দেখুন, গাঁড়লের মতো তর্ক করবেন না। বেসিক ব্যাপারটা বুঝুন।
প্রবল হাওয়ায় কি মোমবাতি জ্বলে? জ্বালিয়ে রাখা যায়? জ্বালানো সম্ভব?
তার জন্যে অনুকূল পরিবেশ লাগে।
প্রতিকূল অবস্থায় মোমবাতি জ্বালানোর কথা ভাবে, ওই আপনার মতো, গাণ্ডু। আর, আপনি যদি ভাবেন, মোমবাতি জ্বালাচ্ছেন না কেন বাকিরা, তাহলে তো আপনি একটা আস্ত…..নাঃ, থাক, লোকে আমাকেই খারাপ ভাববে।
অতএব, বাস্তবতাটা বুঝুন।
কুকুরশাবকের মৃত্যু হলে মোমবাতি জ্বালাতে সেলিব্রিটি জোটানো কঠিন নয়। কেননা, ওই যে বললাম, পরিবেশ অনুকূল।
কিন্তু, দার্জিলিং-এ ডাক্তারদিদির মাথায় আস্ত লোহার রড পড়লে…..ক্যালানের মতো কথা বলবেন না, প্লীজ…..ডাক্তার এবং সেই রিলেটেড যেকোনো ইস্যুতেই পরিবেশ যে প্রতিকূল,অ্যাদ্দিনে এটুকুও যদি না বোঝেন, তাহলে মেনটস ছাড়া আর কেউই আপনার দীমাগ কি বাত্তি জ্বালানোর দায়িত্ব নেবে না।
সুতরাং, ব্যাপারটা সিম্পল।
আরে বাবা, স্বয়ং পুলিশ লিখিত উত্তরে জানিয়ে দিয়েছেন, যে, ডাক্তারদের উপর আক্রমণের ঘটনার লিস্টি তাঁরা মেইনটেইন করেন না।
করবেনই বা কেন? আর কোনো কাজ নেই নাকি?!!
দার্জিলিং-এ ডাক্তারদিদির মাথায় রডের বাড়ি পড়লে মিডিয়ায়, প্রথম পাতায় সেই খবর নেই কেন, এমন প্রশ্নও অবান্তর। কেননা, সবাই জানে, কুকুর মানুষকে কামড়ালে খবর হয় না, মানুষ যদি কুকুরকে কামড়াতে যায়, খবর হয় সেইটাই।
কাজেই, ডাক্তার মার খেলে খবর হওয়ার প্রশ্নটাই বা আসছে কোত্থেকে!!
হ্যাঁ, খবর হবে তখনই, যদি সেই মার খেয়ে ডাক্তারেরা প্রতিবাদ করেন, পথে নামেন, কাজ বন্ধ করেন, মিছিল করেন। আরে বাবা, ডাক্তারদের এই হারামিপনার জন্যে মানুষের হয়রানির কথাটা তো তুলে ধরতে হবে!!
এর পরে, হাওয়া যে অনুকূল নয়, সেইটা বুঝতে কি হাওয়ামোরগ হতে হয় নাকি!!
সেলিব্রিটিরা বিদ্বজ্জন কেন? আপনি তো আর বিদ্বজ্জন নন। তাঁরা বিদ্বজ্জন একারণেই, যে, তাঁদের বুদ্ধিবৃত্তি, ইন্দ্রিয় আপনার-আমার থেকে এগিয়ে।
কাজেই, এই এগিয়ে বাংলা-য়, তাঁরাও এগিয়ে।
তাঁরা আলোর পথযাত্রি।
মোমবাতি জ্বেলে তাঁরা আলো দেখান।
যে অপদার্থ ডাক্তারদিদি ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘা ছেড়ে নারীর জঙ্ঘার মাঝখান থেকে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোর চেষ্টা করেন, এবং সেইটাও পেরে ওঠেন না, তাঁর তো আলোর অধিকারই নেই।
কাজেই, দুঃখিত ম্যাডাম, আপনার জন্যে মোমবাতি নেই। আপনার জন্যে কালো ব্যাজ, মুখে কালো কাপড়, শোকমিছিল - না, কিচ্ছুটি নেই।
ছেলেবেলায় সমাজবন্ধুদের লিস্টটি পড়েছিলেন তো? হ্যাঁ, সমাজের গু পরিষ্কারের দায়িত্ব থাকা আপনি, মানে ডাক্তাররা, সমাজবন্ধু, মানে সমাজের বন্ধু। কিন্তু, সমাজও আপনার বন্ধু হবে, এমন কোনো গ্যারান্টি তো আপনাকে কেউ দেয় নি। মানে, আপনি বিরাট কোহলির ফ্যান যদি হন, তাহলেই কি আপনি আশা করবেন যে বিরাট-ও আপনার ফ্যান!!
মনে রাখবেন, আপনি, আপনি স্রেফ একটা দাস। ক্রীতদাস।
এই ট্যাক্সপেয়ারদের পয়সায় আপনি ডাক্তারি পড়েছেন।
হ্যাঁ, এই কথাটা আপনাকে মনে করিয়ে দেবেন সেই সব শুয়োরের বাচ্চারা, যাঁরা জীবনে ট্যাক্স দেন নি, দেন না। কিন্তু, আপনাকে চুপ থাকতে হবে, থাকতেই হবে।
কেননা, মনে রাখুন, এইট পাশ যে মন্ত্রী আপনার মাথার উপরে, তিনি ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছেন নিজের পয়সায়। যে বন্ধু ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এখন স্টেটসে বসে দেশ এবং দশের হাল নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত, তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন নিজের পয়সায়। এমনকি, যে দিগগজ বিদেশে পাড়ি জমানোর পাথেয় হিসেবে একটি পিএইচডি করছেন, তাঁর সেই রিসার্চ গ্র্যাণ্টের পয়সার একটুও ট্যাক্সপেয়ার্স মানি নয়।
নেতার ওয়ার্ল্ডট্যুর, কিম্বা মাটি উৎসবের ফান্ড। আকাশছোঁয়া রামের স্ট্যাচ্যু বা ইমাম ভাতা।
মনে রাখবেন, উপরের একটিতেও ট্যাক্সপেয়ার্স মানি খরচ হয় না, যেমন করে খরচ হয়, কিছু অপোগন্ডকে ডাক্তারি পড়াতে।
আর, যেহেতু আপনি এতো খরচ করেছেন এইসব চুথিয়াদের পেছনে, তারা পছন্দমতো সার্ভিস দিতে না পারলেই, মানে নব্বই বছরের বৃদ্ধকে টাট্টুঘোড়ার মতো চাঙা করতে না পারলেই বা আগেভাগে চেক-আপে না আসা প্রসূতি জটিল অবস্থায় হাসপাতালে এসে জাদুকাঠির ছোঁয়ায় সমস্যাহীন প্রসব না হলেই….আপনি ভাবেন…
শাল্লা….দুধকলা দিয়ে কালসাপ পুষেছি!!!
আর, সাপ দেখলে আপনি কী করেন!!
তবে কি, একটু রয়েসয়ে। সাপের ব্যাপারে একটু সাবধান।
সাপ কিন্তু ডাক্তার নয়।
দুমদাম লোহার রড নিয়ে চড়াও হবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।
দেশে আইনকানুন আছে। মানেকাজি আছেন।
গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী মিডিয়া আছে।
সমাজসচেতন বিদ্বজ্জনেরা আছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন