আপনি সুপ্রতিষ্ঠিত। সারাজীবন অনেক রোজগার করেছেন। রোজগারের টাকায় একগুচ্ছ প্রপার্টি কিনেছেন। সেই সমস্ত প্রপার্টি থেকে এখন আপনার মাস গেলে সতেরো লাখ টাকা ইনকাম হয়। ঘরে বসে।
আপনার মেয়েকে টেনিস খেলতে প্রথম উৎসাহ দিয়েছিলেন আপনিই। সেই মেয়ের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সমস্ত প্রতিযোগিতায় নিয়ে যাওয়া, সবকিছুতে আপনিই ছিলেন তার প্রথম অনুপ্রেরণা। নিজের চাকরি ছেড়ে দেন মেয়ের ট্রেনিংয়ের জন্য সময় বের করতে। দু লাখ টাকা দিয়ে দামি র্যাকেট কিনে আনেন মেয়ের জন্য।
আপনার প্রশ্রয়ে আর নিজের পরিশ্রমে মেয়ে ধীরে ধীরে স্টেট লেভেল চ্যাম্পিয়ন হয়। মাত্র চব্বিশ বছর বয়েসের মধ্যেই সাতান্নটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের টেনিস টুর্নামেন্টে খেলে আঠেরোটি সোনার মেডেল নিয়ে আসে সে।
মেয়েটি একটি টেনিস অ্যাকাডেমি খোলে। যে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা সে আপনার কাছ থেকে পেয়ে এতদূর অবধি এসেছে, সে চায় সেই অনুপ্রেরণা ছড়িয়ে পড়ুক নতুন প্রজন্মের মাধ্যেও।
আপনি দুধ আনতে যান পাড়ার দোকানে। সেখানে আপনার পাড়াপ্রতিবেশিরা আপনাকে টন্ট করে, কী তাউজি, লউন্ডির কামানো পয়সায় খাচ্ছো পরছো?
আপনি জানেন, ওরা সত্যি বলছে না। আপনার জীবনধারণের জন্য আপনার মেয়ের টেনিস অ্যাকাডেমি থেকে রোজগার করা টাকার ওপর নির্ভর করতে হয় না। আপনিও জানেন, তারাও জানে। সম্ভবত ওরা আপনার পেছনে লাগে। এমনিই।
আপনার খারাপ লাগে। রাগ হয়। হরিয়ানভি রক্ত টগবগিয়ে ফোটে। একটা জুৎসই জবাব দিতে মন চায়।
আপনি কী করবেন? প্রতিবেশিদের সাথে তুমুল ঝগড়া করবেন? তাদের মুখ দেখা বন্ধ করে দেবেন?
তা কী করে হয়? টাকায় কারুর নাম লেখা থাকে না। আপনার মাসিক আয় সতেরো লাখ টাকার সাথে ঐ মেয়ের রোজগার করা এক দেড় লাখ টাকাও তো মিশছে। যে রুটি আপনি খাচ্ছেন, সেই রুটির আটার দু এক দানায় যে ঐ মেয়ের কামানো টাকার ভাগ নেই, তা কি আপনি বলতে পারেন?
মেয়ের পয়সায় খাওয়া? লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত!
কিন্তু নিজের মরে যাওয়া তো অতটা সহজ নয়। হরিয়ানাতে খুব সহজ নিজের মেয়েকে মেরে ফেলা।
মেয়ে সফল টেনিস খেলোয়াড়, টেনিস অ্যাকাডেমি নিয়ে মেতে থাকলেও ঘরের কাজ সে উপেক্ষা করে নি। সে যে মেয়ে, মেয়েদের ঘরের কাজ তো করতেই হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন