রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১১

লাশ পাচারকারী ‘চাঁড়াল’রা খোলা বাজারে নেমেছে ~ আজিজুল হক

প্রতিক্রিয়াপন্থী বুদ্ধিজীবিদের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লেনিন একবার বলেছিলেন, "... এরা মৃত মায়ের চামড়া ছাড়িয়ে ডুগডুগি বাজিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে পিছপা হয় না...।" হ্যা, 'আধুনিক সাংবাদিকতা'র নামে আজ এই পশু-মানুষদেরই রমরমা| স্তালিনের কথাতে: "চৌকিদারের বউ নিজের মাথা নিজে ফাটিয়ে পাড়া-পড়শিকে জড়ো করে"।

লাশ চোররা সক্রিয়। লাশ বিক্রি করে দেউলিয়া রাজনীতির ঘরে পুঁজি বাড়ানই উদ্দেশ্য। হেমব্রমের লাশ থেকে মঙ্গলকোটের লাশ! লাশ দেখিয়ে ভোটে ভিক্ষা! ছিঃ! এরা ওই ডাক্তারটার থেকেও অধম, যে রাস্তার ছেলেদের ধরে এনে খুন করে লাশ বিক্রি করত| তার বাড়ির পেছন থেকে একশটি ছেলের করোটি পাওয়া গেছে| এখনো কেস চলছে...

৩১-এ ডিসেম্বর-এর সভার পর আতঙ্কিত তৃণমূলি-মাওবাদী জল্লাদরা এলাকার মানুষের আশঙ্কাকেই সত্য প্রমান করেছে নেতাই গ্রামে| সাত সাত জন'কে খুন করে বাজারি প্রচারমাধ্যম আর নানান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কেন্দ্রের আনুকূল্যে ওরা মাটি খুঁজছে| কিন্তু ওরা ভুলে যাচ্ছে, যে মাটিতে ছবি মাহাতো-কে ধর্ষণ করে জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হয়েছে, সেই মাটি আজ জেগে উঠছে|

আমি সদ্য ওই মাটির স্পর্শ পেয়ে এসেছি| দেখে এসেছি মানুষের মেজাজ...! সাবধান মমতা,সাবধান| বাইরে থেকে ভাড়া করে লোক নিয়ে গিয়ে আর, কবীর সুমন-এর তথ্যে সত্য বলে প্রমানিত, জার্মান, ব্রিটিশ আর মার্কিনি টাকার গরমে কিছু তথাকথিত পেশাদার খুনি-আমলা এবং কলমবাজ গুন্ডাকে খরিদ করে এই মেজাজকে অস্বীকার করতে যাবেন না| সর্বনাশ করবেন নিজের| লেডী ম্যাকবেথ-এর মতো তখন সাত গঙ্গার জলে হাত ধুয়েও রক্তর দাগ ওঠাতে পারবেন না| ছবি মাহাতোদের লাশগুলো তখন মিছিল করে কথা বলবে| পারবেন তো বাংলার মসনদ সামলাতে? ওই মানুষগুলো তো বলছেন, "বামফ্রন্ট জিতলেও আমাদের লড়তে হবে,হারলেও লড়তে হবে|" মনে রাখবেন, ভাড়াটে কলমবাজরা ভারাটেই| একদা 'বুদ্ধিজীবি',বর্তমানে 'মমতাময়'-কে দেখে বুঝলেন না? খেতাব আর টাকার জন্য ওরা সব পারে| মৃতজননীর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজতেই ব্যস্ত| নিজেদের মধ্যে আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করে (সেটাই অবশ্য স্বাভাবিক!), সামনে তোষামোদি| সাবধান! বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতিটাকে লোপাট কোরে পাপ্পু যাদবদের হাতে তুলে দিচ্ছেন আপনি|

দালালবৃত্তিতে অভ্যস্ত সংবাদ-মাধ্যম কি উত্তর দেবেঃ (১) ৬ তারিখে নেতাই গ্রামে কে বা কারা ধানের গাদা জ্বালিয়েছিল? সশস্ত্র সেই বাহিনী কি কাঁথি থেকে রপ্তানি করা বাপ-ব্যাটার সুপারি কিলার-রা নয়? ওরা ভেবেছিল, এত কষ্টে খরা মোকাবিলা করে যত্সামান্য গাদা করা ধান জ্বলছে দেখে ঘরে ফেরা মানুষজন বেরিয়ে আসবে আর জল্লাদগুলো ওদের বুকে বুলেট বিঁধে দেবে! (এক দল সাংবাদিক-ও সেখানে উপস্থিত 'এক্সক্লুসিভ' মারার জন্য) মানুষগুলো দাঁতেদাঁত চেপে সেই তান্ডব দেখেছেন, সহ্য করেছেন| ফাঁদে পা দেন নি| (২) ফাঁদ ব্যর্থ হবার পর সাত সকালে বন্দুকের ডগাতে নন্দীগ্রাম স্টাইল-এ ক'একজন মহিলা-কে সামনে রেখে পেছনে এ.কে. ৪৭ আর .৩৫৪ রাইফেল-ধারী ওরা করা ছিল, যারা ঘরে ফেরা মানুষগুলোর ঘর জ্বালাতে মিছিল করেছিলো? (৩) নির্দোষ মিছিল হলে ওদের সাথে কেরোসিন, পেট্রলের টিন আর সাত সকালে জ্বলন্ত মশাল ছিল কেন? (৪) সদ্য ঘরে ফেরা মানুষগুলো নিজেদের পুড়তে দিতে রাজি হয়নি—এই ছিল তাদের অপরাধ? প্রতিরোধের মুখে পড়ে গুলি চালিয়েছিল কারা?মরলেন কারা? পাঁচজন সংগঠক—যারা ৩১-এর জমায়েতে এলাকার মানুষজন-কে নিয়ে গেছিলেন; তাই নয় কি?

ছিঃ! সাংবাদিকদের লজ্জা| সত্যেন মজুমদারের ভাষায়, "জননীর গর্ভের লজ্জা"| সরোজ'দার ভাষায় ঘুরিয়ে বললে বলতে হয়ঃ ব্রিটিশ-জার্মান-মার্কিন কর্পোরেটের ঔরসে বাংলার সামাজিক কর্তৃত্ব হারানো জোতদার-জমিদার-গ্রামিন ওয়ারলর্ড (অধিকারীদের মত)-দের গর্ভজাত একদল কলমবাজ গুন্ডা, হিটলারি কুত্তার দল|

লাশ চুরি করতে নেমেছে এরা| শ্মশানের লুম্পেন চন্ডালদের মত মরা বিক্রি করে আখের গোছাতে ব্যস্ত| সাবধান বাংলা| হিম্মত হারিওনা ভাই সব| যতদিন না ওদের উত্সটাকে কবরে পাঠাতে পারছ, ততদিন এই উত্পাত তোমাদের সহ্য করতে হবে| দেখছ না, সুন্দর বনের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেও মাঝে মধ্যে নরখাদক লোকালয়ে ঢুকে পরে? আমেরিকা-ব্রিটেন-জার্মানি এবং চিদাম্বরমের সংরক্ষিত এই সব নরখাদকরা মাঝে মধ্যে হামলা করবে|আগুন জ্বালিয়ে, কানাস্তারা পিটিয়ে এদের জঙ্গলেই পাঠাও| এই বর্বর জল্লাদ নরখাদকদের লোকলয়ে রাখার মানেই মৃত্যু| গড়ে তোল প্রতিরোধ। মানুষ জানেন, এই মৃত্যুর দায় ওই চাঁড়ালদেরই| শ্মশানের পাশেই ওদের ঘর|
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন