বুর্জোয়াদের দুটো মুখ - একটা বেশ আপাত ভদ্র সভ্য লিবারাল আর আরেকটা নখ দাঁত বের করা ক্রুড টাইপের ফ্যাসিজম। এক বিখ্যাত অতি বাম নেতার তত্ব অনুযায়ী লেসার ইভল আর গ্রেটার ইভল। টিভি ইত্যাদি দেখিনা তো লোকমুখে শুনলাম এক গ্রেটার ইভল না কি দল পাল্টে লেসার ইভল হয়েছেন তাতে ওই অতিবাম নেতা আনন্দে নৃত্য করতে পারেন যে তার সাধের ফ্যাসিবিরোধী যুক্তফ্রন্টে একজন সৈনিক বাড়ল বলে। কিন্ত আমরা যারা পাতিবাম তারা নাচতে পারছি না আজ ঠিক। না উঠোনের দোষ নয় উঠোন ঠিকই আছে। আসলে আজ দিনটা একটু অন্যরকম। আজকের দিনে ওই অতিবাম নেতাদের আরেক ঝাঁকের হাতে খুন হয়েছিল সালকু শোরেন নামের এক পাতিবাম পুঁচকে নেতা। তাকে খুন করে ওই অতিবামের দল রাস্তায় ফেলে গিয়েছিল। আমাদের পাতিবামেদের তখন সরকার ছিল, তার পুলিশ ছিল, প্রশাসন ছিল তবুও শালকুর লাশ রাস্তায় পরেছিল। সরকারে থাকা দল কিছুই করতে পারেনি। কেবল কেউ কেউ অস্ফুটে বলেছিল "প্রতিবাদে, প্রতিরোধে, প্রতিশোধে কমরেড, গড়ে তোল, গড়ে তোল, গড়ে তোল ব্যারিকেড।" না ব্যারিকেড গড়ে তোলা যায় নি সেদিন। আজও যায় নি। বারবার লিবারাল, অতিডান, অতিবামদের হাতে সালকুরা খুন হয়েছে। সেদিন হয়েছে, লেসার ইভিলরা ক্ষমতায় আসার দিন খুন হয়েছে। তার পরের দিন হয়েছে। গ্রেটার ইভিলরা ক্ষমতায় আসলেও খুন হত। সরকারে না থাকা অবস্থায় খুন, সরকারে থাকা অবস্থায় খুন, সরকার থেকে চলে যাওয়ার পরেও খুন। এই নিধনযজ্ঞটাই সালকুদের মতো বামদের জন্য ধ্রুবক, অপরিবর্তনীয়। আপনি লেসার-গ্রেটার, দিমিত্রভ-রোজা লুক্সেমবার্গ, ফুকো-গ্রামশি কোনো তত্ব আউড়েই এ জিনিষ লুকোতে পারবেন না। বিপ্লব হয়নি এমন দেশে একটা কম্যুনিস্ট নাম যুক্ত পার্টির নাম করুন তো যাদের এত কমরেড খুন হয়েছে ? গ্রেটার-লেসার ইভিল তত্ত্বের প্রবক্তা বিখ্যাত দেড়েল নেতা নিজেকে যার অনুগামী বলেন সেই দাড়িহীন রোগা পাতলা কার্ডিয়াক এজমার রোগী আরেক অতিবাম নেতার একটা তত্ব ছিল, "শ্রেণী শত্রুর রক্তে যে হাত রাঙায় নি সে বিপ্লবী নয়"। এই ভোকাবুলারিরে সালকু নয়, সবচেয়ে বড় "বিপ্লবী" আজ সেই নেতা যিনি ঘরে ফিরলেন, গ্রেটার থেকে লেসার হলেন। অন্য দেড়েল অনুগামী বিপ্লবীরা তার জয়ধ্বনি করুন। আমরা কেবল অস্ফুট নয়, সোচ্চার হয়ে বলে যাবো, প্রতিবাদে, প্রতিরোধে, প্রতিশোধে কমরেড, গড়ে তোল, গড়ে তোল, গড়ে তোল ব্যারিকেড।
শালকুর পার্টি যারা করেন তারা সবসময় মনে রাখবেন যে শ্রেণীহীন সমাজ যতদিন না গড়ে উঠছে ততদিন কমিউনিস্টরা কেউ বঙ্গশ্রী, পদ্মশ্রী পুরষ্কার পাবে না, ভোটের আগে পরে কোনো বুর্জোয়া নেতা নেত্রী তাদের ধন্যবাদ জানাবে না, তারা কেবল বুর্জোয়াদের হাতে খুনের পরে রাস্তায় লাশ হয়ে পরে থাকার পুরস্কার পাবে। ইভিল মানে ইভিল, শয়তানের শয়তানির কম-বেশি হয় না - এটাই অপরিবর্তনীয় ধ্রুব সত্য -সালকু জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছে। শহীদ কমরেড সালকু শোরেন অমর রহে। কমরেড সালকু শোরেন লাল সেলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন