বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৯

অনশন ও স্ট্র্যাটেজি ~ অমিতাভ প্রামানিক

- দিদি, কেসটা কিন্তু দিন দিন জটিল হয়ে যাচ্ছে। 
- কোন কেস রে?
- এই যে অনশন। এতগুলো ছোঁড়াছুঁড়ি এতদিন ধরে অনশন করছে।
- ওরাম অনশন আমি অনেক করেচি। আমার রেকট আছে। ওদের কতদিন হয়েচে?
- না দিদি, আপনার রেকর্ড ভেঙে গেছে। তার চেয়েও চিন্তার হচ্ছে, আগে এসব নিয়ে কেউ বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছিল না, এখন কিন্তু অনেক বড় বড় লোক ওদের হয়ে কথা বলছে।
- কে বড় বড় লোক? বিস্যোবাংলায় আবার বড় বড় লোক কোতায় দেকলি?
- না দিদি, শঙ্খ ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সবাই ওদের হয়ে লিখছে।
- আরে রাখ। ওদের কাজই ওই, বাজে বকা। ওসব নিয়ে তোকে মাথা ঘামাতে হবে না। নেক্সট ইয়ারে দুটোকে একটা করে বিস্যোস্যি দিয়ে দিস আর মুখটা বন্ধ রাখতে বলিস। 
- কিন্তু দিদি, ফট করে এই ছোঁড়াছুঁড়িদের কেউ যদি ইয়ে হয়ে যায়?
- কিয়ে হয়ে যায়? আমি তো ছাব্বিশদিন অনশন করেচিলাম, ইয়ে হয়ে গেচিলাম?
- না, আপনার তো রাত্তিরে সব ফিট করা থাকত। এদের তো কিছু নেই।
- আরে রাখ। অনশনে কেউ ইয়ে হয় না। গান্ধীজি তো হরদম অনশন করত, ইয়ে হয়েচে? ঐ যে বুড়োভাম, কী যেন নাম, হ্যাঁ হ্যাঁ হাজারে, আন্না হাজারে, আমার খালি হাজরা হাজরা মনে হয় –
- কেন দিদি, কালিঘাট থেকে তো অনেক দূরে থাকে, হাজরা হাজরা কেন মনে হয়?
- কী জানি! কেন মনে হয় বলতো?
- লোকটা ড্রামাবাজ বলে? 
- মানে ঘুরিয়ে আমাকে ড্রামাবাজ বললি? যাগগে, ঐ লোকটা তো কতায় কতায় অনশন করে, ইয়ে হয়েচে? 
- কেন দিদি, যতীন না কে যেন – 
- বাঘা যতীন? ওর কেসটা আলাদা। ও তো অনেকদিন টেনেছিল কিস্যু না খেয়ে। জলও টাচ করেনি। ওরাম করলে তো মরবেই। 
- কিন্তু দিদি, আমি খবর যা পাচ্ছি, এদের কয়েকজন কিন্তু বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
- পরুক। এসব নাটক আমার অনেক দ্যাকা আচে। কাগজে লিকচে?
- না দিদি। কাগজ সবগুলোতে বলা আচে, কেউ যেন এসব ফালতু জিনিস খবর না করে। আপনি যেমন বলেছিলেন। 
- এবার যা, গিয়ে বল, সামনের বিষ্যুৎবার থেকে ছোট ছোট খবর করতে।
- কেন দিদি? সামনের বিষ্যুৎবারে কী? 
- এতদিন আমার সঙ্গে থেকে কী শিকলি, ছোঁরা? সব কিচুর টাইমিং আচে। আগেরবার যে অনশন করেচিলাম, টাইমিংটা কেমন ছিল বল? লোকজন বেশিদিন কিচু মনে রাকতে পারে না। ভোটের ঠিক আগে যেটা হয়, সেই বুজে ভোট দ্যায়। 
- এটাও তো ভোটের মুখেই দিদি। এতে কেস গড়বড় হয়ে যাবে না?
- সেই জন্যেই তো বলচি, এবার খবরের কাগজে আস্তে আস্তে জিনিসটা ছাড়তে বল।
- তাতে তো লোকে ওদের ফরেই চলে যাবে, দিদি। 
- আরে ধুর, তুই ওসব বুজবি না। ওদের চারটে ছুঁড়িকে যদি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ধরিয়ে দিই ভোটের ঠিক আগে আগে, তাহলে ... কী বুজলি? 
- আরে দিদি, তুমি জিনিয়াস। কাগজে খবর হবে – মহানুভব নেত্রী নিজের উদ্যোগে কর্মসংস্থান করলেন অসুস্থ ছাত্রীদের সাহায্যার্থে। শিক্ষাক্ষেত্রে নজির গড়ল বিশ্ববাংলা। ফাটাফাটি। ভোটে কে ঠেকায়! 
- অত উল্লাস দেখাতে হবে না। অনুব্বতদের রেডি রাকিস। ইলেকশন কমিশনের মাকড়াগুলোকে কোতায় কোতায় ঘোরাতে নিয়ে যাবি তার লিস্টি করেছিস? করিসনি একোনো? যা ফোট আমার সামনে থেকে ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন