মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০

হিন্দু মুসলমান বিদ্বেষ ~ ডঃ রেজাউল করীম

ক্রিষ্টোফার মার্লোর নাম সাহিত্যের ছাত্রছাত্রীদের অজানা নয়।তাঁর The Jews of Malta নাটক ইউরোপ জুড়ে  ভরপুর ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ায়।ষোড়শ শতকে রডরিগো লোপেজ নামে একজন চিকিৎসক  যিনি  রাণীর ব্যক্তিগত চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ছিলেন, রাণীকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। রাণী নিজেও জানতেন যে এই অভিযোগ মিথ্যা কিন্তু সাকেক্সের ডিউকের  অভিযোগে ও প্রাসাদের ষড়যন্ত্রীদের প্রত্যক্ষ মদতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, এই চিকিৎসকের প্রাণদণ্ড হয়। তিনি জন্মসূত্রে ইহুদি ছিলেন। কিন্তু, পরে তিনি খৃষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের একটা ছিল যে তিনি লুকিয়ে ইহুদি ধর্ম পালন করেন। এর ফলে সারা ইউরোপ জুড়ে ইহুদি বিদ্বেষ  আরো বেড়ে যায়।সমসাময়িক কালে লেখা মার্চেন্ট অব ভেনিস বা জুস অব মাল্টাতে যে প্রত্যক্ষ ইহুদি বিদ্বেষ দেখা মেলে ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দশকে সেটাই ছিল ইউরোপের চলতি সংস্কৃতি। মার্লো নিজে নাস্তিক হলেও ইহুদি চরিত্রটিকে এমন খলনায়ক বানিয়েছিলেন যে বিদ্যাসাগর মহাশয় থাকলে চটি জুতো অবধারিত ছিল।

বিদ্বেষের কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের অভাব থেকে হয়। ইহুদিদের সম্পর্কে তৎকালীন ঘৃণা যা চারশো বছর পরে 70 লক্ষ ইহুদি হত্যায় পরিণতি লাভ  করেছে তার এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, শুধু ধরন পাল্টেছে।  মধ্য এশিয়া জুড়ে জিওনিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই দাঁড়িয়েছে ইহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াই  হয়ে। ধর্ম, সম্প্রদায়, রাজ্য ও বিশেষ ধর্মের মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের জটিলতা ও টানাপোড়েন কেউ বুঝতে চাননি। সাধারণীকরণ করেই ক্ষোভের পরিসমাপ্তি করতে চান। একজন শত্রু পেলেই হল, তার ঘাড়ে সব কলঙ্কের ভার চাপিয়ে সাময়িক মানসিক শান্তি।

ইহুদিদের যে বর্ণনা সেক্সপিয়র দিয়েছেন তার সাথে মার্লোর বর্ণনার কোন ফারাক তেমন নেই। "that Jew: he lives upon pickled grasshoppers and sauced mushrumps … He never put on clean shirt since he was circumcised"  নোংরা, জঘন্য, যা-তা খায়, যা-তা পরে, চান করে না ইত্যাদি। 

আমার চেনা একজন বিপ্লবী ডাক্তার আমাকে পড়াতে গিয়ে বলেছিলেনঃ মুসলমানদের এত টিবি হয় কেন জানো? আমি বললামঃ পুষ্টির অভাবের জন্য। পুষ্টি ও টিবির ঘনিষ্ট সম্পর্ক। তিনি বললেনঃ তুমি জান না। ওরা থুতু গিলে ফেলে। একটা পুরোপুরি অনৈচ্ছিক ক্রিয়া যে কি করে সম্প্রদায় বিশেষে পরিবর্তন হয় কে জানে? কিছুদিন পর মুসলিমদের রমজান মাস চলছে। আমি কলকাতা থেকে বহরমপুর যাবো। ট্রেনে যাতায়াত করতাম না। বাসে টিকিট কেটেছি । তিনি আমাকে খুব ভালবাসতেন, বললেন, "বাসে যাবে না।" মুর্শিদাবাদের মুসলমানরা বাসে যাবে, সারা রাস্তা থুথু ফেলতে ফেলতে যাবে"। আমি তো থ। হতে পারে কেউ থুথু গিলে ফেলে, কেউ রাস্তায় ফেলে- এর সাথে ও যে ধর্মের প্রত্যক্ষ যোগ আছে তা শুনে অবাক হয়েছিলাম। শুনেছি তিনি একসময় বড় বিপ্লবী ছিলেন। অথচ, কেবলমাত্র শিক্ষিত আচরণ ও অশিক্ষিত আচরণে সাম্প্রদায়িক রং লাগাতে তার বাধে নি। তিনি সাম্প্রদায়িক এটা কখনো সত্য ও নয়। মনকে শিক্ষিত না করতে পারলে এই চেতনা অবলুপ্ত করা সম্ভব নয় ।

আজকের মধ্য এশিয়া জুড়ে ইহুদিরা শুধু Dog- ইহুদি কুকুর। অথচ, লোপেজের মৃত্যুর 428 বছর পরে বিশ্বে নোবেল লরিয়েটদের তালিকা বানালে হয়তো বার আনাই ইহুদি বলে দেখা যাবে। যারা ঘৃণা করতো, যারা ঘৃণা করে ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম কালো অক্ষরে লেখা আছে। কিন্তু, ঘৃণিতরা উঠে দাঁড়ায়। তারা যেন তাদের সব কালোকে বজ্রে আগুন করে তোলে। ইহুদি রাষ্ট্র বিদ্বেষ আর ইহুদির প্রতি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এক নয় আজকের আরব এখনো সেটা বুঝতে পারছে না।

একবিংশ শতক তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটিয়েছে। অন্য মানুষকে চেনা, জানা বা বোঝার জন্য উইলিয়াম মূয়রের মত সাধনার দরকার নেই। ভাষা বা সংস্কৃতি ও বড় বাধা নয়। শুধু আবশ্যকের ঠেলাঠেলি ভীড়ে অনাবশ্যক নিয়ে কৌতুহলের অবকাশ নেই। তাছাড়া, অন্যকে জানতে চাইনে কারণ আর জানার কিছু বাকি নেই,  সবকিছু জানি,  এই অন্ধ বিশ্বাস  অহমিকা ও গরিমা বড় তখন শত্রু হয়ে ওঠে। কিন্তু, জগতের নিয়ম হল সবার জন্য মঙ্গল কামনা না করলে নিজের মঙ্গল হয় না। কল্যাণের বদলে কল্যাণ আর ঘৃণার বদলে ঘৃণা ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না।

অজানার প্রতি ভয়, শঙ্কা আর তা থেকে আসে ঘৃণা। করোনা চিকিৎসা করে ফিরে আসা ডাক্তারের দিকে তাই ছুটে আসে ঘৃণার তীর। কত অক্লেশে সমাজের উদ্বেলিত ঘৃণার পাহাড়  গড়ে তোলে "Ay policy! That's their profession, / And not simplicity as they suggest." তুমি তো এমনি, তোমাদের পুরো পেশাই হল কলঙ্কিত। যতই তুমি ভালো মানুষ সাজো, আসলে তোমার মধ্যে আছে এক লোভী,অর্থগৃধ্নু, টাকার কাঙাল, অমানুষ। Reductio ad absardum তত্ত্ব সপ্রমাণে উন্মুখ সমাজের সেই সমষ্টিগত চিন্তার প্রতিফলন হয় সাংবাদিকের ভাষ্যে, খবরের কাগজের পাতা জোড়া চিকিৎসকের অমানবিক গল্পে, ফেসবুকের ওজস্বিতা বা নেতার অশিক্ষিত কথনে। মায়া, স্নেহ, মমতা হীন একদল মানুষ- কোন কিছু যাদের মথিত করে না। 

"First, be thou void of these affections: Compassion, love, vain hope, and heartless fear; Be moved at nothing; see thou pity none." না, এই বর্ণনা আধুনিক তথাকথিত ভিলেন চিকিৎসক সংক্রান্ত সাধারণ ভাষ্যের সাথে যতই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাক এ বর্ণনা আসলে একটি সম্প্রদায় সম্পর্কে ষোড়শ শতাব্দীর প্রান্তদেশে আরেক সম্প্রদায়ের বর্ণনা। ঘৃণার ভাষা অত্যন্ত ক্লিশে- একের নাম পাল্টে অন্যের নামে তা চালান করার জন্য বিশেষ বাহাদুরি লাগে না। 

কয়েকদিন আগে কয়েকজন ডাক্তারের লেখা সাম্প্রদায়িক  কিছু কথা নিয়ে ফেসবুক মুখরিত ছিল। সে ছিল ঘৃণার ভাষা- সমাজের সুপ্ত সাম্প্রদায়িক স্রোতে গা ভাসিয়ে তারা যা লিখেছে সবটা তার সচেতন বহিঃপ্রকাশ নয়, খানিকটা মিথ, খানিকটা সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের আকাঙ্ক্ষা। এই  এখন সমাজের চলিত ট্রেণ্ড,পরিভাষা।চোরাগোপ্তা, গেরিলা লড়াই। সরাসরি যুদ্ধ নয়। ঝিকে মেরে বৌকে শেখানোর চিরন্তন বাঙালী ঘরোয়া অপেরা।মেলোড্রামাটিক কিন্তু হাততালির অভাব হয় না। শিক্ষিত, মননশীল, সংস্কৃতিমানের কাছে মোটা দাগের রসিকতা বা farce. কিন্তু, সমাজের চালক তো আর মননশীল বোদ্ধাদের হাতে নেই, আছে উরুতে আঘাত করা ভীমের হাতে- নৈতিকতা না থাকুক, বাহুতে শক্তির অভাব নেই।তাদের লেখা যেমন অনেকের বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ তেমনি অনেকে সমর্থনও করেছে, আরো আরো অনেকে তার বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে। এই ভালো-মন্দ মেশানো মিশ্র সমষ্টি নিয়ে সমাজ। তার চাকা তেজে করে বলে ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। আজ যা ট্রেণ্ড,  কাল তা পুরনো ক্লিশে। 

একজন দেখলাম লিখেছে, অমর্ত্য সেন অর্থনীতি ছাড়া সব বিষয়ে নোবেল পেতে পারেন। তার উষ্মার কারণটি বাহ্য- যুগপুরুষ প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে অমর্ত্য সেন একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। বোঝা খেল প্রবন্ধটি তিনি পড়ার প্রয়োজন মনে করেন নি। কারণ, এই লেখাটিতে তিনি তাঁর চিরাচরিত তাত্ত্বিক কথা না বলে বরং শাসকের প্রতি কিছু উপদেশ দিয়েছেন। যা শুনলে আখেরে তাদের লাভ ই হবে। এরা কেউ সরাসরি তাঁর মুখ থেকে  তার কথাশোনে নি, তাঁর লেখা পড়ে নি কিন্তু তবু "তিনি খারাপ, তিনি নোবেল পাননি, তিনি অর্থনীতির কিছু বোঝেন না"। অথচ, যারা তার লেখা পড়েছে, তাঁর সাথে দ্বিমত হতে পারেন কিন্তু তাঁর জ্ঞানের দীপ্তি, চিন্তার প্রখরতা, ভারতীয় প্রাচীন সাহিত্য-সংস্কৃতি-ইতিহাস নিয়ে তাঁর গভীর চর্চা, মমত্ববোধ ও ভালবাসার কথা অনুভব করবেন। তাঁর একটি সুনির্দিষ্ট সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে, সে দায়বদ্ধতা ও তার অবশ্যম্ভাবী রাজনৈতিক চেতনা অন্য কারো চেতনার বিরোধী হতে পারে কিন্তু তার লেখায় অন্যের প্রতি কোন অসূয়া নেই, মালিন্য নেই, কলহের মোটা দাগের রূঢ়তা নেই। বস্তুতঃ তাঁর মতো পণ্ডিত অতি বিরল। অর্থনীতির জটিল তত্ব কিম্বা জটিল দার্শনিকতা কত সুমধুর, নান্দনিকতায় ভরপুর তা তাঁর মুখে না শুনলে অনুভব করা অসম্ভব।তাঁর লেখা উচ্চ মার্গের সাহিত্যিক উপাদানেও ভরপুর, তার তাত্বিক মেধার উচ্চতা বোঝার ক্ষমতা আমার নেই অবশ্য। সে তত্ত্ব  যত অন্যের বেহেড অজ্ঞনতা পরিস্ফুট করে তোলে তার প্রতি ঘৃণা সেই হারে প্রকট হয়ে ওঠে। অবশ্য, রবীন্দ্রনাথকেই বা সমসাময়িক ভারত কতটা বুঝেছিল? গান্ধী ও কি তাঁর কবি সত্ত্বার ব্যাপ্তি ততটা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন? 

মুসলমানদের ধর্মান্ধতা ও ধর্মের রীতিনীতি নিয়ে বাচালতা  গত কয়েক দশকে বাড়তে বাড়তে ষোড়শ শতকের ইহুদিদের মত অবস্থায় পৌঁচেছে। আজ যদি মার্চেন্ট অব ভেনিসে সেক্সপিয়র বা জুস অব মাল্টায় মার্লো যা লিখেছিলেন সেখানে  jews বদলে মুসলিম করে দেওয়া হয় ফেসবুক-ভারত বোধহয় তাকে গ্রহণ করতে অত্যুক্তি করবে না। তা বরং তাদের মানসিক স্বস্তি দেবে- শুধু, তারা কেউ স্বীকার করবেন না, তাদের মানসিক ভাবনায় মুসলমানদের সম্পর্কে যে ভয়াবহ চিত্রটি রচিত হয়েছে সেই মহাজ্ঞানটি  তারা কোন সন্ধিক্ষণে লাভ করলেন? হাজার বছর একসাথে কাটালেও কেউ তো একবার অন্যের উঠোনে বা রান্নাঘরে উঁকি মেরেও দেখেনি এরা কতটা আলাদা, কতটা বেমানান, কতটা অর্বাচীন, কতটা পাপী, কতটা দেশদ্রোহী!  কেউ তো মূহুর্তে তরে ও ভাবেন নি, এই লোকগুলো আদতে ধর্মটাকেই বা পাল্টাতে গেছিল কেন? এরাও কি "ইহুদিদের মত" "ফড়িংয়ের আচার "(!) খায়? দিনরাত পাকিস্তান জপ করে? না, যে মানসিকভাব মুসলমানদের সম্পর্কে সব খারাপকেই বিশ্বাস করতে শেখায় সে শিক্ষা এরা কেউ পুঁথিগত ভাবে পায় নি, তারা সমাজের অন্তর্লীন নিস্তব্ধ স্রোত থেকে লাভ করেছেন।হিন্দু, খৃষ্টান ও ইহুদিদির সম্পর্কে মুসলমানের ঘৃণার ইতিহাস ও প্রায় এক। হিন্দু তবু বাকিদের রেহাই দেয়। মুসলমান কাউকে ছাড়ে না। ব্যক্তির অন্যায়ের বোঝা সম্প্রদায়ের উপরে চাপানোর শিক্ষা ও এসেছে পরিবার থেকে। এ শিক্ষা কোন বিদ্যালয়ে পড়ানো হয় না।  তার সাথে যুক্ত হয়েছে নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে চেতনার অভাব। "হিন্দু" বলতে যে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আচার সেখানে অপরকে ঘৃণার কোন প্রয়োজন নেই, সব বিভিন্নতাকে গ্রহণ করেই তার ব্যাপ্তি। নিজের সংস্কৃতি সম্পর্কে অজ্ঞতা যে হীনমন্যতা তৈরী করে তা সর্বনেশে, নিজের সব শুভ আর কল্যান শুষে নিয়ে হৃদয়বৃত্তি ধ্বংস করে নিষ্প্রাণ করে তোলে। অতীতে এই ঘটনা ঘটেছে, ভবিষ্যতে ও ঘটবে। ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। লোপেজ যেমন ঘৃণার আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন, মার্লো তার কাহিনি লিখেছেন। ব্যক্তি জীবনে মার্লো স্পাই ছিলেন। লোপেজের কথা রাবাবাসের চিন্তায় ফিরে ফিরে আসে- একজন অর্থগৃধ্নু, ঘৃণিত ইহুদির সার্থক চিত্রায়ণ। শেক্সপিয়রের মতো মোটে নয়। সাইলকের চরিত্রে একজন দুঃখী মানুষ ফুটে ওঠে। কিন্তু মার্লোর ইহুদি চরিত্র বিলক্ষণ ঘৃণার পাথর কুঁদে তৈরী। কি নির্মম পরিহাস যে মার্লো প্রায় একই ভাবে ধর্মদ্রোহীতার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। যে লেখকের লেখায় একসময় উঠে এসেছে ধর্মের অসারতার কথাও "I count religion but a childish toy/And hold there is no sin but ignorance" তার কাছে এটা খুব একটা আশ্চর্যের কথা ছিল না। তবে, মার্লোর মত বড় লেখকের হাত দিয়ে এরকম অপরিপক্ক লেখা অসম্ভব ছিল।মার্লোকে যখন ধর্মদ্রোহীতার অপরাধে অভিযুক্ত করা হয় তখন  যে প্রমাণ দেখানো হয় তা ছিল ক টুকরো কাগজ। তাতে  সেখানে লেখা ছিল
" He affirmeth that Moses was but a Juggler
- That the first beginning of Religion was only to keep men in awe
- That Christ was a bastard and his mother dishonest" মার্লো এই অকবিতা লিখতে পারতেন না তা তার লেখা যে কোন একটা নাটক পড়লেই বুঝবেন (downliafable).
অবশেষে একদিন এক প্রাইভেট পার্টি চলাকালীন তার চোখে ছুরি ঢুকিয়ে খুন করা হয়। মৃত্যুর আসল কারণ জানা না গেলেও ধর্মীয় ঘৃণা একমাত্র না হলেও অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। 
জানিনা কোন দিন দুই খণ্ড সত্বার মিলন হবে কিনা! তবে, অনেকের মতো আমার ও স্বপ্ন ঘৃণার পাহাড়ে অন্তহীন পথ চলা কোন একদিন শেষ হবে। নতুন সূর্য উঠবে পাহাড়ের গা বেয়ে, সেই ভারতের মহামিলনের সাগর তীরে ভবিষ্যতে মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে- হিন্দু মুসলমানের ছদ্ম পরিচয়  সেখানে গৌণ হয়ে উঠবে।

"এ ভারতভূমি নহেকো তোমার, নহকো আমার একা,
হেথায় পড়েছে হিন্দুর ছাপ,- মুসলমানের রেখা;
-হিন্দু মনীষা জেগেছে এখানে আদিম উষার ক্ষণে,
ইন্দ্রদ্যুম্নে উজ্জয়িনীতে মথুরা বৃন্দাবনে!
পাটলিপুত্র শ্রাবস্তী কাশী কোশল তক্ষশীলা।
অজন্তা আর নালন্দা তার রটিছে কীর্তিলীলা!
                                     -ভারতী কমলাসীনা
কালের বুকেতে বাজায় তাহার নব প্রতিভার বীণা!(জীবনানন্দ)"

(21শে এপ্রিল। 2020)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন