(Photo Courtesy-Ronny Sen)
ফোর্ট কালিঘাটে, মাটির ৩০ ফুট নিচে খুবই সুরক্ষিত এক বাঙ্কারে, নিজের ঘরে বসে তিনি খবর নিচ্ছিলেন। পাশের ঘরে কয়েকজন খ্যাতনামা প্রযুক্তিবীদ ও ভূবিদ্যাবিশারদ এক খানা অত্যাধুনিক সিজমোগ্রাফ নিয়ে বসে আছেন। সিজমোগ্রাফ, যা ভুমিকম্প মাপে। স্বভাব বশতঃ অধৈর্য্য হয়ে তিনি উঠে আসছিলেন বার বার। জিজ্ঞেস করছিলেন
ধরা গেছে? কম্পন ধরা গেছে?
প্রযুক্তিবীদরা ওঘর থেকে হাওয়াই চটির ফট্ফট্ শুনলেই আরো বেশি করে মন দিচ্ছিলেন কাজে। মুন্ডু যতক্ষন আছে, মুন্ডুর ভয় ও আছে। সর্বহারা-হাভাতে হলে হয়ত ভয় ও থাকতো না।
কিন্তু কোথায় কি? সিজমোগ্রাফের কাঁটা নড়ে না। সাদা কাগজের ওপর শুধুই সমান্তরাল রেখা। ওদিকে কেষ্টাপো (মানে, যে গেষ্টাপোরা অনেকটা কেষ্ট মন্ডলের মত স্বভাব চরিত্রে), সদর দফতরে কর্পুর-কায়স্থ, মানে যে কায়স্থর চরিত্র কর্পুরের মত, মিনিটে মিনিটে রাডার নিরিক্ষন করছেন, আর খবর দিয়ে চলেছেন ফোর্ট কালিঘাটে – মিছিল বিড়লা ছাড়ালো, এবারে পার্ক স্ট্রিট, আরো এগোচ্ছে।
কাঁপছে? কাঁপছে? কাঁপুনি ধরা পড়লো? অধীর হয়ে তিনি আবার হানা দিলেন পাশের ঘরে।
না ম্যাডাম। এখনো কাঁপেনি। ধরা পড়েনি কম্পন।
মিছিল মেয়ো রোড। সিজমোগ্রাগ এখনো নিস্তরঙ্গ। মিছিল এবারে রাস্তায় বসে পড়েছে। আর এগোবে না।
বলিনি? আমি বলিনি? কলকাতা কাঁপবে না আগেই জানতাম। অতই সোজা? বললেই হলো মিছিলে কলকাতা কাঁপাবে?
তৃপ্তির হাসি হাসলেন তিনি। তাঁর ওপরে খবরদারী করবে এত সাহস এই কয়েক হাজার কচি ছেলে মেয়ের? কিন্তু খটকা একটাই। ধোলাই খাবার পরেও হিম্মত হলো কি করে এদের? ধোলাই তো সর্বত্র দেওয়া হচ্ছে। এখানে ওখানে। পাড়ায় পাড়ায়। রাস্তা ঘাটে। প্রতিষ্টানে, মাঠে ঘাটে। আচ্ছা, আজকে এই যাদবপুরের খোকা খুকু দের দেখে আগামী কাল যদি পাড়ায় পাড়ায় শহরে গ্রামে এই জিনিষ শুরু হয়? তাহলে......... তাহলে ??? কপালে বিনবিনে ঘাম, পা গুলো কেমন অসাড় লাগছে। হাঁটু গুলো...... হাঁটু গুলো............
পাশের ঘর থেকে চিৎকার শোনা গেল –
কেঁপেছে কেঁপেছে।
সিজমোগ্রাফের কাঁটা গুলো ভিষন ভাবে কাঁপতে কাঁপতে সাদা কাগজের ওপর হিজিবিজি টেনে লিখে যাচ্ছিলো
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন