শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩

মেয়েদের জন্য - সম্পর্ক ও সুরক্ষা ~ সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়

আমরা মেয়েরা সবাই আসলে গলায় একটা দড়ি পরেই থাকি জন্মানোর পর থেকেই।  এ নিয়ে নিযুত কোটি  লেখালেখি আছে । কাব্যি না করে সোজা কথায় আসা যাক। একটা বাড়িতে যতগুলোই মেয়ে থাক, বাড়ির "পুরুষ" তাদের সুরক্ষা দেবে... এই কনসেপ্টটাই দড়ির প্রথম সুতো। 

বড় হতে হতে মেয়েদের মনে এটা  দেগে দেওয়া হয় যে সঙ্গে একজন পুরুষ থাকা জরুরী। ফাঁকা রাস্তায় হাঁটতে বা ফাঁকা জীবনের পথে এগোতে, ওই একই... একটা পুরুষ।  পনেরো বছর বয়সী দিদির সঙ্গে আট বছর বয়সী ছোট ভাইকে জুড়ে দেওয়া, যা , সঙ্গে একটা ব্যাটাছেলে  থাকা দরকার .. এ খুব স্বাভাবিক ছবি। একই ভাবে সঙ্গে একটা পুরুষ থাকলে রাস্তায় উটকো বিরক্তিকর নোংরামো কম সহ্য করতে হয় এও সত্যি।
আরও একটু বড় হলেই বিয়ে কর।  এটা খুব পরিষ্কার ভাবে দাগানো যে মেয়েরা বিয়ে করবে সুরক্ষার জন্য আর ছেলেরা বিয়ে করবে যাতে অফিস থেকে ফিরে গরম ভাত আর গুছোনো ঘর পায়। এই প্রসেসের মধ্যে যৌনতা  ইত্যাদি কো-অ্যাডভানটেজ মাত্র (কে না জানে পোষ্ট ম্যারেটাল যৌনতার মত ম্যাড়ম্যাড়ে ব্যাপার আর কিচ্ছু নেই। ও জিনিস দাঁত মাজা বাথরুমে যাওয়ার মতই শরীরটুকুকে রাখার জন্য করে থাকে মানুষ) 
এবার এই যে বিয়ে কর, সঙ্গে একটা পুরুষ চাই, এটা বাড়ির লোকেরা মেয়েটার ভালো চেয়েই বলতে থাকে। আমাদের দেশে অবিবাহিতা মেয়েকে ঘর ভাড়া অবধি দিতে চায় না লোকে।  অবিবাহিত মহিলার প্রতি সোসাইটির নজরও অতি তীক্ষ্ণ।  অবিবাহিতা মেয়ে  মা বাবার সঙ্গে থাকলে কিছু ছাড় পাওয়া যায় কারণ মেয়েটা মা বাবার সঙ্গে আছে ওদের দেখাশোনা করবে বলে। তাই বিয়েও করছে না। সরলীকরণের চূড়ান্ত। কিন্তু অবিবাহিতা মেয়ে একা ফ্ল্যাটে আছে মানেই... হুঁ হুঁ... 
মোদ্দা কথা ছোট থেকেই মেয়েদেরকে শিখিয়ে দেওয়া হবেই যে বড় যদি হতে চাও বউ হও  তবে।  বড় যদি হতে চাও সুরক্ষা কেনো চড়া দামে।
এবার, এই অঙ্ক সবার ক্ষেত্রে আজকাল খাটে না।  লক্ষ্মীমন্ত মেয়ের সাপ্লাই কমেছে গত কিছু বছরে। আবার এর মধ্যেই অনেকেই আবার এখনও ভালোবাসায় বিশ্বাস রাখে।  সেই বিশ্বাস একসময় অবসেশনের পর্যায়ে চলে যায়, জেদের দিকে টার্ন নেয়। যত ভালোবাসা তত বিশ্বাস আর  তত অলিগলি। 
কিন্তু বিশ্বাস ব্যাপারটাও লক্ষ্মীমন্ত মেয়ের সাপ্লাইয়ের মত, ঘাটতিতেই আছে। নিচে এই বিশ্বাস আর জেদের গোটা  উদাহরণ দিচ্ছি

১। বছর চারেকের প্রেম। দুজনেই মধ্যে তিরিশের। ছেলেটি  বার বার এদিক ওদিক প্যারালালি সম্পর্কে জড়িয়েছে। মেয়েটি জানতে পারে , ঝগড়া হয়, ছেলেটি সামহাউ কনভিন্স করে দেয় কেঁদে কেটে  হাতেপায়ে ধরে যে ওই মেয়েগুলোই ওকে ফাঁসায়। সে না বলতে পারে না। ভদ্রতা করতে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে নাকি। মেয়েটির সন্দেহ নিরসন হয় না। কিন্তু একজন পুরুষ পাশে থাকলে নিশ্চিন্ত লাগে। একজন পুরুষ সঙ্গে থাকলে মেয়েটিকেও কম ফালতু কথা শুনতে হয়।  ইঙ্গিত টিঙ্গিত কম সহ্য করতে হয়। বাড়ির লোকেরাও নিশ্চিন্ত যে মেয়ে তাদের একা নেই... অতএব...  পলিগ্যামির সম্পূর্ণ দলিল মেয়েটি হজম করে নেয়। 

২। একটি পুরুষ একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করছে। মেয়েগুলো বুঝতে পারছে সব, জানতে পারছে। সবাই ভাবছে এই পুরুষটা আমার। সবাইকেই লোকটা বলছে তুমিই সব। গোপন রগরগে চ্যাট করে একজনকে বঁড়শিতে গাঁথছে আর অন্যজনকে বলছে তুমিই স্বর্গ তুমিই নরক। যে মেয়েটি বেশিদিন সঙ্গে আছে সে পুরুষটিকে বন্ধুদের মধ্যে নিজের স্বামী বলে পরিচয় দিচ্ছে, মাঝেমাঝে সিঁদুর পরে গেট টুগেদারে যাচ্ছে। প্রশ্ন করলে লাজুক হাসছে । থেরাপিস্ট প্রশ্ন করলে বলছে তাতে কি? রেখাও তো পরেন সিঁদুর। তাঁর স্বামী কে?  ওদিকে অন্য মেয়েটি যে টাটকা এবং  রগরগে চ্যাটের প্রভাবে ধরেই নিচ্ছে পুরুষটি তার, সে এই প্রথম মেয়েটির ওপর চড়াও হচ্ছে। প্রমাণ দেখিয়ে দেখিয়ে এস এস পাঠিয়ে মেয়েটিকে বলে দিচ্ছে দেখ, তোমার অমুক আমাকে ভালোবাসে...  শেষে দেখা যাচ্ছে মেয়ে দুটি একে অন্যের শত্রু হয়ে উঠছে প্রায় । পুরুষটি ততক্ষণে এই সব "হ্যাজ পোষায় না" মোডে গিয়ে তিন নম্বরের সঙ্গে হাত ধরে আইনক্সে।
মাঝখান থেকে এই মেয়েদুটো জেদের বশে পুরুষটিকে জয় করে শোকেসে সাজিয়ে রাখার যুদ্ধে মেতে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করছে।

আজকাল  পরকীয়া আইনসিদ্ধ হয়েছে জানি। তবে পরকীয়া মানে তো আইনতঃ যাকে ভালোবাসবে বলেছ তাকে ছেড়ে আর কাউকে ভালবাসছ। কিন্তু আইনের শিলমোহরের ভালোবাসার লোকটাকে ছাড়ছ না। 
তা প্রশ্ন হল এটা মেনে নেওয়ার জন্য আইনের হস্তক্ষেপ কেন? আর সেটাই কি যথেষ্ট? যে আইনের মোহর নিয়ে বসে আছে সে মেনে নেবে কি? তাকে কি আইন এটা মানতে বাধ্য করতে পারে?  না পারে না। কিন্তু তাকে আইন কিছু সুবিধা ভাগ করে নিতে বাধ্য করতে পারে । 
কী সেই সুবিধা? সে সুবিধা সুরক্ষার।  সঙ্গে থাকার ফিজিক্যাল সুরক্ষা। প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে দেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক সুরক্ষা।
এরই মধ্যে মিডিয়া আমাদের দেখায় বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের এই সুরক্ষাকবচের কারণে নাচ গান, আনন্দ উৎসবের ছবি যা  আসলে কিছু  ভালোবাসার ব্যবসাদারদের অনেক বেশি সাহস আর সুযোগ জুগিয়ে চলেছে।
ফলে যেটা হচ্ছে সেটা হল  সহবাসের সাহস আর সুযোগ দুইই থাকছে। থাকছে ইচ্ছা এবং ইচ্ছার ব্যবহারও। শুধু যেটা আসলে আর থাকছে না সেটা হল ওইই, সুরক্ষা। না আইনি না বে আইনি। কোনো সুরক্ষাই নেই। 
এসব বোঝাতে গিয়ে দেখেছি কোনো কোনো মেয়ে অদ্ভুত ভাবে শক্ত হয়ে গিয়ে বিরোধীতা করে এই বলে যে সে সুরক্ষা চায় না। সে ভালোবাসা চায়। সে যা করছে "ভালোবেসে" করছে। 
এবার প্রশ্ন করি তা ভালো যে বাসছ এত তাও তোমার অমুক  আরও অন্য মেয়েদের পিছনে পড়ে আছে কেন?
তখন কেউ অসহায় কাঁদে কেউ ওই প্রথম পয়েন্টটাতে আটকে যায়। বিশ্বাস করে যে আসলেই লোকটি বড় ভদ্র আর তাঁর আশেপাশের মেয়েগুলো অত্যন্ত দুশ্চরিত্র, ছেনাল।

কেন? কেন? কেন? এই প্রশ্ন প্রচুর। কে কাকে কত সময় দিতে পারে এই প্রশ্নও প্রচুর। কিন্তু আমি যদি নিচের  প্রস্তাবটা দিই,   জানতে চাই  যে কতজন এটা দিনের পর দিন বছরের পর বছর করতে পারবেন তো এই প্রশ্নকর্তারা বাদে বাকি অনেকেই কিছু পজিটিভ বা নেগেটিভ উত্তর অন্তত দেবেন জানি।  
প্রস্তাবটা এমন -  
প্রত্যেক পাড়ায় একটা মহিলা মেন্টাল সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করতে চাইলে কে কার বাড়িতে  সপ্তাহে দুদিন এক ঘন্টা করে জায়গা দেবেন যাতে কিছু মেয়ে একসঙ্গে বসে শুধু একে অন্যের কথা শুনবে, ভেন্ট আউট করবে। এটা  কতজন অ্যাকোমডেট করতে পারবেন। লজিস্টিকস ভেবে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বাড়িতে একটা বসার জায়গা যেখানে ওই সময় আর কোনো ইন্টারাপশন থাকবে না এবং একটা বাথরুম , ব্যবহার যোগ্য। চা কফি না, গেট টুগেদার না। এটা জাস্ট সাপোর্ট গ্রুপ। চেনা অচেনা যে কেউ যারা সম্পর্ক নিয়ে যন্ত্রণায় আছে ডিলেমায় আছে অথবা এককালে যন্ত্রণা ও ডিলেমায় ছিল, আজ নেই কিন্তু তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ও শোনার জন্য সময় দিতে পারবে, এরাই যোগ দেবে সেখানে। 
মাঝেমাঝে এঁরা নিজেরা একটা ওয়ার্কশপ করবে যাতে তাঁরা অ্যালার্মিং বিহেভিয়ার ডিসকাস করা হবে। সেই ডিসকাসনের থেকে উঠে আসা তথ্য আরও বহু মেয়েকে সেটা শেখাতে পারবে।  না, কোনো চা কফি শিঙারা সেলফি নেই। শুধু মেন্টাল হেলথ-এর কারণে একজায়গায় জড়ো হওয়া। এবং অবশ্যই সেখানে যা আলোচনা হচ্ছে সেটাকে রসালো গসিপ হিসেবে আর কোথাও না জানিয়ে ১০০% সিক্রেসি মেনটেন করা।
এই প্রস্তাবটা শুনতে ভাল কিন্তু টানা কিছুদিন ধরে  বাস্তবায়িত করা প্রায় অসম্ভব  । কারণ মেয়েরা নিজেরাও নিজেদের মেন্টাল হেলথ ব্যাপারটাকে প্রায়োরিটি লিস্টের একদম শেষে রাখতে অভ্যস্ত। সমাজও তাই চায়, সংসারও তাই চায়। অতএব মেয়েরাও তাইই চায়। সে তো সমাজ সংসারের বাইরে নয়! এর জন্য কাউকে দোষ দেওয়ার নেই।  তবু চেষ্টা করা যেতে পারে।  যদিও এই চেষ্টায় বহু বাধা থাকবে। 
ফেসবুকেই বেশ কিছু এই ধরণের গ্রুপ আছে । সেখানে কিছু মেম্বার অ্যাকটিভ কিছু রিঅ্যাকটিভ কিছু প্রোঅ্যাক্টিভ। তবে সমস্যা হল নিজের সমস্যার কথা খোলাখুলি লিখে বসে থাকাটা  আসলে আলোচনা নয়। ওতে সমাধান যদি বা ২০ শতাংশ আসে, ভয় আসে সঙ্গে ৫০ শতাংশ । এই বুঝি সেসব লেখার এসএস বাজারে বার করে দিল।  এই বুঝি কেউ ফেক প্রোফাইলের আড়ালে বসে সব পড়ে ফেলল।  ফলে যারা লেখে তারা খুব সাহসী না হলে অ্যাননিমাস আইডেন্টিটির আড়ালে লেখে।  অর্থাৎ যেখানে গিয়ে সাহস খুঁজছে আশ্রয় খুঁজছে সেখানেও কাউকে বিশ্বাস করতে ভয় পাচ্ছে।  এই ভয়টা স্বাভাবিক। কারণ মানুষগুলো সবাই অচেনা। সেক্ষেত্রেও একঝাঁক অচেনা মানুষকে বিশ্বাস করার বদলে একজন অবিশ্বাসীকে আঁকড়ে থাকার মধ্যে স্বস্তি।
এগুলো সব আমার ব্যক্তিগত অবজার্ভেশন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে লিখলাম। এ বিষয়ে হয়ত একটা বই লিখে ফেলার মত রসদ আমার কাছে আছে। তবে আপাতত আজ এই অবধিই। এইসব শব্দের মধ্যে নিজেকে যদি ১০% ও পেয়ে থাকেন তো প্লিজ কথা বলুন। নিজের সঙ্গে বলুন, নিজের প্রিয়জনের সঙ্গে বলুন। আর হ্যাঁ । সম্পর্ক যদি সুরক্ষার কারণে করে থাকেন তাহলে জানবেন সুরক্ষাটা আইনি শিলমোহরের। তাহলে সেব্যাপারেও কিছুটা জেনে রাখুন প্রত্যেকেই।  

নিচের লেখাটুকু আমি শতাব্দী দাশের লেখা থেকে তুলে দিলাম। এক দুটো লাইন নিজের মত জুড়েছিও

১৯৭৮ সালের সুপ্রিম কোর্টের এক রায় অনুসারে *বিষমকামী* লিভ-ইন ভারতে বৈধ, যদি তা
১) পরস্পরের সম্মতিতে হয়। 
২) সম্মতির বয়স পাত্র-পাত্রীর হয়ে থাকে।
৩) তারা মানসিক ভাবে সুস্থ হয়।

আলাদা করে লিভ-ইন সংক্রান্ত কোনো আইন ভারতে নেই। হওয়া উচিত, কিন্তু নেই। তার অবর্তমানে আপনাকে বিয়ে-সংক্রান্ত আইনগুলিই মনে রাখতে হবে। তবে তা বিচারকের 'ইন্টারপ্রিটেশন'-এর মুখাপেক্ষীও বটে। 
আদালতে, বাস্তবক্ষেত্রে আমরা দেখি, লিভ-ইন প্রমাণ করতে অসুবিধে হচ্ছে। কী কী ভাবে আদালতে লিভ-ইন প্রমাণ করা যায়?

১) যৌথ ছবি। (ছবি তুলতে সঙ্গী আপত্তি করলে সন্দেহজনক।)
২) প্রতিবেশীরা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের একসাথে থাকতে, খেতে, বসতে, শুতে দেখেছেন। (এই স্বাভাবিকতায় এক পক্ষের আপত্তি থাকলে তা সন্দেহজনক)
৩) কিছু কাগজপত্র, যেমন জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কোনো সম্পত্তি ক্রয় বা ভাড়ার নথিতে একসঙ্গে দুজনের নাম ইত্যাদি। (ভেবে দেখুন, কাগজপত্র এড়িয়ে রাষ্ট্রকে টেক্কা দেবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু রাষ্ট্রের আইন আবার, আপনার সঙ্গে অপরাধ হলে, প্রথমে কাগজপত্রই দেখতে চাইবে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের বদলে অন্য রকম কাগজপত্র, এই আর কী। যাইহোক, কাগজপত্র একসাথে রাখতে না চাইলেও তা সন্দেহজনক। আবার রাখাটাও রিস্কি বিশেষ করে সম্পত্তির ব্যাপারে)

৪)  আপনি কি কোনো বিবাহিত পুরুষ বা নারীর সঙ্গে থাকছেন? তাহলে লিভ-ইনের বৈধতা প্রথমেই নাকচ হবে। ঠিক যে কারণে বিবাহিত অবস্থায় অন্য বিয়ে অবৈধ, সেই কারণেই বিবাহিত অবস্থায় লিভ ইন-ও অবৈধ। এমন লিভ-ইন করার জন্য শাস্তি কেউ পাবে না কারণ অ্যাডাল্টারি আইন উঠে গেছে। কিন্তু আপনার সম্পর্কটি আর বৈধ অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নয়। 
এবার, যে মুহূর্তে সেটি আর বৈধ অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নয়, সে মুহূর্তে কোনো একজনের উপর ঘটা ভায়োলেন্স এমনিই ভায়োলেন্স। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স নয়। ৪৯৮এ-র আওতায় তা আসবে না। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্টের আওতাতেও না৷ উত্তরাধিকার, সন্তানের স্বীকৃতি এসব তো মরীচিকা। হ্যাঁ, আপনি খুন হলে সঙ্গী হয়ত ফাঁসবে। কিন্তু খুনের চেয়ে সামান্য গৌণ অপরাধে সহজেই ছাড় পাবে। 

বিশেষ অনুরোধ - এই লেখাটা সম্পূর্ণ ভাবেই মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভেবে লেখা। এই লেখার নিচে এসে "কিন্তু ছেলেদের সুরক্ষা?" অথবা "ছেলেদেরকেও কত ভাবে মরতে হয় তার খবর কে রাখে?" টাইপের মন্তব্য করবেন না। সে নিয়ে আবার কখনও নিশ্চই লিখব। তবে এই লেখাটায় ভুলভাল তর্ক শুরু করে সময় নষ্ট করবেন না। তা করলে ধরে নেব আপনার বাড়ির দেওয়ালে ঘুন ধরলে আপনি ঘুনের ট্রিটমেন্ট করে বাড়ি বাঁচান না, উল্টে মাটির বাড়ির দেওয়ালেও কত সমস্যা হয় সেই নিয়ে তর্ক করতে বসেন। অনুরোধ করব অকারণ তর্ক না জুড়তে।

সংশোধন - বন্ধুদের কমেন্ট থেকে জেনে ভুল শুধরালাম
১. বহুগামিতা আইনতঃ সিদ্ধ ; ভূল কথা। এই লেখা টা পুরোটা পড়লেই পাঠক দেখবেন, তা নয়। মহিলাদের হাতে কোনোদিন ক্ষমতা ছিল না তাঁরা পুরুষদের কোনরকম আইনতঃ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বহুগামিতার জন্যে। ডিভোর্স নিতে পারতেন এই গ্রাউন্ড এ। যেটা এখনও সম্ভব।হ্যাঁ, পুরুষরা বিবাহিত মহিলার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা আনতে পারতেন কিন্তু সেই আইন বদলেছে। বাঁচা গেছে! বহুগামিতা আইনসিদ্ধ হয় নি।
২. ৪৯৮ এ ধরনের ধারা কেউ live in এ কখনই ব্যবহার করতে পারবে না। ওটা প্রযোজ্য dowry related violence এ। তাই ভুলভাল বুঝিয়ে লাভ নেই। লিভ ইন এর পুরুষ married কি unmarried কিছু এসে যায় না ৪৯৮ এ র জন্যে। PWDVA অ্যাপ্লিকেবল ইন লিভ ইন রিলেশনশিপ।
বাকি, মেয়েদের অন্য মেয়ের ওপর রাগ না করে পুরুষদের খেলাটা বোঝা উচিৎ, সে আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা পুরুষটির ভাষ্য বিশ্বাস করে, কোমর বেঁধে ঝগড়ায় নেমে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়াতে বা জীবনে। আর এখানেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জয়।

1 টি মন্তব্য:

  1. দুটো ভূল তথ্য আছে। ১. বহুগামিতা আইনতঃ সিদ্ধ ; ভূল কথা। এই লেখা টা পুরোটা পড়লেই পাঠক দেখবেন, তা নয়। মহিলাদের হাতে কোনোদিন ক্ষমতা ছিল না তাঁরা পুরুষদের কোনরকম আইনতঃ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বহুগামিতার জন্যে। ডিভোর্স নিতে পারতেন এই গ্রাউন্ড এ। যেটা এখনও সম্ভব।হ্যাঁ, পুরুষরা বিবাহিত মহিলার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা আনতে পারতেন কিন্তু সেই আইন বদলেছে। বাঁচা গেছে! বহুগামিতা আইনসিদ্ধ হয় নি। ২. ৪৯৮ এ ধরনের ধারা কেউ live in এ কখনই ব্যবহার করতে পারবে না। ওটা প্রযোজ্য dowry related violence এ। তাই ভুলভাল বুঝিয়ে লাভ নেই। লিভ ইন এর পুরুষ married কি unmarried কিছু এসে যায় না ৪৯৮ এ র জন্যে। PWDVA অন্যদিকে অ্যাপ্লিকেবল ইন লিভ ইন রিলেশনশিপ। আর তাতে পুরুষটি এক ছাত্রের নিচে থাকেন সেটা প্রমাণ করতে পারলেই হলো। তার সাথে সম্পর্ক কি, matter করে না।
    বাকি, মেয়েদের অন্য মেয়ের ওপর রাগ না করে পুরুষদের খেলাটা বোঝা উচিৎ, সে আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা পুরুষটির ভাষ্য বিশ্বাস করে, কোমর বেঁধে ঝগড়ায় নেমে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়াতে বা জীবনে। আর এখানেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জয়।

    উত্তরমুছুন