সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯

৫৬ ইঞ্চি ~ দেবতোষ দাস

শ্রীশ্রীভূষণ্ডি কাগায় নমঃ। 

শ্রী কাক্কেশ্বর কুচকুচে। ৪১ নং গেছোবাজার, কাগেয়াপটি। আমরা হিসাবি ও বেহিসাবি, খুচরা ও পাইকারি, সকল প্রকার গণনার কার্য বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করিয়া থাকি। আমরা সনাতন বায়সবংশীয় দাঁড়ি কুলীন, অর্থাৎ দাঁড়কাক। 

কিন্তু গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের পাণ্ডা অকাল-পক্ক দণ্ডবায়স শ্রী কাক্কেশ্বর, স্মার্টবোমের সার্জিকাল আঘাতে অকাল-অক্কা হওয়াতে, গণনা আপাতত স্থগিত আছে।
 
অমনি গাছের ফোকর থেকে বেরিয়ে এক দেড়েল বুড়ো বলল, ১০ দিন পার হয়ে গেল, এখনও হিসেবটা হয়ে উঠল না? তারপর কয়েকখানা রঙিন কাচ দিয়ে বারবার চারপাশ দেখে দরজির ফিতেটা বার করল। তারপর হাওয়ায় খানিক মাপ-টাপ নিয়ে বলল, ছাতি যখন ৫৬ ইঞ্চি, বন্দুকও যখন ৫৬ মানে একে ৫৬, তখন লাশও ৫৬ হবে! 

একটা তকমা-আঁটা পাগড়ি-বাঁধা কোলা ব্যাং রুল উঁচিয়ে চিৎকার করে বলে উঠল, ভুল হিসেব! মানহানির মোকদ্দমা! শামলাপরা কুমির সর্দিবসা মোটা গলায় বলতে লাগল, ধর্মাবতার হুজুর! এটা মানহানির মোকদ্দমা। সুতরাং প্রথমেই বুঝতে হবে "মান" কাকে বলে। মান মানে কচু। 

সেই শুনে হিজিবিজবিজ হেসে বলল, একজনের মাথার ব্যারাম ছিল, সে সব জিনিসের নামকরণ করত। তার কোটের নাম ছিল 'বিমুদ্রাকরণ'। তার জুতোর নাম 'অবিমৃষ্যকারিতা'। তার গাড়ুর নাম ছিল 'পরমমিত্রোঁওওও' – কিন্তু যেই তার বাড়ির নাম দিয়েছে 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়' অমনি ভূমিকম্পে বাড়ি-টাড়ি সব পড়ে গিয়েছে।
 
তাই দেখে ব্যাকরণ সিং-এর ব্যা-ব্যা করে কী জোশ! থেকে থেকে চিৎকার করছে, যুদ্ধ চাই! যুদ্ধ! ছাগল ফুঁপিয়ে বলল, যুদ্ধে আমার সেজোমামার আধখানা কুমিরে খেয়েছিল, বাকি আধখানা মরে গেল দেশপ্রেমে! তারপর? ছাগল বলল, তার আর পর কী? আমিও মনের দুঃখে ফাইলগুলো খেয়ে ফেললাম! 

তবে আপাতত গণনা স্থগিত। দণ্ডবায়স প্রয়াত। তার জন্য খানিক নীরবতা পালন করা যেতে পারে। কতটা? এই ৫৬ ইঞ্চি!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন