সোমবার, ৭ জুন, ২০২১

শ্রোডিংগারের বিড়াল ~ সৌমিক দাশগুপ্ত

এগেইন, ছেলেটার টি এর চয়েস গুলো যত দেখছি, তত অবাক হচ্ছি। 

শ্রোডিংগারের বিড়ালের থিয়োরী যারা জানে না, তাদের জন্য দু কলম লিখি৷ 

এই থিয়োরীর মুল বক্তব্য হল সহাবস্থান। অর্থাৎ একই সাথে দুটো বিপরীত অবস্থা সম্ভব, যতক্ষণ তাকে না দেখা হচ্ছে৷ অর্থাৎ আমরা দেখি বা অবসার্ভ করি বলেই, লাল টা লাল, সবুজটা সবুজ। যতক্ষণ না তাকে দেখছি, সে সম্ভাব্য সমস্ত রকম অবস্থায় বিদ্যমান। অর্থাৎ আমার চেতনার রঙে, পান্না হল সবুজ, চুনী উঠলো রাঙা হয়ে।

ধরা যাক, একটি বিড়াল কে একটি বাক্সে বন্ধ করে রাখা হল। এবার সেখানে একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ রাখা হল, যার হাফ লাইফ এক ঘন্টা। (হাফ লাইফ হল, কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ যতক্ষণ পর ক্ষয় হয়ে প্রাথমিক ভরের অর্ধেক ভরে পরিণত হয়)। এবার এমন একটা ব্যবস্থা করা হল, মৌলটি যেই হাফ হয়ে যাবে, একটা হাতুড়ি একটা বিষাক্ত গ্যাসে ভরা কাঁচের পাত্রে আঘাত করে তাকে ভেঙে ফেলবে। এবং গ্যাসের বিষক্রিয়ায় বিড়ালটি মারা যাবে। এরপর বাক্সটি বন্ধ করে দেওয়া হল। 

এবার এক ঘন্টা পর বাক্সটি খোলার ঠিক আগে বিড়ালটি কেমন অবস্থায় থাকবে। শ্রোডিংগার বললেন, বিড়ালটি এই মুহুর্তে জীবিত এবং মৃত, দুই অবস্থাতেই আছে। বাক্সটি খোলার পর যখন তাকে অবসার্ভ করা হবে, সেই অবসার্ভেশন ঠিক করবে, বিড়ালটি ফাইনালি কোন অবস্থায় থাকবে। 

শুনতে খুব আষাঢ়ে মনে হলেও, এই তত্ত্ব জন্ম দেয় পদার্থবিদ্যার সবচেয়ে কূট শাখার। কোয়ান্টাম ফিজিক্স। এবং সত্যিই এই অনিশ্চয়তা বিড়াল, মানুষ, ফুটবল এর মত বড় বস্তুর ক্ষেত্রে কাজ না করলেও পারমাণবিক স্তরে দেখা যায়। সুশান্তের টি শার্টের ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাসি এবং কান্না দুটোই একই সাথে বিদ্যমান। 

এই কোয়ান্টাম তত্ত্ব জন্ম দিয়েছিল মাল্টিভার্স বা প্যারালাল ইউনিভার্স থিয়োরীর। যেখানে এই মহাবিশ্বের মত অসংখ্য মহাবিশ্ব বিদ্যমান। সেই বিশ্বে আমরাও আছি, সম্ভাব্য সব রকম অবস্থা নিয়ে। 

কে বলতে পারে, সেরকমই এক সমান্তরাল মহাবিশ্বে আজও সুশান্ত হুবহু মাহির মতোই স্টেপ আউট করে ছক্কা মেরে গ্যালারির বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে সমস্ত রকমের হেরে যাওয়াকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন