রবিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৯

ডাক্তার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ~ ডা: রেজাউল করীম

আবার একজন ডাক্তারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যে পুলিশ রাজনৈতিক নেতার খুন, রাহাজানি, লুটতরাজ, ধর্ষনের এফ আই এর নেয় না, তদন্ত না করে এফ আই আর নেওয়া যাবে না এই যুক্তিতে, তাদের গ্রেফতার করা তো দূর অস্ত, সেই পুলিশ পলকে ডাক্তারদের হাজতে প্রেরণ দেয় কোন প্রমান ছাড়াই। এই রাজ্যের গনতন্ত্রের এই হাল। যারা শিক্ষিত ও মানী লোক তারারাজনৈতিক চাটুকার না হলে তাদের কপালে হাজতবাসের সম্ভাবনা প্রভূত। 
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে চাটুকার বাজারী আনন্দ আর অন্যসব কৃপা-ভিক্ষুক মিডিয়া রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের ইমেজ বিল্ডিং শুরু করেছে। এদের দৃষ্টিতে কোন কোন নেতানেত্রী একাধারে কবি, গীতিকার, শিল্পী, দার্শনিক আরো কত কি? কিন্তু যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই, প্রীতি নেই, যারা নিজের চোখে দেখতে পান না, নিজের কানে শুনতে পান না, তাদের সকল কথাই অনৃতভাষন তাঁরা কি করে মহাপুরুষ পদবাচ্য হয়ে ওঠে স্বয়ং ভগবান ই বলতে পারেন। 
আজকের আনন্দবাজার দেখুন। সরকারের হাতে আছে ১৪২০০০ শয্যা। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা কম করে ১০ কোটি। তাহলে মাথাপিছু কটি শয্যা হয়। আনন্দবাজার অঙ্ক কষে বার করেছে প্রতি ১১৯২ জন প্রতি ১টি শয্যা। কোন স্কুলে এরা লেখাপড়া করেছে ভগবান জানেন। কিন্তু, হাতে যখন কলম আছে তখন যত্রতত্র ছিটিয়ে নিজের বিদ্যাবুদ্ধি জাহির করবে তাতে আর আশ্চর্য কি? বিশেষতঃ বাংলার সবচেয়ে বড় বুদ্ধিজীবী যখন দোসর তখন মিথ্যার ফানুসের যে কোন পরিসীমা থাকবে না, তাতে আর সন্দেহ কি? 
সারা রাজ্যের মানুষের কাছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুতর ত্রুটি তুলে ধরার দায়িত্ব তাই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিতে হবে। এ কোন রাজনৈতিক ভাষ্যের বিষয় নয়, আমাদের ভবিষ্যতের ভালমন্দ এর সাথে জড়িত। এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি নাবালিকা বিবাহ হয়। জনস্বাস্থ্যের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এই রাজ্য পিছিয়ে আছে। বেসরকারি ক্ষেত্রকে অন্যায় ব্যবসা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে, জনগনের সম্পত্তি সরকারী হাসপাতাল বিনা পয়সায় বেসরকারি পুঁজিপতিকে উপহার দেওয়া হয়েছে, এর কোনটিই গ্রহণযোগ্য নয়।

চিকিৎসকদের মানসম্মান এই সরকারের আমলে ধুলোয় লুটিয়ে গেছে। মারধর, গ্রেফতার, হুমকি আর তোলাবাজি কোন কিছুই বাকি নেই। সরকার যে প্রতিশ্রুতি গতবছর দিয়েছিলেন তার কোনটি ই পালন করেন নি। এই অবস্থায় চিকিৎসকদের দাবী আদায়ের জন্য করণীয় কাজ করতে হবে। 
সব চিকিৎসক বন্ধু ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বুঝতে হবে যে আমাদের পেশাগত স্বাধীনতা ও নির্ভয়ে কাজ করার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার এই আন্দোলন সফল না হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন