রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২১

সফদার হাশমী ~ অর্ক রাজপন্ডিত

১৯৮৪ সালের দাঙ্গায় যুক্ত ছিলেন তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী কংগ্রেস নেতা এইচ কে এল ভগত। কোন মধ্যপন্থা নেই। হয় আমরা ভগতের হাত থেকে পুরস্কার নেব না হয় নেব না। জনম'র বৈঠকে বলেছিলেন সফদার।

নাহ! ভগতের হাত থেকে পুরস্কারের ট্রফি আর তখনকার দিনে মোটা অঙ্ক দশ হাজার টাকা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জনম। কথা ছিল, ১৯৮৯ সালের ২ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করবে জনম। খোলাখুলি জানাবে তাদের অবস্থান।

দিল্লি থেকে বাসে ঝান্ডাপুর যাওয়ার পথে সহযোদ্ধা সুধন্য দেশপান্ডেকে বলেছিলেন সফদার।' ১৮ বছর পর ইউপি সরকার পৌরসভার নির্বাচন করছে। কেউই প্রতীকে লড়ছে না আমরা ছাড়া। আমরাই একমাত্র কাস্তে হাতুড়ি তারায় লড়ছি। ঝান্ডাপুরের যে আমাদের প্রার্থী রামনাথ ঝা খুব মিলিট্যান্ট ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী'।

কথা বলতে বলতে বাস এসে দাঁড়ায় ঝান্ডাপুরে। সফদার ও তাঁর কমরেডরা হেঁটে চলেছেন সিআইটিইউ অফিসের দিকে, ওখানেই হবে হাল্লা বোল।

লাঠি আর লোহার রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে গাজিয়াবাদ সিটি বোর্ডের মেয়র পদপ্রার্থী কংগ্রেস কর্মী মুকেশ সিং ও তার দলবল। এলোপাথাড়ি মার শুরু। সুধন্য দেশপান্ডে লিখেছেন, 'আমাদের কাছে ঝান্ডার লাঠি ছাড়া কিছু ছিল না, তাই দিয়েই আমরা রুখছি। পাথড় ছুঁড়ে পাল্টা মারার চেষ্টা করছি। সফদার আমাদের নেতা, চেঁচিয়ে উঠলো সবাই সিআইটিইউ অফিস চলো। সিআইটিইউ কমরেড যদুমনি বেহারার ততক্ষণে মাথা ফেটে গেছে, রক্ত ঝড়ছে। আমাদের দেখে এক মহিলা ছুটে এলেন চিৎকার করতে করতে পাঁচ জনের গুলি লেগেছে। তোমাদের একজন পড়ে আছে মাটিতে'।

সুধন্য দেশপান্ডে ও তাঁর কমরেড ব্রিজেশ ছুটছেন রাস্তায়। ব্রিজেশ রাস্তার এক কোনে রক্তাক্ত একজনকে দেখে ভাবছেন আরেকজন কমরেড বিনোদ। কিন্তু তিনি বিনোদ নন, সবুজ সোয়েটার লাল হয়েছে রক্তে, চিনতে পেরেছেন মুহুর্তেই সুধন্য, সফদার!

সফদারের সঙ্গেই খুন হয়েছিলেন সিআইটিইউ কর্মী  রাম বাহাদুর।

নাম গুলো চিনে রাখা দরকার। কারা মেরেছিল সফদারকে। ৫নভেম্বর, ২০০৩  গাজিয়াবাদ কোর্ট দশ জনকে দেষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজা দেয়। মুকেশ শর্মা, দেবী সারন শর্মা, জিতেন্দ্র, রাম অবতার, বিনোদ সিং, ইউনুস আলি, তাহির হুসেন, রমেশ, করণ সিং এবং ভগত বাহাদুর। সবাই ছিল কংগ্রেস কর্মী।

গাজিয়াবাদ আদালতে খুনিদের পক্ষের আইনজীবী সাফাই গেয়েছিলেন, মলয়শ্রী হাসমি যা বলছেন ঠিক না, এটা ঠিক খুন না, একটা স্কাফল! ধস্তাধস্তির জেরে মৃত্যু হয়।

জনম থামেনি। হল্লা বোল থামেনি। একই জায়গায় ফিরে এসেছিলেন সফদারের কমরেডরা হল্লা বোল নাটক নিয়েই।

সফদার বেঁচে আছেন!

সফদারের কমরেডদের  শ্রেণি ঘৃনা মরেনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন