দিল্লিতে আপের জয়জয়কারে আপনার মতো আমিও খুশী - উচ্ছ্বসিত। আদার ব্যাপারী - তাই রাজধানীর খবর তেমন একটা পাই না - তবে হাইএন্ড বন্ধুদের মুখে শুনেছি, সেখানকার সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা আর সরকারি ইশকুলের ভোল বদলে দিয়েছেন কেজরিওয়ালের সরকার - মহল্লা ক্লিনিকের কথা শুনেছি - কাগজেই পড়েছি, পরীক্ষাটরীক্ষায় দিল্লিতে বড়লোকি প্রাইভেট ইশকুলের চাইতে ভালো রেজাল্ট করছে সরকারি ইশকুল।
গেরস্ত মধ্যবিত্ত মানুষ - দাঙ্গাহাঙ্গামায় বড় ভয় পাই। কাজেই, এরাজ্যেও বিজেপি না আসুক, এমনটাই চাই। প্লাস, ওই মধ্যবিত্ত বলেই, স্বাস্থ্য আর শিক্ষা নিয়ে খুব চিন্তায় থাকি - ভাবি, ওই পথেই উন্নতি-টুন্নতির আশা।
এইরাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র - তিনি খুবই হাইফাই অর্থনীতির লোক, শুনেছি।
রাজ্যের বাজেটের খোঁজ আজকাল কেউ রাখে না - খুব একটা খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ কেউ করেন, এমনও দেখিনি। তবু, আমার মতো আনাড়ির চোখে একটু কেমন কেমন ঠেকল -
গতবছরের রাজ্য বাজেটে -
স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়বরাদ্দ - ৯৫৫৬ কোটি টাকা
স্কুল শিক্ষায় - ২৭৫৪০ কোটি টাকা
উচ্চশিক্ষায় - ৩৯৬৪ কোটি টাকা
বৃত্তিমূলক শিক্ষায় - ১১০৬ কোটি টাকা
এবছরের বাজেট -
স্বাস্থ্যখাতে - ৪৬০৮ কোটি টাকা (গতবছরের আটচল্লিশ শতাংশ - অর্ধেকেরও কম)
স্কুল শিক্ষায় - ৮৭৫০ কোটি টাকা (গতবছরের একতিরিশ শতাংশ - এক-তৃতীয়াংশেরও কম)
উচ্চশিক্ষা - ৭০০ কোটি টাকা (গতবছরের সতের শতাংশ - ছয় ভাগের এক ভাগ)
বৃত্তিমূলক শিক্ষায় - ৯০০ কোটি টাকা (গতবছরের আশি শতাংশ)
এসব নিয়ে কেউ হইচই করছেন, এমন খবর দেখিনি। মিডিয়াতেও শোরগোল চলছে, এমনও দেখিনি। আপনি কিছু খবর পেলে জানাবেন, প্লীজ।
হ্যাঁ, খুশীর খবরও কি নেই? আছে তো!! জাতপাতের ভিত্তিতে পেনশন চালু হবে এরকম অনেক খবরই আছে।
তা, এই পথেই বিভাজন আর জাতপাত আর হানাহানির রাজনীতি প্রতিহত হবে? শিক্ষা আর স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ছেড়ে পাইয়ে-দেওয়ার রাজনীতি দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষের বয়ানের মোকাবিলা হতে পারবে?
প্রসঙ্গত, দুই রাজ্যেই নাকি কর্ণধারদের স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর। তাহলে? আমরা, এই রাজ্যের নাগরিক তথা ভোটারেরা কি এমনই অর্বাচীন যে চুষিকাঠির বাইরে ভাবতে শিখিনি?? শিক্ষা-স্বাস্থ্য আমাদের অগ্রাধিকার নয়???
আপনি কী বলেন??
(তথ্যসূত্র - মাননীয় শ্রী অমিত মিত্র মহাশয়ের ২০১৯ ও ২০২০ সালের বাজেট বক্তৃতা)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন