শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

পাগলা দাদু ~ রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

"ইরিব্বাবা, ইরিব্বাবা," 
বলেই দাদু লাফ মারেন; 
তারপরেতেই চুলকে কনুই 
ফোঁশফোঁশিয়ে হাঁফ ছাড়েন!

ওমনি আবার ডাইনে ঘুরে 
চমকে ওঠেন কাক দেখে,
তাইতে কেমন তৃপ্ত হয়ে 
ঘুমিয়ে পড়েন নাক ডেকে!

ঘন্টা পাঁচেক ঘুমিয়ে নিয়ে 
ওঠেন হঠাৎ খাট ছেড়ে,
আনিয়ে খাবার গিলতে থাকেন 
গপ-গপিয়ে, পাত পেড়ে;

খাবার খেয়েই ঢেঁকুড় তুলে, 
বাহান্ন বার কান মলে,
ধর্মতলার রাস্তা ধরে 
হন-হনিয়ে যান চলে।

ওই যেখানে সবাই বসে 
ধর্ণা দিয়ে গান শোনে,
সেই সেখানে গিয়েই দাদু 
মুণ্ডু নাচান আনমনে;

ওমনি হঠাৎ সামনে ঝুঁকে 
উলটো হাতে কান ঘষে
এদিক সেদিক তাকিয়ে নিয়ে
দিদির পাশে যান বসে।

এ সব দেখে ভাইরা শুধোয়, 
"কি দাদু, কি ধান্দাটা?"
ক্লান্ত হেসে বলেন দাদু, 
"জানিস, আমি মান্ধাতা?

হাজার হাজার বছর ধরে 
শুনছি তোদের গুলতানি,
সবাই তোরা পানসে গরু, 
যতই সাজিস মুলতানী!

দাদার কথায়, দিদির কথায়, 
লাফিয়ে বেড়াস দিগ্‌বিদিক,
মারবে তোদের ভোজপুরী ল্যাং, 
ঠেকেই তোরা শিখবি ঠিক!

ক্যান্‌ রে তোরা দুচোখ বুজে 
ওদের কথায় চলতে চাস?
ভাবনা নিজের চুলোয় দিয়ে 
ওদের কথাই বলতে যাস?

এই দুনিয়ায় প্রশ্ন কত, 
আর কবে ভাই খুঁজবি রে?
কিছুই তোরা জানিস নে ভাই, 
আর কবে ফের বুঝবি রে?

জানিস কেন সর্ষে ইলিশ 
ভাপিয়ে খেলে ভাল্লাগে?
জানিস তোরা টক কেন কুল? 
লঙ্কা কেন ঝাল লাগে?

কক্ষণও কি দেখিস ভেবে, 
পায়রা কেন উড়তে চায়?
পতঙ্গরা আগুন দেখে 
বৃথাই কেন পুড়তে যায়?

হঠাৎ কেন ব্যর্থ প্রেমিক 
পদ্য লেখে শ্বাস ফেলে?
মুখটা কেন পেঁচিয়ে ওঠে 
চুন মাখিয়ে ঘাস খেলে?"

এই না বলে হঠাৎ দাদু 
থমকে গিয়ে, নোখ খুঁটে,
ফ্যাল-ফ্যালিয়ে তাকিয়ে দেখেন 
চতুর্দিকে, চোখ ফুটে;

ওমনি আবার 'ডুম-ডুমা-ডুম' 
বাজিয়ে নিয়ে ড্রামখানা
মালকোঁচাটা বাগিয়ে ধরে 
যান পালিয়ে নামখানা!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন