অষ্টম শ্রেণির ছাত্রও নেটে সার্চ দিয়ে যে তথ্য খুঁজে পেতে পারে তাই এখন ইডির কাছে রকেট সায়েন্সের মত দুর্বোধ্য!!
চিত্রনাট্য এতটাই দূর্বল যে ইডি এক বিশেষ দুই ব্যক্তিকে তদন্তে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে, এটা না বুঝতে পারাটা ই এখন ' অপরাধ '!
' সেটিং ' এখন আর রাজনৈতিক দলের অভিযোগের পর্যায়ে নেই।
সেটিং ' চেহারা কেমন তা এখন আদালতের এজলাসে খোদ ইডি প্রমাণ করছে।
কেমন করে? আচ্ছা উদাহরণ দেওয়া যাক.
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নিউ আলিপুর শাখা, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের হরিশ মুখার্জি রোডের শাখা, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাঙ্কের চৌরঙ্গী শাখা, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার পার্লামেন্ট শাখা এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হরিশ মুখার্জি রোড শাখা।
এই পাঁচটি অ্যাকাউন্ট অভিষেক ব্যানার্জির। এর মধ্যে শেষ অ্যাকাউন্টটি অভিষেক ব্যানার্জি নির্বাচনী অ্যাকাউন্ট হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন ২০১৯ সালের ভোটে।
প্রকাশ্যেই সেই তালিকা রয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক ব্যানার্জি ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তাতেই রয়েছে সেই তথ্য।
অথচ ইডি নাকি খুঁজে পায়নি!!!
শুধু তাই নয়, অভিষেক ব্যানার্জির সম্পত্তি বলতে ইডি'র জমা দেওয়া রিপোর্টে উল্লেখ আছে কেবল মাত্র তিনটে জীবন বিমার পলিসি!
সেই তথ্যও অসম্পূর্ণ। অন্তত অভিষেক ব্যানার্জির নির্বাচনী হলফনামা জানাচ্ছে, তাঁর নামে রয়েছে লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির অব ইন্ডিয়ার চারটি পলিসি!
তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে 'সেটিংয়ের' যে অভিযোগ উঠছে রাজনৈতিক মহলে, তাকেই যেন বৈধতা দিচ্ছে ইডি'র এমন দায়সারা রিপোর্ট।
১৮৮ এ, হরিশ মূখার্জি রোডের বিলাসবহুল 'শান্তিনিকেতন' ভবন। সারা বছর এখানে রাস্তার একাংশ বন্ধ থাকে, ফুটপাতেও চলাচল নিষিদ্ধ। স্থায়ীভাবে রয়েছে পুলিশের কিয়ক্সও। চব্বিশ ঘন্টা সেখানে প্রহরা।
লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের দুই প্রাক্তন ডিরেক্টর ( অভিষেক ও রুজিরা নারুলা ব্যানার্জি) ও বর্তমান সিইও অভিষেক ব্যানার্জি থাকেন এই বাড়িতে। অথচ ডিরেক্টরদের সম্পত্তির তালিকাতেই উল্লেখ নেই এই প্রাসাদোপম বাড়িটির!
আরো আছে, তালিকা লম্বা। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস কিসের সংস্থা, ব্যবসা টা কিসের, আয় করে কিভাবে সেটুকুও নাকি তদন্ত করে জানতে পারেনি ইডি!!
কিন্তু ইডি নিজেদের অপদার্থতা এভাবে নিজেই আদালতে প্রকাশ করছে কেন??
হিস মাস্টারস ভয়েস! তদন্ত রিপোর্টে তারই প্রতিফলন!
সারদা কাণ্ডের তদন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে শুরু হয়। সাড়ে নয় বছর পেরিয়ে গেছে।
তদন্তের এই দীর্ঘসূত্রিতায় লাভ কার?? চোরদের ই লাভ। তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকলে তখন অভিযুক্তদের অভিযোগই বৈধতা পায়!!!!
চুরি, দুর্নীতি ছাপিয়ে তখন স্বাভাবিকভাবে তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকাই মানুষের চোখের সামনে ধরা দেয়!!
ইডি সিবিআই এবং বিজেপি আসলে এরাজ্যে শাসক তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে, দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের প্রতিহিংসার তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে, অভিযুক্তের ইমেজকেই রিবিল্ডিং করতে সাহায্য করছে!!!!
পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে এমনভাবে বৈধতা আর কেউ দিতে পারেনি!!!
শুধু এটুকুর জন্যই ২০-২২ টা আসন অনায়াসে উপহার দেওয়া যায়!!
৫ অক্টোবর সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান নিছক তাই একটা কর্মসূচি নয়, দুই শাসকের সেটিংয়ের পিপিপি মডেলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট কনফ্রন্টেশন!!
ইডি সিবিআইয়ের অফিস ঘেরাও করে সারদা থেকে নারদা, কয়লা গোরু থেকে নিয়োগ দুর্নীতির কিংপিনদের গ্রেপ্তারির দাবি তোলা আসলে এরাজ্যের বুকে তৃণমূল বিজেপির বাইনারি ভাঙারই স্লোগান।
সিবিআই - ইডি ' এখন সিআইডি' র
থেকেও বেশি স্বস্তি দিচ্ছে শাসক দলকে!
তাই আপনি সিজিও কমপ্লেক্স অবরুদ্ধ করুন, অটোমেটিক ঘাম ঝরবে নবান্নের!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন