বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯

ডিটেনশন ক্যাম্পের আগে-পরে ~ সুস্মিতা ওঝা

হঁ আইজ্ঞা, হামিই ফালু দাসের বিটি, সন্ধ্যা দাস।
ঠিকানা নলবাড়ি, বরক্ষেত্রী ।
আর হঁ, লাশট  হামার বাপেরই ত বঠে!
তুমরা জীয়ন্ত মানুষটকে ক্যাম্পে লেগল্যে, 
বিদেশি ছাপ মার‍্যে! 
তারপর অত্যাচার কর‍্যে, গরু-মরা কর‍্যে 
লাশট হামদের কাছ আনল্যে! 
আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, সবই ত দিখাইনছিল,
ঘরের জমিন ট বন্ধক দিয়্যেঁ, কেস লড়ল্য বাপট।
তবু তুমরা মানল্যে নাই! 
কাঁদ্যে তুমাদের পায়ে পড়ল্যম, 
"বাপের আমার পেসার আছে, শরীলট ভাল নাই!"
তুমরা বিন চিকিচ্ছায় মার‍্যে ফেলল্যে হামার বাপ কে!
আজ তবে,  জীয়ন্ত বাপের বদলি
ই লাশট, ক্যেনে দিছ হামকে? 
ই বিদেশীটকে বিদেশে পাঠাইন দিছ নাই ক্যেনে? 
হামরা গরীব, পরের জমিতে খাট্যে খাই,
হামদের নিজদের জমিন হব্যেক কুথা লে? 
ই দেশট কি শুধই বড়লকের বঠে?
আর হামরা যারা গরীব, যাদের জমিন নাই,
খাট্যে খাই, দেশট তাদের লয়? 
হা রে, রাজার বেটারা, তুরা জমিন পালিস কুথা? 
হাজার হাজার বছর ধর‍্যে, যখন পাথর ভাঙ্যে, 
জঙ্গল কাট্যে জমিন বানাল্যম হামরা,
তুরা তখন ছিলিস কুথা? 
আজ তুরা জাত-ধম্মের লড়াই লাগাইঁ 
উঁচ'-নীচ'র বিচার সাজাইঁ,
হামদের জমিন লুঠেছিস, ঘরবাড়ি লুঠেছিস,
ইখন লুঠছিস দেশ! তবে জান্যে রাখ, 
ই দেশ ছাড়্যে হামরা কুথাকে নাই যাব।
ই লুঠেরা আইন হামরা জানতক্ মানব্য নাই! 
এদ্দিন একতরফা মার খাঁয়্যেছি হামরা,
ইবার সময় আসেছ্যে উট ফিরাইন দিবার,
তুদের ঐ ডিটেনশন্ ক্যাম্পট গুঁড়াইঁ দিয়্যেঁ, 
ইবার লড়্যে লুব হামদের দেশ, হামদের অধিকার।
           

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন