মুখে হিন্দুস্তান পাকিস্তান লেখা নেই। সেই মুখ হিন্দু মুসলিম শিখ ইসাই যে কারো মুখ হতে পারে। জিন্নাহ্ সাহেবের বাংলোতে যে বেলার চিৎকারের আওয়াজ পৌঁছায় না!</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> বাতুল থাকত জলন্ধরের কাছের এক গ্রামে। বাবা খুবই গরীব। মুটে মজুরি করে চালায়। অনেকগুলো দিদি আর ভাইদের নিয়ে তার মধ্যেও শান্তিতে থাকত ওরা। বাতুলদের গ্রামে 'নমাজ আদা' করার কোনো হুকুম ছিল না। বাতুল কোনোসময়ে জিন্নাহ্ সাহেবের গল্প শুনেছিল। সেই থেকে জিন্নাহ্ সাহেবকে খুব পছন্দ করত। গলায় একটা লকেট ঝুলিয়েছিল জিন্নাহ্ সাহেবের ছবি দিয়ে। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> হিন্দুস্থান পাকিস্থান ভাগ হওয়ার পর বাতুল স্লোগান দিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে। ঠিক যেরকমভাবে পাঁচ ছ'বছরের বাচ্চা কোনো কিছু না বুঝেই ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ফেলে, সেরকমই আরকি। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> সেই স্লোগান শুনে গ্রামের জাঠরা এসে প্রথমে ওর বাবার জামা কাপড় খোলাল, তারপর মুখে পেচ্ছাপ করল, তারপর বাবার বুকে ছুরি ঢুকিয়ে দিল। দিদিদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে চলে গেল আড়ালে। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> এরপর বাতুলকে যখন এক হিন্দু দালালের থেকে ফরাস রোডের ওই তওয়াইফ কিনে নিল, তখন সে দেখেছিল বাতুলের সারা গায়ে আঁচড় কামড়ের দাগ। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু তো অনেক পণ্ডিত মানুষ আর উনিও অনেক শরিফ আদমি। তাই উনিও কখনো ফরাস রোডের তওয়াইফখানায় ঢুকবেন না কোনোদিন। কাজেই বাতুলকেও দেখতে পাবেন না কোনোদিন। যদি দেখতে পেতেন, তাহলে হয়ত উনি বোঝাতে পারতেন যখন বাতুলের সাথে এরকম হচ্ছিল, তখন ঋকবেদ স্তম্ভিত হয়ে গেছিল। গুরু গ্রন্থসাহিব বোবা হয়ে গেছিল। কারণ দুই কিতাবের কোথাও যে লেখা ছিল না বাতুলের সাথে এরকম ব্যবহার করার কথা।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> নেহেরুজি'র বাংলোতে যে বাতুলের চিৎকারের আওয়াজ পৌঁছায় নি। নেহেরু জি কী করবেন!</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> কৃষণ চন্দর যখন 'এক তওয়াইফ কি খৎ জিন্নাহ্ সাব অউর নেহেরু জি কো' লিখেছেন তার কিছু আগেই আজাদি এসেছে। কিন্তু তাও বারেবারে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করে গেছেন কৃষণ চন্দর।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> 'মহালক্সমী কা পুল' গল্পে মহালক্সমী পুলের পাশে বসবাসকারী নিম্নবিত্ত শ্রমিক বস্তির যে ছবি এঁকেছেন তার প্রতিটা ছত্রে লুকিয়ে রয়েছে ভদ্র সভ্য উচ্চবিত্তদের প্রতি বিদ্রুপ। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> পুলের পাশে মিল মজদুররা তাদের নিজেদের নিজেদের চওলে থাকে। পুলের ওপর ওদের স্ত্রীদের শাড়ি শুকোতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছটা শাড়ি শুকোতে দেওয়া হয়েছে। শান্তাবাঈ এর ফ্যাকাসে বাদামী রঙের শাড়ির পাশে যে শাড়িটা ঝুলছে শুকোতে দেওয়ার জন্য, সেই শাড়িটাও পাঠকদের চোখে ফ্যাকাসে বাদামী রঙই মনে হবে। কিন্তু কথক, যিনি একজন পয়ষট্টি টাকা মাইনের ক্লাস টেন পাস করা ক্লার্ক, যখন থেকে শাড়িটা দেখেছেন তখন সেটার রঙ ছিল গাঢ় বাদামী। পুরনো হয়ে রঙ হাল্কা হয়ে হয়ে সেটা ফ্যাকাসি বাদামী রঙে পর্যবসিত হয়েছে। তার পাশে রয়েছে মিল থেকে বহিষ্কৃত শ্রমিক ঝাব্বুর স্ত্রী লোড়ির শাড়ি। লোড়ির শাড়ির পাশে ঝুলছে মঞ্জুলার শাড়ি। সব থেকে ঝকমকে শাড়ি ওটা। কারণ মঞ্জুলার কয়েকমার আগে বিয়ে হয়েছে আর বিয়ের শাড়িটাই ঝুলছে। মঞ্জুলার স্বামী কিন্তু অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। মঞ্জুলার পাশে শেষ যে শাড়িটা ঝুলছিল সেটা ছিল বুড়ি মা'র। যার ছেলে সিতু এখন জেলে। সরকার থেকে যখন হরতাল বে আইনি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন সিতুরা জুলুস বের করেছিল হরতালের সমর্থনে। পুলিশ থেকে মহালক্সমি পুলের পাশের চওলে গুলিবৃষ্টি চলে। সবাই ভয় পেয়ে নিজের নিজের চওলের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে যখন সব শান্ত হয়ে যায় তখন দেখা যায় সিতুর মা গুলি খেয়ে মরে পড়ে আছে। বুড়ি মানুষ, হয়ত তাড়াহুড়ো করে নিজের খোপরে ঢুকতে পারে নি। সেই লাল শাড়িটা এখন পরে সিতুর বৌ। সিতু হরতাল করার জন্য জেলে রয়েছে।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> একটু পরই মহালক্সমী পুলের ওপর দিয়ে 'ওয়াজির এ আজম' মানে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যাবে। প্রধানমন্ত্রীর চোখেও সেই ঝোলানো শাড়িগুলো চোখে পড়বে না। যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যায় ততক্ষণ ধরে সেই শান্তাবাঈদের কলোনির গল্প শুনিয়েছেন কৃষণ চন্দর। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> যুবতী শান্তাবাঈ, বৃদ্ধা জীবনা বাঈ বা কথকের মধ্যবয়সী স্ত্রী সবার গল্প মোটামুটি একইরকমের। প্রতি পদে অর্থের হাহাকার, ছোট্ট ছোট্ট সাধ আহ্লাদ আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ না হওয়ায় জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা আর তারই সাথে কুসংস্কার, সব যেন একসাথে হাত ধরাধরি করে রয়েছে। সবার শাড়িগুলো একসাথে যখন পাশাপাশি উড়তে থাকে তখন প্রত্যেকের শাড়ির রঙগুলো আর আলাদা করে চেনা যায় না।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> প্রত্যেকের গল্প বলতে বলতেই কখন যে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় চলে যায় বোঝাও যায় না। আসলে কনভয় তো এই মহালক্সমী পুলের পাশে দাঁড়াবে না, প্রধানমন্ত্রীর অত ঠেকাও পড়ে নি। কিন্তু ওই ছ'টা শাড়ি যেন ভারতবর্ষের লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতিদিনের গল্প বলে যায়।</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> ১৯৩৬ সালে যখন প্রোগ্রেসিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয় প্রেমচন্দকে সভাপতি আর সাজ্জাদ জাহিরকে সম্পাদক করে, তখন সেই সংগঠন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইকবাল আর নজরুলের আশীর্বাদ ধন্য হয়ে ওঠে। উর্দু সাহিত্য সেই সময়ে মোটামুটি আগের অবাস্তব আবেগের জায়গা থেকে অনেকটাই সরে এসেছে বাস্তবের মাটিতে। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> প্রথম সম্মেলনে আহম্মদ আলি, আলি আব্বাস হুসায়নী, মুলকরাজ আনন্দ, খাজা আহমেদ আব্বাস, শওকত সিদ্দিকে, গোলাম আব্বাস, আহমেদ নাদিম কাশমী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য নাম হলেও চারজন যারা পরবর্তীকালে উর্দু সাহিত্যের স্তম্ভে পরিণত হয়েছিলেন তারা হলেন সাদাত হাসান মান্টো, রাজিন্দার সিং বেদি, ইসমাত চুঘতাই আর কৃষণ চন্দর। বলা যায় এই চারজন উর্দু সাহিত্যকে শাসন করেছেন। তবে বাকি তিনজন যেমন চরিত্রদের মনস্তাত্ত্বিক জগৎ নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা করেছেন কৃষণ চন্দর আবার চিরকাল সাহিত্য রচনা করে গেছেন শোষিত শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে। প্রোগ্রেসিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের পতাকা সার্থক ভাবে বয়ে নিয়ে গেছেন। মান্টোর মতই দাঙ্গা আর দেশভাগকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> 'গাদ্দার' গল্পে বৃদ্ধ বুলাকি শাহ চারিদিকের শয়ে শয়ে পড়ে থাকা লাশের মধ্যে হাতড়ে হাতড়ে কী যেন খুঁজতে থাকে। বৈজনাথের কন্ঠে চমকে উঠে বলে 'আমি মুসলমান। আমাকে মেরো না।' জবাবে বৈজনাথ যখন বলে মুসলমান হলে এখানেই তোর লাশ ফেলে দেব, তখন উত্তরে বুলাকি শাহ জানায় আমি বুলাকি শাহ। বৈজনাথ এবার আশ্চর্য হয়। গ্রামের সব থেকে বড় মহাজন বুলাকি শাহ! বৈজনাথ জিজ্ঞাসা করে এখানে কী করছ? ততক্ষণে বুলাকি শাহ ভয় কাটিয়ে উঠেছে। বলে সব তো মরে পড়ে রয়েছে এখানে। আমার পরিবারেও কেউ বেঁচে নেই, সম্পত্তিও সব লুঠপাট হয়ে গেছে। শুধু মেয়েটা বেঁচে রয়েছে। তা মেয়েটাকে তো বিয়ে দিতে হবে। যা পাচ্চি এখান থেকে সোনাদানা তাই হাতিয়ে নিচ্ছি পকেট থেকে। তুমিও এসো না। যা পাব ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে নেব।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> স্তম্ভিত হয়ে যায় বৈজনাথ। মানুষ কোথায় নামতে পারে ভেবে! বুলাকি শাহ বলে মেয়ের বিয়ের যৌতুক ছাড়া কেউ তো মেয়েকে বিয়ে করবে না।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> দেশভাগ আর দাঙ্গার নানারূপ দেখেছেন কৃষণ চন্দর। বরাবর গল্প বলেছেন নিম্নবিত্ত খেটে খাওয়া গরীব মানুষের। তাঁদের দুঃখ দুর্দশা, লড়াই করা হেরে যাওয়া এবং আবার জানকবুল লড়াই এর জন্য উঠে পড়া, এই গল্পই শুনিয়ে গেছেন। তেলেঙ্গানা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে 'রোটি কাপড়া মকান' এক অদ্ভুত গল্প। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> খাজা আহমেদ আব্বাস যখন সিনেমা করবেন বলে ঠিক করলেন, তখন বাংলার বিজন ভট্টাচার্যের 'নবান্ন' আর 'জবানবন্দি' এই দুটো নাটকের গল্প শোনা হয়ে গেছে। ৪৩ এর মন্বন্তরকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন আব্বাস। এরপর কৃষণ চন্দরের 'অন্নদাতা' গল্পে পড়ে ঠিক করলেন তিনটে গল্পকে একসাথে নিয়ে একটা সিনেমা বানাবেন বাংলার ৪৩ এর মন্বন্তরের প্রেক্ষাপটে।</div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> যথা সময়ে 'ধরতি কে লাল' সিনেমা তৈরি হল আইপিটিএ র সব রথী মহারথীর সাহায্যে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিও পেল সেই সিনেমা। এটাই একমাত্র সিনেমা যা আইপিটিএর নিজস্ব প্রযোজনায় তৈরি। সেখান থেকেই ফিল্ম জগতের সাথে যোগাযোগ তৈরি হয় কৃষণ চন্দরের। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> এক সময়ে সিনেমার স্ক্রিপ্ট আর গল্প লেখার পেছনে এত সময় দিতে হয়েছিল যে তাঁর নিজের গল্পে সেই প্রভাব পড়েছিল। গল্পের ধার গেছিল কমে। </div><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> নীহাররঞ্জন গুপ্তের লেখা 'উত্তর ফাল্গুনি' হিন্দি স্ক্রিপ্ট 'মমতা' কৃষণ চন্দরেরই লেখা। এছাড়াও অসিত সেনের আরেকটি সিনেমা 'সরাফত' যেখানে ধর্মেন্দ্র হিরো ছিল তার গল্পও কৃষণ চন্দরের। কিন্তু তিনি নিজেও বুঝতে পারছিলেন যে সিনেমার জগতে থাকলে তার গল্পের মান নেমে আসছে। অবশেষে ছেড়ে দিলেন সিনেমার জগত। ১৯৭৭ এ যখন মৃত্যু হয় তখন হাসপাতালে তার বেডের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা সিদ্দিকি। লিখতে শুরু করেছিলেন নতুন একটি গল্প। কয়েক লাইন লেখার পরই ঢলে পড়েন মৃত্যুর মুখে। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে নিভে যায় উর্দু সাহিত্যের এক স্তম্ভ কৃষণ চন্দরের জীবন দীপ। </div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> ১৯৭৭ এ মৃত্যু হলেও একজন লেখক কতটা প্রভাবশালী হতে পারেন তার পরিচয় পাওয়া গেছে এই ২০১৯ সালেও এসে। ২০১৯ সালের এক সার্কুলার জারি করে আইসিএসসি বোর্ডের দশম শ্রেনীর সিলেবাস থেকে 'জামুন কা পেড়' বলে একটি গল্প বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। গল্পটিতে খুব তীক্ষ্ণভাবে মজার ছলে ভারতের ব্যুরোক্রেসির প্রতি, লাল ফিতের ফাঁসের প্রতি প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সরকারের সেসব পছন্দ না হওয়াই স্বাভাবিক। কাজেই আজও কৃষণ চন্দর কতটা প্রাসঙ্গিক বোঝা যায়।</div></div><div class="gmail-x11i5rnm gmail-xat24cr gmail-x1mh8g0r gmail-x1vvkbs gmail-xtlvy1s gmail-x126k92a" style="color: #050505; font-family: "Segoe UI Historic", "Segoe UI", Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 15px; margin: 0.5em 0px 0px;"><div dir="auto" style="font-family: inherit;"> ১৯১৪ সালের আজকের দিনেই অর্থাৎ ২৩ শে নভেম্বর জন্ম হয়েছিল কৃষণ চন্দরের।</div></div></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-44519404496330428892023-11-05T23:23:00.000+05:302023-11-21T18:24:07.478+05:30শান্তিগোপাল, লেনিন ও আমরা ~ শুদ্ধ্বসত্ত্ব ঘোষ<p class="mobile-photo"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgXImi2R0KtSVihXGrKDUmKp6fHCBJX8qY_CEwFagGC7LrKZIUgnGeOa-5pZVneL-Mic3qJ4Iljf0JOkykcOs5YEzcKDJbz56S-wHJsuVipOMalaEY5ln1OQH_asf6JpPsx-4bRKS02t6ZFLIa1knc34T8IGBydOTDbqevK5W7zls_26CFC5btxA2wt1K4" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="" border="0" height="203" id="BLOGGER_PHOTO_ID_7298037877337346386" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgXImi2R0KtSVihXGrKDUmKp6fHCBJX8qY_CEwFagGC7LrKZIUgnGeOa-5pZVneL-Mic3qJ4Iljf0JOkykcOs5YEzcKDJbz56S-wHJsuVipOMalaEY5ln1OQH_asf6JpPsx-4bRKS02t6ZFLIa1knc34T8IGBydOTDbqevK5W7zls_26CFC5btxA2wt1K4=w400-h203" width="400" /></a></p><div dir="auto"><div dir="auto">কালীপূজো এসে গেল। এমন সময় রেল কলোনীর বিশাল মাঠ ঘিরে ফেলা হত। টিনের দেওয়াল। দেড় মানুষের বেশী উচ্চতা। সেই টিনের দেওয়াল যা ঘিরছে তা কিন্তু সার্কাস না। তা হল যাত্রা।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">ভেতরে ঢুকলে দেখতে পাবেন একটা মঞ্চ হচ্ছে। সেই মঞ্চের চারদিক খোলা। লম্বা দুটো স্লোপ চলে গ্যাছে সাজঘর থেকে সোজা সে মঞ্চে। মঞ্চের সামনে বসবে কনসার্ট পার্টি। তাদের জন্য একটু নীচু করে জায়গা রাখা। কখনো দু পাশেও বসতে দেখেছি তাঁদের। পিছনে সাজঘরের দিক থেকে টেপ বাজতো। সামনে, পিছনে আলোর স্ট্যান্ড বসে যাবে। আলোক নিয়ন্ত্রকের বসার ব্যবস্থা হবে ওই দুটো স্লোপের মাঝখানের অংশে। </div><div dir="auto">শুনেছি এ সব ব্যবস্থা হল যাত্রা সম্রাট স্বপনকুমারের করা। আধুনিক করেছেন তিনি। রবি ঠাকুরের বাড়ির মেয়ে তাঁর জ্যাঠাইমা। মেজদা, বিজন মুখোপাধ্যায়। শিশির ভাদুড়ির সাক্ষাৎ ছাত্র। তিনি, স্বপনকুমার ছিলেন সনৎ, হলেন স্বপন যাত্রায়। বাবা, দাদার মৃত্যুর পরে, দিদির একমাত্র ছেলে দাঙ্গায় মারা যাবার পরে, বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে এসেছিলেন যাত্রায়। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সন্ধ্যা নামবে একদিন মফস্বলে, শীত আসার আগের সন্ধ্যা। দলে দলে লোক যাত্রার সিজন টিকিট কেটেছে। একেক কোম্পানি আসবে, একেক যাত্রা গাইবে। নট্ট থেকে শুরু করে রয়্যাল বীণাপাণি। সে আমলে শান্তিগোপাল অপেরাও। শান্তিগোপালে আসার আগে বলে নিই আমার ভয় পাওয়ার কথা। মঞ্চে দেখলাম তেমন এক সন্ধ্যায় এক খোঁড়া বাদশার জন্য থালায় সাজিয়ে কাটা মুন্ডু নিয়ে আসছে এক পার্ষদ। অবিকল যেমন দেখতে অভিনেতা একটু আগে খুব লড়ছিলেন বাদশার সঙ্গে তাঁর কাটা মুন্ডু। ভয় পাবো না? তখন কি ছাই জানি ও মুন্ডু মাটির? ও মুন্ডু কৃষ্ণনগরের ফুল-ফলের মতন? তবে বাদশাটি শান্তিগোপাল না, তিনি শিবদাস।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শান্তিগোপাল-ও ভয় দেখালেন। হিটলার-এ। আরেকটু বড় তখন। মেদিনীপুড়, জকপুর, খুড়দা কত কত জায়দায় যাত্রা হয়। বাবার সঙ্গে সঙ্গে, সোনা কাকু, দাদাভাই-এর সঙ্গে চলে যাই। রাত জেগে যাত্রা। দেখতে দেখতে ঘুমিয়েও পড়েছি। আবার আতঙ্কের মধ্যে জেগে থেকেছি সারারাত। স্পার্টাকাসে কালো লোকটা সেই! সেই যে যে স্পার্টাকাসের মতন দাস ছিল, গ্ল্যাডিয়েটর ছিল, যে এরিনায় স্পার্টাকাসকে খুন করতে চেয়েছিল, স্পার্টাকাসের বউ-কে কামনা করেছিল, সেই লোকটা কি কালো, কি ভয় ধরাণো ছিল। অজিতেশ-কে দেখছি আসলে। সেই হাসিটা? কি ক্রুর, কি ভয়ানক! মঞ্চে এসে দাঁড়ালেই মনে হত এই শয়তানটা কেন মরে না? </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">কিন্তু যখন স্পার্টাকাস ওকে মারলো না, যখন ও স্পার্টাকাসের বন্ধু হল, যখন ওরা একসঙ্গে বিদ্রোহের কথা বললো, করলো- তখন মন ভরে গেছিলো। মনে হয়েছিল এবারে কেউ স্পার্টাকাসকে হারাতেই পারবে না। ছাই তখন বুঝি শ্রেণী সংগ্রাম কি? সশস্ত্র বিপ্লবের কত কত পথ ও পন্থা? বামের কত মত? যত মত তত পথ না? খুনোখুনি হয়ে যায় বামের বামত্ব মাপতে? কিচ্ছু জানি না এসব। শুধু জানি মালিকেরা বড় ভয়ানক। নিগ্রো মানুষটার চেয়েও। তারা শয়তানের-ও শয়তান। তারা সব লুঠে নেয়। কেমন করে জানলাম? শান্তিগোপাল দেখে। সুকান্ত-র শোন রে মালিক, শোন রে মজুতদার পড়ে। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">সুকান্তর কবিতা, শান্তিগোপালের যাত্রা, সুরেশবাবুর পাপেট থিয়েটার-এর একটি মোরগের কাহিনী সব মিলে মিশে যেত সেই সব শীত সন্ধ্যার অন্তরে অন্তরে। মানুষ গর্জন করতো। মানুষের গর্জন যারা শোনেনি তারা জানে না কেমন ভীষণ সে গর্জন। সমুদ্র-ও শিশু তার কাছে। মহাসমুদ্রের নাদ সে। আমি আমার দুই থেকে বারো অব্দি মজে ছিলাম যাত্রায়। থিয়েটার অল্প স্বল্প এসেছে মফস্বলে। মাচা বেঁধে খুব বেশী দল করতো না ওখানে। ডিহি কলকেতার বাবু মহলের যাত্রা দেখে ফাত্রা লোকের দলে পড়তাম আমরা। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">মফস্বলের-গ্রামের মানুষরা। আমরা সেই ফাত্রা লোক, যারা না খাটলে মাঠ থেকে ধান ওঠে না, যারা না খাটলে কল-কারখানা চলে না। বাবুদের ফুটুনি তিন মিনিটে উবে যায়। আমরা যারা অপমানিত হতাম বাবুদের হাতে, যারা বাবুদের ফাত্রা লোক তারা যাত্রাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতাম।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শান্তিগোপাল, পোষাকি নাম বীরেন্দ্রনারায়ণ পাল। বাবা প্রেসিডেন্সির ছাত্র, দাদা জজ। ও বাড়ির ছেলে যাত্রা করে না। তিনি করেছিলেন। প্রথমে পাড়ার নাটক, তারপরে গ্রুপ থিয়েটার উদয়াচল, তারপরে একদিন যাত্রা দেখতে দেখতে যাত্রা। বাগবাজারের মদনমোহনতলায় শুরু হত সিজন। সেখানে অমর ঘোষ পরিচালক হয়েছিলেন। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শান্তিগোপাল, রস্ট্রাম ব্যবহার শুরু করলেন। মাইক্রোফোন এল। চিৎকার করেই যাতে শুধু শোনাতে না হয়। নেপথ্যে টেপরেকর্ডার থেকে শব্দ-প্রক্ষেপণ। এ সব এলো হিটলার-এ। শান্তিগোপাল বলতেন পার্টি ইত্যাদি নয় মানুষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বাকী সব নিয়ে সচেতন করছেন।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">আসলে আমরা ভুলেই গিয়েছি নবান্ন, নবনাট্য বাংলার মাঠেঘাটে যত না ঘুরেছে তার চেয়ে বেশী ঘুরেছে যাত্রাপালা। ভক্তিরসের বন্যায় গিরিশেরা পেশাদারী রঙ্গমঞ্চ চুবোচ্ছেন, কারণ যাত্রাতেও ঐ চলছে। একা মুকুন্দদাস বাদ দিলে কেউ আর নীলদর্পণ-এর লড়াইতে ছিল না। যাত্রার দর্শক, গ্রাম-মফস্বলের মানুষই এসেছে সেকালের থিয়েটারে দর্শক হয়ে। একালের দর্শকভেদ আগেই বোধহয় হতে থেকেছে। শহুরে বাবুরা যাকে নাট্য বলবেন, বাকীদের তাকেই নাট্য বলতে হবে। তারপরেও জনগণের কাছাকাছি কিন্তু একমাত্র যাত্রা। জন-রাজনীতিরও কাছাকাছি।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">শান্তিগোপাল বুঝেছিলেন। শুধু উৎপল দত্তের কথা আমরা বলি রাজনীতি প্রসঙ্গে। তাঁর কথা বলি না। শান্তিরাম, শান্তিরঞ্জন পেরিয়ে অবশেষে তিনি শান্তিগোপাল হয়েছেন। মম্মথ রায় গলার মালা খুলে দিয়েছেন। গ্রাম বাংলার মাঠে মাঠে রাতের পর রাত ইতিহাস পড়িয়েছেন শান্তিগোপাল। বাংলার এক অনন্য ইতিহাসের শিক্ষক। লোকে বলতো কমিউনিস্ট দালাল। গ্রামের কংগ্রেস গুন্ডা, জোতদার, দালালরা বলতো। লেনিন করে। রাশিয়া যায়। হিটলার করে। আবার আমি সুভাষ-ও করে। মাও সে তুং করে। ব্যাটা নকশাল। কত কি! </div><div dir="auto">শুনেছি মারার জন্য মুখিয়ে থাকতো তারা। শুনেছি কৃষকদের দল হাতে কাস্তে নিয়ে যাত্রা দেখতে আসতো। দেখেছি পাড়ার কংগ্রেসের ছোট নেতা তড়পে গেলে পালটা রুখে দাঁড়াতে রেলের কর্মী মজদুরদের। যারা ইউনিয়নের লোক। যারা লাল। বা অতিলাল। শান্তিগোপাল আসবেন-ই। শান্তিগোপাল এসেছিলেন। আমাদের ইতিহাস পড়াতেন। লোকশিক্ষা দিতেন। এবং একটা অনন্য শিক্ষা দিতেন। </div><div dir="auto">আজ ডিহি কলকেতার বাবুপাড়ার থেটারে এসে দেখি 'লোকে কি খাবে' তা নিয়ে প্রচুর গবেষণা চলে। আমরা যারা গ্রামে-মফস্বলে শান্তিগোপালের একনিষ্ঠ দর্শক, বোকা এবং ফাত্রা লোক- তারা জানি কে কি খাবে ভেবে রান্না হবে না। এ থ্যাটার হোটেল না, কি স্বাস্থ্যকর, কি দরকারী, কি তারপরেও সুস্বাদু তাই রান্না করা দরকার। যদি রাঁধিয়ের দম থাকে তাহলে পাত পেড়ে খাবে পাড়া-বেপাড়ার লোক। না থাকলে উঠোন কেন ব্যাঁকা তা নিয়ে প্রচুর গবেষণা করতে হবে, নাচা হবে না। </div><div dir="auto">শান্তিগোপাল, আমাদের শিক্ষক হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন। চাষাভূষো, মজুর-টজুর বিধিবদ্ধ ফাত্রা লোককে শিক্ষণীয় যাত্রা দেখিয়েছেন হাজারে হাজারে বসিয়ে। হ্যাঁ, তারাও দেখে গিয়েছে। সেলাম করে গিয়েছে, আর গর্জনে উত্তাল হয়েছে। মহাসমুদ্রের মহানাদে। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">ঋত্বিক যখন 'আমার লেনিন' করছেন তখন 'লেনিন লেনিন লেনিন লেনিন/ নূতন আশা নূতন দিন' গানের যুদ্ধতৎপরতায় চরিত্র আর ক্যামেরা এগিয়ে যায় যাত্রার মঞ্চের দিকে। 'লেনিন, কথা বলছেন, বোঝাচ্ছেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই গ্রাম্য রাজ্যের মাঝে'। নেপথ্যে ভয়েস ওভার বলছে। বলছে লেনিন বাংলার মঞ্চে গাইছেন ইন্টারন্যাশনাল। এই-ই সম্ভবত সেকালের রাজনৈতিক যাত্রার একমাত্র ফুটেজ। যিনি জানেন কোথায় তাকাতে হয় কোন রাজনীতি নিয়ে - তিনিই দেখেন, বাকীরা দেখি দেখি ভাণ করে মাত্র।</div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">ঋত্বিক দেখেছেন। দেখিয়েছেন। আমরা ফাত্রা লোকেরা দেখেছি। রাজনীতি ঠান্ডা ঘরে বসে, গাড়ি চড়ে ঘুরে, ভোট মাপবার বস্তু নয় জেনেছি। বাবুরা পুলিশ-গুণ্ডা দিয়ে বুথস্তরের সংগঠন গড়ে ক্যাডার বেস্ড পার্টি হবার খোয়াব দেখেছে। দেখে এখনও। নির্বাচনে হারা জেতা নয়, আদপেই বাংলার মাঠে মাঠে পুলিশ-গুণ্ডা বাদ দিয়ে কত মানুষ হাতের লাঠি কিম্বা কাস্তে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়, সেখানেই জোর, ভুলে গেছে তারা। </div><div dir="auto"><br /></div><div dir="auto">এখনো, গ্রামে-মফস্বলে, শহরে বিদ্বেষের পারদ উর্ধগামী। ক'টা সিটে জেতার আনন্দে সেদিকে কারো নজর নেই। এখন নেই শান্তিগোপাল। রাতের পর রাত জেগে, নিঃস্ব হয়ে গিয়েও মাঠে মাঠে আদর্শের বীজ বোনার চেষ্টা নেই। খিল্লি আছে শহুরে আমোদগেঁড়ে মধ্যবিত্তের 'কে তুই শান্তিগোপাল' বলে। আর আছে রাজনৈতিক ভয়াবহ শূন্যতা যেখানে যা খুশীকেই রাজনীতি বলে চালিয়ে হাততালি নেবার পালা। ঘৃণ্যকে ঘৃণা না করতে পারার অক্ষমতাই চিনিয়ে দেয় কে কোন শ্রেণীর পক্ষে, কে কোন রাজনীতির পক্ষে। স্তাবকতা আর সাপলুডোর দিনকালে শান্তিগোপালকে তাই মনে পড়ে।</div><div dir="auto"><br /></div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-85877610583308354312023-10-27T19:38:00.001+05:302023-10-27T19:38:45.961+05:30বিজয়া ~ ডাঃ বিষাণ বসু<div dir="auto"><div dir="auto">শোনো, ছাতিমের ঘ্রাণ বিষাদ অতিক্রম করে মৃত্যু অবধি স্পর্শে সক্ষম, সে কথা তো তোমাকে আগেও বলেছি। নতুন বলতে, শিউলির বৃন্ত থেকে কমলা রঙ থেঁতলে - অশ্রু আর রক্তে ভিজিয়ে - গেরুয়া করে তোলা। যদিও সময় থাকতে তোমাদের আর বলে ওঠা হয়নি - এসবের পরেও - যে সাদা পাপড়িটুকু পড়ে আছে, মাঠে - বৃন্তচ্যুত যদিও - ওই দ্যাখো, ভেসে যাচ্ছে নদীর স্রোতে - সে তো মিছে কিছু নয়।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এই সবই ঠিক, শুধু এটুকু, আজও, রহস্য-ই রয়ে গেল, বিসর্জনের শেষে ফাঁকা মণ্ডপ, পরম অবিশ্বাসীর মনেও, কেন শূন্যতার আবাহন করে! মেঘলা আকাশ। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। রহস্য ক্রমে আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। আকুল রহস্যের মধ্যে ঝরে পড়তে থাকে হিম। আর তো দুদিন মাত্র, তার পর চন্দননগরের আলো আস্তে আস্তে আকাশপ্রদীপ হয়ে জ্বলতে থাকবে। কার্তিক তো এসে পড়েছে হে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তথাপি এ তো কিছু অজানা কথা নয়, যে, নতুন জামা, দুদিন পরেই পুরনো হয়ে যায়। এমনকি পুরনো হতে পারারও আগে, জামার তন্তুতে মিশে যেতে থাকে ঘামের গন্ধ। দর্পনে প্রতিফলিত প্রতিমা-মুখ, কেউ নাড়িয়ে দেওয়ার আগেই, ঝাপসা হয়ে যায়। বস্তুত, প্যান্ডেলের আয়োজন, সে যে নেহাতই চুক্তিভিত্তিক, একথা তো প্রথম খুঁটিটি পড়ার পূর্বেই জানা।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">তবু পিছুটান এমনই, সবকিছু জানার পরেও, বিষণ্ণ চোখ শুধু দেখে, প্যান্ডেলের মেঝেতে পড়ে থাকা ইতস্তত সিঁদুর। বিষাদবিধুর।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">দ্যাখো, ফুরিয়ে যায় না কিছুই। কেননা, ফুরোনোর পরেও কিছু গল্প শুরু হবে। শুরু হয়-ই। সমাপ্তি কীভাবে আসবে, সেটুকু জানা গেল না - কিন্ত ও নিয়ে আক্ষেপ অবান্তর। কিছু কিছু অজানা এমনই থাকুক না। কিছু অপ্রাপ্তি, কিছু ছাড়তে-না-পারা দীর্ঘশ্বাস। ঘন হয়ে থাকুকই না।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">জানা বলতে, বিদায়ী ঢাকের শব্দের সঙ্গে মিলে যেতে থাকে 'চিরদিনই তুমি যে আমার'-এর প্রিল্যুড। গল্প না-ই বা জানলে, গানের কথা যদি জানতে চাও, আরেকটু সবুর করো। আলোগুলো ফুরিয়ে যাক, তারপর… শোনো…</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এ জীবন ফুরিয়ে যেদিন</div><div dir="auto">পাবো এক নতুন জীবন</div><div dir="auto">সেদিনও হবে একাকার… </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">না হে! ওসব নিতান্তই বাজে কথা। স্তোকবাক্য নিছক। তোমাকেই জানিয়ে রাখি, আসছে বছর আবার হবে, এই শব্দমালা, কোনও এক বছর থেকে, মিথ্যে হয়ে যায়। যাবেই। চিরতরে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আকাশে, বাতাসে, ধোঁয়ায়, মলিন হয়ে আসা আলোয় - কিংবা মাটির গভীরে - লীন হয়ে যাওয়ার আগে…</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এই বেঁচে থাকাটা, উৎসবের মতোই, পরের বারের জন্য প্রতীক্ষা। একে কি মিথ্যে বলব, বলো? বলব, মায়া? একেই??</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">শুভ বিজয়া। ভালো থেকো।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">পড়ে আসা বেলায় দাঁড়িয়েও বিশ্বাস করতে বড় লোভ হয় - আবার তাহলে…</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">© বিষাণ বসু</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-9063919755396669759.post-7508278456200083552023-10-15T10:11:00.001+05:302023-10-15T10:11:34.500+05:30পুজোয় চাই নতুন শাড়ি ~ সৌম্য চট্টোপাধ্যায়<div dir="auto"><div dir="auto">কি কঠিন সব শাড়ির নাম হয়ে গ্যাছে আজকাল। বৌয়ের সাথে পুজোয় কেনাকাটা করতে গেছিলাম। একজন বলছে, আপনাকে একটা ফ্লোরাল জরি, জুট-কটন বালুচরি দেখাই! আর একজন বলছে, না, না!আপনি বরং প্রথমে একটা হাতে বোনা এথনিক-মোটিফ জুট সিল্ক দেখুন। শাড়ির নাম না ধামালের ভেনুগোপাল মুতথুস্বামী আইয়ারের পুরো নাম বলা শক্ত। শাড়ির দোকানে গেলে আমি কতগুলো বেসিক্স মাথায় রাখি। যদি দুটো শাড়ির রঙ একদম এক মনে হয়, তাহলে অবশ্যই তাদের রঙ পুরোপুরি আলাদা। প্রথম আধঘণ্টায় দেখানো কোন শাড়ি কখনো ভালো হয় না। এবং কোন শাড়ির কত দাম হতে পারে, পাড়ের নীচে স্টেপল করা কাগজে নিজে না দেখে বোঝা অসম্ভব। শাড়ি আর সৌরভ গাঙ্গুলী শেষ অবধি কত টাকায় বিক্রি হবে কেউ আগে থেকে জানতে পারে না। <br></div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বউ, দুটো শাড়ি অনেকক্ষণ ধরে দেখছে, আমি জানি শেষ অবধি দুটোই নেওয়া হবে, কিন্তু সেটা এখন বললে মানবে না, আমি বলছিও না। দুটো একইরকম শাড়ি কেনার একটা প্রাথমিক শর্ত হল ডিসিশান-মেকিংটাকে প্রথম একঘণ্টা একটা ডিনায়ালের মধ্যে দিয়ে যেতে দিতে হবে। সে হোক, আমার তাড়া নেই, আমি ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখছি, ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দিয়ে শুরু করেছিলাম, এখন জিরাফের গলা কি করে এতো লম্বা হলো দেখছি। হঠাত দেখি বৌ বলছে, এর মধ্যে কোনটা নেবো বলতো? এগুলো ট্রিক কোয়েশ্চেন, সত্যি করে উত্তর দিতে নেই। এরকম আমরা স্কুলে জিজ্ঞাসা করতাম, তুই কি এখনও আগের মত শেয়ালদা স্টেশানে পকেট মারিস? সে যাই হোক, এরকম প্রশ্নের উত্তর দেবার একটা টেম্পলেট আছে।দেখবেন মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল ডার্বির দিন হয়তো স্কুল গ্রুপে উদমা খিস্তিখাস্তা চলছে, হঠাত কোন এক শান্তিগোপাল লিখল, কিন্তু শেষ অবধি জিতে গেলো ফুটবল।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আমি বউকে বললাম, কোনটা নেবে সেটা বড়কথা না, দুটো শাড়িতেই কি সুন্দর হাতে বুনে কাজ করেছে। যেটাই নাও, শেষ অবধি জিতে যাবে শিল্পটা। বউ খুশি হয়েছে, বুটিকের মহিলা, যে কিনা রাত্তিরবেলাতেও অপর্ণা সেনের মত একটা বাদামী গগলস পরে বসে ছিলো, সে অবধি আমাকে গগলস খুলে মাপছে। সে মাপুক, আমি আবার মোবাইলে ফিরে গেছি। ফেসবুকে একজন ভদ্রমহিলা কবিতা লেখেন বলে ফলো করেছিলাম, দেখছি রিলসে কামার্ত দৃষ্টিতে ঠোঁট চিপে তাকিয়ে আছেন। নীচে বাপ্পা সমাদ্দার লিখেছে, দিদি খুব স্নিগ্ধ লাগছে। ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথের সময় রিলস ছিলো না, নইলে আমি স্পষ্ট দেখতে পারছি, রাশিয়ার চিঠিতে মস্কোর বারান্দা থেকে রবিবাবু নবাব গেঞ্জি-জাঙ্গিয়া পরে পাউট করছেন আর রঞ্জন বন্দোপাধ্যায় লিখেছেন, দাদা, খুব স্নিগ্ধ লাগছে। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">বুটিকের মহিলা বউকে বলছে, আপনাকে একটু সুদীপার কালেকশান দেখাই, আমি কলকাতা থেকে আনিয়েছি।এটা শুনে একটু নড়েচড়ে বসলাম, সাবধান হওয়ার দরকার আছে। কোন শাড়ি দেখানোর আগেই মনে হচ্ছে সুদীপার হাতে আমার একটা কাটা কিডনি দেখতে পাচ্ছি। সুদীপা রান্নাঘরে বলছে, প্রথমেই আমরা সৌম্যর একটা কিডনি, ছাঁকা তেলে মুচমুচে করে ভেজে নেবো। অপর্ণা সেন বৌকে একটা সাদা ন্যাতার মত শাড়ি দেখাচ্ছে, এরকম শাড়ি পরে জেনেরালি জয়া এহসান বিধবা সেজে ঘোরে কৌশিক গাঙ্গুলীর সিনেমায়। বলছে, একদম সিম্পলের মধ্যে, নাম আঙুরলতা, দামও রিজনেবেল, সত্তর হাজারের রেঞ্জে এইগুলো। আমি মানসচক্ষে দেখতে পারছি, সুদীপা আমাকে বলছে, শুধু কিডনি না, পুরো শরীরটাই চাই সৌম্য, নইলে আঙুরলতা হবে না। আমি দেখতে পাচ্ছি সুদীপার বাড়িতে একটা পুতুল সাজানো আছে, মুখটা একদম আমার মত দেখতে। বাড়িতে কেউ গেস্ট এলেই পুতুলটা ঠক করে নীচে পরে যায়। </div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">আমি উশখুশ করে বলছি, না না, এইগুলো থাক, অন্য কোন কালেকশান আছে নাকি! বুটিকের অপর্ণা সেন বলছেন, তাহলে একটু সব্যসাচী দেখাবো নাকি? আসলে সকলে দেখতে চায় না! সুদীপার মত সব্যসাচী চক্রবর্তী যে শাড়ির ব্যবসায় নেমেছেন এটা জানতাম না। চিরদিন বামপন্থী মানুষ, গণআন্দোলনে থেকেছেন। নিশ্চয়ই মাস-সেগমেন্ট টার্গেট করেছেন। আমাদের প্রোডাক্ট প্লেসমেন্টে শেখানো হত, Sensodyne এর কাস্টমার আলাদা, আবার বাবুল টুথপেস্টের কাস্টমার আলাদা, একদম ডিফারেন্ট প্রোডাক্ট প্লেসমেন্ট, আলাদা ক্যাচমেন্ট এরিয়া। ভালোই করেছেন, ছেলে দুটো তেমন দাঁড়াতে পারে নি। মাস-সেগমেন্টের, মেহনতি মানুষের প্রোডাক্ট যে এই বুটিকে কেউ দেখতে চাইবে না, এতে আর অবাক হওয়ার কি আছে।</div><div dir="auto"><br></div><div dir="auto">এতক্ষণে বেশ কনফিডেন্ট ফিল করছি, শাড়ীর রঙগুলো ও বেশ ফ্যানাভাত, দুধভাত টাইপের, খেটে খাওয়া মানুষের শাড়ির রঙ যাকে বলে আরকি। বৌকে বললাম, নাহ এবারে তাহলে একটা সব্যসাচী নাও বুঝলে। বউ খুব অবাক, বলছে, এই না না, এইসবের একদম দরকার নেই, এইগুলো কেউ কেনে নাকি, পাগল হয়েছো! শাড়ির দাম দেখার জন্য, পাড়ের নীচটা উল্টে স্টেপল করা কাগজটা দেখলাম। দেখলাম শুধু আমি না, আমার পুরো গুষ্টি, আমার পুরো পাড়া হাতে কিডনি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। </div><div dir="auto"> </div><div dir="auto">শাড়ি আর সৌরভ গাঙ্গুলী! শেষ অবধি কত টাকায় বিক্রি হবে কেউ আগে থেকে জানতে পারে না মাইরি।</div></div> Saibalhttp://www.blogger.com/profile/01132402727818503641noreply@blogger.com0