দাদু বলতেন উডেন চেস্ট, আসলে পাঁচ ফুট উঁচু একটা কারুকাজ করা ব্রিটিশ আমলের আলমারি। সেগুন কাঠের। দাদু বলতেন বার্মা টিক। আলমারির ওপরে একটা কাঠের ফ্রেম, ফ্রেমের মধ্যে আটকানো আয়না। দাদুর মতে বেলজিয়াম গ্লাস। আজকেও বিকেলে দেখলাম, মনে হলো যেন একদম নতুন। এডিনবরা ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করে দেশে ফেরার পরে চিফ কেমিস্ট হয়ে একটা বড় ওষুধ কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। ওনার কাজের আর বাকি গোপনীয় বা দরকারী কাগজপত্র রাখতেন এই উডেন চেস্ট এর ভিতরে। আলমারি থাকতো ওনার ল্যাবে। ওনার অফিসের সবার ধারণা ছিল যে এই আলমারি অভিশপ্ত। আলমারির দুটো পাল্লা কাঠের হুড়কো দিয়ে বন্ধ থাকতো, ওপরে আর নিচে। পাল্লা খুলে গেলেই সেদিন কোনো খারাপ ঘটনা ঘটতে চলেছে। সাথে সাথে বন্ধ করলে একটু কম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা। ওটা নাকি আগাম বার্তা দিত কোনো ভয়ংকর বিপদের।
আলমারি কে বানিয়েছিলেন, কে প্রথম মালিক ছিলেন, সেসব জানা নেই, তবে খোদাই করা আছে ১৮৯৩, কানপুর। দাদু বাহান্ন সালে এটি কিনেছিলেন, বেশ সস্তায়, কারণ আগে যারা কিনেছিল তারা ফেরত দিয়ে গিয়েছিল। গুজব ছিল যিনি এটা বানিয়েছিলেন, তাকে নাকি মেরে এই আলমারির ভিতরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। দিদার প্রচণ্ড আপত্তি সত্বেও আলমারিটা দাদু বাড়ি এনেছিলেন।
আলমারিটা আসার মাস চারেকের মধ্যেই একদিন দেখা গেছিল আলমারীটা হাঁ করে খোলা, আর আমার মেজো মামা, বয়স আড়াই বছর, সামনে থেবড়ে বসে আছে, আর আলমারিটার সাথে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে, অবশ্যই নিজের ভাষায়। এর কদিনের মধ্যেই মামার খুব জ্বর আসে। টাইফয়েড। কিছুদিন ভুগে মেজো মামা মারা যান। বাড়িতে সবার ভীষণ আপত্তিতে, আর বাড়ীওয়ালার অনড় মনোভাবে শেষ পর্যন্ত দাদু আলমারিটা বাড়ি থেকে সরিয়ে ওনার অফিসের ল্যাবে রাখতে শুরু করেন। যদিও ওনার বৈজ্ঞানিক মন কিছুতেই মানতে চায়নি এই দুটো ঘটনার মধ্যে কোনো যোগাযোগ আছে।
ওষুধ কোম্পানি একটা সময় সেই আলমারী ফেরত দিয়ে দেয় দাদুর মৃত্যুর কয়েক বছর পরে। কিন্তু কেউই নিতে রাজী না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আমার বাবা ওটাকে নিজের চেম্বারে নিয়ে রেখে দেন।
ওটা বন্ধই থাকতো। চেম্বারে, এক কোনায়। বাবার এসিস্ট্যান্ট সরকার জেঠু ওটাকে সহ্য করতে পারতেন না, গজগজ করতেন, আর রোজ ধুপ ধুনো দিয়ে পূজো করতেন, যাতে অভিশাপ না লাগে।
আমি বাবা দাদাদের মত ডাক্তারি পড়িনি, চার্টার একাউন্ট্যান্ট হয়ে ভালই কামাই, সাথে শেয়ার বাজার আমাকে বেশ তাড়াতাড়িই প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছে। গাড়ি বাড়ি বিদেশ ভ্রমণ চাকচিক্য এমনকি পাড়ায় সম্মান সবই পর্যাপ্ত পরিমাণে উপভোগ করি। পাড়ার ক্লাবে আমার অনেক উঁচুতে স্থান। ইদানিং ক্লাবও ফুলে ফেঁপে উঠেছে, বিরাট বাজেটের পূজো, দুটো বড় বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, একটা নাটক আরেকটা সিনেমা সপ্তাহ, দুটো মেলা, একটা খেলার মাঠ, দুটো পার্ক, ফোয়ারা, বাগান। অনেক আয়, অনেক ব্যয়। এছাড়াও দুতিনজন কাছের নেতার অবৈধ টাকা ঘোরাবার জন্য কাজে লাগে। ক্লাবের হিসেবপত্র মাসে দুতিনবার দেখে দিয়ে যাই। একতলার কোনের লাইব্রেরি, রিডিং রুম, ক্লাবের অফিস পাশাপাশি। ওই লাইব্রেরীতেই ওটা এখন প্রতিষ্ঠিত, বাবা চেম্বার বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকেই। এখানে এরা কেউই জানেনা ওটার পেছনে আসল গল্পটা। আমি যেদিনই যাই দেখে রাখি আলমারি ঠিকঠাক আছে কিনা। বন্ধ আছে কিনা। কিছু কাগজপত্র দলীল দস্তাবেজ এর কপি আছে ওটাতে। ক্লাবের একদম ওপরতলার চার পাঁচজন ওটা খোলে বন্ধ করে, দরকার লাগলে ব্যবহার করে। বাকিরা জানে ওটা আমার জিনিস, দামী জিনিস, ছোঁয়া বারণ।
চারবার ওটা খোলা পেয়েছি। সরকার জেঠুর এক্সিডেন্টের দিন, বাবার হঠাৎ করে ক্যান্সার ধরা পড়ার দিন। আর বাকি দুবারই ক্লাবের দুজন বরকর্তার মৃত্যুর দিন।
একদম শেষ বেলায় বাবা বোধহয় দুর্বল হয়ে গেছিলেন, আমায় আলাদা করে ডেকে বলেছিলেন ওটাকে বিদায় করে দিতে। কিন্তু আমার মধ্যে ততদিনে একটা অপ্রতিরোধ্য রোখ চেপে গেছিল, আমি পুরো ব্যাপারটাকে খেলা হিসেবে নিচ্ছিলাম। মায়ের মৃত্যু, জামাইবাবুর হার্ট এটাকের সময়, একবারও তো ওটা কিছু করেনি। মনে হয়নি ওটাকে আর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
আমার মনে প্রথম ভয় ধরলো যেদিন ক্লাবে হিসেব পত্র দেখে বেরোবার সময় খুট করে শব্দ পেলাম। ঢোকার সময় দেখেছি আলমারিটার হুড়কো খোলা। বন্ধ করে এসেছিলাম ভালো করে। নিজের হাতে। আবার কিকরে খুললো? সেদিনই রাত্রে ইডির রেড হলো কাছের নেতার বাড়িতে।
আমারও শরীরটা কদিন বেশ খারাপ যাচ্ছিল, জরুরী ভিত্তিতে স্টেন্ট বসানো দরকার, প্রায় ৯০ পার্সেন্ট ব্লক ধরা পড়েছে এনজিওগ্রাম করে। বুকে মাঝে মাঝেই ব্যথা হয় ভোর রাত্রের দিকে। কিন্তু ডাক্তারের থেকে কিছুদিন সময় চেয়ে নিয়েছিলাম, এই ঝামেলার থেকে নিজেকে না সরাতে পারলে পুরো পরিবার শুদ্ধ রাস্তায় নেমে আসতে হবে। বেশ কয়েকশো কোটি টাকার ব্যাপার।
আজ একটু তাড়াতাড়ি ক্লাবে পৌঁছেই হিসেবপত্র নিয়ে বসে গেছি। অনিমেষদা সাথে আছেন। উনি কাউন্সিলর, ক্লাবের প্রেসিডেন্ট। খুব ঘামছেন, এসি চালিয়েও। আমরা মন দিয়ে সব ক্যাচরা পরিষ্কার করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। চারিদিক নিঃশব্দ। হঠাৎ খুট করে শব্দ। ছ্যাঁত করে উঠলো। দেখলাম হুড়কো দুটো খোলা। গিয়ে বন্ধ করে এলাম। অনিমেষদার নামেই সব কাগজপত্র, সই সাবুদ। উনি বুঝতে পারছেন খুব খারাপ ভাবে ফেঁসে গেছেন। বেরোবার উপায় নেই। এরা জাল গুটিয়ে এনেছে, আজকে কালকের মধ্যেই কিছু একটা হবে। তার আগে যতটা গুছিয়ে ফেলা যায় চেষ্টা করতে হবে। আমিও আপ্রাণ চেষ্টায় আছি এই তদন্তে যেন আমাকে কোনোভাবে না জড়িয়ে ফেলে। ঘটি বাটি বিক্রী করেও পার পাবনা। অনেকটাই রাত্রি হয়ে গেছে। অনিমেষদা কে এগিয়ে দিয়ে আসতে বললাম ড্রাইভার কে। গাড়ি ফিরে এলে আমিও বেরোবার জন্যে তৈরী হলাম। দরজা আর লাইট বন্ধ করতে বললাম। বন্ধ করে বেরোবার সময় মনে হলো যেন আবার একটা খুট করে শব্দ শুনলাম।
ফিরে যাবো? বন্ধ করে আসবো, যাতে বিপদ কমে। নাকি পুরোটাই মনের ভুল? আর তাছাড়া লোকে কী ভাববে! আমার মত মানুষের এত কুসংস্কার? কিন্তু লোকে কী ভাববে তা কি আজ ভাবার সময়? গিয়ে বন্ধ করে আসি, অন্তত দেখে আসি। পুরোটাই হয়তো মনের ভুল। নাহ, এত বছরের শিক্ষা দীক্ষার তাহলে কিসের মূল্য যদি এই সামান্য ব্যাপারেই কুসংস্কারগ্রস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু এটা কি সামান্য ব্যাপার নাকি জীবন মরণ সমস্যা? গাড়ি প্রায় বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছিল, বললাম গাড়ি ঘোরাতে, একটা কাজ ভুলে গেছি। বাড়ি থেকে এদিকে উৎকণ্ঠিত ফোন এসে গেছে বেশ অনেকবার, বুঝতে দিইনি যে ভিতরে ভিতরে আমি কতটা কেঁপে গেছি। বলেছি কালকেই তো হাসপাতালে ভর্তি হব, পরশুদিন সার্জারী, এই অল্প কিছু কাজ গুটিয়ে ফেললে আর ওমুখো হতে হবে না অনেক মাস। সবাইকে সব বুঝিয়েই বেরোচ্ছি। ফিরে গেলাম ক্লাবে।
দরজা খুলে দিলো। লাইট জ্বালিয়ে দিলো। ঠিক যা ভয় পেয়েছিলাম। ওটা খোলা! একদম হাট করে খোলা। বন্ধ করার চেষ্টা করছি কিন্তু হুড়কো গুলো যেন কাজই করছেনা। গায়ে যেন একটুও শক্তি নেই। যেন ওটা আজ আমার সাথে যুদ্ধে নেমেছে। আমাকে ওটাকে হারাতেই হবে। আবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আজ কেন হেরে যাচ্ছি। ওটা জিতে যাচ্ছে। আবার চেষ্টা করি, নাহ ওটা যেন আজ জ্যান্ত হয়ে উঠেছে, অসম্ভব শক্তি ওটার গায়ে। অসম লড়াই লড়ছি মনে হচ্ছে। একা পারবনা। ড্রাইভার চঞ্চল আর ক্লাবের কেয়ারটেকার মণিদাকে ডাকলাম। ডাকছি, কিন্তু আওয়াজ কেন বেরোচ্ছেনা। ওটা কি আজ আমার ওপরে আক্রোশ ফলাচ্ছে? আবার একবার চেষ্টা করে দেখি। নাহ, খুলেই যাচ্ছে। পারছিই না বন্ধ করতে। ওটাকে ছেড়ে বাইরে বেরোতে হবে, সাহায্য দরকার চঞ্চল আর মনিদার। কিন্তু একি, নড়তে পারছিনা কেন? পাল্লা গুলোর সাথে আটকে যাচ্ছি কেন, জড়িয়ে যাচ্ছি কীকরে ওটার সাথে? আটকে যাচ্ছি কেন? বেরোবার দরজাটাকে আর দেখতে পাচ্ছিনা কেন? আলো কে নিভিয়ে দিল? ওটা কি আমার ওপরে চেপে বসলো? বুকে এত চাপ কিসের? ওটা আমার বুকের ওপরে বসে আমাকে মেরে ফেলতে চাইছে, ওটা আমাকে শেষ করে দিতে চাইছে। আর লড়াই করতে পারছিনা। ঘুম পাচ্ছে। ওটা জিতে গেল…
সাদা রঙের আলো। হালকা। চারিপাশ ঠান্ডা। অল্প ব্যথা। মাথা ভার ভার। ঘুম পাচ্ছে। চারিপাশে অনেক কিসব অপরিচিত আলো। খুব ঘুম পাচ্ছে।
ঘুম ভাঙ্গার পরে জানলাম সেদিন রাত্রে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছিল, সকালেই সার্জারী হয়ে ৯টা স্টেন্ট বসেছে। সেদিন রাত্রে অনিমেষদাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। ইডি বা পুলিশ আমার খোঁজ করেনি।
কদিন পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই লম্বা ছুটি নিয়ে নিয়েছি। ঘরেই থাকছি। ডাক্তার বলেছেন আমার অবস্থা অত্যন্ত জটিল তাই আরো একটা সার্জারী লাগবে খুব শিগগিরই। যে নয়টা স্টেন্ট বসেছে সেগুলো ৯০% এর বেশী ব্লক ছিল। আরোও ছয়টা ব্লক আছে যেগুলো ৮৫ শতাংশের বেশী। এক্ষুনি স্টেন্ট বসাতে হবে। আমি রাজি হলেই আরেকটা সার্জারী করে দেবেন। আর বুকে ব্যাথা হলেই যেন জানাই, সাথে সাথে সার্জারির ব্যবস্থা করবে।
ঘরে ফিরে ছুটি নিয়ে রেস্ট নিচ্ছি। ক্লাবের কাঁচা কাজ থেকে নিজে কীকরে উদ্ধার পাই তার জন্যে যাকে যেখানে যা দেওয়ার সেসব ব্যবস্থা করছি। আরো মাস দুতিন লাগবে সম্পূর্ণ থিতোতে, ততদিন সময় চাই আমার। তারপর সার্জারী করা যাবে। প্রায় রোজই বুকে ব্যাথা হচ্ছে, ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। ওষুধ পত্র খেয়ে কমছে। বউ এখন মেয়ের ওখানে গেছে, মেয়ে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছে। কয়েক কোটির ওপর খরচ কিন্তু হোস্টেলের খাবার ভালো নয়। তাই বউ গেছে মেয়েকে নিয়ে পাশেই একটা বাড়ি ভাড়া করে থেকে মেয়েকে সুস্থ স্বাভাবিক করে তুলতে যাতে কলেজ যেতে পারে।
শুধু লোক লাগিয়েছি ওটাকে সরিয়ে দিতে, কারপেন্টার রাজেনবাবু কে দিয়ে কাটিয়ে দিয়ে ওটাকে নষ্ট করে দিতে। কুসংস্কার নয়। আসলে বউ খুব ঝামেলা করছে। বলছে আমাকে নাকি ওই ওটার সামনেই পাওয়া গেছিল। দরজা খোলা ছিল। ওটাই অপয়া। কীকরে বোঝাই যে আমি তো ভেবেছিলাম মরেই গেছি। যাইহোক সংসারে শান্তি বজায় রাখতে কার্পেন্টার এর কাছে ওটা চলে গেছে। নামমাত্র টাকায়, দরাদরি করিনি। বলেছি ক্লাব এর সাথে আর সম্পর্ক থাকবেনা, তাই সরিয়ে দিতে হচ্ছে, আর বাড়িতে এ জিনিস রাখার জায়গা নেই।
উনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনেক করে ওটার ইতিহাস জানতে চাইলেন, বারবার। একটু এদিক ওদিক করে সযত্নে আসল কথাটা এড়িয়ে ইতিহাস বলেছি। চোখ মুখ দেখে মনে হলনা রাজেনবাবু বিশ্বাস করলেন। উনি বলে গেলেন আগে চেষ্টা করবেন খদ্দের পেতে, তেমন খদ্দের পেলে দিয়ে দেবেন, অর্ধেক আমার অর্ধেক ওনার। না পেলে কেটে দেবেন। কেন আমি অত সুন্দর একটা ওয়ার্ক অফ আর্ট কে কাটাতে চাই ভেবে পাচ্ছেন না। সন্দেহ নিয়েই যেন ফিরে গেলেন।
৩:৫৪ বাজে। সকাল হয়নি। আলো ফোটেনি। পাখি ডাকেনি। আজ আমার আবার ব্যথা করছে। ওষুধ খেয়েছি। ব্যথা কমছেনা। আবার ওষুধ খেলাম, আরেকটা ডোজ নিলাম। তাও ব্যথা বেড়েই চলেছে। ফোন কোথায়? ফোন। কাউকে ডাকতে পারছিনা। আবার সেদিনের মত লাগছে। আবার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। গলা শুকিয়ে আসছে। আমি চিৎকার করছি। ছটফট করছি। কই ব্যথা কমছে না কেন। কখন কমবে।
মনে হচ্ছে এবারে যেন কমছে? হালকা লাগছে কি? অবশ লাগছে। ঘুম পাচ্ছে। ঘুম। ঘুম। ঘুম।
ঠিক সেই সময়ে, রাজেন বাবুর দোকানের পেছনে গুদামে ওটা থেকে কি খুট করে একটা শব্দ এল?
না, আসেনি। আসবেও না আর কোনোদিন। ওটা তো আর রাজেনবাবুর কাছে নেই। ওটা চলে গেছে, ওটা নতুন জীবন পেয়েছে কোনো বড়লোকের সংগ্রহে, বা হোটেলে, বা মিউজিয়ামে। কিন্তু ওটা আর আমাদের পরিবারে নেই।
আমাদের পরিবারে, বংশানুক্রমে চিরকালই শোক, তাপ, দুঃখ, মৃত্যু, অসুখ, লোভ, লালসা, অপরাধ, সব ছিল, ভবিষ্যতে থাকবেও। শুধু সামনে থাকবেনা একটি নিরীহ কাঠের আলমারি, এই সবকিছুর জন্যে দোষ চাপানোর, অপয়া বলে দায়ী করার জন্যে!
(ছবি ইন্টারনেট থেকে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন