শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

এসএফআই ~ ডাঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত

"ঐশীদের দাঁড় করাবেন শুনলাম। মহিলা প্রার্থী ? ছোহ্ এদের দিয়ে আর কিস্যু হবে না দাদা। এত সব বড় বড় ভাষণ, অমুক সে আজাদী, তমুক সে আজাদী। খালি ওই জেএনইউ ক্যাম্পাসের মধ্যে লাফ ঝাঁপই সার। এবারে ক'টা সিট জিতবেন? আরে জিতবেন কি, নোটার থেকেও কম ভোট পাবেন। ওসব ঐশী টইসির কম্ম নয়। এ লড়াই অন্য লড়াই। বুইলেন দাদা।"

সত্যিই তো। সারাদিন কাজের শেষে মন খারাপ।খালি মাঝে মধ্যে ক্লান্ত মাথাটা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুঁজলে একটা মেয়ের মুখ ভেসে আসে, বড় বড় চোখ, মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ। সত্যিই হল না আর। এ লড়াই অন্য লড়াই। 

চোখ বুঁজে থাকুন। খুলবেন না। আস্তে করে আপনাকে এমনি একটা জায়গায় নিয়ে যাবো। একবছর আগের একটা জায়াগায়। কোন জায়াগায় ? ধৈর্য্য হারাবেন না। আসুন আমার সাথে। চারদিকে ক্ষেত, আর সবুজ জঙ্গল। দূরে একটা কালো পাহাড়। চা এর বাগান। কিছু খোলা, কিছু বন্ধ। দু'চারটে বাড়ি। কাঠের দেয়াল, টিনের চাল। সেই ঢালু চাল বেয়ে বৃষ্টির ফোঁটা। আমার মাতৃভূমি। 

তেমনই একটা ঘরে আবছা আলোয় মেঝেতে চাটাই পেতে গুটিকয় ছেলে মেয়ে। মিটিং করে ওরা। গাল ভরা নাম আছে, "সম্মেলন"। মিটিং শেষে সাদার মধ্যে লাল তারা আঁকা পতাকা হাতে ওদের ছবি ওঠে সস্তার মোবাইলে। জাফরীকাটা রোদের আলোয়। ছবিটা তোলার আগে আধা পেটা খাওয়া অপুষ্টিতে শীর্ন মুখগুলো তে অদ্ভুত হাসি। ওরা স্লোগান তোলে, "স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র জিন্দাবাদ।"

ওরা মানে ? হ্যাঁ, এইবার চোখ খুলতে পারেন। চোখ খুলে দেখে নিন, ওরা মানে শবনম, প্রিয়াঙ্কা, অঞ্জলি , স্বপ্না আর দীপা। ওরা স্লোগান তোলে, "ঐশী দিদি করো লড়াই, সাথে আছি আমরা সবাই"। স্লোগানের দমকে ছেঁড়া ফ্রকে লাগানো সেফটিপিনটা খুলে আসে, আবার লাগিয়ে নেয়। আবার স্লোগান দিতে হবে যে। লড়াই এর স্লোগান। ঠিকই বলেছেন একদম। এ লড়াই অন্য লড়াই। এ লড়াই জিততে হবে। লড়াই এর মানেটা কেবল বুঝে নিতে হবে।

ছবি: এসএফআই এর বীরপাড়া চা বাগান ইউনিট। কমঃ শবনম খাতুন (সভাপতি), কমঃ প্রিয়াঙ্কা মহাজন (সহ সভাপতি), কমঃ অঞ্জলি খাড়িয়া (সম্পাদক), কমঃ স্বপ্না কেরকেট্টা (সহ সম্পাদক), কমঃ দীপা লাকড়া (পত্রপত্রিকা)। এক বছর আগে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন