রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৮

একটি অবাস্তব, কষ্টকল্পিত, তৃতীয় শ্রেণীর, মেলোড্রামাটিক গপ্পো ~ বিষাণ বসু


ডিসক্লেইমার -

১. লেখাটা সাইজে বড়ো। অন্তত ফেসবুকের আন্দাজে। মাঝপথে গালি দেবেন না।

২. শিরোনামের প্রতিটি বিশেষণ সত্যি। কোনো বিনয়ঘটিত নয়।

৩. লেখাটি প্রমথনাথ বিশীর একখানি ছোটোগল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত। না, অনুপ্রাণিত নয়, একেবারে নির্লজ্জভাবে ঝেড়ে দেওয়া। যাঁরা গল্পটি পড়েছেন, তাঁরা জানেন। বাকিরা দুধের স্বাদ ঘোল নয়, পিটুলিগোলা জলে মেটানোর ব্যর্থ প্রয়াসে ব্রতী হোন।

৪. বাংলা সিরিয়াল বন্ধের মতো একটি জাতীয় ক্রাইসিসের হাত থেকে আমাদের বাঁচানোর জন্যে আমরা মহান নেত্রীর প্রতি চিরঋণী রইলাম। মালদার গণি খান ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রছাত্রীরা, অনশনরত ডাক্তারেরাও একদিন নেকনজর পাবেন, এই আশা নিয়ে আসুন, সিরিয়াল দেখি।

আর, ও হ্যাঁ, গল্প শুরু করি।

তিন বন্ধু।

একজন শিক্ষক, আরেকজন ডাক্তার। তৃতীয়জন সাধারণত টিভি সিরিয়ালে, আর মাঝেমধ্যে সিনেমার পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে থাকেন।

সেই স্কুলজীবনের পরে দেখা হচ্ছে আজ। এর মধ্যে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। উন্নয়নের জোয়ারে রাজ্য ভেসে গিয়ে সারা দেশ ভাসবো ভাসবো করছে। পাহাড়-জঙ্গলমহল ছেড়ে খাস কলকাতা শহরও হাসছে।

ঘনঘোর বাম আমলে কবি জানিয়েছিলেন, "সে বড়ো সুখের সময় নয়, সে বড়ো আনন্দের সময় নয়…", কিন্তু, এখন দিন বদলেছে। উজ্জ্বল এই সময়ে, তিন বাল্যবন্ধু ঠিক করেছিলেন, যে, তাঁরা দেখা করবেন, ছেলেবেলার মতো হইহুল্লোড় করবেন, অন্তত একটিদিনের জন্যে।

বেশ কথা। কিন্তু, দেখা করা যায় কোথায়? কারোর বাড়িতে হলে চলবে না, কেননা, বৌ-ছেলেমেয়ের সামনে কৈশোরে ফিরে যাওয়াটা একটু মুশকিলের। অতএব, শপিং মল। আইডিয়াটি অভিনেতা-বন্ধুরই। তাছাড়া, বিগত এক-দুইদশকে বাঙালীজীবনে আধুনিকতার মহৎ প্রসার ঘটার দরুণ, সামনে একটু গেলাস না থাকলে বন্ধুরা আড্ডা মারতে পারেননা, অথবা সুরাহীন আবহে কথাবার্তা বলতে থাকলেও তা আড্ডা বলে মেনে নিতে পারেন না। কাজেই, একটি শপিং মলের বারেই মিলিত হচ্ছেন আজ সেই তিন বন্ধু।

প্রথমেই একটু খটাখটি হয়ে যাচ্ছিলো। ডাক্তার বা অভিনেতা, নিজের পয়সায় মদ্যপানের অভ্যেস এঁদের থাকে না বললেই চলে। কাজেই, বিল কে মেটাবে, শুরুতেই এই আলোচনায় গেট টুগেদার প্রায় ভেস্তে যাওয়ার যোগাড়। শেষ পর্যন্ত, সমান শেয়ারের সমাধানসূত্রে সবাই সম্মত হয়েছেন।

হ্যাঁ, আসুন, আলাপ করিয়ে দিই।

ওই যে, আটপৌরে পোশাকে, একটু সঙ্কুচিত, আসছেন বরুণ। স্কুলশিক্ষক। বিগত পঞ্চায়েতে গণতন্ত্রের অবাধ উৎসবের হ্যাংওভার কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তারপর থেকেই রাত্রে ঘুম হয়না ভালো, মাঝেমধ্যেই চমকে চমকে ওঠেন। রামদেব-সদগুরু ইত্যাদি অনেক করেছেন, তাও স্ট্রেস কাটছেনা। তাছাড়া, যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মতোই, তিনিও সুখী মানুষ নন। 

বরুণের ডানদিকে তরুণ। পেশায় চিকিৎসক। স্যুটবুট পরিহিত। হাসপাতাল থেকে সোজা আসছেন। কাজেই, পুরোদস্তুর ফর্মাল পোষাকে। বরুণের চাইতে বছরপাঁচেকের বড়ো দেখতে লাগছে তরুণকে, যদিও দুজনে সেই নার্সারি থেকেই সহপাঠী।

আর, ওই যে অরুণ। অভিনেতা। আলাপ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই, আশাকরি। যুগপুরুষ আশারাম সিরিয়ালে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তাছাড়াও সন্ধ্যের দিকে টিভির বিতর্কসভায় প্রায়শই হাজির থাকেন। আজ পরণে জিন্স-টিশার্ট। চোখে সানগ্লাস। সানগ্লাসের ওপার থেকেই নজর রাখছেন, সবাই তাঁকে চিনতে পারছেন তো!!

আমি বুঝতে পারছি, আপনি উশখুশ করছেন। ভাবছেন, আজ আমি আর কতোক্ষণ হ্যাজাবো। অথবা, আপনি অলরেডি লাইক দিয়ে পরের পোস্ট চলেই গ্যাছেন।

তাই, চলুন, একটু ফার্স্ট ফরোয়ার্ড করে এগিয়েই যাই।

আপাতত, এখন তিনজনেরই নেশার পারদ চড়েছে। সামান্য কথাতেই বেশী হেসে উঠছেন প্রত্যেকেই। তাঁদের কথোপকথন যদি তাঁদের মুখের ভাষায় দিতে যাই, তাহলে আমার বর্তমান ফ্রেন্ডলিস্টের আদ্ধেক বন্ধুবান্ধবী আমার লেখা পড়া ছেড়ে দেবেন। কাজেই, প্লীজ, একটু এডিটেড ভার্সানেই খুশী থাকুন।

তিনজনের মধ্যে বরুণের মুখের হাসিটা যেন ততো উজ্জ্বল নয়। সে একটু যেন সঙ্কুচিত। বন্ধুদের চোখ এড়ায় না সেটা। তাদের বিস্তর চাপাচাপিতে, নাকি সুরার নেশায়, অবশেষে, সে মুখ খোলে।

"শোন, একটা বড়ো আঘাত পেয়েছি। না, তোরা যেমন ভাবছিস, তেমন কিছু নয়। প্রেমটেম কিছু নয়। বরুণাকে আমি এখনও তেমনই ভালোবাসি, যেমন বাসতাম প্রথম আলাপের সময়। ছেলেটাও আমার চোখের মণি। কাজেই…..

"আসলে, হয়তো, আমারই ভুল। পড়ানোটাকে আমি কখনোই চাকরি ভাবিনি। ভাবতাম, আমরা, মানে শিক্ষকেরা জাতির মেরুদন্ড। ভাবতাম, সমাজে আমাদের রোল একটা আলাদা ধরণের। আমাদের দায়িত্ব অনেক।

"কিন্তু……

"একদিন, একটা বিয়েবাড়িতে গিয়ে আমার ধারণা বদলে গ্যাছে। আর, সেই বদলটার সাথে কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছিনা।

"বিয়েবাড়ি। পাশের টেবিলের আলোচনা কানে আসছিলো। জানিসই তো, মফস্বলের একটি স্কুলে আমি পড়াই।

"প্রথমজন বললো, জানিস তো, অমুক গ্রামের মাস্টারটা বিষ খেয়েছে। আমি বুঝলাম, রমেশের কথা হচ্ছে। হ্যাঁ, রমেশ। পাশের গ্রামের স্কুলে পড়ায়। একই সাথে জয়েন করেছিলাম চাকরিতে। খুব ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও বেশ ভালোভাবেই চিনতাম। পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি পরবর্তী চাপ-অপমান অসহ্য হওয়ায় রমেশ বিষ খেয়েছে শুনেছিলাম। কাজেই, বলতে লজ্জা নেই, একটু কান পেতেই আলোচনা শুনছিলাম।

"একজন, শুনি, বলছে, শালা টিচারটা মরেছে, বেশ হয়েছে। কোনো কম্মের নয়। আমার ভাইটা টেট-এর জন্যে দশ লাখ লাগিয়ে বসে আছে। চাকরিটা হচ্ছে না। এরকম দুদশটা মরলে যদি কিছু হয়। না, রমেশ এখনো মারা যায়নি। কিন্তু, এমন শুভেচ্ছা বর্ষণে চমৎকৃত হলাম 

"পাশের লোকটা সেই সুরেই বললো, আরে, এই সব টিচারগুলোই হারামী। ইস্কুলে পড়ায় না, পরীক্ষায় নম্বর দেয়না, খালি টিউশনির ধান্দা। জানোয়ার একটা। ওই যে একটা মাল মরলো না ভোটের বাজারে রেললাইনের ধারে, ওইরকম করে শালারা ইঁদুরের মতো মরলে তবে ঠিক হয়।"

"আরেকজন বললো, আমাদের সময় যেসব টিচার ছিলেন, দেবতুল্য মানুষ সব। এগুলো তো শিক্ষক নামের কলঙ্ক। পড়ানোর নাম নেই, কাজে নিষ্ঠা নেই, খালি পয়সার নেশা আর ডিএ বাড়ানোর আন্দোলন। অপদার্থ সব।"

"দ্যাখ, আগেই বললাম, রমেশকে আমি চিনি বহুবছর। ছাত্র-অন্তপ্রাণ। স্কুল আর ছাত্র, এর বাইরে ভাবতেই পারতোনা। সিধে মেরুদন্ড। কোনো রাজনৈতিক নেতাকেই তোয়াক্কা করতো না। স্কুলের পরেও বস্তিতে গিয়ে গরীব বাচ্চাদের পড়াতো নিয়মিত।

"ভাব একবার, তাকে নিয়ে এমন কথা!!! এই অবস্থাতেও, তাকে নিয়ে এই অনর্গল বাজে কথায়, কেউ এতোটুকু প্রতিবাদ করছে না!! তাহলে, আমার পেছনে কী বলবে?"

অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে, বরুণ একটু থামতেই, নাকি থামার আগেই, কথা শুরু করে তরুণ।

"আরে, ছাড়। তোর তো অন্য লোকের গল্প। আমার নিজের অভিজ্ঞতা শোন।

"খুড়তুতো-জ্যেঠতুতো-পিসতুতো ভাইয়েরা সবাই মিলে গ্রুপ পিকনিক। হইহই ব্যাপার। আমবাগানে। পুকুরের পাড়ে।

" যেমন হয়, ছুটির দিনে আরো অনেক পার্টি একই ভেনুতে হইচই করছে, বাচ্চারা খেলছে।

"আমরা ভাইয়েরা, যেমন হয়, বোতল খুলে বসেছি। আর, যেমন হয়, সাড়ে এগারোটার মধ্যেই আমি আউট। একটু নাটক করার জন্যে, অরুণ, জানিসই তো, শুধু তুইই নোস, আমারও নাম আছে।

"তা সেইদিন, নৌটঙ্কি করার জন্যে, গিয়ে দাঁড়িয়েছি এক্কেবারে পুকুরের পাড়ে। আর, একেবারে শোলের ধর্মেন্দ্রর স্টাইলে বলতে শুরু করেছি, গাঁওয়ালোঁ, আজ এইখানে আমি যদি পুকুরে পড়ে যাই, তাহলে, দেশ হারাবে এক উদীয়মান প্রতিশ্রুতিবান ডাক্তারকে।

"কথা শেষ হওয়ার আগেই, মাইরি, বললে বিশ্বাস করবি না, দৌড়ে এলো একটা অপরিচিত ছেলে। বোধহয় অন্য কোনো পিকনিক পার্টি থেকেই। মুখে খিস্তি। খানকির ছেলে ডাক্তার, শালা তোদের মরাই ভালো। বলে এক ধাক্কায় আমাকে ফেলে দিলো পুকুরের মধ্যে। 

"সত্যি বলছি, মেজদা টাইম করে ঝাঁপিয়ে না বাঁচালে আমি এতোদিনে ছবি বিশ্বাস হয়ে যেতাম।

" আরো খারাপ লাগে ভাবলে, ছেলেটাকে কেউ তেমন করে কিছু করলো না। অনেকেই বললো, ছেলেটি নাকি পরিষ্কার মনের। অন্যের বিপদে আপদে ঝঁপিয়ে পড়া নাকি ওর অভ্যেস। অসুস্থ মানুষের জন্যে টাটা ভেলোর দৌড়ানোয় ওর জুড়ি মেলা ভার। ভীষণ পরোপকারী নাকি ছেলেটি। এখানকার ডাক্তারদের চেহারা জানতে ওর কিছু বাকি নেই। আজ একটু মালফাল খেয়ে হয়তো বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে, কিন্তু ইত্যাদি ইত্যাদি।"

গল্প বলতে বলতে, তরুণ শিউরে উঠলো।

দুজনের কথার শেষে, একটু অবশ্যম্ভাবী নীরবতা।

অরুণ গলাখাঁকারি দেয়। কথা শুরু করে।

"আমি তোদের দুজনেরই মানসিক সিচ্যুয়েশান বুঝি। এও বুঝি, তোরা মানুষের উপর বিশ্বাস হারাচ্ছিস। কিন্তু, দ্যাখ, বিদ্যাসাগর বলেছিলেন, মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।"

অরুণের এই উচ্চাঙ্গের বাণী-কন্ঠস্বর-বাচনভঙ্গির সাথে, সান্ধ্য টিভির সুবাদে, কেউই অপরিচিত নয়। তাই, দুজনের কেউই, বিদ্যাসাগরের ব্যাপারটা শুধরোতে যায় না। তাছাড়া, আশেপাশের টেবিল থেকে, বেশ কয়েকটি উৎসুক মুখ উঁকিঝুঁকি মারছে, সেইটাও ব্যাপার।

ঈষৎ জড়ানো গলায়, অরুণ চালিয়ে যায় - 

"না, অভিজ্ঞতাটা সরাসরি আমার নয়। তবে আমি সেখানে ছিলাম। ঘটনাটা তোদেরও মনে থাকতে পারে, কেননা মিডিয়া খুব কভার করেছিলো।

"হ্যাঁ, আমি বুবুদা আর পর্ণাদির ঘটনাটা বলছি। জানিসই তো, বুবুদা-পর্ণাদির মধ্যে একটা ইন্টুসিন্টু ছিলো। তার কতোটা সত্যি, আর কতোটা সিনেমার পাবলিসিটির জন্যে, আমিও জানি না পুরোপুরি।

"তা সেইসময় জয়তু বাবা শিবনাথ বইয়ের শ্যুটিং চলছে। সেই হিট গানটা। ড্রিম সিকোয়েন্স। আইটেম নাম্বার টাইপের। বল বল বলরে কোকিল, তুইই হবি আমার উকিল। চারবারেও শট ওকে হয়নি। বুবুদার মটকা গরম। পর্ণাদির সাথে জোর খ্যাঁচাখেঁচি লেগে গ্যাছে। প্রায় কাঁচা খিস্তাখিস্তির যোগাড়। জানিসই তো, পর্ণাদি রাগলে পুরো কর্পোরেশনের ড্রেন।

"এইসব ঝগড়া-ঝামের সময়, কী করে কেউই দ্যাখেনি ঠিক, বুবুদা গ্যাছে লেকের মধ্যে পড়ে। অমনি, কী বলবো মাইরি, শ্যুটিং দেখতে আসা পাব্লিক, মিডিয়ার লোক সব্বাই মিলে জলে ঝাঁপ দিয়েছে। সে কী সীন, বলে বোঝাতে পারবোনা।

"মিডিয়ার মধ্যে যারা ঝাঁপিয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজন আবার সাঁতার জানতো না। পিওর আবেগের বশে ঝাঁপিয়েছে। মিডিয়ার মাল তো জানিস, ঝাঁপাবে আগে, তলিয়ে দেখবে পরে। দুজন আবার ক্যামেরা নিয়েই ঝাঁপিয়েছে। সে এক কেলো মাইরি।

"এদিকে, বুবুদা তো ডুবসাঁতারে এক্সপার্ট। ও তো এইসব সীন দেখে ডুব দিয়ে উল্টোপারে উঠেছে। কিন্তু, বাকি মালগুলো সব জলটল খেয়ে একাকার।

" তো সেইদিন দেখলাম, মানুষের আবেগ ভালোবাসা কী জিনিস। আর, একটা বড়ো শিক্ষা পেলাম। তুমি যদি মানুষের জন্যে কাজ করো, মানুষের কাছে থাকো, মানুষের পাশে থাকো, মানুষও তোমাকে ভালোবাসবে। তোমার জন্যে জান লড়িয়ে দেবে।

"ওইটাই বড়ো ব্যাপার ভাই। মানুষের ভালোবাসা পাওয়া।"

এরপরে আর কথা চলে না।

সন্ধ্যে গড়িয়ে রাতও বাড়ছে। 

অরুণকে চিনতে পেরে, তার এই অনির্বচনীয় কাহিনী শুনে, টেবিলের চারপাশে বেশকিছু সুবেশ-সুবেশার ভিড়ও জমেছে। রেস্তোরাঁর পেপার-ন্যাপকিন বাড়িয়েও দিচ্ছে কয়েকজন, সইয়ের আশায়। লাজুক মুখে অরুণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তরুণ আর বরুণ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাইরে তখন নীলসাদা আলোয় ধোয়া এক উন্নততর রাত্রি। হোর্ডিং-প্ল্যাকার্ড অথবা মানুষের মুখ, সব্বার মুখে হাসি ছাড়া অন্যকিছুই দৃশ্যমান নয়।

বাড়ির পথে যেতে যেতে, দুজনের মনেই ঘুরতে থাকে অরুণের কথাগুলো।

আর, হঠাৎই মনে হয়, যাঃ, একদম ভুল হয়ে গিয়েছে দুজনেরই। জিজ্ঞেস করা হলো না তো, ঠিক কী করলে মানুষের পাশে থাকা হয়!! ঠিক কেমনভাবে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়!!!

অভিনয়, শুধু অভিনয় আর জৌলুশই কি সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর একমাত্র পথ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন