গত সপ্তাহে আমাদের বিবাহবার্ষিকী ছিল | প্রথম বছর দিনটা বেশ ঘটা করে উদযাপন করেছিলাম ক্যালকাটা ক্লাবে জনা ত্রিশেক বিশিষ্ট আত্মীয় বন্ধুদের নিয়ে একটা জমায়েত করে | পরবর্তীকালেও চেষ্টা করেছি দিনটিকে বিশেষ ভাবে উপভোগ করতে | বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনটির গুরত্ব যেন আরও বাড়ছে – আশংকা হয় – পরেরটি আসবে তো ?
৩৩ বছর আগের কথা | তখন কলকাতায় ডিসিপিএল নামে একটি সংস্থায় কাজ করি | কিছু সহকর্মী কে নিমন্ত্রণ করেছি | একজন বেশ বড় কর্তা গোছের ব্যক্তি খবর পেয়ে আমার ডেস্কে এসে মজা করে বললেন “তোমায় তো আমি বেশ ভিতু বলেই ভাবতুম – দারুন একটা সাহসী কাজ করে ফেলেছ তো দেখছি – বাউনের মেয়েকে বিয়ে করছ !” লজ্জা পাবার ভান করলেও নিজেকে বেশ বিপ্লবী বিপ্লবী ভেবে গর্ব হচ্ছিল একটু যদিও |
৩৩ বছরে সমাজ অনেক পাল্টেছে | ইদানিং স্বজাতে বিয়ে করা তো ছেড়ে দিলাম – ছেলে মেয়েরা অবাধে রাজ্য, ভাষা, ধর্ম , বর্ণকে তুচ্ছ করে মনের মানুষ চয়ন করছে | বছর খানেক আগে “২ স্টেটস ” নামের একটি বেশ উপভোগ্য উপন্যাস পড়েছিলাম – যার একটা মুখ্য বার্তা ছিল জাতীয় সংহতি | এ সপ্তাহের আউটলুক পত্রিকাতেও এই বিষয়ের ওপর একটি ফিচার আছে | বেশ ভাল লাগল- আজকের যুবসমাজ ভিন্নতার মধ্যে আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছে | আমাদের এই ছোট ক্যানবেরা বঙ্গসমাজেও বেশ কিছু মিশ্র দম্পতি আছেন |
কোথায় বলে না – স্বভাব যায় না মলে ! এই আপাত গম্ভীর আলোচনার মধ্যেও একটু ইয়ার্কি না করে পারছি না | বার্নার্ড শ সাহেবের সম্বন্ধে সেই বহু ব্যবর্হিত গল্পটি মনে পড়ছে | একজন বোকাসোকা সুন্দরী সাহেবের প্রেমে পড়ে বিয়ের আর্জি জানান এই যুক্তি দিয়ে যে তাঁদের সন্তান তাঁর রূপ আর বার্নার্ডের গুণ সম্পন্ন হবে | বার্নার্ড শ নাকি আশংকা প্রকাশ করেছিলেন “যদি উল্টো টা হয়? ” আমারও ভয় হয় – বাঙালি -পাঞ্জাবীর পরিণয়ের ফসল যদি বাঙালির শ্রমবিমুখতা পাঞ্জাবীর রসবোধ পায় ? ( বলে রাখি -এটা কিন্তু নিছক ঠাট্টা | কিছু স্টিরিওটাইপিং ব্যতীত আড্ডা জমে না | )
একটা ছোট গল্প দিয়ে লেখাটা শেষ করছি | আমার কর্মক্ষেত্রে এক দম্পতির সঙ্গে পরিচয় হয় – ভদ্রলোক বাংলাদেশী , ওনার স্ত্রী রাশিয়ান | দুজনেই উচ্চশিক্ষিত মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক | ভদ্রলোক একটু বিদঘুটে ধরনের – বাংলা বলতে ভীষণ অনীহা – অথচ ইংরিজিও মারাত্মক | ভদ্রমহিলার খুব নম্র স্বভাব , কিন্তু ইংরিজিতে আরষ্টতার জন্য সম্ভবত কিছুটা স্বল্পভাষী | একদিন কথাপ্রসঙ্গে মহিলা ভাঙ্গা ইংরিজিতে আক্ষেপ করেছিলেন.
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে রসিকতা একটা বড় সেতু – ভিন্ন ভাষা একটা বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়ায় এ ব্যাপারে | শুনে মুজতবা আলীর একটা লেখা মনে পড়েছিল- বিবাহিত জীবনের মধুরতম অঙ্গ মাতৃভাষায় চুটিয়ে ঝগড়া করা !
৩৩ বছর আগের কথা | তখন কলকাতায় ডিসিপিএল নামে একটি সংস্থায় কাজ করি | কিছু সহকর্মী কে নিমন্ত্রণ করেছি | একজন বেশ বড় কর্তা গোছের ব্যক্তি খবর পেয়ে আমার ডেস্কে এসে মজা করে বললেন “তোমায় তো আমি বেশ ভিতু বলেই ভাবতুম – দারুন একটা সাহসী কাজ করে ফেলেছ তো দেখছি – বাউনের মেয়েকে বিয়ে করছ !” লজ্জা পাবার ভান করলেও নিজেকে বেশ বিপ্লবী বিপ্লবী ভেবে গর্ব হচ্ছিল একটু যদিও |
৩৩ বছরে সমাজ অনেক পাল্টেছে | ইদানিং স্বজাতে বিয়ে করা তো ছেড়ে দিলাম – ছেলে মেয়েরা অবাধে রাজ্য, ভাষা, ধর্ম , বর্ণকে তুচ্ছ করে মনের মানুষ চয়ন করছে | বছর খানেক আগে “২ স্টেটস ” নামের একটি বেশ উপভোগ্য উপন্যাস পড়েছিলাম – যার একটা মুখ্য বার্তা ছিল জাতীয় সংহতি | এ সপ্তাহের আউটলুক পত্রিকাতেও এই বিষয়ের ওপর একটি ফিচার আছে | বেশ ভাল লাগল- আজকের যুবসমাজ ভিন্নতার মধ্যে আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছে | আমাদের এই ছোট ক্যানবেরা বঙ্গসমাজেও বেশ কিছু মিশ্র দম্পতি আছেন |
কোথায় বলে না – স্বভাব যায় না মলে ! এই আপাত গম্ভীর আলোচনার মধ্যেও একটু ইয়ার্কি না করে পারছি না | বার্নার্ড শ সাহেবের সম্বন্ধে সেই বহু ব্যবর্হিত গল্পটি মনে পড়ছে | একজন বোকাসোকা সুন্দরী সাহেবের প্রেমে পড়ে বিয়ের আর্জি জানান এই যুক্তি দিয়ে যে তাঁদের সন্তান তাঁর রূপ আর বার্নার্ডের গুণ সম্পন্ন হবে | বার্নার্ড শ নাকি আশংকা প্রকাশ করেছিলেন “যদি উল্টো টা হয়? ” আমারও ভয় হয় – বাঙালি -পাঞ্জাবীর পরিণয়ের ফসল যদি বাঙালির শ্রমবিমুখতা পাঞ্জাবীর রসবোধ পায় ? ( বলে রাখি -এটা কিন্তু নিছক ঠাট্টা | কিছু স্টিরিওটাইপিং ব্যতীত আড্ডা জমে না | )
একটা ছোট গল্প দিয়ে লেখাটা শেষ করছি | আমার কর্মক্ষেত্রে এক দম্পতির সঙ্গে পরিচয় হয় – ভদ্রলোক বাংলাদেশী , ওনার স্ত্রী রাশিয়ান | দুজনেই উচ্চশিক্ষিত মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক | ভদ্রলোক একটু বিদঘুটে ধরনের – বাংলা বলতে ভীষণ অনীহা – অথচ ইংরিজিও মারাত্মক | ভদ্রমহিলার খুব নম্র স্বভাব , কিন্তু ইংরিজিতে আরষ্টতার জন্য সম্ভবত কিছুটা স্বল্পভাষী | একদিন কথাপ্রসঙ্গে মহিলা ভাঙ্গা ইংরিজিতে আক্ষেপ করেছিলেন.
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে রসিকতা একটা বড় সেতু – ভিন্ন ভাষা একটা বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়ায় এ ব্যাপারে | শুনে মুজতবা আলীর একটা লেখা মনে পড়েছিল- বিবাহিত জীবনের মধুরতম অঙ্গ মাতৃভাষায় চুটিয়ে ঝগড়া করা !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন