বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩

জাহানারা ইমাম ~ আদৃতা মেহজাবিন

'হোয়াট ক্যান আই ডু ফর ইউ ? ' কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন মা।

খুব অল্প বয়সী একজন আর্মি অফিসার দাঁড়িয়ে আছে, তার পেছনেই বহুজন। অনেকের উর্দু শুনে বোঝা যাচ্ছে তারা বিহারী।

অফিসারটি হাত তুলে একটু সালামের ভঙ্গি করে ইংরেজীতে বলল - আমার নাম ক্যাপ্টেন কাইয়ুম, আমরা তোমার বাড়িটা একটু সার্চ করব।
- কেন, কী জন্য?
- এমনিই একটু রুটিন সার্চ আর কি। তোমাদের বাড়িতে মানুষ কয়জন? কে কে থাকে? তোমাদের ছেলেদের নাম কি?
- রুমী, জামী ---
রাতটি ছিল ২৯ আগস্ট রবিবার। ১৯৭১ সন। দুই সন্তান সহ স্বামীকে ধরে নিয়ে গেল তারা।
মা সারারাত ঘর বার করেন। ওরা বলেছিল আধা ঘণ্টা পৌণে এক ঘন্টার মাঝেই ফিরবে তারা। কই ফিরল না তো! এইতো কাল ও রুমী ছিল হেসে হেসে বলছিল আম্মা জানো ' সেদিন আসার সময়েও রেডিওতে একটা গান শুনেছি, ' একবার বিদায় দে মা ঘুড়ে আসি' জানি না কপালে কী আছে!
যে সন্তানকে ইঞ্জিনিয়ার বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন মা 'একদিন নিজেই তাকে বললেন ' যা তোকে দেশের জন্য কোরবানি করলাম। '

সেদিনই অন্য একটা গাড়ি এসে দাঁড়ায় রাস্তায়, দৌঁড়ে গিয়ে মা দেখেন, সে স্বপন। তুমি রুমীর বন্ধু স্বপন না!

এখুনি পালাও রুমী ধরা পড়েছে। এর পরে দরজায় আস্তে টুকটুক এসেছে আরো দুজন ' ফঁতে আর জিয়া। ' ধরে নিয়ে গেছে সামাদকে খবর দিতে এসেছে ওরা। ওদেরকেও দ্রুত চলে যেতে বলেন মা।

দুদিন কাটে আর দুটো বিনিদ্র রাত। এমপি হোস্টেল থানা সবখানে খুঁজে বেড়ান মা তার সন্তানদের আর স্বামীকে। রুমীদের সাথে ভাই সাইফ ইমামকেও ধরে নিয়ে গেছে হানাদারেরা।

ওদিকে টর্চার সেলে চলছে অন্য গল্প, রুমী বাবাকে বলে আপনারা কিছুতেই স্বীকার করবেন না। কোন কিছু, আমার যা হয় হোক।

৩১ আগস্ট ছোট ছেলে জামী সহ ফিরে আসে স্বামী শরিফ । সাথে রুমী নেই। আর্তচিৎকার করে ওঠেন মা।

রুমীকে ছাড়েনি?

স্বামী সন্তানের দিকে চেয়ে দেখেন ওদের মুখে গভীর যন্ত্রণা, দুঃখ আর অপমানের ছাপ। গ্লাস গ্লাস পানি খাইয়েও তাদের তৃষ্ণা মেটানো যায় না।
' যে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে 'রুমী ' মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে। তাদের কাছে সন্তানের প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে সন্তানের সম্মানকে নষ্ট করেননি যেই মা যে জননী
তিনিই আমাদের শহিদ জননী ' জাহানারা ইমাম।'
আজীবন সন্তানের জন্য দুঃখ বয়ে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ' অসামান্য। '

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত করেন, ' একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। '

ক্যান্সারের সঙ্গে লড়েছেন বহুবছর। তবুও তার আন্দোলন থেমে থাকেনি। তার ডাকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উপস্থিতিতে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয় গণ আদালত।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে একদিন জন্ম হয়েছিল এই মহীয়সী নারীর। কলকাতার লেডি বেব্রোন কলেজ থেকে বি এ, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ করেছিলেন তিনি। ঢাকা সিদ্ধেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের ছিলেন প্রধান শিক্ষিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ইন্সটিটিউটে খণ্ডকালীন প্রভাষক ও ছিলেন তিনি।

সবাই তাকে বলতো বাংলার সুচিত্রা সেন। ক্যান্সারের কারণে সেই চুল বিসর্জন দিতে হয় তাকে। কেটে ফেলতে হয় মুখের একপাশের মাড়ি। উনার চুল কাটার খবর পেয়ে সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বড় কন্যা
'নোভাও তার চুল কেটে ফেলে। '

হুমায়ূন আহমেদ তাকে একথা জানাতেই তিনি বলেন
- আপনার মেয়েকে বলুন ' লম্বা চুল আমার খুব প্রিয়।
তার বয়সে আমার হাঁটুর সমান চুল ছিল। ' এই মহীয়সী নারী সব মানুষের হৃদয় দখল করে নিয়েছিলেন।

জাহানারা ইমাম দুইবার জন্ম নেন না। একবারই তিনি এসেছিলেন আমাদের মাঝে ।

কি পরিমান শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জমা আছে উনার প্রতি, এই দেশের প্রতিটি মানুষের। সেটা কি তিনি কখনো বুঝতে পেরেছিলেন? হয়তো বুঝতেন তাই আবার তাদের নিয়েই আন্দোলনে নেমেছিলেন। আশার কথা এই যে সেই আন্দোলন থেমে থাকেনি।

১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, আজকের এই দিনে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। ওপাশের জগত থেকে আজ তিনি নিশ্চয়ই আমার বিপুল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অনুভব করতে পারছেন। উনি নিজ সন্তান দেশের তরে কোরবানি দিয়েছেন। তিনি তো বঙ্গ-জননী।

বাংলার পবিত্র মাটিতে তার পায়ের চিহ্ন আর পড়বে না এটা ঠিক। তবে বাংলার হৃদয়ে তিনি জ্বেলে দিয়েছেন অনির্বাণ শিখা। ঝড়-ঝাপ্টা যত প্রচন্ডই হোক না কেন সেই শিখা জ্বলতে থাকবে।

' সৌভাগ্য আমাদের, তিনি জন্মেছিলেন এই বাংলায়।'

শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩

মেয়েদের জন্য - সম্পর্ক ও সুরক্ষা ~ সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়

আমরা মেয়েরা সবাই আসলে গলায় একটা দড়ি পরেই থাকি জন্মানোর পর থেকেই।  এ নিয়ে নিযুত কোটি  লেখালেখি আছে । কাব্যি না করে সোজা কথায় আসা যাক। একটা বাড়িতে যতগুলোই মেয়ে থাক, বাড়ির "পুরুষ" তাদের সুরক্ষা দেবে... এই কনসেপ্টটাই দড়ির প্রথম সুতো। 

বড় হতে হতে মেয়েদের মনে এটা  দেগে দেওয়া হয় যে সঙ্গে একজন পুরুষ থাকা জরুরী। ফাঁকা রাস্তায় হাঁটতে বা ফাঁকা জীবনের পথে এগোতে, ওই একই... একটা পুরুষ।  পনেরো বছর বয়সী দিদির সঙ্গে আট বছর বয়সী ছোট ভাইকে জুড়ে দেওয়া, যা , সঙ্গে একটা ব্যাটাছেলে  থাকা দরকার .. এ খুব স্বাভাবিক ছবি। একই ভাবে সঙ্গে একটা পুরুষ থাকলে রাস্তায় উটকো বিরক্তিকর নোংরামো কম সহ্য করতে হয় এও সত্যি।
আরও একটু বড় হলেই বিয়ে কর।  এটা খুব পরিষ্কার ভাবে দাগানো যে মেয়েরা বিয়ে করবে সুরক্ষার জন্য আর ছেলেরা বিয়ে করবে যাতে অফিস থেকে ফিরে গরম ভাত আর গুছোনো ঘর পায়। এই প্রসেসের মধ্যে যৌনতা  ইত্যাদি কো-অ্যাডভানটেজ মাত্র (কে না জানে পোষ্ট ম্যারেটাল যৌনতার মত ম্যাড়ম্যাড়ে ব্যাপার আর কিচ্ছু নেই। ও জিনিস দাঁত মাজা বাথরুমে যাওয়ার মতই শরীরটুকুকে রাখার জন্য করে থাকে মানুষ) 
এবার এই যে বিয়ে কর, সঙ্গে একটা পুরুষ চাই, এটা বাড়ির লোকেরা মেয়েটার ভালো চেয়েই বলতে থাকে। আমাদের দেশে অবিবাহিতা মেয়েকে ঘর ভাড়া অবধি দিতে চায় না লোকে।  অবিবাহিত মহিলার প্রতি সোসাইটির নজরও অতি তীক্ষ্ণ।  অবিবাহিতা মেয়ে  মা বাবার সঙ্গে থাকলে কিছু ছাড় পাওয়া যায় কারণ মেয়েটা মা বাবার সঙ্গে আছে ওদের দেখাশোনা করবে বলে। তাই বিয়েও করছে না। সরলীকরণের চূড়ান্ত। কিন্তু অবিবাহিতা মেয়ে একা ফ্ল্যাটে আছে মানেই... হুঁ হুঁ... 
মোদ্দা কথা ছোট থেকেই মেয়েদেরকে শিখিয়ে দেওয়া হবেই যে বড় যদি হতে চাও বউ হও  তবে।  বড় যদি হতে চাও সুরক্ষা কেনো চড়া দামে।
এবার, এই অঙ্ক সবার ক্ষেত্রে আজকাল খাটে না।  লক্ষ্মীমন্ত মেয়ের সাপ্লাই কমেছে গত কিছু বছরে। আবার এর মধ্যেই অনেকেই আবার এখনও ভালোবাসায় বিশ্বাস রাখে।  সেই বিশ্বাস একসময় অবসেশনের পর্যায়ে চলে যায়, জেদের দিকে টার্ন নেয়। যত ভালোবাসা তত বিশ্বাস আর  তত অলিগলি। 
কিন্তু বিশ্বাস ব্যাপারটাও লক্ষ্মীমন্ত মেয়ের সাপ্লাইয়ের মত, ঘাটতিতেই আছে। নিচে এই বিশ্বাস আর জেদের গোটা  উদাহরণ দিচ্ছি

১। বছর চারেকের প্রেম। দুজনেই মধ্যে তিরিশের। ছেলেটি  বার বার এদিক ওদিক প্যারালালি সম্পর্কে জড়িয়েছে। মেয়েটি জানতে পারে , ঝগড়া হয়, ছেলেটি সামহাউ কনভিন্স করে দেয় কেঁদে কেটে  হাতেপায়ে ধরে যে ওই মেয়েগুলোই ওকে ফাঁসায়। সে না বলতে পারে না। ভদ্রতা করতে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে নাকি। মেয়েটির সন্দেহ নিরসন হয় না। কিন্তু একজন পুরুষ পাশে থাকলে নিশ্চিন্ত লাগে। একজন পুরুষ সঙ্গে থাকলে মেয়েটিকেও কম ফালতু কথা শুনতে হয়।  ইঙ্গিত টিঙ্গিত কম সহ্য করতে হয়। বাড়ির লোকেরাও নিশ্চিন্ত যে মেয়ে তাদের একা নেই... অতএব...  পলিগ্যামির সম্পূর্ণ দলিল মেয়েটি হজম করে নেয়। 

২। একটি পুরুষ একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করছে। মেয়েগুলো বুঝতে পারছে সব, জানতে পারছে। সবাই ভাবছে এই পুরুষটা আমার। সবাইকেই লোকটা বলছে তুমিই সব। গোপন রগরগে চ্যাট করে একজনকে বঁড়শিতে গাঁথছে আর অন্যজনকে বলছে তুমিই স্বর্গ তুমিই নরক। যে মেয়েটি বেশিদিন সঙ্গে আছে সে পুরুষটিকে বন্ধুদের মধ্যে নিজের স্বামী বলে পরিচয় দিচ্ছে, মাঝেমাঝে সিঁদুর পরে গেট টুগেদারে যাচ্ছে। প্রশ্ন করলে লাজুক হাসছে । থেরাপিস্ট প্রশ্ন করলে বলছে তাতে কি? রেখাও তো পরেন সিঁদুর। তাঁর স্বামী কে?  ওদিকে অন্য মেয়েটি যে টাটকা এবং  রগরগে চ্যাটের প্রভাবে ধরেই নিচ্ছে পুরুষটি তার, সে এই প্রথম মেয়েটির ওপর চড়াও হচ্ছে। প্রমাণ দেখিয়ে দেখিয়ে এস এস পাঠিয়ে মেয়েটিকে বলে দিচ্ছে দেখ, তোমার অমুক আমাকে ভালোবাসে...  শেষে দেখা যাচ্ছে মেয়ে দুটি একে অন্যের শত্রু হয়ে উঠছে প্রায় । পুরুষটি ততক্ষণে এই সব "হ্যাজ পোষায় না" মোডে গিয়ে তিন নম্বরের সঙ্গে হাত ধরে আইনক্সে।
মাঝখান থেকে এই মেয়েদুটো জেদের বশে পুরুষটিকে জয় করে শোকেসে সাজিয়ে রাখার যুদ্ধে মেতে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করছে।

আজকাল  পরকীয়া আইনসিদ্ধ হয়েছে জানি। তবে পরকীয়া মানে তো আইনতঃ যাকে ভালোবাসবে বলেছ তাকে ছেড়ে আর কাউকে ভালবাসছ। কিন্তু আইনের শিলমোহরের ভালোবাসার লোকটাকে ছাড়ছ না। 
তা প্রশ্ন হল এটা মেনে নেওয়ার জন্য আইনের হস্তক্ষেপ কেন? আর সেটাই কি যথেষ্ট? যে আইনের মোহর নিয়ে বসে আছে সে মেনে নেবে কি? তাকে কি আইন এটা মানতে বাধ্য করতে পারে?  না পারে না। কিন্তু তাকে আইন কিছু সুবিধা ভাগ করে নিতে বাধ্য করতে পারে । 
কী সেই সুবিধা? সে সুবিধা সুরক্ষার।  সঙ্গে থাকার ফিজিক্যাল সুরক্ষা। প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে দেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক সুরক্ষা।
এরই মধ্যে মিডিয়া আমাদের দেখায় বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের এই সুরক্ষাকবচের কারণে নাচ গান, আনন্দ উৎসবের ছবি যা  আসলে কিছু  ভালোবাসার ব্যবসাদারদের অনেক বেশি সাহস আর সুযোগ জুগিয়ে চলেছে।
ফলে যেটা হচ্ছে সেটা হল  সহবাসের সাহস আর সুযোগ দুইই থাকছে। থাকছে ইচ্ছা এবং ইচ্ছার ব্যবহারও। শুধু যেটা আসলে আর থাকছে না সেটা হল ওইই, সুরক্ষা। না আইনি না বে আইনি। কোনো সুরক্ষাই নেই। 
এসব বোঝাতে গিয়ে দেখেছি কোনো কোনো মেয়ে অদ্ভুত ভাবে শক্ত হয়ে গিয়ে বিরোধীতা করে এই বলে যে সে সুরক্ষা চায় না। সে ভালোবাসা চায়। সে যা করছে "ভালোবেসে" করছে। 
এবার প্রশ্ন করি তা ভালো যে বাসছ এত তাও তোমার অমুক  আরও অন্য মেয়েদের পিছনে পড়ে আছে কেন?
তখন কেউ অসহায় কাঁদে কেউ ওই প্রথম পয়েন্টটাতে আটকে যায়। বিশ্বাস করে যে আসলেই লোকটি বড় ভদ্র আর তাঁর আশেপাশের মেয়েগুলো অত্যন্ত দুশ্চরিত্র, ছেনাল।

কেন? কেন? কেন? এই প্রশ্ন প্রচুর। কে কাকে কত সময় দিতে পারে এই প্রশ্নও প্রচুর। কিন্তু আমি যদি নিচের  প্রস্তাবটা দিই,   জানতে চাই  যে কতজন এটা দিনের পর দিন বছরের পর বছর করতে পারবেন তো এই প্রশ্নকর্তারা বাদে বাকি অনেকেই কিছু পজিটিভ বা নেগেটিভ উত্তর অন্তত দেবেন জানি।  
প্রস্তাবটা এমন -  
প্রত্যেক পাড়ায় একটা মহিলা মেন্টাল সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করতে চাইলে কে কার বাড়িতে  সপ্তাহে দুদিন এক ঘন্টা করে জায়গা দেবেন যাতে কিছু মেয়ে একসঙ্গে বসে শুধু একে অন্যের কথা শুনবে, ভেন্ট আউট করবে। এটা  কতজন অ্যাকোমডেট করতে পারবেন। লজিস্টিকস ভেবে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বাড়িতে একটা বসার জায়গা যেখানে ওই সময় আর কোনো ইন্টারাপশন থাকবে না এবং একটা বাথরুম , ব্যবহার যোগ্য। চা কফি না, গেট টুগেদার না। এটা জাস্ট সাপোর্ট গ্রুপ। চেনা অচেনা যে কেউ যারা সম্পর্ক নিয়ে যন্ত্রণায় আছে ডিলেমায় আছে অথবা এককালে যন্ত্রণা ও ডিলেমায় ছিল, আজ নেই কিন্তু তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ও শোনার জন্য সময় দিতে পারবে, এরাই যোগ দেবে সেখানে। 
মাঝেমাঝে এঁরা নিজেরা একটা ওয়ার্কশপ করবে যাতে তাঁরা অ্যালার্মিং বিহেভিয়ার ডিসকাস করা হবে। সেই ডিসকাসনের থেকে উঠে আসা তথ্য আরও বহু মেয়েকে সেটা শেখাতে পারবে।  না, কোনো চা কফি শিঙারা সেলফি নেই। শুধু মেন্টাল হেলথ-এর কারণে একজায়গায় জড়ো হওয়া। এবং অবশ্যই সেখানে যা আলোচনা হচ্ছে সেটাকে রসালো গসিপ হিসেবে আর কোথাও না জানিয়ে ১০০% সিক্রেসি মেনটেন করা।
এই প্রস্তাবটা শুনতে ভাল কিন্তু টানা কিছুদিন ধরে  বাস্তবায়িত করা প্রায় অসম্ভব  । কারণ মেয়েরা নিজেরাও নিজেদের মেন্টাল হেলথ ব্যাপারটাকে প্রায়োরিটি লিস্টের একদম শেষে রাখতে অভ্যস্ত। সমাজও তাই চায়, সংসারও তাই চায়। অতএব মেয়েরাও তাইই চায়। সে তো সমাজ সংসারের বাইরে নয়! এর জন্য কাউকে দোষ দেওয়ার নেই।  তবু চেষ্টা করা যেতে পারে।  যদিও এই চেষ্টায় বহু বাধা থাকবে। 
ফেসবুকেই বেশ কিছু এই ধরণের গ্রুপ আছে । সেখানে কিছু মেম্বার অ্যাকটিভ কিছু রিঅ্যাকটিভ কিছু প্রোঅ্যাক্টিভ। তবে সমস্যা হল নিজের সমস্যার কথা খোলাখুলি লিখে বসে থাকাটা  আসলে আলোচনা নয়। ওতে সমাধান যদি বা ২০ শতাংশ আসে, ভয় আসে সঙ্গে ৫০ শতাংশ । এই বুঝি সেসব লেখার এসএস বাজারে বার করে দিল।  এই বুঝি কেউ ফেক প্রোফাইলের আড়ালে বসে সব পড়ে ফেলল।  ফলে যারা লেখে তারা খুব সাহসী না হলে অ্যাননিমাস আইডেন্টিটির আড়ালে লেখে।  অর্থাৎ যেখানে গিয়ে সাহস খুঁজছে আশ্রয় খুঁজছে সেখানেও কাউকে বিশ্বাস করতে ভয় পাচ্ছে।  এই ভয়টা স্বাভাবিক। কারণ মানুষগুলো সবাই অচেনা। সেক্ষেত্রেও একঝাঁক অচেনা মানুষকে বিশ্বাস করার বদলে একজন অবিশ্বাসীকে আঁকড়ে থাকার মধ্যে স্বস্তি।
এগুলো সব আমার ব্যক্তিগত অবজার্ভেশন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে লিখলাম। এ বিষয়ে হয়ত একটা বই লিখে ফেলার মত রসদ আমার কাছে আছে। তবে আপাতত আজ এই অবধিই। এইসব শব্দের মধ্যে নিজেকে যদি ১০% ও পেয়ে থাকেন তো প্লিজ কথা বলুন। নিজের সঙ্গে বলুন, নিজের প্রিয়জনের সঙ্গে বলুন। আর হ্যাঁ । সম্পর্ক যদি সুরক্ষার কারণে করে থাকেন তাহলে জানবেন সুরক্ষাটা আইনি শিলমোহরের। তাহলে সেব্যাপারেও কিছুটা জেনে রাখুন প্রত্যেকেই।  

নিচের লেখাটুকু আমি শতাব্দী দাশের লেখা থেকে তুলে দিলাম। এক দুটো লাইন নিজের মত জুড়েছিও

১৯৭৮ সালের সুপ্রিম কোর্টের এক রায় অনুসারে *বিষমকামী* লিভ-ইন ভারতে বৈধ, যদি তা
১) পরস্পরের সম্মতিতে হয়। 
২) সম্মতির বয়স পাত্র-পাত্রীর হয়ে থাকে।
৩) তারা মানসিক ভাবে সুস্থ হয়।

আলাদা করে লিভ-ইন সংক্রান্ত কোনো আইন ভারতে নেই। হওয়া উচিত, কিন্তু নেই। তার অবর্তমানে আপনাকে বিয়ে-সংক্রান্ত আইনগুলিই মনে রাখতে হবে। তবে তা বিচারকের 'ইন্টারপ্রিটেশন'-এর মুখাপেক্ষীও বটে। 
আদালতে, বাস্তবক্ষেত্রে আমরা দেখি, লিভ-ইন প্রমাণ করতে অসুবিধে হচ্ছে। কী কী ভাবে আদালতে লিভ-ইন প্রমাণ করা যায়?

১) যৌথ ছবি। (ছবি তুলতে সঙ্গী আপত্তি করলে সন্দেহজনক।)
২) প্রতিবেশীরা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের একসাথে থাকতে, খেতে, বসতে, শুতে দেখেছেন। (এই স্বাভাবিকতায় এক পক্ষের আপত্তি থাকলে তা সন্দেহজনক)
৩) কিছু কাগজপত্র, যেমন জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কোনো সম্পত্তি ক্রয় বা ভাড়ার নথিতে একসঙ্গে দুজনের নাম ইত্যাদি। (ভেবে দেখুন, কাগজপত্র এড়িয়ে রাষ্ট্রকে টেক্কা দেবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু রাষ্ট্রের আইন আবার, আপনার সঙ্গে অপরাধ হলে, প্রথমে কাগজপত্রই দেখতে চাইবে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের বদলে অন্য রকম কাগজপত্র, এই আর কী। যাইহোক, কাগজপত্র একসাথে রাখতে না চাইলেও তা সন্দেহজনক। আবার রাখাটাও রিস্কি বিশেষ করে সম্পত্তির ব্যাপারে)

৪)  আপনি কি কোনো বিবাহিত পুরুষ বা নারীর সঙ্গে থাকছেন? তাহলে লিভ-ইনের বৈধতা প্রথমেই নাকচ হবে। ঠিক যে কারণে বিবাহিত অবস্থায় অন্য বিয়ে অবৈধ, সেই কারণেই বিবাহিত অবস্থায় লিভ ইন-ও অবৈধ। এমন লিভ-ইন করার জন্য শাস্তি কেউ পাবে না কারণ অ্যাডাল্টারি আইন উঠে গেছে। কিন্তু আপনার সম্পর্কটি আর বৈধ অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নয়। 
এবার, যে মুহূর্তে সেটি আর বৈধ অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নয়, সে মুহূর্তে কোনো একজনের উপর ঘটা ভায়োলেন্স এমনিই ভায়োলেন্স। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স নয়। ৪৯৮এ-র আওতায় তা আসবে না। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্টের আওতাতেও না৷ উত্তরাধিকার, সন্তানের স্বীকৃতি এসব তো মরীচিকা। হ্যাঁ, আপনি খুন হলে সঙ্গী হয়ত ফাঁসবে। কিন্তু খুনের চেয়ে সামান্য গৌণ অপরাধে সহজেই ছাড় পাবে। 

বিশেষ অনুরোধ - এই লেখাটা সম্পূর্ণ ভাবেই মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভেবে লেখা। এই লেখার নিচে এসে "কিন্তু ছেলেদের সুরক্ষা?" অথবা "ছেলেদেরকেও কত ভাবে মরতে হয় তার খবর কে রাখে?" টাইপের মন্তব্য করবেন না। সে নিয়ে আবার কখনও নিশ্চই লিখব। তবে এই লেখাটায় ভুলভাল তর্ক শুরু করে সময় নষ্ট করবেন না। তা করলে ধরে নেব আপনার বাড়ির দেওয়ালে ঘুন ধরলে আপনি ঘুনের ট্রিটমেন্ট করে বাড়ি বাঁচান না, উল্টে মাটির বাড়ির দেওয়ালেও কত সমস্যা হয় সেই নিয়ে তর্ক করতে বসেন। অনুরোধ করব অকারণ তর্ক না জুড়তে।

সংশোধন - বন্ধুদের কমেন্ট থেকে জেনে ভুল শুধরালাম
১. বহুগামিতা আইনতঃ সিদ্ধ ; ভূল কথা। এই লেখা টা পুরোটা পড়লেই পাঠক দেখবেন, তা নয়। মহিলাদের হাতে কোনোদিন ক্ষমতা ছিল না তাঁরা পুরুষদের কোনরকম আইনতঃ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বহুগামিতার জন্যে। ডিভোর্স নিতে পারতেন এই গ্রাউন্ড এ। যেটা এখনও সম্ভব।হ্যাঁ, পুরুষরা বিবাহিত মহিলার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা আনতে পারতেন কিন্তু সেই আইন বদলেছে। বাঁচা গেছে! বহুগামিতা আইনসিদ্ধ হয় নি।
২. ৪৯৮ এ ধরনের ধারা কেউ live in এ কখনই ব্যবহার করতে পারবে না। ওটা প্রযোজ্য dowry related violence এ। তাই ভুলভাল বুঝিয়ে লাভ নেই। লিভ ইন এর পুরুষ married কি unmarried কিছু এসে যায় না ৪৯৮ এ র জন্যে। PWDVA অ্যাপ্লিকেবল ইন লিভ ইন রিলেশনশিপ।
বাকি, মেয়েদের অন্য মেয়ের ওপর রাগ না করে পুরুষদের খেলাটা বোঝা উচিৎ, সে আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা পুরুষটির ভাষ্য বিশ্বাস করে, কোমর বেঁধে ঝগড়ায় নেমে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়াতে বা জীবনে। আর এখানেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জয়।

বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩

ব্রিজভূষণ ও বিজেপি ~ বিহঙ্গ দত্ত

বিজেপি কেন ব্রিজভূষণকে রেসলিং ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে না?  

তার নামে যে যে মারাত্মক অভিযোগ এসেছে তাতে প্রতিটা মনুষ্যপদবাচ্য রাজনৈতিক দলেরই উচিত তদন্ত চলাকালীন তাকে সবরকম সাংবিধানিক পদ থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া। অন্তত গণতন্ত্রের চূড়ান্ত লোকদেখানো ধাঁচাতেও এইটাই দস্তুর। তারপরেও এ কাজ না করার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে। এক এক করে দেখা যাক। 


১) তিনি উত্তরপ্রদেশের কাসরগঞ্জের সাংসদ। টানা ছয়বার জিতেছেন। ২০০৮ সালে স্বয়ং বিজেপিই এনাকে আস্থা ভোটে ক্রস ভোটিং করার জন্য বহিষ্কার করে। তখন তিনি সমাজবাদী পার্টিতে যোগদান করেন। ৯-এ সমাজবাদী পার্টির সাংসদ হন। ১৪-এ আবার ফিরে আসেন ভাজপা-য়। সুতরাং এটুকু বোঝা যায় উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণে তিনি একজন বিগ ফিশ। 

২) কতটা বিগ ফিশ বুঝতে গেলে তার ট্র্যাক রেকর্ডের দিকে তাকাতে হবে। তিনি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় প্রাইম সাসপেক্ট লিস্টে ছিলেন। সঙ্গীরা হলেন লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলি মনোহর যোশী প্রমুখ। শুধু কাসরগঞ্জ নয় উত্তরপ্রদেশের আরও বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে তার রাজনৈতিক দাপট অব্যহত। 

৩) এই রাজনৈতিক দাপট কীভাবে হল? অর্থনৈতিক ও মাসল পাওয়ার দুইয়েরই ভূমিকা আছে। ব্রিজভূষণ একটি প্রতিষ্ঠানও বটে। উত্তরপ্রদেশে অন্তত ৫০টি বেসরকারি স্কুল চলে তার মালিকানায়। বেশ কিছু টেকনো কলেজ ও গমকলের মালিক তিনি। ব্যক্তিগত প্রাসাদোপম বাড়ি, গাড়ি, জমি জায়গার ছড়াছড়ি এমনকি রয়েছে হেলিকপ্টারও। 

৪) এই প্রভাব শুধু রাজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে তিনজন ভিন্ন দলীয় বিধায়ক কেনার ব্যাপারেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। 

৫) কাহানি মে ছোটাসা টুইস্ট। এহেন ধুঁয়াধার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যোগী আদিত্যনাথের সম্পর্ক মোটেও সুবিধার নয়। দুইয়ের মধ্যে ভালোই ক্যাচাল আছে যা সুবিদিত। তারপরেও ব্রিজভূষণকে টলানো যায়নি। তিনি তার রাজত্ব কায়েম রেখেছেন। তার যোগাযোগ সরাসরি কেন্দ্রীয় দপ্তরের সঙ্গে। এখান থেকেই হয়তো বোঝা যায় কেন তিনি বারবার উল্লেখ করছেন- নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ না বললে তিনি পদ ছাড়বেন না। 

এই চূড়ান্ত পাওয়ারফুল ব্যক্তিত্বকে ২৪-এর আগে চটানো বিজেপির পক্ষে বিপজ্জনক। অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রধানতম সৈনিকের সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে আছে ওনার নামের সঙ্গে। 

এবার একটু দ্বিতীয় চ্যাপ্টারে আসুন। কুস্তি ফেডারেশন নামেই ভারতীয়। এই ফেডারেশনের সুপারস্টাররা সকলেই উত্তর ভারতের যে অঞ্চল বিজেপির একচ্ছত্র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের শান মান বলে চিহ্নিত করা হয় সাক্ষী মালিক, বজরঙ্গ পুনিয়াদের। কুস্তি ভারতে একেবারে আনপপুলার স্পোর্টস ভাবলে আপনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।  হরিয়ানার ক্ষেতি করা ছেলেপুলে যতটা কোহলি বা ধোনি হতে চায় ঠিক ততটা না হলেও অনেকটাই বজরঙ্গ পুনিয়া, বা সুশীল কুমার হতে চায়। ভীনেশ ভোগট বা সাক্ষী মালিক হতে চায়। 
(সুশীল কুমার নামটি বর্তমানে ভয়াবহভাবে পরিত্যাজ্য। কেন তাও জানেন আপনারা। একাধিক নারী নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ইনি। অথচ কি অসাধারণ রেস্টলার ছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র ক্রীড়াক্ষেত্রের অবিস্মরণীয় ভূমিকার স্বাপেক্ষেই এই নাম রাখলাম। আজ যখন বজরঙ্গ- সাক্ষী, ভীনেশদের সঙ্গে এক রাস্তায় এক মঞ্চে মার খাচ্ছেন তখন সুশীলকে দেখে ঘেন্না ছাড়া আর কিছু পায় না। )
 সুতরাং নিজেদের ক্ষমতার কেন্দ্রের  সুপারস্টারদের চূড়ান্তভাবে হেয় করার সাহস কীভাবে বিজেপি পাচ্ছে? 

এখানেই বিজেপি ফ্যাসিস্ট। ক্লাসিক অর্থে ফ্যাসিস্ট। সে ফ্যাসিজমের সবকটা শর্ত এক এক করে পূরণ করছে। পপুলার যা সব প্রচার সে গত পাঁচ ছয় বছরে করেছে। ফ্যানবেস তৈরি করেছে। আরএসএসের মাধ্যমে সে সেই মাসের কাছে নিজের মতাদর্শ নিয়ে গেছে। সব মাস এই মতাদর্শের সঙ্গে থাকেনি। তাতে তার কিছু যায় আসেনি। সে এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। 

"এক লাখ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার থেকে বেশি দরকারি দশ হাজার এমন সৈনিক তৈরি করা যারা দশ লাখকে ঠাণ্ডা রাখতে সক্ষম"। 
বিজেপির হাতে এরকম অযুত নিযুত সৈনিক আছে। তারা রাতদিন সাতদিন চায়ের দোকান থেকে সোশাল মিডিয়ায় খেটে যায়। এই কর্মীদের দেখা পেতে গেলে সাক্ষী মালিকের আজকের টুইটার যান। রিপ্লাইগুলো দেখুন। অত খাটতে না চাইলে ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকের যে কোনও নিউজ পোর্টালের কমেন্টবক্সে যান। আর অন্য বিশ্ব দেখতে চাইলে পাড়ার চায়ের দোকানে দুটো বিড়ি আর এক কাপ চা নিয়ে বসে পড়ুন। দেখবেন সবকিছু পার করে 'ওদের খুব বাড় বেড়েছে' ধ্বনিই কানে আসবে। 

এই সৈন্যদল দিয়ে সবকিছু সাফ করে দেওয়া যায়। শালা, দু আনার এক বনগাঁর ক্ষেপুড়ে দেখলাম আজ এবিপির কমেন্টবমক্সে গিয়ে লিখেছে- এরা পলিটিকাল প্লেয়ার। যখন উঠেছে ব্রিজভূষণজির ব্যাক আপেই উঠেছে। আমাদের পেছনে পলিটিক্স ছিল না।'
 ওটারে আমি বনগাঁ স্টেডিয়ামে বল বয় ছাড়া কোনওদিন কোনও রোলে দেখিনি। সেও আজ অবলীলায় সাক্ষী মালিক, বজরঙ্গ পুনিয়াদের পলিটিকাল প্লেয়ার ঘোষণা করছে। অবলীলায়। আয়নাও দেখে না সোগো!   

তো দোস্তো! এই হল ব্যাপার। ফ্যাসিজম যখন ফুটে ওঠে এভাবেই ওঠে। ৩০-৪০ বছর পর এই নিয়ে ইতিহাস লেখা হবে। কোন ইতিহাস সেটা এন-ই-পি সমৃদ্ধ বাচ্চারা বলবে। যদি ট্রেণ্ড সেম টু সেম চলতে থাকে তাহলে আপনারা সাক্ষী মালিকের নাম সাক্ষী ইয়াসমিনও পড়তে পারেন ইতিহাস বইতে।