প্রোপাগান্ডা : " ২৯ জুলাই ১৯৪৬, ময়দানের সভা থেকে জ্যোতি বসুর উপস্থিতিতে সুরাবর্দী ডায়রেক্ট একশন ডে ঘোষণা করে"
সত্যতা : ২৯ শে জুলাই ১৯৪৬ আদৌ মুসলিম লীগ বা সুরাবর্দির ডাকে কোন সভা হয়নি। ২৯ শে জুলাই ১৯৪৬, ডাক ও তার বিভাগের কর্মীদের ডাকা ধর্মঘটের সমর্থনে বাংলা জুড়ে একটি সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘটটির উদ্যোক্তা ছিল কমিউনিস্ট পার্টির শ্রমিক সংগঠনগুলো। ধর্মঘটের অন্যতম দাবী ছিল আজাদ হিন্দ বাহিনীর জওয়ানদের নিঃশর্ত মুক্তি। ধর্মঘট প্রসঙ্গে অমৃতবাজার পত্রিকা লিখেছিল : " General Strike by All Communities; " দুশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসে 'বৃহত্তম সাধারণ ধর্মঘট' পালিত হয়েছে কলকাতায়। সলিল চৌধুরী এই ধর্মঘটের সমর্থনেই লেখেন তাঁর বিখ্যাত গণসংগীত, " ঢেউ উঠছে কারা টুটছে "। আর ডায়রেক্ট অ্যাকশন ডে? হ্যাঁ, ২৯ য়ে জুলাই ডায়রেক্ট একশনের কথাও ঘোষিত হয় ঠিকই, তবে তা কলকাতায় ঘোষিত হয়নি। ময়দানেও ঘোষিত হয়নি। হয়েছিল বম্বে বা অধুনা মুম্বাইয়ে। জিন্নাহর বাসগৃহে। ২৯ জুলাই জিন্নাহ তার মালাবার হিলের বাড়িটিতে দেশ এবং বিদেশের সাংবাদিকদের একটি সম্মেলন ডাকেন। ওই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই জিন্না ডাক দেন " ডায়রেক্ট একশন ডে " র। ডায়রেক্ট একশন ডে'র প্রস্তুতি শুরু হয় ৩১ য়ে জুলাই থেকে। আর চূড়ান্ত রূপ পায় ১৬ ই আগস্টে। গোটা প্রক্রিয়াটিতে ২৯ য়ে জুলাইয়ের বাংলার শ্রমিক ধর্মঘটের কোন ভূমিকা ছিল না। লীগ বরং শ্রমিক ধর্মঘটে মুসলমান জনতার অংশগ্রহণে বিরক্তি প্রকাশ করে। লীগপন্থী সংবাদপত্রে ২৯ য়ে জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ধর্মঘটকে হুমকি আর হুলিগানিজমের সাফল্য হিসেবে বিদ্রূপ করা হয়।
সাথে রইল ঐতিহাসিক সুরঞ্জন দাসের লেখার অংশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন