৩০ অক্টবর ২০১৪
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪
সুরা-PUN কথা বা হিজিবিজি হযবরল - কৌশিক দত্ত
৩০ অক্টবর ২০১৪
বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪
ছোটলোক ~ প্রকল্প ভট্টাচার্য়্য
টেবিলে বসতে না বসতেই মি: রায়ের ফোন -
' সন্দীপ, একবার আসতে পারবে ?'
ছোটো অফিস, আর মি: রায় হলেন হেড অফিসের লোক, মানে মালিকের ঘরের লোক| তাই ডিপার্টমেন্ট আলাদা হলেও সন্দীপ তাঁকে একটু খাতির করতে বাধ্য | যদিও মনে মনে গালাগালই দেয়, এই কাজ গুছিয়ে নেওয়া, গায়ে - পড়া আত্মীয়তা, সব কিছুর মধ্যেই একটা ছোটোলোকোমি তার চোখে পড়ে | পারতপক্ষে উনি কারোকেই আপনি - আগ্গে করেন না, এই ডাকের মধ্যেও আন্তরিকতা ছাপিয়ে প্রছন্ন অপমান উঁকি দেয় বইকি !
কিন্তু কী আর করা, ছোটো চাকরির দায় | অগত্যা হাতের সমস্ত কাজ মুলতুবি রেখে সে মি: রায়ের কেবিনে গেল |
- ' আর বোলো না, ছোটোলোক একেবারে | অডিটিং- এর এত ঝামেলা- একটা লাইসেন্স আটকে দিয়েছে ব্যাটারা এদিকে | যাক্গে কাজের কথাটা বলি | এখুনি আমার গাড়িটা নিয়ে ব্যাঙ্কে যাও, পাঁচ লাখ টাকা ক্যাশ রেডি রাখতে হবে এখনই !
- ' মানে, আমি ? আসলে কয়েকটা জরুরি কাজ ছিল-'
- ' আরে সব পরে হবে, এ হল বড়ো সাহেবের হুকুম | আমি ব্যাঙ্কে ফোন করে ক্যাশ রেডি রাখতে বলেছি, শুধু যাবে আর আসবে | রমেশ !'
রমেশ ওনার ড্রাইভার | তাকে ডাকা মানেই সন্দীপের আর কোনো কথাই উনি শুনবেন না | অগত্যা সন্দীপ বিড়বিড় করে গালাগাল দিতে দিতে বেরোল |
ব্যাঙ্কে সত্যিই ভিড় নেই, আর টাকাটাও রেডিই ছিল |
চেক জমা দিতেই ক্যাশিয়ার বললেন - " স্যার, হান্ড্রেডে প্রবলেম নেই তো ?"
সর্বনাশ ! একশো টাকার বান্ডিলে পাঁচ লাখ মানে তো থলি করে নিয়ে যেতে হবে ! না:, আজ দিনটাই খারাপ সন্দীপের |
- ' কোনো চিন্তা নেই স্যার, এই যে আমি বান্ডিলগুলো খবরের কাগজে মুড়ে দিচ্ছি |' ক্যাশিয়ার দেঁতো হাসল | তবে স্যার গাড়ি থাকলেও একটু সাবধানে ' বুঝলেন তো, জায়গাটা ছোটোলোকদের কিনা !'
বগলে বড়ো বড়ো দুটো কাগজের বান্ডিলে টাকা নিয়ে সন্দীপ কোনো মতে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যাবে, রাস্তার দুটো ছেলে তাকে ধরল | ' বাবু, পয়সা !'
সর্বনাশ ! সন্দীপ পা চালাল | রমেশ গাড়িটা পার্ক করেছে রাস্তার ওধারে আর এখন পেছনে জুটেছে এই দুটো আপদ | সন্দীপ যত তাড়াতাড়ি পারল এগোতে লাগল, কিন্তু ছেলে দুটোও ছুটতে লাগল তার পেছনে -
" বাবু, পয়সা বাবু !"
প্রাণপণে রাস্তা পেরিয়ে গাড়ির কাছে পৌঁছতেই ছেলে দুটো সন্দীপকে ধরে ফেলল | রমেশকে দেখে সাহস পেয়ে সন্দীপ ঘুরে দাড়াল ওঁদের টেনে একটা চড় মারবে বলে, কিন্তু ঘুরেই সে থমকে গেল, তোলা হাতটা তোলাই রয়ে গেল |
' বাবু আপনার পয়সা পড়ে গেছিল !' হাঁপাতে হাঁপাতে ছেলে দুটো তাকে কথাটা বলে আর তার হাতে কিছু একটা গুঁজে দিয়েই হাসিমুখে দৌড়ে পালাল |
হতভম্ব সন্দীপ একশো টাকার বান্ডিলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েই রইল | কোন ফাঁকে কাগজের মোড়কের ফাঁক দিয়ে পড়ে গেছিল বান্ডিলটা !!
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪
la guerre n'est pas finie ~ অবিন দত্তগুপ্ত
কামদুনির মেয়েটার পরিবারকে টাকায় কিনেছিলেন উনি । যাদবপুরের মেয়েটির বাবাকেও হাটতে বাধ্য করা হয়েছিল নোংরা মিছিলে । আমার রাজ্যের ফ্যাসিস্টের এমন অনেক , কুৎসিত গল্প আমার জানা ।
সেই পুতিগন্ধময় পরিবেশ থেকে উদ্ধার করবেন এক ৫৬ ইঞ্চি বুকের মালিক লৌহ পুরুষ ,যিনি ভালো দিন আনবেন ... বাজারি বাতাসে, বোকা বাক্সে আর সাইনিং হৃদয়-এ এমনি স্বপ্নের আনাগোনা । তা, কৃষক মৃত্যু কমলো না , ডিজেলের দাম কমলো না ... কিন্তু উনি আমেরিকায় দুর্দান্ত বক্তিমে দিলেন । সাইনিং মধ্যবিত্ত অমনি আহা বাহা রবে এফ বিতে এবং অন্যত্র লাফ মারল । উনি ঝাঁটা হাতে ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে, ' দাঁড়িয়ে ঝাঁটাও ' প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করলে্ন ... পোশাকি নাম, স্বচ্ছ ভারত । অমনি ( বস্তি ফেসিং ফ্ল্যাটে অনিহা )সাইনিং তুমি , ভ্যাকুয়াম ক্লিনার হাতে , খাট ছেড়ে মেঝেতে নামলে( মিনতির মা, একদিন ছুটি পেল ) ।
অথচ , রামের নব অবতারের আসল ইচ্ছা অনুধাবন করতে পেরেছিল ,একমাত্র তার বিশ্বস্ত বানর সেনা । স্বচ্ছ ভারত, অর্থাৎ হিন্দু ভারত , নোংরা বিধর্মী মুক্ত ভারত । এই স্বচ্ছতার অভিযানে ,সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন এবং দিচ্ছেন হনুমানস্বামী । তো প্রথমত ওনারা বললেন , " এই যে এতো সংখ্যক বিধর্মী , তার মূল কারণ ভালবাসা । এরা বেছে বেছে হিন্দু মেয়েদের সাথে ,প্রেম করে ,শুয়ে পড়ে এবং যে বাচ্চা জন্মায় সে বাপের ধর্ম নেয় ।" ... অতএব, এ একপ্রকারের জিহাদ্ , হনুমানস্বামী নাম দিলেন লাভ্ জিহাদ । নাম তো দিলেন, এবার প্রমাণ করতে হয় । রামকেও প্রমাণ করতে হয়েছিল রাবণ শয়তান ,তার জন্য শূর্পণখার নাক কাটতেও ( ইজ্জত কাড়তেও ) ,উনি পিছপা হন নি । রাক্ষস খারাপ প্রমাণ করতে পারলে ,রাক্ষস মারতে সুবিধা ,হিউম্যান রাইটস্ প্রবলেম করবে না । অতএব লাভ জিহাদের একটা ঘটনা , মার্কেটে উপস্থিত করা চাই ।
মিরাট সম্পর্কে আমার ধারণা , কন্সপিরেসি কেস অব্দি সীমাবদ্ধ । তবে সেই কন্সপিরেসি , যা কিনা আদতে , মুক্তিকামী মানুষকে কাছাকাছি এনেছিল ,এবং সাম্প্রতিক কন্সপিরেসিতে আসমান-জমিন ফারাক্ । একটি হিন্দু মেয়ে , একটি বিধর্মী ছেলেকে ভালবেসে পালিয়ে যায় । এরম আমরা আগেও দেখেছি , বিভিন্ন হিন্দি সিনেমায় । গানও আছে " হামনে ঘর ছোড়া হে , রাস্মো ক তোরা হে " ...সে যাই হোক । তা বানরসেনা জানান দিল ,মেয়েটিকে জোর করে একটি বিধর্মী অস্বচ্ছ পুরুষ ধর্ষণ করেছে । মেয়েটির বাবা-মা ও একি কথা বলল । হঠাতি, প্রেমে সাহসী মেয়েটি , বাঘিনীর মত উঠে দাড়িয়ে জানালো ,সে স্বেচ্ছায় ছেলেটির হাত ধরেছে ,এবং তার বাপ-মাকে ২৫,০০০ টাকায় কিনেছে , বানর সর্দার ।
এরপর-ও আপনি , সুদিনের স্বপ্নে বিভোর থাকবেন । ধর্মের নামে মানুষ কাটা হলেও , আপনার 'মা' সিরিয়াল বিঘ্নিত হবে না । এসব জানা কথা । কিন্তু লিখি , যদি কারো চোখে পড়ে যায় । ভালোবাসাকে বুঝলেন , সমস্ত ফ্যাসিস্ট ভয় পায় । কারণ ভালোবাসা , যে কোন ক্ষমতার মূল ভিত্তিকে চ্যালেঞ্জ করে । আমরা বাম্পন্থিরা , তাই মানুষে মানুষে ভালবাসার কথা বলি । হিন্দু-মুসলমানে , দলিতে-উচুজাতে , নারীতে-পুরুষে , পুরুষে-পুরুষে, নারীতে-নারীতে । ইচ্ছের কথা বলি ।বলি এই দক্ষিনপন্থার বন্ধ ভেঙ্গে , নতুন সূর্যের ভোরের কথা ...
la guerre n'est pas finie
( The War is not over )
রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৪
ঘটি - সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৪
মানুষ বাঁধার গল্প ~ অবিন দত্তগুপ্ত
আমার যুদ্ধের গল্প, যুদ্ধের সিনেমা, যুদ্ধের সিরিয়াল হেব্বি লাগতো । তখন প্রিয় ছিল টিপু সুলতান আর দি গ্রেট মারাঠাস্ । আমি চাইতাম পানিপতের যুদ্ধে মারাঠারা জিতুক ,চাইতাম টিপু যেন একটাও যুদ্ধে না হারে । মোদ্দা কথা , টিপু - মারাঠা ইত্যাদিরা তখন আমার কাছে ইস্ট-বেঙ্গলের মত, ওরা জেতা মানে আমার টিম জেতা । যে বছরের কথা বলছি , সে বছর রথের সময় ,আমি একটা তিনতলা(মানে তিন্টে বক্স) রথ টেনেছিলাম। মা দারুণ সাজিয়ে দিয়েছিল ।তারপরের বছর থেকে আর কেন জানি না, রথ টানা হয়নি । যাক সে কথা,পয়েন্টে ফিরি । সালটা ৯২ ... টি ভি তে দেখতাম ,একটা শেয়ালের মত দেখতে বয়স্ক লোক , রথে চড়ে এদিক ওদিক ঘুড়ছে । কয়েক হাজার মানুষ দৌড়চ্ছে তার পিছনে । আমার বেশ লাগত । মহাভারতের , শকুনির মত অনেকটা । দাদুকে দেখতাম ,ওই লোকটাকে দেখলেই ভুরু কুঁচকে হাতের কাগজের দিকে চোখ সরাত । প্রসঙ্গত ,বলে রাখি আমার দাদুর দিনের বেশীর ভাগ সময়টাই ,গনশক্তি নামে একটা কাগজ পড়ে কাটত ।
তো হঠাত-ই একদিন ,সবাই টি ভির সামনে বসে, উদবিগ্ন । আমি ঘরে ঢুকতে গেলেই ,বাবা বকা দিল...পাশের ঘরে যাওয়ার হুকুম হল । আমি বরাবরের অবাধ্য ,মায়ের আঁচলের তলা দিয়ে টি ভির পর্দায় চোখ রাখলাম । স্ক্রিন জুড়ে দেখলাম , কখনো আগুন জ্বলছে ,কখনো তলোয়ার নিয়ে মানুষ ছুটছে , কারুর মাথায় টুপি,কারুর কপালে তিলক । এমনটা অবশ্য আমি আগেও দেখেছি , টিপু সুলতানে অথবা মারাঠায় । মাকে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলাম "এটা কি যুদ্ধ হচ্ছে মা ? " মা ঘাড় নাড়ল ।
"কার কার ?"
"হিন্দু-মুসলিম"।
বার্থ সার্টিফিকেটে হিন্দু ৭ বছরের আমি ,মুহূর্তে দল বেছে নিলাম "কে জিতছে মা ? হিন্দুরা ??"
মা আমার মাথায় আলতো হাত রেখে জানিয়েছিল "মানুষ হারছে ।" মানে বুঝিনি ।
টিভিতে এই যুদ্ধ চলছে যখন ,তখনো দাদু গনশক্তি পড়ছে । আমি জানতাম ,দাদু সব শোনে ।
একঘণ্টা পর , একটা পরিচিত মুখ এলো পর্দায় । দাদুর মতোই চশমা । এই লোকটাকে সবাই হেব্বি ভালবাসত । নাকের ফুটো গুলো আমার একটু বড় বড় লাগতো । কিন্তু লোকটাকে সবাই ভালবাসত ,অতএব আমিও বাসতাম । ওই দাদুটা কে ,জানতে চাওয়ায় ,আমার দাদু বলেছিল ,আমার নেতা, জ্যোতি বোস । সে যাই হোক, উনি আধ্ ঘন্টা কি সব বললেন ,বাবা-দাদু গোগ্রাসে গিলল । শেষ হতেই , "কাল তাড়াতাড়ি বেরতে হবে ,খেতে দাও বলে বাবা আমারি মতো লম্ফ-ঝম্প আরম্ভ করল । দাদুর মুখ তখন আবারো ,কাগজে-নিচু ।
পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠলাম ,শুনলাম স্কুল বন্ধ । দাদুর খাটে লাফিয়ে উঠে, টি ভি তে চোখ রাখলাম , যুদ্ধ দেখব বলে। বাবা সকাল থেকে বাড়ি ছিল না । বাবা কোথায় গেছে জানতে চাইলে, মা টি ভির দিকে আঙুল তুলে বলল "ওখানে" ।, স্ক্রিনে দেখলাম হাজারে হাজারে লোক হাতে হাত ধরে দাড়িয়ে আছে , কারো মাথায় টুপি ,কারুর পাগড়ি ,কেউ বা খালি মাথায়। কত্ত রং । আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম "বাবা ওখানে কি করতে গেছে, এটা কি হচ্ছে "।
"মানুষ মানুষ কে বাধছে"
"কি ভাবে ?"
"হাত দিয়ে"
"আর বাবা ? "
"দ্যাখ কার হাত ধরে ,দাড়িয়ে আছে " ।
"কিন্তু যুদ্ধ ... যুদ্ধটার কি হল ? এখন কে জিতছে ? "
হাতের গণশক্তি নামিয়ে, আমায় কোলে তুলে , একগাল হেসে দাদু বলল " মানুষ "
--------------------------------------------------------------------------------------------- আমরা কি আরেকবার মানুষকে মানুষের সাথে বাঁধতে পারি না ??? আমার কমরেড যারা ,শেষের প্রশ্নটা তাদের জন্য ।
মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৪
পুজো ও বাঙাল ঘটির ব্যাপার স্যাপার ~ সৌমিক দাশগুপ্ত
জন্মসূত্রে 'বাঘ' হবার দরুণ, বেশ ছোটবেলা থেকেই ব্যাপারটা উপভোগ করে আসছি। বাবা অইলো গিয়া এক্কেরে বরিশাইল্যা কাঠ বাঙাল, আর মা নেহাতই হুগলী জেলার ঘটির মাইয়া। তা পুজো আচ্চার দিনে, আমাদের বাড়ীর নিয়ম ছিল, নিরামিষ আবার কি ? লক্ষ্মীপুজো হোক, বা দুর্গাপুজোর অষ্টমী বা সরস্বতী পুজো, নন ভেজ মাস্ট। আমার ঠাকুমা নাকি মা কে বলতো, "পুজার দিনে, এয়োস্ত্রীগো নিরামিষ খাইতে নাই মনি, ঘরে কিছু না থাকলেও, চাড্ডি পেঁয়াজ কুচাইয়া লইবো গিয়া।"
তারপর ঠাকুমা তো চলে গেলেন, মা জমিয়ে রান্নাঘরে ঘটি রুল চালু করে দিল। অষ্টমীতে "ময়দা খাওয়া", সরস্বতী পুজোয় খিচুড়ি, লক্ষ্মীপুজোতে (যদিও এটা ঘটিদের নেই আদৌ) পোলাও। আমিও ছোটবেলা থেকে ঘটি খাওয়া দাওয়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম।
তখন ক্লাস এইটে পড়ি। আমার পিসি একদিন ঘরে এসে তুমুল বাওয়াল দিল। এ কি, তোরা ছেলেটাকে অষ্টমীর দিন নিরামিষ খাওয়াস, ঘোর অন্যায়। মানবসভ্যতা বিপন্ন হয়ে যেতে পারে। এমনিতেই ননদ এবং বৌদির সম্পর্ক একটু অম্লমধুর হয় সকলেরই জানা। সেদিন থেকেই, আমার বাবা সাপোর্ট পেয়ে কিরকম হিংস্র হয়ে গেল। তুমি শালা ঘটির মেয়ে, কি করে বুঝবে আমাদের ব্যাপার স্যাপার, অতএব, পরের অষ্টমীতেই মাছ লাও। মা একটু গাঁইগুঁই করলেও, শ্বশুর বাড়ীর রুল ভেবে মেনেই নিল আবার।
সরস্বতীই একমাত্র অনেক দিন অবধি নিরামিষে বেঁচে ছিলেন।
তারপর কালের নিয়মে আমার বিয়ে হল, আমার গিন্নী যিনি এলেন, তিনিও ঘটি, এবং উত্তরপ্রদেশীয় প্রবাসী। ইনি যদিও "মাছ ছাড়া ভাত মুখে তুলতে পারেন না", কিন্তু পুজো ইত্যাদির সময় "আঁশ খাবে ? তওবা তওবা, গন্ধি বাত" । ঘরের সমস্ত নারীশক্তি যদি বিপক্ষ শিবিরের হয়, তাহলে সসেমিরা অবস্থা তো হবেই।
এতদসত্ত্বেও বেঁচে গেলাম। তৃতীয় নারীর আবির্ভাবে। যখন আড়াই বছর বয়স, তখন থেকেই নিদারুণ শাক্ত হয়ে উঠলো। চার বছর বয়সে, শ্রাদ্ধবাড়ীতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিল, "চিকেন কিধর হ্যায়"। অতএব, আমি বাঁচলাম, আমার বাবা বাঁচল, অষ্টমী বাঁচল, সরস্বতীর কপালে জোড়া ইলিশ জুটল, এমন কি আগামী কাল লক্ষ্মী পুজোর দিনও সকালে জমিয়ে ইলিশ মাছের আয়োজন হয়েছে, রাতে যদিও আমি বেশ ভক্তিভরে ভোগের খিচুড়ী আর নারকেল নাড়ু খাবো।
কে জানে, সেই বুড়ীই ফিরে এসেছে কিনা। কিচ্ছু বলা যায় না।