বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯

উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ ~ শতাব্দী দাস

১) সংরক্ষণ-বিলে 'উচ্চবর্ণ সংরক্ষণ' কোথাও লেখা নেই।

২) অর্থনৈতিক অনগ্রসরদের সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

৩) বলা হয়েছে, যারা এমনিতেই তপশিলী জাতি-উপজাতি-ওবিসি হওয়ায় সংরক্ষণ  পাচ্ছেন, তাঁরা এই সংরক্ষণ আর পাবেন না । এই ক্লজকেই 'উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ' বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এক মানুষকে দুরকম সংরক্ষণ দেওয়ার থেকে নতুন অভাবী মানুষকে সংরক্ষণের আওতায় আনা খুব মন্দ কিছু কি?  অর্থনৈতিক অনগ্রসরদের সংরক্ষণ খারাপ কিছু নয় মনে হয়৷ মণ্ডল কমিশনেও এমন সুপারিশ ছিল।

৪) কত আয় হলে অর্থনৈতিক অনগ্রসর বলা হবে, তা এখনও স্থির হয়নি৷ বিজেপি প্রচার করছে- বার্ষিক আট লাখ। কিন্তু তা বিলে এখনও নেই৷

^ এই জায়গাটি নিয়ে,  আবার বলছি, ঠিক এই জায়গাটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলতে পারে৷ সর্বাধিক কত আয় হলে এই বিলের আওতায় আসা যাবে, তা ধার্য করার বিষয় নিয়ে সব পার্টি ভাবুক৷ বিরোধীরা আন্দোলন করুক এই জায়গাটি নিয়ে৷ আমাদের দেশের নিরিখে বার্ষিক আট লক্ষ টাকা আয়ের মানুষকে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বলা যায় না৷ এই দশ পার্সেন্টের মধ্যে যেন অযাচিত সুবিধালোভীদের ভিড় না বাড়ে, তা লক্ষ্য রাখার জন্য আন্দোলন হোক।

৫) এই মুহূর্তে এটি একটি সম্ভাবনাময় বিল, যাকে ভাল বা খারাপ উভয় কাজেই লাগানো যেতে পারে। কেউ 'উচ্চবর্ণ সংরক্ষণ বিল' পাশ করায়নি। কিন্তু বিজেপি উক্ত বিলটিকে কার্যক্ষেত্রে 'উচ্চবর্ণ সংরক্ষণ বিল' করে তোলার আগে রুখে দিন।

৬) বিজেপি 'উচ্চবর্ণ সংরক্ষণ বিল' হিসেবে এটিকে প্রচার করছে। তারা মূর্খ বলে নয়, তারা উচ্চবর্ণের ভোট হারিয়েছে, সেই ভোট আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ফিরে পেতে চায় বলে। খুবই ধূর্ততার পরিচয়৷ কিন্তু বিষয় নিয়ে যথেষ্ট হোমওয়ার্ক ছাড়া এই ধূর্ততা আসেনা। এই হোমওয়ার্ক থাকলে, তথাকথিত বামপন্থীদের বিরোধিতাও সঠিক দিশায় ধাবিত হবে, আশা করা যায়। আপাতত যা চলছে, তা বালখিল্যতা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন