মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

তালাচাবি ~ অমিতাভ প্রামাণিক

বিয়ের এক বছর গড়াতে না গড়াতেই অন্ধকার নেমে এল আরদেশিরের পারিবারিক জীবনে।

বোম্বের ফোর্টে পঁচিশ-ছাব্বিশতলা বাড়ি সমান উঁচু রাজাবাঈ টাওয়ার তৈরি শুরু হয়েছে, যখন তার বয়স মাত্র এক বছর। বছর দশেক লেগেছে পুরো টাওয়ারটা বানাতে। এই রাজাবাঈ হচ্ছেন বোম্বের বিখ্যাত শেয়ার ব্যবসায়ী এবং 'নেটিভ শেয়ার অ্যান্ড স্টক ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর প্রতিষ্ঠাতা (পরে যার নাম হবে বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ বা বিএসই) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্রদের জন্যে স্কলারশিপ চালু করা প্রেমচাঁদ রায়চাঁদের মা। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচা হয়েছে টাওয়ারটা বানাতে, তার মধ্যে দু-লাখ দিয়েছেন প্রেমচাঁদ। ইংরেজ স্থপতি একে বানিয়েছেন লন্ডনের বিখ্যাত বিগ বেনের আদলে। তার মাথা থেকে বোম্বের বহুদূর অবধি দেখা যায়, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ছেলে-ছোকরাদের ভিড় লেগেই থাকে।

তেইশ বছর বয়সী আরদেশিরের নবোঢ়া স্ত্রী উনিশ বছরের বাচুবাঈ ননদ (আরদেশিরের খুড়তুতো বোন) পিরোজবাঈকে নিয়ে চড়েছিল সেই টাওয়ারের মাথায়। সেখানে কী হয়েছিল, তা কেউ ঠিক জানে না, কেউ বলেছে সেখানে নাকি তাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল কেউ, দুজনেই নিজের সম্মানরক্ষার্থে সেই উঁচু টাওয়ারের মাথা থেকে ঝাঁপ দিল।

পার্শি নিয়ম অনুসরণ করে তাদের মৃতদেহ রেখে দেওয়া হল পার্শি গোরস্থানে। চিল শকুনে খেয়ে গেল তাদের দেহাবশেষ।

সেটা ১৮৯১ সাল। ভগ্নহৃদয় আরদেশির ভেবে পাচ্ছিল না, সে কী করবে। তার ঠাকুরদা সোরাবজি গুথারজি আর বাবা বুর্জোরজির রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা। ছয় ভাইবোনের সবচেয়ে বড় আরদেশির, বাবা-মায়ের ইচ্ছে সে বড় হয়ে নামী উকিল হয়। সেই লক্ষ্যে পড়াশুনাও করছে সে। সে সময় আফ্রিকায় ভারতীয় উকিলদের চাহিদা ভালো। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী নামে এক বিলেত-ফেরত উকিল গেছেন দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮৯৩ সালে। তার পরের বছর আইনে ডিগ্রি পেয়ে আরদেশির কাজ পেল এক নামী সংস্থায়। এক ক্লায়েন্টের কেস লড়তে তাকে যেতে হল জাঞ্জিবারে।

কেস ভালোই এগোচ্ছিল, আরদেশিরের ক্লায়েন্টের পক্ষেই রায় যেত হয়ত। কিন্তু শেষদিকে আরদেশির বিপক্ষ উকিলের এক ক্রস-এগজামিনে আটকে গেল। প্রশ্নটা ছিল কোনো এক নির্দিষ্ট সময়ে তার ক্লায়েন্টের অ্যালিবাই সংক্রান্ত। আরদেশির তার ক্লায়েন্টের কথামত চলতে রাজি হল না, কেননা তার কোনো প্রমাণ তাদের বা তার কাছে নেই। ক্লায়েন্টের বক্তব্য, আরদেশির তাদের উকিল, তাকে তো তাদের কথামতই চলতে হবে। আরদেশিরের বক্তব্য, আমি আইনের রক্ষক, আমি সত্যসন্ধানী।

ক্লায়েন্ট বুঝে গেল, একে দিয়ে কাজ হবে না। তাকে বরখাস্ত করে অন্য উকিল নিয়োগ করল তারা। আরদেশির দেশে ফিরে এল, বুঝে গেল, তার পক্ষে উকিলগিরি সম্ভব নয়।

বোম্বে ফিরে এক বড়সড় ওষুধের দোকানে কাজে লেগে গেল আরদেশির। দোকানের মালিক ইংরেজ। কিছুদিন যেতেই মালিকের নজরে পড়ে গেল পরিশ্রমী, বুদ্ধিমান আরদেশির। মালিককে বলল, সে এই দোকানের প্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী নিজে তৈরি করতে চায়, যদি পারে তবে সেগুলো ইনি দোকানে রাখবেন কিনা। মালিক বললেন, সেগুলো যদি তাদের নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে পারে, অবশ্যই তিনি দোকানে রাখবেন, বিক্রি করবেন।

ছক প্রস্তুত করে পরের বছর আরদেশির গেল বাবার বন্ধু বড় ব্যবসায়ী মেরবানজি কামার কাছে। সে সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট বানাবে, তার জন্যে টাকা ধার চাই। কামা তো শুনে অবাক! বাবার কাছে না গিয়ে আরদেশির কেন টাকার জন্যে এসেছে চাচাজির কাছে! আরদেশিরের স্পষ্ট জবাব, বাবার কাছে টাকা চাইলে বাবা তো সেটা উপহার দেবে, ফেরত চাইবে না। সে দান চায় না, ধার চায়, সে কিছু সময় পরেই পরিশোধ করে দেবে এই ধার।

কামা-র কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ধার নিয়ে শুরু হল আরদেশিরের হাসপাতালে সার্জনদের ব্যবহারযোগ্য ছুরি-কাঁচি ইত্যাদির কারখানা। প্রতিদিন আরদেশির নিজে পরীক্ষা করে জিনিসপত্রের গুণাগুণ। যখন সমস্ত কিছু তার পছন্দমত হল, সে গিয়ে একদিন ডেকে আনল তার সেই ওষুধের দোকানের মালিককে – এই দেখুন, কী সুন্দর সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট বানিয়েছি।

মালিক জিনিস দেখে খুব সন্তুষ্ট হল। জিজ্ঞেস করল, কবে সে অর্ডার নিতে পারবে। আরদেশির বলল, আর অতি অল্প একটু কাজ বাকি, এর ওপরে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ছাপ মারা। মালিক বললেন, তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে! এত উৎকৃষ্ট জিনিসে কেউ মেড ইন ইন্ডিয়া ছাপ মারে! 

আরদেশির বলল, আমি কি মিথ্যা বলছি নাকি, এগুলো সব এরা নিজেরা বানিয়েছে, এ তো মেড ইন ইন্ডিয়াই। ওষুধের দোকানের মালিক বললেন, আরে বাবা, এটা মার্কেটিঙের ব্যাপার, ভালো করে ভাবো, বোঝো। ইন্ডিয়া সম্বন্ধে আমি কিছু খারাপ তো বলছি না। অ্যান্টিক-ফ্যান্টিক কিনতে হলে ইন্ডিয়ার জিনিস ঠিক আছে, বড় বড় করে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' লেখো তার ওপর। কিন্তু আধুনিক হাসপাতাল-উপযোগী যন্ত্রপাতি 'মেড ইন ইন্ডিয়া'! চলবেই না, কেউ কিনবে না। আমাকে ব্যবসা শেখাতে এসো না, যা বলছি তাই শোনো।

আরদেশির শুনল না। সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্টের ব্যবসা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেল তার।

মাথার ওপরে ধার, আরদেশির উপায় খুঁজতে লাগল নতুন কিছু করার। লোকের দোকানে কাজ করে তার পোষাবে না, তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুঁটিয়ে পড়ে সে, যদি কোনো আইডিয়া পাওয়া যায়। এ ভাবেই একদিন নজরে পড়ল পর পর বেশ কয়েকদিন ধরে খবর হচ্ছে বোম্বের কিছু কিছু অঞ্চলে চুরিচামারি খুব বেড়ে গেছে। বাড়ি খালি রেখে কোথাও কয়েকদিনের জন্যে বেড়াতে গেলেই ফিরে এসে লোক দেখছে বাড়ি ফাঁকা, চোরে সব চুরি করে নিয়ে গেছে। শুধু বাড়িতে নয়, অফিস-কাছারিতেই একই সমস্যা। রাস্তা দিয়ে সারাদিন পুলিশের গাড়ি ছুটছে, চুরির নতুন নতুন খবর পেয়ে।

খোঁজখবর নিয়ে আরদেশির বুঝল, সমস্যাটা তালা-সংক্রান্ত। লোকে তালা ঝুলিয়ে বেড়াতে যায়, চোরে সেই তালা সহজে খুলে ফেলতে পারে। মানে, ভালো তালা, যা কোনোভাবেই খোলা সম্ভব না, যদি বানানো যায় তবে তার ভালো ব্যবসা হতে পারে।

আরদেশির আবার হাজির হল চাচাজি মেরবানজি কামা-র কাছে – চাচাজি, আপনার টাকা তো ফেরত দিতে পারছি না এখনই। খুব ভালো ছুরি-কাঁচি বানিয়েছিলাম, কিন্তু কিনতে চাইল না দোকানে। এবারে আমি তৈরি করতে চাই এমন তালা, যা কেউ খুলতে পারবে না। আমার আরও কিছু টাকা চাই।

কামা চুরিচামারির খবর কাগজে পড়েছিলেন। তিনি জানেন, আরদেশির কাজের ছেলে। তাও তাকে বাজিয়ে নিতে জিজ্ঞেস করলেন – হ্যাঁ রে, আমাদের পার্শিদের মধ্যে তালা বানাতে জানে কেউ? নাকি তুই-ই হবি প্রথম? আরদেশির বলল, প্রথম কিনা জানি না চাচাজি, তবে আমিই হব বেস্ট। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।

ডজনখানেক কর্মচারী আর এদিক-ওদিক থেকে সংগ্রহ করা কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে একটা দুশো স্কয়ার ফুটের শেডে শুরু হল আরদেশিরের তালা তৈরির কারখানা, ১৮৯৭ সালে। আরদেশির এমন তালা বানাতে চায়, যা কেউ খুলতে পারবে না। এ তালার চাবি তৈরি হবে প্রথমে, তারপর সেই অনুযায়ী তালা। প্রত্যেকটা চাবি আলাদা, সুতরাং তালাও আলাদা। 'অ্যাঙ্কর' ব্র্যান্ডে সেই তালা বাজারে ছাড়া হল, প্রত্যেকটার সঙ্গে গ্যারান্টি যে এই তালা এর চাবি ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে খোলা অসম্ভব।

বিপুল সাফল্য এলো এই তালার ব্যবসায়।

আরদেশির অবশ্য উপলব্ধি করল, দৈনন্দিন সমস্ত প্রয়োজনে এই অতি-সুরক্ষাবাহী তালার প্রয়োজন নেই। তার পরবর্তী পদক্ষেপ কমদামী, সিম্পল তালা। কিন্তু অ্যাঙ্করের চেয়ে এটা যে আলাদা, সেটা যাতে ক্রেতারা কেনার সময় বুঝতে পারে, সে জন্যে তালার বাক্সে লিখে দেওয়া, এতে কিন্তু অ্যাঙ্করের মত সুরক্ষার গ্যারান্টি নেই। তার সঙ্গে বিজ্ঞাপনে আরও যোগ করল সে – তালা কিনতে গিয়ে লিভারের সংখ্যা দেখে গলে যাবেন না। ভালোভাবে তৈরি একটা চার-লিভারের তালা বাজেভাবে তৈরি আট-লিভারের তালার চেয়ে অনেক অনেক বেশি সুরক্ষা দেয়।

আরদেশিরের জিনিসের গুণমান আর তার খোলামেলা বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞাপন জনগণের আস্থা অর্জন করে নিল। একের পর এক নতুন নতুন ধরনের তালা ডিজাইন করে তার পেটেন্ট নিতে লাগল আরদেশির। এলো গর্ডিয়ান তালা, যার সঙ্গে দেওয়া হয় দুটো চাবি। দুটোর যে-কোনোটা দিয়ে তালাটা খোলা ও বন্ধ দুই-ই করা যায়। তবে কেবলমাত্র দ্বিতীয় চাবিটা দিয়ে এর ভেতরের সেটিং বদলে দেওয়া যায়, দিলে তখন প্রথম চাবিটা অকেজো হয়ে যায় কিন্তু দ্বিতীয় চাবি চলতেই থাকে। এর মানে, প্রথম চাবিটা হারিয়ে গেলে বা কেউ প্রথম চাবিটা কোনোভাবে 'কপি' করে নিলেও কোনো অসুবিধা নেই, দ্বিতীয় চাবি দিয়ে সেটিং বদলে ঐ তালাকেই নতুন-কেনা তালার মত ব্যবহার করা যায়, যেটা প্রথম চাবি দিয়ে খুলবে না আর। এর পর এলো ডিটেক্টর তালা। এর সঙ্গে দেওয়া চাবি ছাড়া এই তালার গর্তে অন্য যে-কোনো চাবি ঢোকালেই এর মধ্যে থেকে এক বোল্ট বেরিয়ে তালাটা জ্যাম করে দেবে, যা ছাড়ানো যাবে শুধু এই চাবি দিয়েই। এর অর্থ এর মালিক সহজেই বুঝে যাবে অন্য কেউ এই তালাটা খোলার চেষ্টা করেছিল, সে সাবধান হয়ে যাবে। এক বিদেশী – চার্লস চাব – এই ধরনের তালার পেটেন্ট করেছিলেন, কিন্তু তাতে ঐ বোল্টের জ্যাম ছাড়াতে দ্বিতীয় এক চাবি লাগত, আরদেশিরের তালায় সে সবের প্রয়োজন ছিল না, একটা চাবিতেই সব ব্যবস্থা। এরপর এল স্প্রিংবিহীন তালা, যাতে বহু ব্যবহারে তালার স্প্রিং আলগা হয়ে লিভারের নড়বড়ে হয়ে যাওয়া আটকানো গেল।

এর পাশাপাশি আরদেশির তার সংস্থার ছোট ছোট পুস্তিকা ছাপাতে লাগল। সেখানে পরিষ্কার লেখা – আমাদের সমস্ত তালাই আধুনিক প্রযুক্তিতে আধুনিক মেশিনে অন্তত পনের বছরের অভিজ্ঞ কর্মীদের দিয়ে প্রস্তুত। আমরা আমাদের সমস্ত পার্টস নিজেরাই তৈরি করি, এগুলো দেশের বা বিদেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে কেনা নয়। কাজেই আমাদের তালা একদম স্বকীয় এবং আপনাকে দেবে সম্পূর্ণ সুরক্ষা।

তালা বিক্রি করতে করতেই আরদেশিরের খেয়াল হল, লোক সুরক্ষার জন্যে কেনে সেফ বা সিন্দুক। বাজারের সবচেয়ে ভালো কোয়ালিটির সিন্দুক মানে যেগুলো চোরে খুলতে পারবে না, সেগুলো। কিন্তু সেই সময়েই সানফ্রানসিস্কোয় এক বিশাল ভূমিকম্পের পর এমন বিশাল আগুন লাগল যে সেই আগুনেই লোকের ক্ষতি হল ভূমিকম্পের ক্ষতির চেয়ে অনেক বেশি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে লোকের বহু দুর্মূল্য বস্তু যা রাখা ছিল সিন্দুকে, তা পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আরদেশির বুঝল, সিন্দুক যদি অগ্নিনিরোধক করা যায়, তবে তার মূল্য অনেক বেড়ে যাবে। যেমন ভাবা, অমনি কাজ। তৈরি হয়ে গেল পৌনে দু-টন ওজনের সম্পূর্ণ সুরক্ষাদায়ী সিন্দুক। কলকাতার ধর্মতলা আর বোম্বের ভিক্টোরিয়া ডকে বিশাল আগুন লাগলেও যে সিন্দুকের ভেতরের জিনিস ছিল সুরক্ষিত।

এগুলো পরের কথা। এর আগে বাবার বন্ধু মেরবানজি কামা-র ধার শোধ করতে গেল যখন আরদেশির, তখন কামা বেশ অসুস্থ। তিনি কিছুতেই আরদেশিরের কাছ থেকে টাকা নিতে চাইলেন না। বললেন, বেটা, এই যে তুই ধীরে ধীরে একটা ব্যবসা দাঁড় করলি, নতুন নতুন জিনিস তৈরি করে ব্যবসা বাড়িয়ে চললি, এ সব নিজের চোখের সামনে দেখার সৌভাগ্যের একটা মূল্য নেই? এ থেকে তুই আমাকে বঞ্চিত করিস না। আমার তো দিন শেষ হয়ে এল, আমি টাকা দিয়ে কীই বা করব? যদি সত্যিই কিছু করতে চাস, আমার ভাইপোটাকে একটু দেখিস, বাবা।

আরদেশির বলল, চাচাজি, আপনার ইচ্ছেই আমার কাছে আদেশ। ওকে আমাদের পার্টনার করে নিচ্ছি।

আরদেশিরের জন্মের কয়েক বছর পর আরদেশিরের বাবা বুর্জোরজি গুথারজি তাদের পারিবারিক পদবি গুথারজি বদলে করে নিয়েছিলেন গোদরেজ। মেরবানজি কামা-র ভাইপো বয়েসকে পার্টনার করে আদরেশিরের কোম্পানির নাম হল – গোদরেজ অ্যান্ড বয়েস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি।

এর পরবর্তী ঘটনাবলি আপনাদের অজানা নয়। সামান্য তালা থেকে একের পর এক নতুন নতুন ব্যবসা শুরু করে ও তাদের বাড়িয়ে গোদরেজ গ্রুপ এখন সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার কোম্পানি, দেশের অন্যতম নামী প্রতিষ্ঠান। কামা-র ভাইপো বয়েস বেশিদিন এই কোম্পানির পার্টনার থাকতে চাননি, নিজেই সরে গেছিলেন এ থেকে। কিন্তু চাচাজির প্রতি কৃতজ্ঞতায় তার নাম এখনও রয়ে গেছে এই কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

আরদেশির যখন ছুরি-কাঁচি তৈরি শুরু করেছিলেন, তার বছর দুয়েক আগে কলকাতায় এক বাঙালি এক প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন, তার নাম বেঙ্গল কেমিক্যালস। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র যতদিন জীবিত ছিলেন, এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু আজ গোদরেজ কোথায় আর এ কোথায়!

১৫ ডিসেম্বর ২০২০

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন