দুপুরে খাওয়ার পর আরামকেদারায় বসে একটা পান খান রবীন্দ্রনাথ, তার সরঞ্জাম নিয়ে মৃণালিনী পায়ের কাছে বসে পান সাজছেন। বাড়ির ঠিকে ঝি মোক্ষদা-র পুঁচকে মেয়েটা এসে বায়না ধরলো, সেও পান খাবে।
মেয়েটার বয়স বছর চারেক, সর্ষের তেলের শিশির মত গায়ের রঙ, মায়াময় চোখদুটি। সারা বাড়ি টো টো করে ঘুরে বেড়ায়, সর্বত্র তার অধিকার। কিন্তু এই বয়সেই তাকে পানাসক্ত করে তোলা কি ঠিক হবে?
রবি বললেন, তুই পান খাবি কী রে? তোকে আমি ভীমনাগের সন্দেশ খাওয়াবো। এখন ছবির খাতাটা নিয়ে আয় তো, কালারিং কর দেখি আমার সামনে বসে।
সে ছুটে গিয়ে তার ছবি রং করার খাতা এনে রবিকে দেখালো, একটাও ছবি রং হতে বাকি নেই আর। ঐ খাতারই শেষ পাতায় তাসের একটা স্পেডের আউটলাইন স্কেচ এঁকে রবি বললেন, 'নে এই পানটাতে রং দে দেখি।'
মেয়েটা আবার এক ছুটে গিয়ে নিয়ে এলো তার জলরঙের যাবতীয় কৌটো-সামগ্রী। তার কোনোটাতে রং আছে, কোনোটাতে ফুরিয়ে গিয়েছে। লাল, নীল, বেগুনী রঙের কৌটোতে কিছুটা করে রং আছে। অবন ঠাকুর তার একটা কৌটোয় কাঁচা হলুদের নির্যাস ভরে দিয়েছেন আর বলেছেন, সেইটা দিয়ে রং করা প্র্যাকটিশ করতে। একটা নতুন তুলিও দিয়েছেন। সে রবীন্দ্রনাথের আঁকা স্কেচটার ওপরে ঝুঁকে পড়ে তার কৌটোর তরল আর আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে রং করতে লাগলো।
এক মুহূর্ত বুঝি অন্যমনস্ক ছিলেন রবি। হঠাৎ স্ত্রীর আর্তনাদ শুনে তাকিয়ে দেখেন, মেয়েটা সেই পানের স্কেচের মধ্যে সবুজের বদলে বেগুনী রং বোলাচ্ছে। থতমত খেয়ে গেলো বাচ্চাটা, হাতে তুলে নিলো কাঁচা হলুদের কৌটোটা আর ওটা হাত ফস্কে পড়ে গেলো মৃণালিনীর হাতে ধরা চুনের ডিব্বায়। চুনের মধ্যে হলুদ পড়তেই সাদা ধবধবে চুনটা হয়ে গেলো খুনখারাপি লাল।
দুজনের মুখের হতাশ অবস্থা দেখে হেসে ফেললেন রবীন্দ্রনাথ। চার বছরের মেয়ে, সে কীই বা বোঝে! উনিই তার নাম দিয়েছেন চেতনা।
পাশে পড়ে থাকা কবিতার খাতাটা টেনে নিয়ে লিখলেন - আমারই চেতনার রঙে পান না হলো সবুজ, চুনই উঠলো রাঙা হয়ে...
এক মুহূর্ত বুঝি অন্যমনস্ক ছিলেন রবি। হঠাৎ স্ত্রীর আর্তনাদ শুনে তাকিয়ে দেখেন, মেয়েটা সেই পানের স্কেচের মধ্যে সবুজের বদলে বেগুনী রং বোলাচ্ছে। থতমত খেয়ে গেলো বাচ্চাটা, হাতে তুলে নিলো কাঁচা হলুদের কৌটোটা আর ওটা হাত ফস্কে পড়ে গেলো মৃণালিনীর হাতে ধরা চুনের ডিব্বায়। চুনের মধ্যে হলুদ পড়তেই সাদা ধবধবে চুনটা হয়ে গেলো খুনখারাপি লাল।
দুজনের মুখের হতাশ অবস্থা দেখে হেসে ফেললেন রবীন্দ্রনাথ। চার বছরের মেয়ে, সে কীই বা বোঝে! উনিই তার নাম দিয়েছেন চেতনা।
পাশে পড়ে থাকা কবিতার খাতাটা টেনে নিয়ে লিখলেন - আমারই চেতনার রঙে পান না হলো সবুজ, চুনই উঠলো রাঙা হয়ে...
Simply hillerious. In such a small span, so much humour has been created. Thanks a lot for this one, and we will look for more in coming days.
উত্তরমুছুন